কিছু অন্তর্নিহিত কারনে সরকার পতনের আন্দোলন ছাড়া বি এন পি’র গত্যন্তর নাই।
শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম, সহনশীল আন্দোলন, সম্মিলিত পারস্পারিক সহবস্থান থেকে সরকারের বিরুদ্ধে একটি গ্রহণযোগ্য বিরোধী পক্ষ তৈরি করা এই মুহূর্তে বি এন পি’র পক্ষে সহজ নয়। যে যে নিয়ামকের ভিত্তিতে একটি ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা যায়, সে রকম কোন ইস্যু নিয়ে বাজিমাত করে সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য করার মতো সাংগঠনিক শক্তি এবং জনমত কোনটাই বি এন পি’র নেই। আপাত দৃষ্টিতে বি এন পি’ও সেটা যে জানে এবং অন্তঃকরণে মানে তার পূর্বাভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নানামুখী চাপ এবং খোদ নিজের দলের মধ্য থেকে কিছু অন্তর্বর্তী বিষয়ের টানাপড়েন বি এন পি’কে দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন সংগ্রামে নিরুৎসাহিত করছে। তারচে বরং আন্দোলনের মাধ্যমে যত দ্রুত সরকারকে উৎখাত করা যায় তার নীল নকশা প্রণয়ন এবং সেটার আশু প্রয়োগের ব্যাপারেই বি এন পিঁ’র উচ্চমহলের চাপটা ক্রমাগত বাড়ছে। বি এন পি’র নীতিনিদ্ধারক মহল এবং বিদেশি চাপের কারনে বি এন পি’র হাইকমান্ড তাই এখন একদফায় সরব হয়ে উঠছেন।
একদফাঃ সরকার পতন বা উৎখাত।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে বি এন পি’র এই আন্দোলন সংগ্রামকে গনমানুশের দাবী বলে দেখানোর চেষ্টা করা হলেও এটা মুলত তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বলেই ধরে নেওয়া যায়। এটার কিছু সুস্পষ্ট লক্ষন এবং চিত্র দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জনগন বুঝতে শুরু করেছে যে এই আন্দোলনে মুলত তৃনমূল জনসাধারনের কোন স্বার্থ রক্ষা হবেনা বরং বি এন পি এবং তাদের নেতা কর্মীদের স্বার্থ শিদ্ধির জন্য তাদেরকেই পথে প্রান্তরে রাজনীতির বলি হতে হবে। এ কারনেই সমাবেশ বক্তৃতায় বিপুল জনসমাগম হলেও রাজপথের আন্দোলনে বি এন পি’র নেতা কর্মী এবং সাধারন মানুষের সে রকম সাড়া খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটা বি এন পি’র উচ্চতর মহল বুঝতে পারছেন বলেই এখন তাদের একদফা দাবী সরকার উৎখাত এবং যেকোনো মূল্যে জাতীয়তাবাদী শক্তি’র ক্ষমতায়ন।
কি কি কারনে এই মুহূর্তেই বি এন পি’র সরকারকে উৎখাত করা জরুরী?
০১. দলীয় দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারি
বি এনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়টি মামলা চলছে এবং বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে বিগত ২০১১ সালের ৮ অগাস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদের করা দুইটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। তেজগাঁও থানার এ মামলায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে। এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়। এ মামলাটি যে গতিতে চলছে তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি রায় আসতে পারে এবং তাতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে সেটা বিএনপির রাজনীতিতে যে প্রভাব ফেলবে সেটা অপূরণীয়। এদিক থেকে বিএনপিও চাইচে যেন রায় দেওয়ার আগেই এই সরকারকে উৎখাত করে বিচারটিকে বন্ধ করা যায়।
পনের সালের পাঁচ জানুয়ারি’র যে নাটক মঞ্চস্থ হল সেটার আড়ালে যে এই কোর্ট হাজিরা’র একটা প্রছন্ন খেলা ছিল সেটা যাদের চোখ-কান খোলা তারা সহজেই অনুমান করতে পারবেন। অবরোধ করে খালেদাকে গৃহে অন্তরীণ করে রেখে আদালতে হাজিরা দিতে দেওয়া হয়নি বলেও বি এন পিঁর কিছু নেতা কর্মীরা আকার ইঙ্গিতে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, খালেদা জিয়া এই মামলায় বেশ কয়েকবার শুনানীতে উপস্থিত না হয়ে তার আইনজীবীদের মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেছিলেন, এইবার ঠিক কি কারনে তার আদালতে হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল সেটাও একটা ধোঁয়াশা বটে!
০২. যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে দলীয় অবস্থান
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু এবং রায় কার্যকর হওয়ার প্রথম থেকেই জোটের অন্যতম শরিক দল জামাতে ইসলামী’ এবং জোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের কঠোর এবং কঠিন সমালোচনার মুখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিএনপির দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। প্রকাশ্য সমর্থন করে নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো আত্মঘাতী শিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন সম্ভবপর হচ্ছে না তেমনি মুখ বুজে সহ্য করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ কারনে বিএনপি’র নীতিনির্ধারক মহল যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে এখন পর্যন্ত তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন নি। ফাশি’র আদেশ অথবা একশ বছরের কারাদণ্ড প্রদানে তাদের আনুষ্ঠানিক কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি। মৌন থাকার এই শিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে পড়েন জোটের অন্যতম শরিক দল জামাতের নেতৃবৃন্দ আর এ কারনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে তাদের বক্তব্য না পাওয়া গেলেও খোদ ট্রাইবুনাল সম্পর্কে তারা রকম প্রশ্ন উত্থাপন করে জামাতকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন যে, তারা ক্ষমতায় এলে ট্রাইবুনালের দেওয়া সমস্ত রায় বাতিল করে জামাতের নেতাদের মুক্ত করে দেবেন। দীর্ঘ একবছর তাদের এই মুলো ঝুলিয়ে রাখার পরও কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর এবং অন্যান্য নেতাদের ফাঁসির জন্য অপেক্ষামান তালিকা দেখা ছাড়া জামাত বিএনপি’র কাছ থেকে বেশি কিছু পায়নি। এখন, খালেদার কানে জামাতের লাস্ট ওয়ার্নিং বাজছে, সরকার পতন ছাড়া তার অন্য বিকল্প নেই।
০৩. নেতৃত্ব নির্বাচনে অদক্ষতা ও অযোগ্যতা
আজ হোক অথবা কাল, বিএনপির প্রধান আসন থেকে খালেদা জিয়াকে সরে দাঁড়াতেই হবে, রেখে যেতে হবে একজন যোগ্য উত্তরসূরি যিনি শক্তহাতে আগামীর বিএনপিকে একটি শক্তিশালী গন্তব্যে টেনে নিয়ে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে, তারেক জিয়া ছাড়া বি এনপির কাণ্ডারি হওয়ার যোগ্যতা অন্য কেউ রাখেন বলে খালেদা জিয়া বিশ্বাস করেন না। আবার, খোদ বিএনপির সিনিয়র নেতারাও তারেক জিয়ার মধ্যে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর ছায়া দেখতে পান। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানা রকম মামলা থাকার কারনে তিনি এখন দেশেই ফিরতে পারছেন না, এদিকে খালেদা জিয়াও হয়তো তার ছেলেকে সবকিছু গুছিয়ে দিয়ে অবসরে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। তাই, যেকোনো মূল্যে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা জরুরী বলে মনে করছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। তারেক রহমানের মাথায় হুলিয়া নিয়ে দেশে ফেরা মানে আত্মঘাতী শিদ্ধান্ত, এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে তার শেষ ঠিকানা জেল এটা তারা ভাল করেই জানেন। একারনেই সরকার উৎখাত করে একটি জাতীয়তাবাদী চেতনার সরকার কায়েম করা এই মুহূর্তে আবশ্যক বলে মনে করছেন বিশদলীয় জোট, একদফা দাবী এ কারনেই। এছাড়া নিজের ছেলেকে সুদূর লন্ডনে রেখে অন্যের ছেলেকে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে ঠেলে দেওয়াটা কতখানি যুক্তিসঙ্গত, এ প্রশ্নও উঠছে বোদ্ধামহলে। লন্ডনে বসে প্রেস ব্রিফিং করে দেশকে অচল করে দেওয়ার আহবানে তাই আর কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তাদের দলের তৃনমূল নেতারা, তারা চাচ্ছেন তারেক রহমান নিজে এসে তার বিরুদ্ধে আনিত সকল হামলা মামলা প্রতিহত করুক, একজন দেশপ্রেমিক অকুতোভয় সৈনিকের এতে এতো ভয় কেন বলেও তারা উপহাস বিদ্রূপ করতে ছাড়ছেন না।
০৪. আন্তর্জাতিক এবং আভ্যন্তরীণ চাপ
জামাতে ইসলামীর জঙ্গি কানেকশান এবং একইসাথে আমেরিকাপন্থী রাজনীতির কারনে বিএনপি কোণঠাসা। জামাতের পাকিস্তানপ্রীতি, পাকিস্তানের আমেরিকা প্রীতি সর্বজনবিদিত। একারনে বিশ্বমোড়ল আমেরিকা সহ আমেরিকাপন্থি সকল মানবাধিকার সংগঠনগুলো ক্রমাগত বিএনপিকে চাপ প্রয়োগ করছে। দেশে জামাতের চাপ অন্যদিকে জামাত সমর্থক অন্যান্য আন্তর্জাতিক চাপের কাছে বিএনপি ক্রমাগত প্রশ্নের সম্মুখিন হচ্ছে বিধায় এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আশু পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া বিএনপির সামনে অন্য রাস্তা খোলা নাই। জামাতে ইসলাম কোটি ডলার ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের লবিস্ট নিয়োগ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, বিশ্বের অন্যান্য ক্ষমতাধর দেশ এবং ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতে এবং আওয়ামীবিরোধী জনমত গড়ে তুলতে তারা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতো কিছুতেও শঙ্কা তাদের পিছু ছাড়ছে না দেখে তারাও মরিয়া হয়ে যেকোনো প্রকারে এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এক পাক্ষিক আন্দোলন দেশে অরাজকতা এবং দল সম্পর্কে দেশের মানুষের নেতিবাচক মনভাব তৈরি হতে পারে বিধায় জামাতে ইসলাম তাদের দায়ভার বিএনপির কাঁধে চাপিয়ে ফায়দা লুটতে চাইছে। বিএনপিকে দিয়ে প্রকাশ্য আন্দোলন অবরোধ এবং এই আন্দোলন অবরোধে জঙ্গি স্টাইলে জামাতের খুন জখম অগ্নিসংযোগ জ্বালাও পোড়াও করে এই সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ক্ষমতাচ্যুত করার যে ফিকির তার পূর্বাভাস সরকারের গোচরে আসার কারনেই এই পাঁচ জানুয়ারির অবরোধ নাটক যা মঞ্চস্থ হওয়ার আগেই পুরো ফ্লপ হয় গেছে। জামাতকে রক্ষা করতে হলে বিএনপিকে অবশ্যই সরকারকে উৎখাত করতেই হবে, নাহলে যে জামাত অদুর ভবিষ্যতে বুমেরাং হয়ে তাদেরকেই আঘাত করবে না সেটা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না। এ ছাড়া, সরকার গঠন করতে জামাতের পাঁচ পারসেন্ট ভোট ব্যাঙ্ক নিজের হাতে রাখতেও বদ্ধপরিকর বিএনপি’র ঊর্ধ্বতন নেতা’রা, তারাও জামাতকে চটাতে চাইছেন না। অতীতের ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যায়, জামাতের রাজনৈতিক আদর্শ যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো দিকে হেলে পড়তে পারে তাই যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি প্রদানে বিলম্বিকরন এবং তাদের বিষয়ে অপেক্ষাকৃত নমনীয় মনোভাবের মুচলেকায় জামাত যে বিএনপি’র সঙ্গ ছেড়ে যেকোনো মুহূর্তে যে কারো সাথে আঁতাত করতে পারে, সেটা বিশ্বাস করা বিএনপি’র জন্য কঠিন কিছু নয়। তাই বি এন পি’র নিজের অস্তিত্ব রক্ষা এবং একই সাথে জামাতের অস্তিত্ব রক্ষা করা এক সুতোয় গাঁথা একটি মীমাংসিত ইস্যু হিসেবে তারা মনে করছে। এই প্রশ্নে, বিএনপি জামাতকে ধরে রাখার সর্বত চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেই নিঃসন্দেহে ধরে নেওয়া যায়। আর জামাতকে ধরে রাখতে চাইলে এই মুহূর্তে সরকার উৎখাতের আন্দোলন করা ছাড়া বিএনপির সামনে গত্যন্তর নেই।
০৫. মিঃ টেন পারসেন্ট প্রসঙ্গ
খালেদা জিয়ার দুই সন্তানের মধ্যে তারেক রহমান লন্ডনে বসে রাজনীতি করলেও অন্য ছেলে কোকো আরাফাত রাজনীতির সাথে মোটেও জড়িত নয়। কেন অন্য ছেলের মতো তাকে রাজনীতিতে নামানো হলনা এ সম্পর্কে নানা রকম কটু কথা বাতাসে চাউর থাকলেও এটা মোটামুটি প্রায় নিশ্চিত যে যত রকম কথায় বলা হোক না কেন, রাজনীতিতে নামার সম্ভাবনা তার একেবারেই নেই। খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীন থাকাকালীন সময়ে তার দুই ছেলেই সীমাহীন অর্থ কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গনভবনের আদলে তৈরি হওয়া হাওয়া ভবনের কথা তখন মুখে মুখে গুঞ্জরিত হতো। সেই হাওয়া ভবনের মুল কাজ ছিল “কমিশন এজেন্ট” হিসেবে সরকারী কর্মকাণ্ড গুলোর মধ্য তৃতীয় পক্ষ হয়ে ওকালতি করে টেন পারসেন্ট কমিশন আদায় করা। তারেক এবং কোকো ছিলেন এর মুল হোতা, আর মুল সহযোগী ছিলেন গিয়াস আল মামুন এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফুজ্জামান বাবর। দুর্নীতি অর্থ এবং অস্ত্র কেলেঙ্কারি মামলায় এরা দুজন কারাগারে বন্দি থাকলেও তারেক রহমান লন্ডনে পালিয়ে যান আর কোকো কোথায় তা দেশবাসি দূরে থাকুক, খোদ বিএনপি’র নেতা কর্মীরাও জানেন না।
কোকোর বিরুদ্ধে অর্থ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন আছে, সিঙ্গাপুরে পাচার করা কিছু অর্থ এই সরকার ফিরিয়েও নিয়ে এসেছেন। খালেদা জিয়া’র দুই পুত্রের সীমাহীন দুর্নীতিও বিএনপি’র রাজনীতিকে তৃনমূল পর্যায়ে প্রচণ্ডরকম প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। খালেদার বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, অর্থ আত্মসাৎ মামলা এবং তারেক রহমান ও কোকোর বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারি মামলার রায় হলে এঁদের যে কারো জেল হতে পারে। এ থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য সরকার উৎখাত করা ছাড়া আপাতত অন্য কোন উপায় নাই।
এক নজরে খালেদা জিয়া, তার পরিবার ও দলের অন্যান্য নেতা কর্মীদের উপর দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, মানহানি, হামলা ও অন্যান্য কেলেঙ্কারির মামলা সমুহঃ
ক. বিএনপিচেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলাঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলার মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বিচারাধীন। শীঘ্রই এ দুই মামলার রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে উচ্চ আদালতে স্থগিত থাকা নাইকো দুর্নীতি মামলাও নতুন করে উজ্জীবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২২টি মামলার মধ্যে ছয়টি বিচারাধীন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তারেক রহমানও অন্যতম আসামি। মানহানির এক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বেগম জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে এক মামলায় ছয় বছর সশ্রম কারাদণ্ডও ঘোষণা করা হয়েছে। মামলা রয়েছে বেগম জিয়ার পুত্রবধূ জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধেও। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ মামলা : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি, গ্যাটকো দুর্নীতি, বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি ও নাইকো দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বিচারাধীন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলায় খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে ২০১০ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুদক। গত বছর ১৬ জানুয়ারি দুদক খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। মামলাটির অভিযোগপত্র ১৫ জানুয়ারি আমলে নিয়েছেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য গ্যাটকো লিমিটেডকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রের ১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগে খালেদা জিয়া ও আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ঠিকাদারি কাজে ক্ষমতার অপব্যবহার ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি শাহবাগ থানায় মামলা করে দুদক। নাইকো রিসোর্স কোম্পানিকে অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক।
খ. তারেকেরবিরুদ্ধে ২২ মামলা :
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি বিচারাধীন। এগুলো হল- জিয়া অরফানেজ স্ট্রাস্ট মামলা, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দুই মামলা, এনবিআরের করা এক মামলা ও মানহানির দুই মামলা। মানহানির একটি মামলায় লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারমান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ১৯ অক্টোবর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের অভিযোগে করা হয় একটি মামলা। এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক রহমান তার লিখিত বইয়ে ‘জিয়াউর রহমান- ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট অব বাংলাদেশ’ লিখে মিথ্যা, কাল্পনিক ও ভুল তথ্য উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তারেকের বিরুদ্ধে রয়েছে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা দুটি মামলা। বর্তমান সরকারের আমলে এ দুটি মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র তারেক রহমানকে আসামি করা হয়। পরে তাকে পলাতক দেখিয়ে ২১ আগস্ট-সংক্রান্ত দুটি মামলার বিচারকাজ চলছে। সিআইডির দেওয়া সম্পূরক অভিযোগপত্রে তারেক রহমান ছাড়াও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, খালেদা জিযার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউকসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেক রহমানকে আসামি করা হয়েছে। ড্যান্ডি ডায়িংয়ের ঋণ খেলাপের অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২ অক্টোবর ৪৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে সোনালী ব্যাঙ্কের মতিঝিল শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মামলা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে। বাদী হয়ে মামলাটি করেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেন। এ ছাড়া কাফরুল থানার পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি, দুদক বাদী হয়ে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাফরুল থানায় আরও একটি মামলা করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর করে আয়কর ফাঁকির অভিযোগে আরও একটি মামলা। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেফতারের পর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে আটটি চাঁদাবাজির মামলা। ২০০৭ সালে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মামলাগুলো করা হয়। দুদক ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে।
গ. কোকোরবিরুদ্ধে সাত মামলা :
সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকার বেশি অর্থের অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ কাফরুল থানায় আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী মরহুম আকবর হোসেনের ছেলে সায়মন হোসেনকে আসামি করা হয়। ২০১১ সালের ২৩ জুন এ মামলার রায় হয়। তাতে পলাতক দেখিয়ে আরাফাত রহমান কোকোকে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। কোকো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জামিন নিয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যান। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। কোকোর বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১০ সালের ১ মার্চ এনবিআর একটি মামলা করে। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোকোর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি চাঁদাবাজির মামলা করা হয়। তারপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক একটি মামলা করে। সোনালী ব্যাংকের ঋণখেলাপি মামলায় বড় ভাই তারেক রহমানের সঙ্গে কোকোও আসামি। গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় মায়ের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আরাফাত রহমান কোকোকে।
ঘ. মামলারপাহাড় :
মামলার ভারে ন্যুব্জ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের হাজার হাজার নেতা-কর্মী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও রয়েছেন এই দলে। ৬৩ মামলায় মীর্জা ফখরুলকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি মামলা বিচারাধীন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মামলায় তিনি পাঁচ দফা জেলও খেটেছেন। গত দুই বছরে সারা দেশে সহিংসতার অভিযোগে ৯ হাজারের বেশি মামলা হয়। এর মধ্যে শুধু ঢাকায়ই মামলা হয় চার হাজারের বেশি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এম মোর্শেদ খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, সাদেক হোসেন খোকা, শমসের মবিন চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, বরকতউল্লা বুলু, মোহাম্মদ শাজহাজান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, রুহুল কবীর রিজভীসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে।
এই তথ্য বেশ কিছু দিন আগে প্রকাশিত পত্রিকা হতে সংগৃহীত, এ সময়ের মধ্যে আরও কিছু মামলা তাদের নামের সাথে যুক্ত হয়েছে এবং অদুর ভবিষ্যতে মামলা আরো বাড়তে থাকবেই বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এই রকম নাজুক পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার কর্তব্য কর্ম কি হতে পারে? দল বাঁচাতে, ছেলেদের বাঁচাতে, নেতা কর্মীদের বাঁচাতে, বিশদলের ঐক্য অখণ্ড রাখতে, আন্তর্জাতিক লবিং অটুট রাখতে এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা ছাড়া অন্য বিকল্প রাস্তা খোলা নাই।
এ যুদ্ধে তাকে জিততেই হবে না হলে সম্মুখে যে ঘোর অন্ধকার সেটা কে না জানে?
২০টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
খুব ভালো বিশ্লেষণ করেছেন।
একজন আইজুদ্দিন
মতামত প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আজিম
আসলেই খুব ভাল বিশ্লেষন করছেন। খুবই গোছানো।
আওয়ামী লীগেরও কী কারনে বিএনপির এই আন্দোলন (?) না ঠেকিয়ে উপায় নাই, সেটারও গোছানো বিশ্লেষন আছে আপনার কাছে।
সম্ভব হলে এখানে দিবেন।
একজন আইজুদ্দিন
মতামত প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অবশ্যই আপনার কথা মাথায় রাখব।
খুব দ্রুত আওয়ামীলীগের অবস্থান নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী ব্লগ লেখার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
সাইদ মিলটন
দারুন বিশ্লেষন , বর্তমান পরিস্থিতে সম্পর্কে যে কেউ পরিষ্কার একটা ধারনা পাবে লেখাটা পড়লেই 🙂
একজন আইজুদ্দিন
মন্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যতটা সম্ভব তথ্য উপাত্ত দিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি, সবাই যদি বিএনপির সাম্প্রতিক কার্যকারণ লেখাটি পড়ে অনুধাবন করতে পারেন তাহলে আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে ধরে নেবো।
আমার অভিনন্দন গ্রহন করুন।
সঞ্জয় কুমার
সুন্দর বিশ্লেষণ । । খুবই সমসাময়িক লেখা । ।
একজন আইজুদ্দিন
মন্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আজিজুল ইসলাম
বিশ্লেষন সঠিক আছে। তবে সঠিক পথে না গিয়ে বিএনপি যে ষড়যন্ত্রের পথে গিয়েছে, সেটা সমর্থণযোগ্য মোটেই নয়, যেখানে পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ মেরে ফেলা হচ্ছে নৃশংসভাবে।
দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করার মুরোদ নাই, বরং জঙ্গী লালন করে যেদল, অতি শীগ্রই তারা মুসলিম লীগের মতো হয়ে যাবে এভাবে চললে। একেবারে প্রত্যাখ্যাত হয়ে যাবে দেশের মানুষের কাছ থেকে।
নিজেদের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যেদল ষড়যন্ত্র করে, মানুষের সাথে প্রতারণা করে, তাদের অবস্থা অবশ্যই শোচনীয় হতে বাধ্য।
একজন আইজুদ্দিন
মন্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
একটি দলের ইথিক্স না থাকলে সেটা একসময়ে নিশ্চিহ্ন হতে বাধ্য। বিএনপি’র এই আন্দোলন যৌক্তিক হলে অবশ্যই গনমানুশের সম্পৃক্ততা থাকত। এটা বিএনপি’র নিজস্ব আন্দোলন নয়, এটা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার নিমিত্তে একটি সার্বভৌম দেশের সংবিধানের উপর আক্রমণ। যেখানে জামাতে ইসলাম এই দেশের গনতন্ত্রকেই ব্রিদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েম করার হুমকি দ্যায় সেখানে তাদের রক্ষার আন্দোলনে বিএনপি’র এই অবরোধ আন্দলনে সাধারন মানুষ মাঠে নামবে না এইটা স্বাভাবিক। আর এটা বিএনপি”ও খুব ভাল করে জানে বিধায় তারা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা তাদের অস্তিত্বের লড়াই, এ লড়াইয়ে তারা অচিরেই শক্তিহীন হয়ে জামাতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে। একসময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে জামাতে ইসলামের তাঁবেদারি করতে বাধ্য হবে। এটা জামাতের কুট চালের অংশ, এতে জামাত প্রকারান্তরে জয়ী হবে এবং বিএনপি তাদের লেজুড়বৃত্তি করতে বাধ্য হবে যেটার লক্ষণসমুহ এখনই সাধারন মানুষের মানশপটে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছে। বিএনপি গ্যাঁড়াকলে পড়ে গেছে, উপায় নাই গোলাম হোসেন!
আজিজুল ইসলাম
একটু ডিফার করি জনাব একজন আইজুদ্দিন, জামাতের শক্তি নাই বিএনপিকে গিলে খাওয়ার। বিএনপি আপনাআপনি অনেক কমজোরি হয়ে পড়বে, গণমানুষের হৃদয় থেকে একেবারে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে ঐ যে বললেন ইথিক্স নেই, কোন নীতি নাই এজন্যে।
আওয়ামী লীগের শক্ত ইথিক্স থাকলে জামাত আর বিএনপি দু’টো দলেরই জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হতে এত সময় লাগতোনা।
আওয়ামী লীগের এটা-ই রাজনীতি হওয়া উচিৎ ছিল, দুর্ভাগ্য আমাদের। আমার রাজনীতির হালচালে এটাই বলতে চেয়েছি আমি।
একজন আইজুদ্দিন
“”জামাতের শক্তি নাই বিএনপিকে গিলে খাওয়ার। ”
সাপ’কে নিশ্চয় কোনকিছু গিলতে দেখেছেন। ও রকমটাই হয়!
প্রজন্ম ৭১
সঠিক লিখেছেন।এত ভালো একটি লেখা দিয়ে লেখক যদি আর না আসেন লেখায়,পাঠকগন উপেক্ষিত ভাবেন নিজকে।
একজন আইজুদ্দিন
মতামত প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
না না ভাই, আমি অবশ্যই আপনাদের সাথেই আছি এবং থাকবো ইনশাল্লাহ।
আপনাদের সহযোগিতা এবং সুচিন্তিত মতামতের জন্য যেকোনো লেখক পোস্টে আসতে বাধ্য।
আপনারা আছেন বলেই তো আজো সোনেলা টিকে আছে, আর আমরাও দুএকটা লেখা দিয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পাঠককে উপেক্ষা করে, এ রকম শক্তি লেখকের কোথায়? একজন লেখকের প্রধান চালিকাশক্তি তার পাঠক। পাঠক মাত্রই লেখকের নমস্য, আমার আন্তরিক অভিনন্দন গ্রহন করুন।
ব্লগার সজীব
সঠিক সময়ে সঠিক পোষ্ট (y)
একজন আইজুদ্দিন
পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
জনাব আইজুদ্দিন, আপনাকে এই বিশ্লেষণের জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। আপনি বিএনপির ও জামাতের একটি সিজার করেছেন। বিএনপির কোন পথ নাই। বিএনপির উচিত ছিল আগামী নিরবাচন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকা। তবে বিএনপি একদিন জামাতের ভিতর বিলীন হত কারন জামাত এক্ষেত্রে কোন ছাড় দিবেনা।
বিএনপি দুর্নীতি করেছে সত্য আঃলীগ করছেনা বলতে পারবেন্না।
তবে বিএনপি জা করছে তা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট ধরাশায়ী কৈশলে। তবে বরতমানে খুব সাবধানে এগুতে হবে আঃলীগকে পা ফসকালে বিপদ। বরতমান পরিস্থিতি খুব নাজুক। কে কখন উল্টাবে বলা খুব মুস্কিল। কোন সুযোগ দেয়া যাবেনা বিএনপিকে।
একজন আইজুদ্দিন
আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঐতিহ্যগত ভাবেই আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কোন না কোনভাবে দুর্নীতির সাথে কমবেশি জড়িত, আওয়ামীলীগ এর বাইরে নয়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের দেখতে হয় যে, কোন দলের পাল্লায় দুর্নীতির পরিমানটা তুলনামুলকভাবে কম। এ ক্ষেত্রে বিএনপি’র চেয়ে আওয়ামীলীগের পাল্লাটা একটু খানি কম বলে মানুষ এখনও আওয়ামীলীগের বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি। আর উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি আলোচনায় আসে ক্ষমতা থেকে সরে যাবার পর, সেটা জানতে চাইলে আমাদেরকে মনে হয় আরো বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।
কৌশলগত দিক থেকেও বিএনপি আওয়ামীলীগের কাছে দুগ্ধপোষ্য, মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামীলীগকে ছাপিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা বিএনপি এখনও করায়ত্ত করতে পারেনি। এ কারনেই তাদের প্রত্যেকটি অপকৌশল পদে পদে মাঠে মারা যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ দীর্ঘ সংগ্রাম আন্দোলনের পথ হেঁটে ক্ষমতায় এসেছে, বিএনপিকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা।
মোঃ মজিবর রহমান
বিএনপির আন্দলনে সাধারন মানুষ মাঠে নাম্বেনা কারন আঃ লীগ জা করছে বিএনপি তাঁর চেয়ে বেশি দেশে ধ্বংসাত্মক কাজে করবে।
একজন আইজুদ্দিন
………. এবং বিএনপি আন্দোলন অবরোধের নামে যত বেশি জ্বালাও পোড়াও করবে, সাধারন মানুষ ততই তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। সাধারন মানুষ কোন কালেই এ ধরনের সহিংশতাকে প্রশ্রয় দেয়নি, দেবেও না।