অনিচ্ছা সত্বেও আজ অফিসে যেতে হবে, গতকাল শনিবার ছিলো, অফিসে যাইনি, অনেকটা ইচ্ছা করেই যাইনি, আজ যেতেও হবে, যদিও বলেছি অসুস্থ, কিন্তু না গিয়ে উপায় নাই, অফিস থেকে বলা হয়েছে আজ একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং রয়েছে, যাতে আমি মিটিঙে এটেন্ড করেই বাসায় চলে আসি, যাওয়া টা বাধ্যতামূলক, অফিস থেকে গারি পাঠানো হয়েছে, মাথায় ভরপুর গাজার নেশা, গোসোল টা সেড়ে নিলাম, আজ ইচ্ছা করেই টাই বাধিনি, মাথার চুল ও উস্কোখুস্কো, অনেকটা উদ্ভ্রান্তের ন্যায়।
নিচেই গাড়ি টা পারকিং করা, কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে এটা শারমীনের গাড়ি, তবে কি?
ভাবতে ভাবতে গাড়ির সামনে এলাম, ড্রাইভার গেট খুলে দিলো, উঠে বসলাম, কিন্তু কোথায় যেনো ঘাপলা মনে হচ্ছে, এতক্ষন ঠিক ই ছিলো, গাড়িটা শাপলা চত্বর থেকে ডানে না গিয়ে ইউটারন নিয়ে উলটোপথে কেনো যাচ্ছে বুঝতে পারছিনা, হতে পারে নেশার আক্রমন, কিন্তু নেশার আক্রমণে যদি পথ ভুলে যাই তাহলে অফিস মিটিং-এ কি করবো? ভাবতে পারছিনা আমি। উচোখ বন্ধ করে রেখেছি যা আছে কপালে! কিন্তু শারমীনের চিন্তাও মাথায় চলে আসছে, আকস্মাত হার্ড ব্রেকে থমকে দাড়ালো গাড়ি, চোখ খুলেই দেখি ড্রাইভার উধাও, আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম এক্সিডেন্ট করলো কিনা, কিন্তু না, কোথাও কেউ এইদিকে দৌড়িয়ে আসছেনা, তাহলে? আমি কি স্বপ্ন দেখছি? নিজের গায়ে চিমটি কাটলাম নাহ আমি ঠিক ই আছি, জেগে আছি, পেট্রোল পোড়া গন্ধ পাচ্ছি, স্বপ্নের কোনো গন্ধ বা বর্ণ নেই, আমি জেগে আছি, ড্রাইভার আসলো, আমার পাশের গেট খুলে দিলো, আমাকে কি এইখানে নেমে যেতে হবে? শারমীন দাঁড়িয়ে আছে, দেখি ডান সাইডে চাপো, আমিও অফিসে যাবো, এই প্রথম শারমীন অফিসে যাচ্ছে মনে হয়, আমি কোনো কথা না বলেই ডানে চেপে বসলাম, আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি কোনো লোকাল বাসের কোনো সিট না পাওয়া নারীকে আমার আসন ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, অবস্থা বেগতিক, নার্ভাস আমি, নাকি গাজার নেশা তা পুরোপুরী বোধগম্য হচ্ছেনা, একদম সাইড চেপে বসে আছি, অথচ এই মেয়েটার সাথেই আমি এক রিক্সায় গাদাগাদি করে বসেছি, তবে আজ এমন লাগছে কেন? আমি কেনো আড়ষ্ট হয়ে যাচ্ছি!!!
এভাবে নিরিবিলি কতক্ষন বসে ছিলাম জানিনা, শারমীন ই আগে কথা বলে উঠে, কি ব্যাপার এতটা বিশ্রি দেখাচ্ছে কেনো তোমাকে? শরীর কি আসলেই খারাপ নাকি ভাব ধরেছো? চামে চিকনে গাজা কত টা খেয়েছো? চাকরী কি করবে? অন্তত অন্য চিন্তা বাদ দাও চাকরী কি করবে কিনা ভেবে দেখো, তোমার জানা উচিৎ যে তুমি হায়ার লেভেলে কাজ করো, এভাবে হয়না, তোমার একটা নির্দেশের অপেক্ষায় অফিসের লোকজন কাজ না করে বসে থাকে, তুমি যদি হেলামি করো তবে কি জব টা থাকবে? আমি হেসে চলেছি এক মনে আর ভাবছি অফিসের মালিক নিজেই তো আমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, আমার চাকরী যাবে কই, কি হলো কথা বলছো না কেনো? এবার কথা বলে উঠলাম আমি সত্যি অসুস্থ।
ওহ ভালো, তবে আজ আর অফিসে যেয়ে কাজ নাই, বাসায় চলে যাও। নাহ বললো যে জরুরী মিটিং আছে?
হ্যা আছে সেটা অফিসে নয় আমার সাথে।
এবার রীতীমত আমি বিস্মিত, যদিও অবাক হবার কিছুই ছিলোনা, আমি জানতাম যে, আমাকে শারমীন ই ডেকেছে, তা না হলে শারমীনের গারি অফিসের একজন সামান্য কর্মচারী কে লিফট দেয়ার জন্য না, অফিসের কর্মকর্তাদের জন্য ১৫ টা হায়েস আর ৪ টা প্রবোক্স আছে, প্যারাডোর কোনো প্রশ্নই আসেনা।
এখন কি করবে? আমার সাথে কথা বলতে পারবে? নাকি বাসায় যাবে?
জানিনা
এটা কেমন কথা? দেখো, আমি তোমাকে সেদিন কিছু একটা বলেছি, তুমি আমাকে না বলে দিতে পারো, তোমার ভালো লাগার মানুষ থাকতেই পারে, আরেকটা ব্যাপার আমি বা ততুমি কেউ কিন্তু ক্লাস ৯ এর বাচ্চা না, অতএব আমরা খোলাখুলি আলোচনা করতে পারি, আর সেটাই বেটার তাই নয় কি?
হুম
শুধু হ্যম হুম এইসব করবানা
আচ্ছা ঠিকয়াছে, চলো লেক পার্কে যাই, অইদিকে বসে কোথাও কথা বলি, সিক্রেটের কিছু ব্যাপার আছে
চলো।
লেক পার্কে আর যাওয়া হয়নি, বসে আছি জিয়া উদ্যানে, একটা নারকেল গাছ কেন্দ্র করে, আমার কাছে কেমন যেনো লাগছে আমি জানিনা, আর কি মনে করে শারমীনের প্রস্তাবে আজ রাজি হয়েছি তাও আমার অজানা
আজ ২০ ই ডীসেম্বর, একদিকে আমাদের বিবাহবার্ষিকী, অন্যদিকে বড় পুত্র নউশাদের জন্মদিন, খুব আনন্দ করেই দিন কাটছে আমাদের, আমার আর আমার ছেলের।
বিয়ের দিন বাবা গত হয়েছেন, বিয়ে করে বাসায় এসে শুনি বাবা হার্ট এট্যাক করেছেন, বাবাকে আর বাচাতে পারিনি, আফসোস বাবা জানলেন না তার ছেলে বিয়ে করেছিলো, আত্বহত্যা আর খুন কোনোটাই করা হয়নি আমার, বিয়ের দুবছরের মাথায় নউশাদ কে জন্ম দিতে গিয়ে এই দিনেই মারা যায় শারমীন, আজ পুত্রের ১৮ তম জন্মদিন, এই ওকে ঘিরেই বেচে আছি আজো, শারমীণের গ্রুপ অফ কোম্পানিজ এর একমাত্র মালিক নউশাদ।
ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমার মনের মাধুরী মিশানো সব কয়টা পর্ব ইচ্ছা করেই ডিলীট করে দিয়েছি, নিজের প্রতি বিরক্ত হবার পর একটা কাজ বাকী থাকে আর সেটা হচ্ছে নিজের ক্ষতি করা, যাযাবরের পর্ব দিয়েই শুরু করেছি, শেষ হবে কিনা জানিনা, তবে অমোঘের টানে শেষ তো হবেই আজ আর কাল । আমার হয়তো আর সোনেলায় আসা হবেনা, হয়তো কখনো বা কারো গল্প পড়ে কমেন্ট করে চলে যাবো, কিংবা করা হবেনা
প্রিয় ব্লগার দের নাম উল্লেখ করছি
লীলাবতি আপু
শুন্য শুন্যালয় আপু
জিসান ভাই
হেলাল ভাই
অলিভার ভাই
তাজ আপু
প্রহেলিকা আপু/ ভাই (জানিনা 😉 )
মিলটন ভাই
মামুন ভাই
এবং মনির হোসেন মমি ভাই আর যার নাম ইচ্ছা করেই সবার শেষে তিনি কৃষনমানব ভাই
সবাই ভালো থাকবেন
১০টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
কিছুই বলার নেই আসা যাওয়ার এই মঞ্চে, শুধু বলছি যেখানেই যান ভালো থাকুন অনেক অনেক, শুভকামনা থাকবেন সবসময়। দেখা হবে হয়তো আবারও কখনো হয়তো হবে না।
প্রহেলিকা আপু না ভাই সেটা জানার আগেই যখন যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তবে এটা না হয় অজানাই থাক, যদিও সবাই জানে।
যাইহোক ভালো থাকুক হৃদয়ের স্পন্দন, ভালো থাকুক যাযাবরে ডায়েরী।
জিসান শা ইকরাম
এই লেখার বিষয়ে মন্তব্য চলে গিয়েছে — যাযাবর পর্ব ডিলেট করার দিকে।
ব্লগে যে কাজটা আমার সবচেয়ে অপছন্দের তা হচ্ছে পোষ্ট ডিলেট করা।
আপনি একটি লেখা এখানে প্রকাশ করলেন – সে লেখাটি কি আপনার একার থাকে?
লেখাটি অনেক পাঠক পড়েন, বেশ কিছু পাঠক তা পড়েন।
আপনি লেখাটি লিখতে যত সময় ব্যয় করেছেন,তার চেয়ে বেশী সময় ব্যয় করেছেন পাঠক এবং যারা আপনার পোষ্টে মন্তব্য করেছেন তারা।
ওকে আপনি আপনার লেখা মুছে ফেলুন, যে পাঠক গন আপনার পোষ্টে মন্তব্য করেছেন, সে মন্তব্য মুছে ফেলার অধিকার কি আপনার আছে? যে আবেগ এবং চিন্তা দিয়ে পাঠক গন মন্তব্য করেছেন,তা আপনি ফিরিয়ে দিন।
লেখার সিদ্ধান্ত আপনার।
সোনেলা আপনার জন্য খোলা আছে সব সময়।
ভালো থাকুন
শুভ কামনা।
হৃদয়ের স্পন্দন
জিসান ভাই ব্লগ থেকে ডিলিট করিনি করেছি পিসিতে 8 এর পরে যে পর্ব লিখেছিলাম, ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলো এখন আমার নয় সহব্লগারদের, আপনাদের 🙂
জিসান শা ইকরাম
আমি ভেবেছি ব্লগ থেকে ডিলেট 🙂
শুন্য শুন্যালয়
একি কার উপর রাগ করে চলে যাচ্ছেন? সোনেলায় কেউ এলে তাকে স্বাগতম জানাই আমি, তবে কেউ চলে যেতে চাইলে তাকে বিদায় জানাইনা। বারবার ব্যস্ত ব্যস্ত বলে আপনাকে হয়তো চাপই দিয়েছি। যাই হোক। যাযাবরের ডায়েরী আমার পছন্দের সিরিজ, বলেছিও বেশ কএকবার। শেষ টা তাড়াহুড়ো করেই শেষ করলেন। চার পর্ব আপনার কাছেই না হয় রেখে দিন, ডিলিট করবেন কেনো?আমরা না পড়তে পারলেও আপনার কাছে থাকুক। ভালো থাকবেন সবসময়। সোনেলা সবার জন্যই সবসময় উন্মুখ। ফিরে আসবেন এ কামনা করছি।
মরুভূমির জলদস্যু
শুভ বিবাহবার্ষিকী -{@ -{@ ও আপনার ছেলের জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা -{@ -{@
সঞ্জয় কুমার
অভিমান ভুলে আবার ফিরে আসবেন এই কামনা করি । ভালো থাকবেন ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
চলে তো সবাইকে এক দিন যেতে হবে ।চলে যাওয়া অতি সহজ থেকে যাওয়াটাই কঠিন।শুভ কামনা যেখানেই থাকুন মনে রাখবেন এই সোনেলাকে, সোনেলার বন্ধুদের হৃদয়েই থাকবেন। -{@
লীলাবতী
সোনেলায় আর আসা হবেনা মানে কি? সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে ভালো লাগবে।
খেয়ালী মেয়ে
আপনিও ভালো থাকবেন 🙂