একদা নন্দু (নন্দলাল) করিল ভীষণ পণ, কস্মিন কালেও শুঁটকি মুখো সে আর হবে না, হোক না তা এক নং অরগানিক লইট্টা, আড়ালের আড়ির খবর হলো শুঁটকি বিরতি দিয়ে কাচা মাছের দিকে চোখ ফেলেছিল, শুঁটকিভূত নন্দুকে লাইনে আনার জন্য গলায় পা ফেলে সামান্য ফেনা সহ রক্ত তুলে ফেলেছিল, মাইরা হুতাইয়ালবাম বা কচুকাটা** করে ফেলব এবারে, বেপথু হলে যা হয় আরকি, প্রাণটি রক্ষা পেয়েছে নানান দোহাই, প্রচুর নাকে খত সহ বহু কিছুর দিব্যি ও মন্ত্রপাঠে। অবশ্য ভূতের লিঙ্গটি বহু চেষ্টা-চরিত্রি করে নির্ধারণ করাতে রাজি করানো যায়নি। জানা যায়নি আধঘোমটা-টানা ধিঙ্গী ভূতনীর ছলাকলার কাব্য।

বিশ্বশুঁটকিরান্না দিবসের শ্রেষ্ঠ শুঁটকি রানার রেসিপিটি এক বিশেষ গুপ্ত কৌশলে সাফল্যের সাথে হাতানো সম্ভব হয়েছে, খান্দানি শুঁটকিখোরদের জন্য (এলেবেলেরা বাদ) অবশ্যই উহা বিনিময় যোগ্য, সানন্দে,

রন্ধন প্রণালী........................

উপকরণ সমূহ,

#লইট্টা শুঁটকি ছোট ছোট করে কাটা পরিমাণ মত, (বারকয়েক গরম পানিতে সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে, (ব্যবহৃত পানি সাতঘাটের হলে ভাল হয়, একান্ত না পাওয়া গেলে, স্বচ্ছ পুকুরের পানি, রাতের দ্বিতীয় প্রহরে জ্বালানো পিদিম মাথায় রেখে জিভে কামড় দিয়ে পুকুর থেকে পানি তুলে নেভানো পিদিম হাতে আধা কলসি পানি না ঢেকে অতি দ্রুত ফিরে আসতে হবে)

#ঘানি ভাঙ্গা খাঁটি সরিষার তেল (কলুর বলদটি নিজে হতে পারলে সব থেকে ভাল),

#বড় পিয়াজ দেশী, নো হাইব্রিড (লম্বা করে চার টুকরো করে কেটে ভিতরের নরম অংশ চাকু দিয়ে তুলে আলাদা করে রাখতে হবে আস্ত, বাকী অংশ কুচি করে রাখতে হবে)

#রসুন আস্ত অনেকগুলি(খোসা ছাড়ানো)

#শুঁকনো লঙ্কা কিং সাইজ এক হালি,

#কাঁচা লঙ্কা (ভূতজালোকিয়া একান্ত না পেলে নাগা মরিচ হলেও চলবে, এটিও না পেলে ক্ষুদে মরিচ, এটিও কোন অপদার্থ হতভাগ্য শুঁটকিখোর জোগাড়যন্ত না করতে পারলে বাড়ইয়া মরিচ দিয়ে কাজ চালানো জায়েজ আছে)

#খাঁটি গব্য ঘৃত, (নিজের ঘরে তৈরি, তবে নিজ হস্তে দুধ দোহন করে নিতে পারলে অতি উত্তম, অন্যথায় দোহনে বিশেষ পারঙ্গম ব্যাক্তির সাহায্যও নেয়া যেতে পারে)

#কাজু বাদাম বেশ কয়েকটা, কাঁচা,

#এক টেবিল চামচ বাঘের দুধ, সদ্য দোয়ানো (ধোয়া ওঠা),

#সাদা গোলমরিচ (রং করা কিনা পরীক্ষা করে নিতে হবে),

রান্না......

ছোট ছোট করে কেটে গরম পানিতে বার দু’য়েক সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিতে হবে, এবারে তেল গরম হলে প্রথমে রসুন, একটু পরে কুচি করা পিয়াজ সামান্য লবণ ছিটিয়ে হালকা করে ভাজুন, এবারে শুঁটকি ও কাচা লঙ্কা দিয়ে নাড়তে থাকুন, একটু পরেই বেশ একটা ঘ্রাণ বের হবে, এরপর দু’চিমটি..................
হায় হায়!! বিনিময়ের ব্যাপারে তো রফা হয়নি, আসল জায়গা বলা হপে না। রান্না চলবে দরজা বন্ধ করে,

আসুন চেখে দেখুন,
সোনেলার সোনা পরিবেষ্টিত হয়ে সোনাময় পরিবেশে সোনা সোনা জপ করতে করতে সহি মনে খেতে বসলেন তাজিম সহকারে, রান্না করা শুঁটকির বাটির কাচের ঢাকনা তোলা হলো, ঘরময় ঘ্রাণ ছড়িয়ে পরতে শুরু করল, জ্বলজ্বল করে আপনিও তাকিয়ে আছেন, শুঁটকিও আপানর দিকে তাকিয়ে, আই টু আই কন্ট্যাক্ট, এরপর ঘোরগ্রস্ত হয়ে দু’জনে দু’জনার হয়ে খেতে শুরু করলেন, এরপর আর কিছু মনে নেই। এক সময় হাল্কা ধাতস্থ হয়ে আপনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন, বিকট দু’চোখ ঠিকরে বাইরে বের হয়ে ঝুলে আছে, জিভ ভেতর-বাহির করতেছে, চোখের পানি নাকের পানি জিভের পানি সহ আরও কিছু পানিতে মাখামাখি, এর সাথে হাউমাউখাউ টাইপ চাপা গোঙ্গানি, আরও শুঁটকি চাই, আরও চাই।

আগামী দু”দিন রান্না ঘরকে কেন্দ্র করে এ মম গন্ধটি থাকবে। তাই রান্নাঘর সংলগ্ন হলেই হাউমাউ টাইপ হামলে পড়া থেকে রক্ষা করতে দন্ডি কেটে রান্না ঘর অব্দি না পৌঁছুতে দেয়ার ব্যবস্থাও মজুদ রাখা আছে।

Warning……Don’t try it at home with or without ‘Sona Sai’ ‘sona ma’
and ‘sona kobi’....................

টোটকা,
সোনেলার সোনা বৃন্দরা শুঁটকিভূত তাড়ানোর জন্য অষ্টধাতুর তৈরি কবজ ধারণ করতেই
পারেন, করা উচিৎও, সোনা অঙ্গের তারকা চিহ্নিত দু’টি স্থানে অমাবস্যা পূর্ণিমার মিলন তিথিতে এটি গ্রহণ করলে শুঁটকি ভুত/ভূতনীর ওছওয়াছা থেকে নিশ্চিত মুক্তি।
(গুপনে যুগাযুগ বিধেয়, গ্যারান্টি সহ, বিফলে কিচ্ছু ফেরৎ হপে না)

**কচু+কাটা বিষয়টি তুলে রাখালাম।
নাহ, আজ আর তোলাতুলি নেই, সবই দিমু!!

কচু ও কাটা,
কাটতে বা কাটাকাটি করতে একধারী, দু’ধারী ও তে’ধারী তলোয়ার থেকে শুরু করে, ছুরি চাকু ছেনি বটি দা কুড়ুল ব্লেড থেকে রাম দা বা আশবটি ব্যবহার করা যেতে পারে অবস্থান ও অবস্থা ভেদে,
আমাদের কচুর আছে নানা কিসিম, মান কচু, পানি কচু, গুড়ি কচু, দুধ-মান কচু, ওল কচু, পঞ্চমুখী কচু, ঘটমান কচু ও বিষ কচু।
কচুর প্রায়োগিক ব্যবহার মোটা দাগে দু’টি, দ্বিবিধতা ছাড়াই,

প্রথমত, শান্তিকালীন ব্যবহার, (শুধুই নেয়া)
কচুর শাক রান্না, ভাজি ও ভর্তা যেভাবে খুশি খেতে পারেন, সলিড অংশ আনাজপাতি হিসাবে ভেজে ভর্তা বা মাংসে যথাযথ ব্যবহার করা যেতে পারে,

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধকালীন ব্যবহার, (শুধুই দেয়া)
শত্রুর নানান মুখে প্রবল বিক্রমে ম্যারাথন ভাবে দিতে থাকা, (বস্তুত স্পর্শকাতর স্থানে শুধুই বিষ কচুর যথার্থ প্রয়োগ)

আকুল আবেদন কেঁদেকেটে (গ্লিসারিণ).........

চলুন বিশ্বশুঁটকিরান্না দিবসে যোগদান করে চাখি ও চাখাই। সোনেলার সোনাদের ঝান্ডা ওড়াই,উড়ি!!

বিদ্রঃ তাবিজ সাথে রাখতে ভুল করবেন্না

....................................................................................

আবারও.........

শুঁটকি আসক্ত একজন শুঁটকি খাওয়া ছেড়ে দিয়ে সাধারণ মাছে ফিরে গেল, তাতে শুঁটকির ভূত রাতে আক্রমন করে প্রায় মেরে ফেলার উপক্রম করে, কোনক্রমে প্রাণ ফিরে পেয়ে আবার শুঁটকি খেতে শুরু করে।

একটি বিশেষ রেসিপি হ্যাক করে সেটি রান্না করে ও খায়, খাওয়ায়। আবার শুরু হয় শুঁটকিময় জীবন, ভুত/পেত্নীর নিয়ন্ত্রণে।

পরিত্রাণের জন্য তাবিজ।

ফান হিসাবে কচুর ব্যবহার।

0 Shares

৪২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ