মাঝে মধ্যেই রুচি পরিবর্তনের প্রয়োজন হইয়া পড়ে, এ কারনে সেকালে ভগ্নস্বাস্থ্য উদ্ধার ও অগ্নিমন্দা থেকে রক্ষা পাইবার আশায় কেউ কেউ বায়ু পরিবর্তনের জন্য দক্ষিণে যাইতেন আর একালের মানুষ তাদের ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করিবার জন্য ডানে ছোটেন, বামে যান, গদি অথবা পয়সার লোভে রীতি-নীতির বালাই নেই যত্রতত্র পাত পাড়িয়া বসেন। ক্ষমতার বায়ু যেদিকে প্রবাহিত হয়, দলে দলে ভগ্নস্বাস্থ্যের রুগিরা সেদিকেই হুড়মুড় করিয়া ঝাঁপিয়া পড়েন। উন্নাসিক শ্রেণীর যে রুগিরা মরিব তবু নড়িব না বলিয়া গাঁট বাঁধিয়া গোঁ ধরিয়া বসিয়া থাকেন, তাহাদের জন্য যে খুব বেশি আফসোস কেউ করে এমনটি খুব কমই শোনা যায়। এসব শ্রেণীর লোকেরা শেষ কালে বাত ব্যাথায় ভুগিয়া মরে, অথবা না পাবার ব্যাথায় কাঁদিতে কোঁকাতে থাকে। সংসারের জন্য বহুত কিছু করিয়া শেষ কালে সবার কাছে অপাংতেয় সাব্যস্ত হইয়াছেন বলিয়া আফসোস করিয়া প্রাণ পাত করেন কিন্তু সংসারের হাল যাহাদের মুঠোর মধ্যে তারা ইহাতে খুব বেশি নজর করেন বলিয়া বোধ হয় না।

 

গনতান্ত্রিকভাবে গঠিত এবং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ পরিক্রমা অতিবাহিত করে এক সময় একটি সুস্থির দেশের গনতান্ত্রিক অবকাঠামো তৈরি করিতে পারে। মতগত বিভেদ থাকা সত্ত্বেও গনমানুষের লক্ষ্য পুরনের অভিপ্সা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাধন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সমুন্নত করনে রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে একটি দেশ গঠনে সচেষ্ট হবে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এটাই সর্বজনস্বীকৃত সার্বজনীন দাবী। দেশের মানুষের আকাঙ্খা উপলব্ধি করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেটার পরিস্ফুরন ঘটানো একটা গণতান্ত্রিক সরকারের কর্তব্য। পাশাপাশি দেশের এবং মানুষের মঙ্গল কামনায় একটা বিরোধী দলের কর্তব্য হল সরকারী কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক সমালোচনা ও সহযোগিতা করা। সরকারের একনায়কতন্ত্রসুলভ কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করিতে গিয়া বিরোধী দল যদি স্বৈরাচারী আচরনমুলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হইয়া পড়ে অথবা বেয়াড়া বিরোধীদল আইন-গণতন্ত্রের ধার না ধারিয়া স্বেচ্ছাচারিতামূলক যাচ্ছেতাই করিতে থাকে তখন সেটার ফল যে কিরুপ মারাত্মক ভয়াবহ হইয়া উঠিতে পারে হালে তাহার ভুরি ভুরি প্রমান আমরা হাতেনাতেই পাইয়াছি।

 

দিন দিন মানুষ সরকার এবং বিরোধী পক্ষের এরুপ ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড দেখিয়া ক্ষিপ্ত এবং বিভ্রান্ত হইয়া পড়িতেছে। স্বভাবত, একপক্ষের সমর্থন কমিয়া গেলে অন্যপক্ষের সমর্থন বাড়িয়া যাইবার কথা, কিন্তু মোদ্দা কথা হইতেছে এক্ষেত্রে এরুপ ভাব পরিলক্ষিত হইতেছে না বরং স্পষ্ট দেখা যাইতেছে দু’দলের-ই সমর্থন আশঙ্কাজনক হারে কমিয়া যাইতেছে। কাহারো মধ্যে গণতান্ত্রিক মনোভাব না খাকিবার কারনে অথবা উভয়-ই দেশের মানুষকে তুর্কি-নাচ নাচাইতেছে ভাবিয়া মানুষ অনেকটা বীতশ্রদ্ধ হইয়া তাহাদের নিকট হইতে মুখ ফিরাইয়া লইতেছে। সতকরা হিসেবে তাদের ভাগে যে বরাদ্দ ভোটার ছিল তা তো কমিয়াছেই উপরন্ত ভাসমান যে ভোটাররা ঝোপ বুঝিয়া কোপ মারিবার তালে থাকিতো তাহারাও শেষ পর্যন্ত নীরবতা ভাঙ্গিয়া প্রকাশ্যে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সমালোচনা করিতেছে। পর্যবেক্ষণে লক্ষ্য করা যায়, সরকার তাহার সমর্থন হারাইতেছে এবং বিরোধীদল তাহাদের আস্থা হারাইতেছে।

 

তাহা হইলে এই জনগনগুলো আস্থা খুঁজিতেছে কোথায়? তাহারা কি তৃতীয় শক্তির উত্থান সম্পর্কে কিছু ভাবিয়া রাখিয়াছে?

 

গনজাগরন মঞ্চ ফ্লপ খাইবার পূর্বে মানুষের মাঝে জাগরনের যে অভূতপূর্ব আলোড়নে সারাদেশ জাগিয়া উঠিয়াছিল তাহা স্তিমিত হইবার কারণ কি? বিবাদমান পক্ষ বিপক্ষের চুলচেরা বিশ্লেষণে ইহার নানা দিক উঠিয়া আসিয়াছে। সত্যমিথ্যার বাছবিচারে না গিয়া সোজা কথায় যাহা বোঝা গিয়াছে তাহা হইলো তাহারা কোন না কোন ভাবে আত্মপ্রচার, স্বার্থশিদ্ধি, দলীয় এজেণ্ডা বাস্তবায়ন ইত্যকার নানাবিষয়কে মুখ্য করিয়া আন্দোলন করিয়াছে। সাধারন জনগনের যে বিশাল সমাবেশ তাহা বাঙ্গালীর নাকের ডগায় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি এবং একাত্তরের চেতনা বাস্তবায়নের মুলা ঝুলিয়ে একটা বৃহৎ আন্দোলন ঘনাইয়া তুলিবার চেস্টা মাত্র এবং তাহাদের পারস্পারিক স্বার্থমুলে আঘাত আসিবার পর তাহারা বিবাদে লিপ্ত হইয়াছেন বুঝিতে পারিয়া হতোদ্যম বাঙ্গালীরা পরবর্তীতে তাহাদের নিকট হইতে মুখ ফিরাইয়া লইয়াছেন তাহা আজকের মঞ্চের কার্যক্রম লক্ষ্য করিলেই বুঝিয়ে পারা যাইতেছে।তৃতীয় শক্তির উত্থানের যে সমুহসম্ভাবনা, তাহা সৃষ্টির প্রাক্কালেই ধূলিসাৎ হইয়া গিয়াছে।

 

এখনো অনেকেই তৃতীয় শক্তির উত্থানের ব্যপারে ব্যাপক আশাবাদী। আশাবাদী হইবার জন্যও অনেক কারণ রহিয়াছে, তার মধ্যে প্রধান কারণ হইতেছে প্রচলিত দলগুলির প্রতি সাধারন গনমানুষের বিমুখতা। পরিপক্ক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর অভাব, প্রচলিত আইন ব্যবস্থা, ক্ষমতাসীন দলগুলোর ব্যপক লুটপাট, বিরোধীদলের দায়িত্ব পালনে অনিহা ইত্যাদি নানা নিয়ামকের প্রভাবে মানুষ শেষ পর্যন্ত অন্য কোথাও মুখ লুকাতে চাইবেন সেটাই স্বাভাবিক। তৃতীয় শক্তির অঙ্কুরোদগমটাও এভাবেই হইয়া থাকে।

 

মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড, ভারতের কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির উত্থান এ দেশের সাধারন মানুষের মনে যে আশার সঞ্চার করিয়াছিল সেটার বিচ্ছুরণ ঘটিয়াছিল গনমানুষের গনজাগরনে। তারা ভাবিতে শুরু করিয়াছিল যে এ দেশেও এ রকম একটি শক্তির উত্থান হইলে হাফ ছাড়িয়া বাঁচা যাইতে পারে। ক্ষণস্থায়ী ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই মিশর এবং ভারতে তাহার অসারতা প্রমাণ হইয়াছে, বাংলাদেশে তাহার অসারতা প্রমাণের সুযোগ ঘটিয়া উঠিবার ফুসরতটুকু পায় নাই।

একটি দেশের সামগ্রিক প্রতিনিধিত্ব করিবার জন্য হুট করিয়া গজিয়া ওঠা একটি অরাজনৈতিক শক্তি দীর্ঘকালীন মেয়াদে সুষ্ঠভাবে দেশ পরিচালনা করিতে পারিয়াছে তাহার নজীর নাই। এ ধরনের শক্তি অঙ্কুরোদগমমাত্রই পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাবে মরিয়া যায়, যদিওবা কোনটা শেষ পর্যন্ত টিকিয়া যায় তবে তাহা কোন কালেই বিশাল বৃক্ষে পরিনত হইবার সুযোগ পায় না, রুগ্ন জঙ্গল রুপে ধুঁকিয়া ধুঁকিয়া শেষ পর্যন্ত টিকিয়া থাকিবার প্রচেষ্টা করে মাত্র।

 

যাহারা ভাবিয়াছেন, বাংলাদেশে তৃতীয় শক্তির উত্থান কেবল সময়ের ব্যপারমাত্র তাহারা হয় উজবুক শ্রেণির হইবেন নতুবা তাহারা রাজনৈতিক জ্ঞানের বিষয়ে নির্লিপ্ত হইবেন বলিয়াই আশঙ্কা করা যাইতে পারে। ছোট বড় দলগুলোর মধ্য হইতে যদিও বা কাহারো কাহারো ক্ষমতার স্বাদ পাইবার সুযোগ হইতে পারে তথাপিও আনকোরা আনাড়ি কোন লোকের পক্ষে তৃতীয় মোর্চা গঠন করিয়া ক্ষমতায় আরোহণ করিবার প্রত্যাশা শুধু অসম্ভবই নয় অলীক-ও বটে। দেশের বৃহৎ দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি করা ছোট ছোট দলগুলোর জন্য টিকিয়া থাকিবার স্বার্থে অবশ্যম্ভাবী হইয়া পড়িয়াছে, তৃতীয় শক্তির আগমনে ইহারাও খুব খুশি হইবেন বলিয়া আশা করা উচিত নয়।

 

এ দেশে কেন, পৃথিবীর কোন দেশেই অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তির উত্থান কাম্য হইতে পারে না। তৃতীয় শক্তির উত্থান বস্তুত একটি দেশের সর্বনাশ ডাকিয়া আনিতে পারে, স্বল্প সময়ের পরিসরে দীর্ঘকালীন অনিরাময়যোগ্য ক্ষতের সৃষ্টি করিতে পারে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু এবং রাজনৈতিকভাবে খোঁড়া করিয়া দিতে পারে। যাহারা এ দেশের পরীক্ষিত রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে অন্য কোন শক্তির উত্থানের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা মুলত তাদের নিজেদের মৃত্যুক্ষনের-ই অপেক্ষায় থাকেন।

 

শুরু থেকে শেষাবধী এ অপেক্ষা থাকবেই!

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

  • জিসান শা ইকরাম

    মানুষ কিছু স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে । যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এমন একটি স্বপ্ন মানুষের । এ বিষয়ে হতাস জাতি ছুটে গিয়েছিলো শাহাবাগ । কোন নেতার আহ্বানে নয় । স্বপ্নের বাস্তবায়নে আমিও হাজির এই প্রেরনা থেকে। এই স্বপ্ন দেখা মানুষের সংখ্যা কম নয় কিন্তু । দিনের পর দিন তারা থেকেছে শাহাবাগে । এদের মাঝে সব দলের সমর্থক ছিলো । বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি তারা সম্পুর্ন আস্থাবান নন । একটি স্বপ্ন তাদের মিলিত করেছিলো। এই স্বপ্নই একটি শক্তি । অযোগ্য নেতৃত্বের কারনে যে স্বপ্নের অপমৃত্যু হয়েছে ।

    তৃতীয় শক্তি আসার কোন সম্ভাবনা নেই দেশে । তাই বলে একটা পরিবর্তন চায়না মানুষ এমন ভাবা ভুল হবে । মন্দের ভালো নিয়ে সন্তষ্ট থাকতে হচ্ছে আমাদের । কে কম মন্দ – এই বিচার করছি আমরা । কে বেশী ভালো – তা হিসেব করছি না ।

    স্বাগতম সোনেলায় ।
    ব্লগীয় একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।

    • একজন আইজুদ্দিন

      “তৃতীয় শক্তি আসার কোন সম্ভাবনা নেই দেশে । তাই বলে একটা পরিবর্তন চায়না মানুষ এমন ভাবা ভুল হবে । মন্দের ভালো নিয়ে সন্তষ্ট থাকতে হচ্ছে আমাদের । কে কম মন্দ – এই বিচার করছি আমরা । কে বেশী ভালো – তা হিসেব করছি না ।”

      আপনার এই কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
      পড়ার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন রইল।

  • আজিম

    দেশের ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান এদেশে আপাততঃ সম্ভব নয়, সে-বিষয়ে আপনার সাথে একমত।
    ভারতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি ব্যর্থ হয়ে গেছে, এটা বলবার সময় এখনও আসেনি, কখনও হয়ত আসবেওনা। কারন ওটা চলমান এক প্রক্রিয়া এবং ভারতের জনগনের মধ্যে পার্টিটি এক ধরনের প্রভাবও ফেলেছে। ভোটের রাজনীতিতে একেবারেই হেরে গেছে, সেটা তাদের দিল্লীর মূখ্যমন্ত্রীত্ব ত্যাগের কারনে এবং এবারের মোদী-ঝড়ের কারনে।
    প্রবন্ধটি লিখছেন কি তৃতীয় শক্তির স্বপ্ন যারা দেখে, তাদেরকে উজবুক বলে গালি দেয়ার জন্য? আপনার কোন সমাধানের উদ্যোগ তো চোখে পড়লনা!
    ধন্যবাদ।

    • একজন আইজুদ্দিন

      “প্রবন্ধটি লিখছেন কি তৃতীয় শক্তির স্বপ্ন যারা দেখে, তাদেরকে উজবুক বলে গালি দেয়ার জন্য? ”

      ভাই, আপনি নিশ্চয় অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তি এবং রাজনৈতিক তৃতীয় মোর্চা-কে এক করে ফেলেন নি। আমি অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তির ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গে বলেছি,বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই সেটাই বলতে চেয়েছি।

      সময় করে ব্লগটি পড়ার জন্য আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন রইল।

      • আজিম

        অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তি কীভাবে ক্ষমতায় আসবে? রাজনৈতিকভাবে তারা তো কোন নির্বাচন করবেনা। ক্ষমতায় আসবে তাহলে কীভাবে? এখানে তাদের ক্ষমতায় আসার কোন সুযোগ নাই, সেটা বলা নিষ্প্রয়োজন।
        আর ভবিষ্যতে এদেশে রাজনীতিতে তোলপাড় তুলে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করি। আর তাই তো রাজনৈতিক ব্লগ পড়তেই হয়।
        ধন্যবাদ।

  • ছাইরাছ হেলাল

    প্রান্তিক মানুষ হিসাবে ন্যূন্যতম মৌলিক চাহিদার ক্রম বাস্তবায়ন চাই , বুলি সর্বস্বতায় নয় ।
    তৃতীয় , চতুর্থ বা পঞ্চম আমাদের মত সাধারণের বোধগম্যের বাইরে । ক্ষমতার পালাবদলের সুবাতাস মোটেই
    প্রয়োজনীয় নয় এখানে ।

    • একজন আইজুদ্দিন

      চাপ প্রয়োগে সকল সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করি না। বরং, একটি সরকারের সকল পদক্ষেপ যে সঠিক হবে না তা মাথায় রেখে ন্যায্যতা-র ভিত্তিতে সেটার পরিমার্জনে উৎসাহ প্রদান এবং জনমত গঠন করা যেতে পারে। আশা করি, দ্বি-পাক্ষিক সহমর্মিতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার স্বদিচ্ছা একদিন না একদিন এদেশে প্রতিষ্ঠা পাবেই।

      আপনাকে ধন্যবাদ।

  • আজিজুল ইসলাম

    জনাব ‘একজন আইজুদ্দিন’, চাপ প্রয়োগ-ই আমাদের দেশের এখনকার রাজনৈতিক সমস্যার একমাত্র সমাধান বলে আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি। তবে সেই চাপ কী সরকার মেনে নেবে এতো সহজে? না, তার জন্য সংগঠিত হতে হবে এবং আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েই যেতে হবে অবিরামভাবে।না হলে কিছুই হবেনা।
    সংগঠিত হতে হবে দু’টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে- (১) এই সংগঠন কোনদিন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোন চেষ্টা করবেনা কখনও; আর (২) দুর্নতিবাজ অথবা এ-বিষয়ক সন্দেহভাজন কোন ব্যক্তি এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেনা, এবং এমনকি ফাইন্যান্সারও নয়।
    তবেই গণমানুষের আস্থা সৃষ্টিতে সফল হবে এই সংগঠন এবং সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। নতুবা কিছুই হবেনা বলে আমার বিশ্বাস।
    ধন্যবাদ ব্লগার ‘অজানা এক পথে চলা’-কে বিষয়টার অবতারণা করার জন্য।
    এই ব্লগে অতি ক্ষুদ্র এক ব্লগার আমি; আমার লিখাগুলি, বিশেষত: ”সুশাসনের সন্ধানে” পড়ার জন্য আহ্বান জানাই।

    • একজন আইজুদ্দিন

      ” সংগঠিত হতে হবে দু’টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে- (১) এই সংগঠন কোনদিন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোন চেষ্টা করবেনা কখনও; আর (২) দুর্নতিবাজ অথবা এ-বিষয়ক সন্দেহভাজন কোন ব্যক্তি এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেনা, এবং এমনকি ফাইন্যান্সারও নয়”

      কথায় বলে, সে সাত মন ঘী পুড়বে না আর রাধাও নাচবে না। ক্ষমতার লিপ্সা আমাদের মজ্জাগত, দুর্নীতি আমাদের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসে, সন্দেহবাদীতা আমাদের ঐতিহ্য। অর্থ এবং ক্ষমতা-র হাতছানি না থাকলে আমাদের পক্ষে একত্র হওয়া প্রায় অসম্ভব।

      চাপ প্রয়োগের বিষয়ে আমার উপরের মন্তব্যটি আশা করি লক্ষ্য করেছেন।

      ধন্যবাদ, আপনার উত্তরোত্তর সহযোগিতা কামনা করি।

  • আজিজুল ইসলাম

    আচ্ছা ‘একজন আইজুদ্দিন’ ভাই, ধরুন একখানে কোন অফিসে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে । সেখানে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করে দেয়া কি উচিৎ হবেনা? শুরু করলে কঞ সেখানকার স্কুল-কলেজের বিশাল ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নিয়ে প্রতিরোধ কি গড়ে তোলা যায়না? একখানে টেন্ডারবাজী হচ্ছে, সেখানকার অধিকাংশ বঞ্চিত কন্ট্রাক্টরগনকে নিয়ে বিষয়টা প্রতিরোধ করার, কমপক্ষে চেষ্টাও কি শুরু করা যায়না? বিষয়গলিকে কতদিন আর আমরা চ্যালেঞ্জহীনভাবে ছেড়ে দেব? ডগুলি কি সমাজে আজীবনকাল ধরে চলতেই থাকবে? আমার ‘গল্প কিন্তু গল্প নয়’ গল্পটা পড়তে আহ্বান জানাই। আমি এটা আমার পান্ডিত্ব জাহিরের জন্য বলছিনা। এজন্য বলছি যে, ওখানে দেখা যাবে কিছু সরকারী ব্যক্তি গোপনে হলেও এই আন্দোলনকারী দলের পক্ষে কাজ করছে, এটা জনাব আইজুদ্দিনের উপরের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বললাম। মানে শুরু করলে কিন্তু হোল, এর ব্যপ্তি অবশ্যই বাড়বে যতক্ষন এর আদর্শ
    সমুন্নত থাকবে।
    অর্থ আর ক্ষমতা, এটাই যে বর্তমানে সব, উনার এই মতের সাথে একমত পোষণ করেও বলি, ওরকম আন্দেলন-সংগ্রামের (অবশ্যই অহিংস হবে এই আন্দোলন-সংগ্রাম) তোড়ে সকল অন্যায় ভেসে যাবে। স্রোত যত বাড়ানো যাবে, স্রোতের তোড়ও ততো শক্তিশালী হবে।
    স্রোত শুরু হলেই সেই স্রোতে অসংখ্য গণমানুষের অংশগ্রহন শুরু হবে। গণজাগরণ মঞ্চও তো শুরু হয়েছিল অল্প কয়েকজনের ইন্সপিরেশনে, পরে না এটা বড় হোল। তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত জনাব আনু মুহাম্মদদের আন্দোলন, এসমস্ত আন্দোলনকে আপনি অফলপ্রসু বলতে পারবেননা। উদ্দেশ্য যত বড়, এবং কার্যক্রম যত সচল, ফলটাও ওটার উপরই নির্ভ রশীল।
    এভাবেই বিষয়গুলো আমাদের দেখা দরকার বলে মনে করি।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ