লোকাল বাসের অভিজ্ঞতা

সাবিনা ইয়াসমিন ২৬ নভেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ০২:২৮:৫৭পূর্বাহ্ন রম্য ৩০ মন্তব্য

** এই লেখাটি মুলত মন্তব্য পোস্ট। এটি লেখার উৎসাহ জুগিয়েছেন সোনেলার জনপ্রিয় রম্য ব্লগার রোকসানা খন্দকার রুকু। তার  জার্নি বাই কুড়িগ্রাম টু রংপুর পড়ে লিখতে ইচ্ছে হলো। লেখককে ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট দেয়ার জন্যে 🙂

*************** *************** *************** *************** ************

মেয়ে মানুষ হয়ে পাব্লিক বাসে উঠেছেন আর ঠ্যালা ধাক্কা মানবেন না! প্রাইভেটকারে চড়লেই পারেন। এসব চিরসত্য বাণীর ভুলেও প্রতিবাদ করা যাবে না 😉

শুধু তাই নয়, বাসে বসে হয়তো সব ইগ্নোর করে  একমনে মোবাইল টিপছেন, পাশের মানুষটি আপনার বানান ভুল ধরে ফেলেছে, তখন ইচ্ছে হবে তাকে বলতে, নিন আপু/ ভাই আপনিই বাকিটা লিখে দিন 🙂

আরোও আছে, আপনি কি সামনেই নামবেন? তাহলে জানালার পাশে আমি বসি? ( এখানে বক্তার মুখে হাসি থাকবে)

মলম পার্টির ভয় বাসেই বেশি,মলম কিনতে না চাইলে শশা,আমড়া থেকে শুরু করে বুটবাদাম সবই খেতে পারা যায়। আর যাদের সস্তা সামগ্রী কেনাকাটার অভ্যাস আছে তাদের জন্য লোকাল বাস হতে পারে আদর্শ স্থান!(এসবের আড়ালে আরও কিছু বেচাবিক্রি হয় হয়তো,কেউ খেয়েদেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে/থাকবে। কে রাখবে তার খবর)

আসবে হিজড়ার দল, তালি দিয়ে কানের বারোটা বাজিয়ে বাসভাড়ার বেশি টাকা নিয়ে যেতে 🙂

আসবে বিভিন্ন ধরনের চলন্ত দানবাক্স,তখন মনে হবে ভাগ্যিস তাজমহলটা সম্রাট শাহজাহান আগেই বানিয়ে রেখেছিলো! 🤔

সিটের পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে নিজের মাস্কের দিকে খেয়াল রাখা লাগবে। হতে পারে সে শীতকালীন সব্জী প্রেমী। প্রিয় ব্যাঞ্জন খেয়ে গণপরিবহনে উঠে সেসবের বর্ননা চারপাশে ছড়িয়ে দিতে চাইলেতো তাকে আর নিষেধ করা যাবে না 😜

এবার আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা বলি,

এক গরমের দুপুরে বাসে উঠেছি, মেয়েকে নিয়ে  নিউমার্কেট যাবো। একজন আঙ্কেল উঠলেন, হাতে ছাতা। বসলেন আমার সামনের সিটে। মেয়ে হঠাৎ চোখে হাত দিয়ে চোখমুখ ঢেকে নিলো! আমিতো অবাক! কি হলো দেখতে গিয়ে নিজের মাথার কোনে খেলাম খোঁচা! খোঁচা দিচ্ছে কে, দেখার জন্য সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি ছাতা আঙ্ককেল ছাতা মেলে বসে আছেন! হ্যালো, ও আঙ্কেল, আপনি বাসের মধ্যে ছাতা খুলে বসেছেন কেন? জিজ্ঞেস করতেই গম্ভীর জবাব এলো - জানালা দিয়ে রোঁদ আসে তাই..। আমি আজও ভেবে পাইনা তিনি জানালার রোদ ছাতা দিয়ে কীভাবে ঠেকিয়েছিলেন, ছাতা ছিল তার মাথায়!

আরেকবার বাসে যাচ্ছিলাম মামার বাড়ি। হেলপার বলেছিলো সিট আছে, কিন্তু গাড়িতে উঠে বুঝলাম হেলপার ছিলো মিথ্যুক। যাইহোক উঠে পরেছি নামতে পারছিলাম না, গাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলো। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই  গাড়ি ব্রেক করলো, আর আমি সাথে সাথে নিজেকে সিটে আবিষ্কার করলাম! এটা কীভাবে হলো!!! তাকিয়ে দেখি এক ঘুমন্ত যুবকের কোলেই সিট পাইসি! বেচারী অকস্মাৎ ভারী কিছু অনুভব করার সাথে সাথে চোখ মেলেছিলো। তারপর আমায় সিটখানা দান করে সোজা নেমে গেলো,, স্যরি থ্যাংকস কিছুই নিলো না, আজীবনের জন্য ঋণী করে এভাবেই প্রতিশোধ নিলো 🙁

সব সময় বাসে একা চড়ে ঘুরে বেড়াই তা নয়। কখনো প্রিয়জনের পাশেও বসা হয়। অল্প কথা, হাতে হাত রেখে, “ভাড়া আমি দেই? তুমি না” করতে করতেই গন্তব্য এসে যায়। তখন মনে হয় ঢাকার রাস্তায় যান-জট আরও বাড়ুক, আরও কিছু সময় থাকুক একান্ত আমাদের

 

 

* ছবি- নেট থেকে নেয়া।

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ