আনু মোহাম্মদের আন্দোলন

সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল ২৭ আগস্ট ২০১৬, শনিবার, ১২:১৪:৪১পূর্বাহ্ন বিবিধ ২৬ মন্তব্য

বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে সেই সময় দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৪৫০০ মেগাওয়াট। এই স্বল্প বিদ্যুতের কারনে, পোষাক শিল্প সহ সমস্ত মিল-কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছিল এবং লোড শেডিং এর কারনে জনগণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল।
বিদ্যুতের এই দূরবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার কুইক রেন্টাল বা ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বিদ্যুতের এই নাজুক অবস্থার উন্নতি ঘটেছিল। বর্তমানে দেশে ১১ হাজার মেগাওয়াটের উর্ধে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তখন আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের বিরোধীতা করে রাজপথে আন্দোলন করেছিল। তাদের দাবী ছিল কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ খুব বেশী। কুইক রেন্টাল বা ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে অনেক ভর্তুকি দিতে হবে, দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে। তার ফর্মূলা ছিল বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে এবং উৎপাদন খরচ কম হবে। বলে রাখা ভাল- এই বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সময় লাগবে সর্বনিম্ন পাঁচ বছর। কিন্তু এই পাঁচ বছর দীর্ঘ সময় দেশের পোষাক শিল্প সহ সমস্ত মিল কারখানার উৎপাদন ব্যহত হত এবং দেশের মানুষ অন্ধকারে দিন কাটাত। আমাদের দেশে উৎপাদনের যে ক্ষতি হত তার চেয়ে ভর্তূকি বেশী নয়।
এখন দেশে বর্তমান সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান করছে। কিন্তু আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করে বলেছিল- দেশীয় টাকায় পদ্মা সেতু নির্মান করা হলে দেশে সমস্ত উন্নয়ন মুলক কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কুইক রেন্টালের জন্য দেশ দেউলিয়া হয় নাই এবং পদ্মা সেতুর জন্য অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের কোন ক্ষতি হয়নি। আমাদের পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা ব্যর্থ হলেন।
এখন আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা আর একটি নতুন ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছে, সেটি হল রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে কয়লা। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১১ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
আনু মোহাম্মদ সাহেবদের যুক্তি হল রামপালের কাছেই হল আমাদের সুন্দরবন, রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন আমার কথা, সরকার আমাদের জীববৈচিত্রে ভরা সুন্দর বন কেন ধ্বংস করবে? সরকারের দায়িত্ব সুন্দরবন রক্ষা করা। আমার জানি সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে আগে দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরিবেশগত জরিপ চালিয়েছে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন পরিবেশে কোন ক্ষতি না করতে পারে এর ব্যবস্থা করেই সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে।
আনু মোহাম্মদ সাহেবদের কাজ হল দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা। এখন তাদের প্রতিহত করা দরকার। কারন আমাদের দেশে এখনও ৬০% মানুষ বিদ্যুতের আওয়ায় আসেনি। অনেক শিল্পকারখানা বিদ্যুতের অভাবে চালু হতে পারছেনা। পরিশেষে আমি বলব, আমাদের জীববৈচিত্রে ভরা সুন্দরবনকে অক্ষত রেখে দেশে উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ দরকার।

0 Shares

২৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ