আবেগ

মেহেদী পাতা ১১ ডিসেম্বর ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ১২:৪৪:০৫পূর্বাহ্ন বিবিধ ৫ মন্তব্য

জান কি করছ?
» এইত সোনা কাজিনদের
সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তুমি?
» আমি গোসল করে আসলাম মাত্র।
তুমি গোসল করছ?
» না। একটু পরেই করব। কি কালারের
ড্রেস পরলে গোসল করে?
» ব্ল্যাক আর রেড।
» শাড়ি পরলেও তো পার।
» আমি শাড়ি পরতে পারি না জান।
»শাড়ি বাঙ্গালী মেয়েদের প্রধান
আভূষন আর সেটাই পরতে পার না। শুধু
পড়াশোনা করলেই তো হবে না। কিছু
কাজ না করলে আমার সংসারের কাজ
গুলো কে করবে শুনি!
» তোমার সংসারের কাজ তুমি করবে।
আমাকে এত ভালবাস, আমাকে কাজ
করতে দেখলে তোমার খারাপ
লাগবে না!!
» অত পিরিত বাধে নাই সোনা।
রান্না বান্না আর কিছু কাজ
শিখে আইসেন নাহলে দুইজনকেই
না খেয়ে থাকতে হবে।
» আচ্ছা সে পরে দেখা যাবে। জানো,
দুলাভাই কালকে আমার জন্য
একটা নীল শাড়ি নিয়ে আসছে।
» তোমার দুলাভাই এত ঘন ঘন
আসে কেন? ঘর জামাই হওয়ার
ইচ্ছা আছে নাকি!!
» ধুর! কি যা তা বল।
ভাইয়ারা এমনিতেই কত রিচ। ওরা ঘর
জামাই হতে চাইবে কোন দুক্ষে!!
» সখ করেও তো হতে পারেন।
সে তিনি যা ইচ্ছা তা হোন,
আমি ভাবতেছি তুমিও তো কোন
কটিপতির সংসার উজ্জ্বল
করতে পারতে। কেন আমার মত এক
গরীব ছেলেকে হুট
করে বিয়ে করে ফেললে!! এখন তোমার
বাসার সবাই
মেনে না নিলে তো আমার
সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না।
কিভাবে থাকবে আমার সাথে!!??
» সে চিন্তা তোমার করা লাগবে না।
তুমি যেভাবে থাক, সেভাবেই থাকব।
খাবার জুটাতে পারলে খাব
নাহলে একসাথে না খেয়ে মরব।
» পারবে আমার সাথে থাকতে!! আমার
বাসার কেও মেনে নেবে না। তখন
আমাদের বাসা থেকে বের করে দেবে।
আমি তখন কোন কারখানায়
শ্রমিকের কাজ করব। একটা খরকুটোর
ঘর হবে। সেখানে থাকতে হবে।
সকালে কখনই খাবার জোটাতে পারব
না। দুপুরে খেতে হবে আগের দিনের
বাসি ভাত নুন দিয়ে। আর দিন
শেষে আমি ১০০ টাকা আয়
করে নিয়ে আসব।
পারবে থাকতে এইভাবে??
» পারব কিন্তু একটা শর্ত আছে।
» কি শর্ত শুনি...
» প্রতিদিন আমার জন্য
একটা করে ফুল নিয়ে আসতে হবে,
আমাকে ২০ বার
জড়িয়ে ধরতে হবে আর ১৩ বার কিস
করতে হবে।
প্রতি রাতে আমাকে খাওয়ায়
দিতে হবে এবং আমাকে তোমার
বুকের উপর
মাথা রেখে ঘুমতে দিতে হবে।
» শুধু এগুলোই!!!!! আর কিছু নাই??
» আছে তো...
» কি????
»
আমাকে শাড়ি পরা শিখিয়ে দিতে হবে।
» ঠিক আছে ডান কিন্তু
আমাকে সারা জীবন
এভাবে ভালবাসবে তো?
» কেন! তোমার কি কোন সন্দেহ
আছে??
» ছি ছি!! তোমাকে তো আমি নিজের
চেয়েও বেশি বিশ্বাস
করি সোনা কিন্তু এই
বাস্তবতা টা খুব কঠিন। নিষ্ঠুর
হাতুরী দিয়ে ভেঙ্গে দেয় স্বপ্নের
প্রাসাদ।
» তাহলে সেই ভাঙ্গা প্রাসাদের
রাণী হয়েই তোমার পাশে থেকে যাব
সারাজীবন।
তোমাকে ছাড়া যে এমনিতেও
বাচতে পারব না আমি।
» আই লাভ ইউ মেঘা।
» আই লাভ ইউ ঠু অর্নব।
_________________________________
আজ হঠাত করেই ৫ বছর আগের সেই
কথোপকথনের কথা মনে হয়ে গেল। ওই
ঘটনার পরে অনেক সময় অতিবাহিত
হয়েছে।
বাস্তবতা ভেঙ্গে দিয়েছে আমার
স্বপ্নের প্রাসাদ। এই ভাঙ্গা স্তুপের
মাঝে আমি একাই পড়ে আছি। আর
মেঘা!! ও কোন সৌভাগ্যবানের
ঝকমকে রাজপ্রাসাদের
রাজরানী হয়ে আলোকিত করছে তার
সংসার আর আজ আমার আঙ্গিনায়
সন্ধা প্রদিপ জ্বালানোরও কেও নেই।
বি.দ্র: লেখাটা উতসর্গ করলাম সেই
সব ভাই-বোনদের যারা সেইম
এজে রিলেশনশিপ করেন। সবার ভাগ্য
এমন হয় তা বলছি না। কিন্তু
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন হয়। তাই
ঝুকি না নেয়াই ভাল।
অবশেষে মনে পড়ে যাই সোহেল
স্যারের সেই কথাটা।
____ এই যে তোমাদের
সহপাঠী মেয়েগুলো দেখছ না!!
তোমরা যখন প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন
এদের মধ্যে ৯০% মেয়ের
দুইটা করে বাচ্চা থাকবে____
আমাদের ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারের
প্রথম ক্লাসে স্যার এটা বলেছিলেন।
অনেকে অনেক মজা করলেও
আমি কথাগুলো মন দিয়ে শুনেছিলাম।
কখনও ভুলব না এগুলো।

0 Shares

৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ