প্রিয় অনির্বাণ,

কেমন আছো তুমি? এই প্রশ্নটা করাই বোকামী জানি, তবুও করলাম বলে নিশ্চয়ই ভাবছো! মাথাটা বোধহয় একেবারে গেছে। যাওয়ারই তো কথা বলো। এই অসভ্য দেশে জন্ম নিয়ে তাও কিনা নারী হয়ে, মাথা ঠিক থাকার কথা কি! যে দেশের প্রধানমন্ত্রী সয়ং নারী সে দেশের নারীদের মাংসপিণ্ড, রক্ত, শরীর এমনকি যোনি নিয়ে হোলি খেলা হয়, উল্লাস করা হয় বিভৎস হায়নাদের মতো আর এসব দেখে নিশ্চয়ই মাথা খারাপ হবার কথা। নারীর সন্মান রক্ষার্থে যদি এমন একটা কঠোর ব্যবস্থা গ্ৰহন করতো যে ব্যবস্থার কথা শুনেই শিউরে উঠলো ধর্ষকের শরীর, কেঁপে উঠতো হৃৎপিণ্ড তবে এই জঘন্যতম অপরাধ চোখের সামনে দেখতে হতো না কোনোদিন।

 

জানো অনির্বাণ ইদানিং বড্ড ভয় হচ্ছে। প্রচণ্ড ভয়ে ঘুম নিয়েছে নির্বাসিত জীবন বেছে। বেচারা ঘুমেরই বা কী দোষ বলো? জানোয়ার গুলো যখন প্রকাশ্য দিবালোকে অমন নৃশংস আচরণ করে আর সেটা দেখার পর ঘুম পালিয়ে বাঁচতে চাইবে সেটাই তো স্বাভাবিক তাই না বলো? মানুষের মতো দেখতে মানুষরূপী উগ্র হিংস্র প্রাণীকে আজ কাল ভীষণ ভয় করে। ইচ্ছে করে একটা বদ্ধ খোলসের মধ্যে গুটিয়ে ফেলি নিজেকে। শামুক  যেমন করে  বিপদের আভাস পেলেই লুকিয়ে পড়ে খোলসে।

 

আচ্ছা অনির্বাণ, নারী হয়ে জন্ম নেওয়াটাই কী আমাদের আজন্ম পাপ? এই অসভ্য বর্বর দেশে আমাদের কেনো শুধু নারী হিসেবে দেখা হয়?কেনো ভাবা হয় আমরা শুধু ভোগের বস্তু? কেনো একজন মানুষ হিসেবে মানুষের মর্যাদা পাবো না আমরা? কী করেছি এমন যার জন্য আমাদের প্রতি এতো এতো হিংস্র আচরণ? এই প্রশ্নগুলো মস্তিষ্কে জেঁকে বসেছে আমার, কিছুতেই এক মুহূর্তের জন্য স্বস্তি দিচ্ছে না আমায়। এই সব নৃশংসতা থেকে পরিত্রাণ কী পাবো না আমরা? কারো মা, কারো বোন, কারো কন্যা, কারো প্রিয়তমা হওয়ার সন্মান পাবো না?

যে নারীর গর্ভে নারীর রক্ত খেয়ে একটু একটুক করে বেড়ে উঠে জন্ম নেয়, যে নারী দুগ্ধ খেয়ে বড় হয় সেই নারীর সাথে এমন নিকৃষ্ট আচরণ কী করে করতে পারে ওরা, তুমি কী জানো অনির্বাণ?

ছবি-ফেইসবুক থেকে নেওয়া

0 Shares

৩৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ