ওরা কারা ?

এস.জেড বাবু ২ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার, ১০:০৪:৩৬অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৮ মন্তব্য

আমি একাত্তর দেখিনি,
দেখিনি হানাদারের বর্বরতা, নৃশংসতা,
আমি দেখিনি ২৫শে মার্চের কালো রাত,
বেয়নেটের খোঁচায় রক্তাক্ত দেহটির ভয়ার্ত শেষ নি:শ্বাস ।

দেখিনি মা-বোনের আঁচল ধরে টানছে রাজাকার,
দেখিনি হায়েনার চোখে- কোন খাকি পোষাকধারী,
দেখিনি অন্ধকার রাতে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে কোন মুক্তিযাদ্ধার ঘর,
দেখিনি নদীতীরের বটগাছে উল্টো করে ঝোলানো বস্ত্রহীন লাশ।

দেখিনি কচুরিপানা মাথায়, জলে ডুবে থেকে আমার ভাইয়ের রাতভর শত্রুর জন্য অপেক্ষা -

আমিতো লাল সবুজের পতাকা উড়তে দেখেছি ,
ক্লাশের আগে প্রথম ভালবাসার গান আমার সোনার বাংলা গাইতে শিখেছি ।
মাসব্যাপী মহড়ার শেষে যুদ্ধের মঞ্চনাটকে পারফর্ম করেছি,
নিন্দা করেছি হানাদার, রাজাকার।
ভালোবেসেছি মুক্তি যোদ্ধা, শ্রদ্ধাঞ্জলী দিয়েছি শহীদ মিনারে,
কেঁদেছি মঞ্চনাটকে নির্যাতীতের ভয়ার্ত আর্ত চিৎকার শুনে।

সেভাবেই আমি বুঝতে শিখেছি হানাদার কারা !
উপলব্ধি করেছি স্বাধীনতার উপরিপাওনা,
সংজ্ঞাটা জেনেছি- স্বাধীনতার ।

তবে চৌকশ গরীব ছাত্রটির স্বাধীনতা কই দামি কলেজের ক্যাম্পাসে ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ - স্বাধীনতা কই চাকরি বাজারে?কোথায় স্বাধীনতা, বুড়ো বয়সে ছেলের সংসারে বৃদ্ধ বাবা মায়ের ?
কোথায় স্বাধীনতা পথেঘাটে জীবনের তাগিদে বের হওয়া মা-বোনদের ?

অবাক হয়ে দেখি;
বিচার নামের নাটকের মঞ্চায়নে দুর্বলের উপর সবলের প্রহসন ;
আজও নদীর বুকে ভেসে উঠে লাশের সারি,
মাঠের শেষে খুঁজে পাওয়া যায় বোনের ক্ষতবিক্ষত দেহ,
পত্রিকার পৃষ্ঠা জুড়ে সে ভয়াল যুদ্ধের ভিবিষীকার চিত্র।

আমি যুদ্ধ দেখিনি তাই-
রাস্তায় বারো বছরের ছেলেটার পিছনে ছুটে আসা চলন্ত ট্রাকের স্টিয়ারিং - আমার চোখে হানাদারের হাতের বেয়নেট।

বাবার সাথে ঘুড়তে বের হওয়া মেয়েটির দিকে লোভাতুর দৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় হানাদারের সংজ্ঞা ।

ভুল চিকিৎসায় হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকা মৃতদেহটি কি নতুন করে বলবে হানাদার কারা ছিলো ?

যৌতুকের তাড়নায় প্রতিদিন নির্যাতিত বোনটির স্বাধীনতা কই নিজের সংসারে ?
বলবেন কি- এ বোনটির চোখে হানাদার কারা ?

-০-

0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ