পশ্চিমাকাশেঁ রক্তাভায় বুঝে নেন মা সন্ধ্যা হয়ে গেল সূর্য্যের কোন সন্দান পাচ্ছেন না।সূর্য্যকে ডাক্তাররা ক্ষত স্হানটি বেন্ডিস করে ছেড়ে দেন সেই কখন কিন্তু জখম হওয়া অভির সুস্হ্যতার খবর শুনতে অপেক্ষায় রত হাসপাতালে সূর্য্য।প্রচুর রক্ত খড়নে রক্ত শুন্যতা দেখা দেয় অভির দেহতে।রক্তের গ্রুপ AB+ হাসপাতালে নেই কখনই থাকে না এতো সরকারী হাসপাতাল!মোবাইলটা হাতে নিয়ে সূর্য্য ফেবুকে ডুকেন "AB+ রক্তের প্রয়োজন...এক জন মুমূর্ষ রোগীকে রক্ত দিন জীবন বাচান বেশ গুছিয়ে একটি পোষ্ট করেন ফেবুকের ওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই সাড়া পেলো এক জন রক্ত দাতার।রক্ত দাতা এক জন বেকার হতাশা গ্রহস্হ কমিউনিষ্ট পার্টির জগন্থাথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের উঠতি পাতি নেতা।রক্ত দিয়েই সে নীরবে চলে যাবে এটাই তার স্বভাব যাবার বেলায় কেউ তাকে দেখে না,অন্য এক জন সূর্য্যকে বলল।সূর্য্য তাই আগ থেকেই প্রস্ততি নিয়ে রেখেছিলেন।কিন্তু তাতেও কাজ হলো না রক্ত দাতাকে একটি বিস্কুটও খাওয়াতে পারলেন না সে করজোরে ক্ষমা চেয়ে চলে গেলেন।সূর্য্য রক্তদাতার মোবাইল নম্ভরটি সেইভ করে রাখলেন।এরই মধ্যে অভির এক ভাই এসে অভির পাশে দাড়ালে সূর্য্য বাসায় চলে যান।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগে ফেব্রুয়ারির থেকে শুরু হয় যুদ্ধপরাধী বিচারর ফাসি রায়ের পক্ষে। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল  ১৯৭১  সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামী আব্দুল কাদের মোল্লার  বিচারের রায় ঘোষণা করে। কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা, আলুব্দি গ্রামে ৩৪৪ জন মানুষ হত্যা সহ মোট ৬টি অপরাধের ৫টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। কিন্তু এতোগুলো হত্যা, ধর্ষণ, সর্বোপরী গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ মেনে নিতে পারেননি। রায়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকার শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে এবং এর অনুসরণে একসময় দেশটির অনেক স্থানেই সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।অথচ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায়।

যুদ্ধকালীন সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে একটি আইন তৈরি করা হয় যা ২০০৯ সালে কিছুটা সংশোধন করা হয়। এ আইনের আওতায় ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ এ সকল অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। ২০১৩ সালের ২১শে জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে আবুল কালাম আযাদ (বাচ্চু রাজাকার)-কে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

এই আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। শাহবাগ মোড় বা শাহবাগ চত্বরে বিপুল সংখ্যক মানুষের বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মানুষের সমাবেশের কারণে এই চত্বরকে অনেকে প্রজন্ম চত্বর বলে ডেকেছেন। এই চত্বরে নির্ঘুম রাত কাটান অনেকে। পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেছিল, পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে শহীদ জননী-খ্যাত লেখিকা ও সমাজকর্মী জাহানারা ইমাম এই সোহরাওয়ার্দি উদ্যানেই গণআদালতের মাধ্যমে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী বিচার করেন। প্রজন্ম চত্বর বা শাহবাগ চত্বর এই উদ্যানের বেশ কাছেই অবস্থিত।

সমাবেশে বিক্ষোভ ও আন্দোলনের উপায় হিসেবে আন্দোলনকারীরা বেছে নিয়েছিলেন স্লোগান, গান, কবিতা, নাটক ইত্যাদি। পোড়ানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের কুশপুত্তলিকা। আন্দোলনকারীদের দাবীগুলো ছিল- কাদের মোল্লাকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাসি প্রদান, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সকলকে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাসি প্রদানজামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান বয়কট করা

শাহবাগ থেকে টিএসসি-র মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু'পাশের দেয়ালে চারুকলার শিক্ষার্থীরা ছবি এঁকে জনতার সাথে সংহতি প্রকাশ করে এবং যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী কামনা করে। তারা বন্দি যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমমতিউর রহমান নিজামীআব্দুল কাদের মোল্লা সহ অনেকের ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন। তিরন্দাজ নামের একটি নাটকের দল অনৈতিহাসিক নামক একটি নাটক মঞ্চস্থ করে। কসাই কাদের মোল্লার ফাসি নিয়ে সরকার যখন নাটক করছিল তখনই গর্জে উঠে এই জনতা।অবশেষে দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার নাটক শেষে ১২ই ডিসেম্ভর ২০১৩ সালে ফাসির রায় দেন।

প্রায় সব রাজনৈতিক দল সংহতি প্রকাশ করলেও বিএনপি এ নিয়ে প্রথম দিকে কোনো মন্তব্য করে নি। তবে আন্দোলনের অষ্টম দিন, ১২ ফেব্রুয়ারিতে এসে বিএনপি শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান কারী তরুন সমাজ কে স্বাগতম জানায়। সাথে সাথে বিএনপি এই আন্দোলন দলীয়করণের আশঙ্কাও করে।

বাংলাদেশের আন্দোলনকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডায় ও অস্ট্রেলিয়াতেও আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। পৃথিবির বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রবাসীরা এই আন্দোনলের সাথে একাত্ততা জানায়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছত্রীগন "শাহাবাগ চত্বর" এর আদলে একত্রিত হয়।

প্রীতম আহমেদের কথা ও সুরে গানের তালে তালে জমিয়ে তোলেন শাহবাগ চত্ত্বর।
একাত্তরের হাতিয়ার
গর্জে উঠুক আরেকবার
রাজাকারের ফাঁসি হোক
শহীদরা পাক ন্যয় বিচার
ফাঁসি পাক রাজাকার
শহীদরা পাক ন্যয় বিচার
গন মিছিলে দামাল ছেলে মেয়ের দল
মুছিয়ে দেবে বিরাঙ্গনার চোখের জ্বল
এই প্রজন্ম গড়তে জানে জনস্রোত
নেবেই নেবে একাত্তরের প্রতিশোধ

শাহবাগের এই আন্দোলনকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংগীত শিল্পী কবীর সুমন, বাংলাদেশের শিল্পী প্রীতম আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রের পারমিতা মুমু , লস এঞ্জেলসের আল আমিন বাবু, ব্যান্ড চিরকুটসহ আরও অনেকে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে গান রচনা এবং প্রকাশ করেন।

সময় গড়িয়ে প্রবাহিত হয় নদীর মতন ভাটায় সন্ধ্যা লাগায় এ ভাবে কেটে যায় আরো বেশ কয়েকটি মাস।সূর্য্য অভি সমর একে অপরের সাথে দেখা হয় কথা হয় শুধু কথা হয় না তামান্নার সাথে।সে দিন সূর্য্যের বাসার ধারে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন ওরা তিন জন।তাদের আরো বেশ কিছু লোকজন ছিল যারা চা খাচ্ছে আর দাড়িয়ে দাড়িয়ে টিভিতে শাহবাগের প্রজম্ম চত্ত্বরের উপর খবর দেখছেন আর কয়েক জন ছিল বসে একটু স্হায়ীয় পাকনা মুরব্বী সাইজের তাদের হাতেও চায়ের কাপ কেউ চা শেষ করে কাপটি এক আঙ্গুলে ঝুলাচ্ছেন আর হা করে টিভির দিকে চেয়ে রহিয়াছেন কেউ বা চায়ে ফু দিয়েই যাচ্ছেন।এদের মাঝে এক জন শাহবাগ সম্পর্কে কটুক্তি করেন তাতে অন্যজনের খারাপ লাগার কারনে তর্কে জড়িয়ে যান।

প্রথম জন:কোন তো কাম কাজ নাই হুধাই বাপ মার টাকা খরচ করে ভার্সিটিতে গিয়ে নাচা নাচি করা।

অন্য এক জন কথা ধরে কথার জবাব দেন।

দ্বিতীয় জন:কি কইলেন মুরুব্বি আপনি জানেন ওরা কতো কষ্ট করছে দিন রাত খেয়ে না খেয়ে রজাকারদের ফাসি চাচ্ছে ওরা আমাদের গর্ব।

আরেক জন বলে উঠল।

প্রথম জন:আরে রাখেন মিয়া গর্বো,কম্পিউটারে কি সব লেখা জোকা করেই দেশ স্বাধীন কইরা লাইব,,, এত্তো সহজ।

দ্বিতীয় জন:ঠিক বলেছেন এত সহজ না.....দেশের অলি গলিতে এমন কি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়,বিচার ব্যাবস্হায় কিংবা প্রশাসনে ছেয়ে গেছে রাজাকারের বংশ ধর।

তৃতীয় জন-তো এখন কি করবেন?সব গুলাকে ব্রাস ফায়ার করে মেরে ফেলবেন!....যত সব আজগুবি চিন্তা ভাবনা।নতুন প্রজম্মকে সহযোগিতা করতে না চাইলোও ওদের সাহস দিন।ওদের সম্পর্কে কোন কটুকথা বলার আগে আপনারারা যারা স্বাধীনতার উত্তাল ভয়ংকরতা দেখেছেন কিন্তু যুদ্ধ করেননি এবং যুদ্ধে সহযোগিও হননি...আপনাদের ঋণ শোধের সময় এসেছে .....বড় কিছু করতে না পারুন অন্ততঃ হুমায়ুন আহম্মেদ স্যারের মতন শুধু বলুন......তুই রাজাকার...তুই রাজাকার।

চা স্টলের তর্কে না জড়িয়ে সূর্য্যের মোবাইলে সেভ করা নম্বরে অভিকে রক্ত দান করা সেই মহৎ ব্যাক্তিটিকে ফোন দিলেন।কিছুক্ষণের মধ্যে ওপার থেকে ভেসে এলো তার জবাব।ওপাশের প্রচুর মানুষের হৈ চৈয়ের শব্দে তেমন কিছুই বুঝতে পারছেন না সূর্য্য।শুধু এই টুকুই বুঝলেন  "আমি শাহবাগ জনতার মঞ্চে আছি....এখানে এসে ফোন দিলে আমি দেখা করব।

তাহারা একটি রিক্সায় তিনজন উঠেন।রিক্সাওলা প্রথমে তিন জন দেখে চালাতে অপরাগতা স্বীকার করেন।যখন শুনলেন শাহবাগ যাবে তখন আর না করলেন না মনের আনন্দে তাদের রিক্সায় তুলে গলা ছেড়ে গাইতে লাগলেন.....মা গো ভাবনা কেনো কোথায় তোমার মুক্তি সেনার দল...গান শেষ হলে রিক্সা শাহবাগ প্রজম্ম চত্ত্বরে গিয়ে থামেন।সূর্য্যরা রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিতে চাইলেন কিন্তু সে ভাড়া নিচ্ছেন না।

-কি রে ভাই,ভাড়া নিবেন না কেনো?

-এখানে যারা আসেন তাগো ভাড়া আমরা নেই না এডা আমাগো রাজাকার মারার সামন্য উপহার।

রিক্সাওয়ালা গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না কিন্তু ওরা সে দিন যেই ত্যাগ করেছিল সেই ত্যাগের সামান্যতম আমাদের বুদ্ধিজীবিরা করলে পুরাতন ইস্যু নিয়ে দেশে আজ নতুন প্রজম্মদের মাঠে নামতে হতো না।

প্রজম্মের ঋণ শোধ০৯                                                                                                                                                     সহযোগিতায়:উইকিপিয়া এবং অনলাইন

0 Shares

৩৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ