চোখের নিচটা নীলচে কালো, সাদা-কালো দলছুট দাড়িতে ঢাকা মুখ নিয়ে সেদিন মনরোগবিদ সুন্দরী মহিলার সামনে দাঁড়ানো শিহাব।
বসতে বলে কথা প্রসংগে সমস্যা কি জানতে চাইলে শিহাবের উত্তর, ' লেখতে লেখতে চরিত্রগুলি ইদানিং জিম্মি করে রেখেছে, ঘুমে কি জেগে থাকাবস্থায়, ব্যস্ততম প্রহরে কি অসহ্য অলস মুহুর্তে, অণুক্ষণ কেবলি অক্ষরে রুপ নেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করে চলেছে।'
এরপরই বিস্মরণ.. কাছ থেকে সুন্দরী মহিলাকে দেখতেই ওর চিবুকের নিচের সেই কালো তিলটি সময়ের বহু পেছন থেকে এক কিশোরিকে টেনে সময়কে স্থবির করে রাখে.. এক বিশেষ সময়ে!!
জীবনের স্পেশাল সময়ের সেই স্পেশাল মেয়েটি আজ তার নিজের সৃষ্ট সমস্যাকে বেমালুম ভুলে ওর কাছেই জানতে চাইছে সমস্যা কি!
জীবনের প্রথম অণুগল্পটির একমাত্র চরিত্রটি যে পথের মাঝে একা ছেড়ে চলে যাওয়াতেই তো আজ চরিত্রগুলি এভাবে একের পর এক ডানা মেলে ওকে জিম্মি করে আছে।
একদার সেই বালিকা এখন আরো সুন্দরী হয়েছে.. নারী অধিক প্রেমিকা কম। রমণীয়? হুম.. তা বলা যায়।
নিজের দাড়িগোঁফের আড়াল থেকে সেই কিশোর বের হয়ে এসে জানতে চায়,
- আমাকে চিনতে পারছ কি? তোমার চকচকে এই চোখে যে আভা, কখনো তা ম্লান বেতফলের মত ছিল, মনে পড়ে? আমি সেথায় জ্বালিয়েছিলাম দ্রোহের আগুন। তুমি পুড়ে পুড়ে প্রেম হবার যন্ত্রনা সহ্য করতে না চেয়ে হারিয়ে ছিলে!
আজ সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গায়-ই এসেছি, তাই না ... ?
এক বিষন্ন বেলাশেষের ক্ষনে, সন্ধ্যা আরতির ক্ষীন প্রলয়ধবনির সাথে এক 'পলাতকা চাঁদের' দীর্ঘ নি:শবাস বাতাসে পাক খেয়ে যায়.. রমনীয় রুপে মোহিনী এক মনরোগবিদের ছিমছাম চেম্বারে! একজনের অনুচ্চারিত অনন্ত জিজ্ঞাসার প্রতিউত্তর হাতড়ে চলে সে.. এক নিরন্ন প্রহরে.. দুজনে যদিও.. যার যার মনে.. একা একা।
★মামুনের অণুগল্প
৭টি মন্তব্য
গাজী বুরহান
(y)
মামুন
ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
ওয়াহ, দারুণ!!
মামুন
ধন্যবাদ আপনাকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
বাহ! একেবারে অন্যরকম। এমন লেখা সবাই লিখতে পারেনা। আপনার এ লেখায় মুগ্ধতা রেখে গেলাম। (y)
মামুন
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর অনুভবের জন্য 🙂
ভালো থাকুন সবসময়।
নীলাঞ্জনা নীলা
এতো সুন্দর লেখনী আপনার, এভাবে কম কম লেখাটা কি ঠিক?