আমি একাত্তর দেখিনি,
দেখিনি হানাদারের বর্বরতা, নৃশংসতা,
আমি দেখিনি ২৫শে মার্চের কালো রাত,
বেয়নেটের খোঁচায় রক্তাক্ত দেহটির ভয়ার্ত শেষ নি:শ্বাস ।
দেখিনি মা-বোনের আঁচল ধরে টানছে রাজাকার,
দেখিনি হায়েনার চোখে- কোন খাকি পোষাকধারী,
দেখিনি অন্ধকার রাতে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে কোন মুক্তিযাদ্ধার ঘর,
দেখিনি নদীতীরের বটগাছে উল্টো করে ঝোলানো বস্ত্রহীন লাশ।
দেখিনি কচুরিপানা মাথায়, জলে ডুবে থেকে আমার ভাইয়ের রাতভর শত্রুর জন্য অপেক্ষা -
আমিতো লাল সবুজের পতাকা উড়তে দেখেছি ,
ক্লাশের আগে প্রথম ভালবাসার গান আমার সোনার বাংলা গাইতে শিখেছি ।
মাসব্যাপী মহড়ার শেষে যুদ্ধের মঞ্চনাটকে পারফর্ম করেছি,
নিন্দা করেছি হানাদার, রাজাকার।
ভালোবেসেছি মুক্তি যোদ্ধা, শ্রদ্ধাঞ্জলী দিয়েছি শহীদ মিনারে,
কেঁদেছি মঞ্চনাটকে নির্যাতীতের ভয়ার্ত আর্ত চিৎকার শুনে।
সেভাবেই আমি বুঝতে শিখেছি হানাদার কারা !
উপলব্ধি করেছি স্বাধীনতার উপরিপাওনা,
সংজ্ঞাটা জেনেছি- স্বাধীনতার ।
তবে চৌকশ গরীব ছাত্রটির স্বাধীনতা কই দামি কলেজের ক্যাম্পাসে ?
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ - স্বাধীনতা কই চাকরি বাজারে?কোথায় স্বাধীনতা, বুড়ো বয়সে ছেলের সংসারে বৃদ্ধ বাবা মায়ের ?
কোথায় স্বাধীনতা পথেঘাটে জীবনের তাগিদে বের হওয়া মা-বোনদের ?
অবাক হয়ে দেখি;
বিচার নামের নাটকের মঞ্চায়নে দুর্বলের উপর সবলের প্রহসন ;
আজও নদীর বুকে ভেসে উঠে লাশের সারি,
মাঠের শেষে খুঁজে পাওয়া যায় বোনের ক্ষতবিক্ষত দেহ,
পত্রিকার পৃষ্ঠা জুড়ে সে ভয়াল যুদ্ধের ভিবিষীকার চিত্র।
আমি যুদ্ধ দেখিনি তাই-
রাস্তায় বারো বছরের ছেলেটার পিছনে ছুটে আসা চলন্ত ট্রাকের স্টিয়ারিং - আমার চোখে হানাদারের হাতের বেয়নেট।
বাবার সাথে ঘুড়তে বের হওয়া মেয়েটির দিকে লোভাতুর দৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় হানাদারের সংজ্ঞা ।
ভুল চিকিৎসায় হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকা মৃতদেহটি কি নতুন করে বলবে হানাদার কারা ছিলো ?
যৌতুকের তাড়নায় প্রতিদিন নির্যাতিত বোনটির স্বাধীনতা কই নিজের সংসারে ?
বলবেন কি- এ বোনটির চোখে হানাদার কারা ?
-০-
২৮টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
যৌতুকের তাড়নায় প্রতিদিন নির্যাতিত বোনটির স্বাধীনতা কই নিজের সংসারে ?
বলবেন কি- এ বোনটির চোখে হানাদার কারা ?
চমৎকার !
যারা করে হরন নিয়ত আমার স্বাধীনতা
তারা নব্য রাজাকার হানাদার তারা
এস.জেড বাবু
সুন্দর জবাব দিয়েছেন-
আসলেই হানাদার তারা।
ধন্যবাদ ভাই
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া।
বিদেশী পাকহানাদার দেশ থেকে বিতাড়িত করতে পারলেও স্বদেশী হানাদার বাহিনী বিতাড়িত করা যায়নি। এখনো বুক উঁচিয়ে চলছে।
এস.জেড বাবু
বর্তমান সমস্যা তো দেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বেশি।
শুভেচ্ছা প্রিয় আপু
নুর হোসেন
দেশ আজ হায়েনাদের দখলে,
সর্বত্র চলছে অনাচার-অবিচার-খুন!
আমরা, অনিয়মগুলো’কে নিয়ম বা ভাগ্য মেনে নিয়ে ধ্বংসের অপেক্ষা করছি।
তাই স্বাধীণতা ফিরে গেছে মায়ের গর্ভে।
এস.জেড বাবু
দারুন বলেছেন।
অনিয়মগুলি নিয়ম হিসেবে জোড় করেই চাপিয়ে দিচ্ছে, মেনে নিতে বাধ্য করছে।
শুভেচ্ছা ভাইজান
নুর হোসেন
ভালবাসা জানবেন।
সঞ্জয় মালাকার
যৌতুকের তাড়নায় প্রতিদিন নির্যাতিত বোনটির স্বাধীনতা কই নিজের সংসারে ?
বলবেন কি- এ বোনটির চোখে হানাদার কারা ?
চমৎকার লিখেছেন বাবু ভাই, বেশ ভালো লাগলো,
আপনার জন্য শুভ কামনা ও বিজয়ের সোনালী শুভেচ্ছা।
এস.জেড বাবু
এরাই হানাদার
এরা স্বাভাবিক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।
ওদের ও বিচার হওয়া উচিত।
শুভেচ্ছা রইলো ভাইজান
সঞ্জয় মালাকার
শুভেচ্ছা অফুরন্ত দাদা, আপনারজন্যও অজস্র শুভ কামনা।
শাহরিন
পথে ঘাটে সব জায়গাতেই স্বাধীনতার অপহাস এখন। অনেক সুন্দর বিষয়বস্তু নিয়ে চমৎকার লিখেছেন। খুবই সুন্দর একটি লেখা যার প্রতিটি শব্দ এসব নাম না জানা রাজাকারদের মুখে চড়।
এস.জেড বাবু
এমন খন্ড খন্ড পরাধীনতার শেকলে আজও বাঁধা লাখো নির্যাতীতের পা।
বিজয়ের শুভেচ্ছা রইলো আপু।
ছাইরাছ হেলাল
সব কিছু দেখেছি, দেখেছি,
দেখেছি অজুত প্রাণের বিনিময়,
দেখছি, রুদ্র-হাসির আপসকামিতা
প্রকাশ্য-গোপনে।
এস.জেড বাবু
দেখছি শুনছি
মেনে নিচ্ছি আর মানিয়ে নিচ্ছি-
ওদের সাথে মিলেমিশে যেন
আমরাও স্বাধীনতাটাকেই খাচ্ছি।
কিন্তু কোন পথ নেই উত্তরণের।
শুভেচ্ছা ভাইজান
নিতাই বাবু
আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। গৌরবগাঁথা স্বাধীনতা দেখেছি। পাকবাহিনী দেখেছি। ওঁদের হিংস্র থাবা দেখেছি। হানাদার বাহিনীর যোগানদাতা রাজাকার দেখেছি। মনে পড় সব, সব মনে পড়ে।
এস.জেড বাবু
তাহলে আজও আপনার মধ্যে তেমন ঘৃণা কাজ করে, যেমনটা সেই সময়ে করতো।
শ্রদ্ধা রইলো ভাইজান।
নৃ মাসুদ রানা
যৌতুকের তাড়নায় প্রতিদিন নির্যাতিত বোনটির স্বাধীনতা কই নিজের সংসারে ?
বলবেন কি- এ বোনটির চোখে হানাদার কারা ?
এস.জেড বাবু
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান
মাহবুবুল আলম
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যে কোনো লেখা আমি মনযোগ দিয়ে পড়ি। এটাও পড়লাম। ভাললাগা।
এস.জেড বাবু
শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা সহ
শুভেচ্ছা রইলো ভাইজান।
প্রদীপ চক্রবর্তী
ওরা কারা?
আজও কী এই প্রশ্ন থেকেই যাবে?
কবে উন্মুক্ত হবে?
.
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখনী ভালো লাগলো দাদা।
এস.জেড বাবু
যৌতুক, বৃদ্ধাশ্রম
স্কুল কলেজ, চাকরিতে ডোনেশান
রোড এক্সিডেন্ট
একই সাথে সরকার এবং জনগণের সম্মিলিত ইচ্ছা যতদিন না হবে- ততদিন প্রশ্ন থেকে যাবে।
রেজওয়ান
অসাধারণ অভিব্যক্তি ভাই✌মাঝে মাঝে আমি আসলেই ভেবে পাই না যে দেশ এত রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেল সে দেশ আজ এমন কেন?💔
এস.জেড বাবু
আমি যতটা বুঝি-
মানচিত্র / ভূখন্ড স্বাধীন হয়েছে
মানবতা আজও পরাধীন ।
ধন্যবাদ ভাইজান
মনির হোসেন মমি
কি বলব কবিতার কথা এক কথায় চমৎকার। পড়তে গিয়ে গায়ের পশম দাড়িয়ে গেছে।
তবুও
কিছুই বলার নেই”সব নষ্টদের দখলে।
এস.জেড বাবু
একদিন সুদিন আসবে।
এই প্রত্যাশা তবুও রাখবো।
ধন্যবাদ প্রিয় মমি ভাইজান।
অনন্য অর্ণব
বাবার সাথে ঘুড়তে বের হওয়া মেয়েটির দিকে লোভাতুর দৃষ্টি মনে করিয়ে দেয় হানাদারের সংজ্ঞা ।
একদম ঠিক। পাকিস্তানী হানাদার না দেখলেও আমরা বর্তমান হায়েনাদের ঠিকই দেখছি। এটা চরম লজ্জার।
এস.জেড বাবু
বাবার সাথে মেয়ের
ভাইয়ের সাথে বোনের স্বাধীনতা নেই পথেঘাটে।
এরাইতো হায়েনা, বর্বর, হানাদার এযুগের।
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান।