কেনো লিখি

সাদিক মোহাম্মদ ১৯ মে ২০১৪, সোমবার, ১০:৫৭:০১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৮ মন্তব্য

কেনো লিখি ?
প্রশ্নটি একাধারে জটিল আর অদ্ভুত। এ জাতীয় অনেক জিজ্ঞাসাই আমার কাছে আজও অমীমাংসিত। যেমন- ফুল কেনো গন্ধ ছড়ায়, পরিযায়ী ডানা ক্লান্তি বয়ে কেনো গন্তব্যে ফেরে, কেনোইবা সন্ধ্যাকাশে অগণিত তারাফুল ফোটে...
এসব জানতে চাওয়ার বিপরীতে বহুবিধ ব্যাখ্যা হয়, হতে পারে, নির্দিষ্ট জবাব আছে কি?
পৃথিবীতে এসে ক’দিনের শিশু কেনো তার শিক্ষক ও অভিভাবকের সার্বক্ষণিক চোখরাঙানি উপেক্ষা করে অংক খাতায় গোপনে এঁকে যায়- ফুল, পাখি, নদী, ডোরেমন অথবা স্পাইডারম্যান। আমারইবা বৃষ্টিতে কেনো প্রতিবার টিনের ঘরেই আশ্রয় পেতে চায় মন। পুরনো ফ্যানের গলা ফাটানো চিৎকার যে ঘুমের অনিন্দ্য সিম্ফনি- তাতো হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি নতুন পাখার নিচে, জেগে থেকে দীর্ঘরাত। একি শুধুই মায়া, নিতান্ত আসক্তি, অভ্যস্ততা ? প্রগাঢ় ভালোলাগার ছিটেফোঁটা নেই!
একদিন উচ্ছন্ন বিকেলে বাতাসে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেই - ‘গোধূলিরাঙা মেয়ে; কী নাম গো তোমার’? মেয়েটি ইনিয়ে-বিনিয়ে সঙ্গীদের চোখ এড়িয়ে এসে দাঁড়ায় কৃষ্ণচূড়ার তলে। তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে কাণ্ডে এঁকে দেয় গভীর তিনটি হরফ। সে সরে যেতেই- আমি উৎসুক দর্শকের মতো নিরবে এগিয়ে যাই। বিমুগ্ধ বিস্ময়ে চেয়ে দেখি তিন বর্ণের পঙক্তিতে অনবদ্য অপরূপ কবিতা- ‘লা-য়-লা’! এবং নিশ্চিতভাবে জেনে যাই প্রকাশের নান্দনিক ঐশ্বর্যমণ্ডিত রূপটির নাম...
এমনও বলতে শুনি- এটি একধরনের অলস কালক্ষেপণ, অন্তর্মুখী আড়াল, ম্যানিয়া, এডিকসন। আবার এওতো হতে পারে- কবিতাই বুকের গহীনে উত্থিত নিগূঢ় বেদনার উপশম, ক্লান্তির সুষম প্রলেপ, নিঃসঙ্গ রাতের জাম, বন্ধুর পথের পাথেয়...
যে যাই বলুক। যা হয় হোক; আমার কিছুই এসে যায় না। আমি স্বপ্ন দেখি নিছক দেখার লোভেও। কবিতা লিখি- লেখার তৃপ্তিতে।

0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ