বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে সেই সময় দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৪৫০০ মেগাওয়াট। এই স্বল্প বিদ্যুতের কারনে, পোষাক শিল্প সহ সমস্ত মিল-কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছিল এবং লোড শেডিং এর কারনে জনগণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল।
বিদ্যুতের এই দূরবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার কুইক রেন্টাল বা ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বিদ্যুতের এই নাজুক অবস্থার উন্নতি ঘটেছিল। বর্তমানে দেশে ১১ হাজার মেগাওয়াটের উর্ধে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তখন আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের বিরোধীতা করে রাজপথে আন্দোলন করেছিল। তাদের দাবী ছিল কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ খুব বেশী। কুইক রেন্টাল বা ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে অনেক ভর্তুকি দিতে হবে, দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে। তার ফর্মূলা ছিল বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে এবং উৎপাদন খরচ কম হবে। বলে রাখা ভাল- এই বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সময় লাগবে সর্বনিম্ন পাঁচ বছর। কিন্তু এই পাঁচ বছর দীর্ঘ সময় দেশের পোষাক শিল্প সহ সমস্ত মিল কারখানার উৎপাদন ব্যহত হত এবং দেশের মানুষ অন্ধকারে দিন কাটাত। আমাদের দেশে উৎপাদনের যে ক্ষতি হত তার চেয়ে ভর্তূকি বেশী নয়।
এখন দেশে বর্তমান সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান করছে। কিন্তু আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করে বলেছিল- দেশীয় টাকায় পদ্মা সেতু নির্মান করা হলে দেশে সমস্ত উন্নয়ন মুলক কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কুইক রেন্টালের জন্য দেশ দেউলিয়া হয় নাই এবং পদ্মা সেতুর জন্য অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের কোন ক্ষতি হয়নি। আমাদের পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা ব্যর্থ হলেন।
এখন আনু মোহাম্মদ সাহেবেরা আর একটি নতুন ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছে, সেটি হল রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে কয়লা। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১১ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
আনু মোহাম্মদ সাহেবদের যুক্তি হল রামপালের কাছেই হল আমাদের সুন্দরবন, রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন আমার কথা, সরকার আমাদের জীববৈচিত্রে ভরা সুন্দর বন কেন ধ্বংস করবে? সরকারের দায়িত্ব সুন্দরবন রক্ষা করা। আমার জানি সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে আগে দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরিবেশগত জরিপ চালিয়েছে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন পরিবেশে কোন ক্ষতি না করতে পারে এর ব্যবস্থা করেই সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে।
আনু মোহাম্মদ সাহেবদের কাজ হল দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা। এখন তাদের প্রতিহত করা দরকার। কারন আমাদের দেশে এখনও ৬০% মানুষ বিদ্যুতের আওয়ায় আসেনি। অনেক শিল্পকারখানা বিদ্যুতের অভাবে চালু হতে পারছেনা। পরিশেষে আমি বলব, আমাদের জীববৈচিত্রে ভরা সুন্দরবনকে অক্ষত রেখে দেশে উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ দরকার।
২৬টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
সোনেলায় স্বাগতম। আমি আপনার লেখার প্রথম মন্তব্যকারী। 🙂
অন্যদের লেখা পড়ুন, মন্তব্য করুন।
মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য দেবার জন্য জবাবে ক্লিক করুন। কোন সমস্যা হলে এখানে জানাবেন, যে কেউ আপনাকে সাহায্য করবে।
গুরুত্বপূর্ন একটি লেখা।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাই
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে ধন্যবাদ
শুন্য শুন্যালয়
সোয়েব ভাইয়া আপনাকে অভিনন্দন আমাদের সোনেলায়। -{@ খুব ভালো লাগবে আপনি নিয়মিত হলে এখানে।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি পোস্ট নিয়ে লিখেছেন, যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। মানুষের চাওয়া কিন্তু এটাই, সুন্দরবন কে রক্ষা করে যদি সম্ভব হয় তবেই হোক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ এর বিকল্পও কিছু নেই।
এমন পোস্ট আরো চাচ্ছি আপনার কাছ থেকে।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
স্বাগত আপনি এখানে,
আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য ধন্যবাদ,
অবশ্যই বিদ্যুৎ চাই, আমাদের বনকে রক্ষা করেই।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে ধন্যবাদ
ইঞ্জা
প্রথমেই আপনাকে সোনেলায় স্বাগতম,
ভাই রামপাল বিষয়ে আপনার সাথে তর্কতে যেতে চাইনা কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি যে হবে তা অবশ্যই সত্য কারণ এই ক্ষেত্রের কয়লা পরিবহন করা হবে সমুদ্র পথে আর তা ছোট ছোট জাহাজে করে প্রায় প্রতিদিন সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদি দিয়ে নিয়ে আসা হবে আর এতে নদী দূষণ বাড়বে বই কমবেনা আর খবর যদি রাখেন দেখবেন ইট প্রস্তুত যেখানে হয় তার আসে পাশের পরিবেশের ক্ষতি সাধিত হয় কারণ সেখানে কাঠ কয়লা বব্যবহৃত হয় আর রামপালে তো তাই হবে নাকি, ওখানে কয়লা পোড়া ধুয়া বের হবে অবশ্যই আর বাকিটা আপনি চিন্তা করুন।
ধন্যবাদ।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন পরিবেশে কোন ক্ষতি না করতে পারে এর ব্যবস্থা করেই সরকার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে।পৃথিবীতে যে কোন শিল্প কারখানাইস্থাপিত হয়েছে তা পরিবেশের কিছু না কিছু ক্ষতি করছেই।নিউকিলিয়ার বর্জ সহ পৃথিবীর শিল্পকারখানা দূষিত বর্জ বেশীর ভাগ সমুদ্র পথে পরিবহন করা হয়। তার তুলনার কয়লা অতি সামান্য, তবুও আমাদের সাবধান হয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।আমার লেখার শেষ লাইনে লেখা আছে, আমাদের জীববৈচিত্রে ভরা সুন্দরবনকে অক্ষত রেখে দেশে উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ দরকার। আপনাকে সুন্দর মতামত দেওয়র জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ
মিষ্টি জিন
সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম ।
আমাদের দেশে গর্ব করার মত যে কয়টা সম্পদ আঁছে সুন্দরবন তারমধ্যে একটি। সুন্দরবন ধ্বংস/ ক্ষতি করে বিদ্যুৎ চাইনা।
বেশী বেশী করে লিখুন।
পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে মতামত দেওয়র জন্য ধন্যবাদ জানাই।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সোনেলায় স্বাগতম!
রামপাল প্রকল্প নিয়ে আমি বিভ্রান্তিতে আছি। এখন আর এ নিয়ে মন্তব্য করবো না। বিকাল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনটা শুনে নেই। আমার বিশ্বাস দেশকে ক্ষতির মুখে ফেলে এমন কাজ তিনি করবেন না, নিশ্চয় তিনি আমাদের বিভ্রান্তি দূর হয় এমন কথাই শুনাবেন।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
বিকাল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনটা আমি দেখেছি, আপনি দেখেছেন কি ?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনার অপেক্ষাতেই ছিলাম। কিছু বিভ্রান্তি যা ছিলো কেটে গেছে।
আর আনু স্যারদের কথা কি বলবো! মোজাম্মেল বাবুই বলে দিয়েছেন পেট্রোডলার কথা বলায়। তারা যেভাবে ভীতি সৃষ্টি করে চলেছেন, ক্রিটিক্যাল বিষয় বলে আম পাবলিক বিভ্রান্তিতে পড়েছে।
এটুকু বুঝি, দেশ সংক্রান্ত কোন বিষয় নিয়ে অন্তত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোন রাজনীতি করবেন না। তার কনফিডেন্সই আমার প্রশান্তি। আর উন্নত প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করলে অনেক কিছুই সম্ভব।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনার মতামত এর সাথে এক মত পোষণ করসি।
মৌনতা রিতু
রামপাল থানাতেই আমার বাড়ি। আদাঘাট গ্রামে। মোংলা পোর্টে এখন নতুন বাড়ি বাবার। তাই এই বিষয়ে আপাতত আর মন্তব্য করতে চাই না। তবুও অভিজ্ঞতা, এবং সামান্য জ্ঞান অনুসারে বলতে পারি ক্ষতি অবশ্যই হবে। কিছু কিছু দুর্ঘটনা থেকে আমরা দেখেছি কি ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। সব থেকে বড় ক্ষতি হবে ভুমি দস্যুদের জন্য। রাঘব বোয়ালদের জন্য। যারা সরকারী ছত্রছায়ায় ওখানে বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে তুলবে। অলরেডি জমি কেনা ও হয়ে গেছে তাদের।
সব থেকে বড় কথা কি, যা ভুল তা ভুলই। এখানে অন্ধের মতো সমর্থন আমরা চাই না। এক সময় যখন দেশ ভাগ হয় তখন, যোগেন মল্লিক অর্থাৎ খুলনা অঞ্চলের নেতা অনেকটা ক্ষমতার লোভে ভারতের সাথে যেতে চায় নাই। তাই ঘটনাক্রমে সুন্দরবন বাংলাদেশের পক্ষেই এক তৃতিয়াংশ রয়ে যায়। এই সুন্দরবন যে কত বড় সম্পদ তা সবাই আমরা উপলব্দি করতে পারি। সামুদ্রিক ঝড়, জলচ্ছাস সব কিছু থেকেই সুন্দরবন রক্ষা করে উপকুলবাসিকে। যদি খোদা না খাস্তা কোনোরকম বড় কোনো ক্ষতি হয় কেউ কিন্তু মাফ পাবে না। আমাদের ভবিষ্যতপ্রজন্ম তাইলে আমাদের মাফ করবে না। কারন, ইতিহাস কখনো কাউকে ক্ষমা করে না।
আর এইসব প্রকল্পে ক্ষতি হয় ধির গতিতে। আমি আমার ফুফাত ভাইকে ফোন করেছিলাম, ও পরিবেশ বিষয়ে গবেষনা করছে। এখন ফিলিপাইনে আছে। ভাইয়া বলল, ক্ষতি কিছু না কিছু অবশ্যই হবে। যাইহোক, বিদ্যুত চাই,তবে সুন্দরবন ক্ষতি করে না।
আপনাকে সোনালায় স্বাগতম।
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে মতামত দেওয়র জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ব্লগার সজীব
আজ বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন লাইভ দেখলাম। অনেক নতুন তথ্য জানলাম। রামপাল বিরোধীরাও বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন। কোন তথ্যটি যে সঠিক এটি ভেবে তো মাথার চুলই উঠে যাবে সব।
আমরা বিদ্যুৎ চাই, সুন্দরবনের ক্ষতি না করে যদি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়, তবে আপত্তি নেই আমাদের। একটি প্রশ্ন আপনার লেখায় যুক্ত করা যেত, তাহচ্ছে- জামাত হেফাজত তাদের অবরোধ এবং আন্দোলনে যে হাজার হাজার গাছ কেটে ফেললো দেশের, তখন আনু মোহাম্মদরা এর বিরুদ্ধে কোন কর্মসূচি দিয়েছিলেন কিনা?
ব্লগার সজীব
সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম -{@ আপনার প্রথম লেখা পড়ে আপনার সম্পর্কে ধারনা হয়েছে যে আপনি ব্লগিং ভালই পারবেন 🙂
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
ভাই আপনার মন্তব্য অনেক আনন্দ দিয়েছে,আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
নাসির সারওয়ার
সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম।
বিদ্যুৎ লাগবে তবে বন টাকেতো হারানো যাবেনা।
ইলিয়াস মাসুদ
সোনেলায় স্বাগতম,
বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে আজ অবধি বাংলাদেশে চাটুকার বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে,বিদ্যুতের থেকেও এই সব চাটুকার নিধন জরুরী,এই সব চাটুকারেরা নিজের সামনে মায়ের, বোনের নীপিড়নও চোখে দেখে না-
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
“এই সব চাটুকারেরা নিজের সামনে মায়ের, বোনের নীপিড়নও চোখে দেখে না” ভাই এই লাইনটিতে কি বুঝাতে চেয়েছেন? এর ব্যাখ্যা দিবেন কি ?
ইলিয়াস মাসুদ
আমি মা বলতে দেশকে বুঝিয়েছি
দেশকে খাব্লে খাব্লে খেয়ে ফেললেও এই সব চাটুকার চাটুকার-ই থাকে,তাদের কাছে নিজের আখের-ই সব
সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল
আপনাকে ধন্যবাদ।