লেখার হাত ভালো করার জন্য সোনেলায় লিখতে শুরু করি। দুই একটা লেখা দেওয়ার পর দেখলাম মোটামুটি সবাই আমার চেয়ে বয়সে বড়। লেখা প্রকাশ করার পর অভিজ্ঞদের মন্তব্য দেখে বেশ খুশি হতাম। কিন্তু একটা পর্যায়ে খেয়াল করলাম কেউই লেখার সমালোচনা করেনা। সবাই শুধু প্রশংসা করে। এটা হয়তো নতুন ব্লগারদের উৎসাহিত করার জন্য করে থাকে। কিন্তু এভাবে তো ভুলগুলো ভুলই থেকে যাবে। হতাশ হলাম।

কিন্তু একদিন হঠাৎ একটা লেখায় আরজু মুক্তা আপু মন্তব্য করলেন, ‘বানানের প্রতি যত্নবান হতে হবে’। আমি বেশ খুশি হয়েছিলাম। যাক কেউ তো একজন আমার একটা ভুল ধরিয়ে দিল। এরপর আপুর সাথে ফেসবুকে যুক্ত হলাম। আপু আমার খুব কাছেই থাকতো। আমার বাসা চট্টগ্রামের হালিশহর এ ব্লকে। আপুর বাসা নয়াবাজার। আমাদের মধ্যে ৫ টাকার টেম্পো ভাড়ার দূরত্ব। মাঝেমধ্যে আপুর সাথে এটা-সেটা নিয়ে টুকটাক কথা হত। তবে এত কাছে থাকার পরেও কখনো আমাদের দেখা হয়নি। তারপর একদিন আপু জানালেন উনি এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এর আগে দেখা করবেন। কিন্তু পরে কেন জানি আমাদের দু’জনের আর সময় হয়ে উঠেনি, ফলে দেখাও হয়নি।

গত নারী দিবসে আপুর সাথে আমার শেষ কথা হয়। তখন আমি একটা অনলাইন নিউজে কাজ করতাম। নারী দিবস উপলক্ষে আপুকে একটা লেখা দিতে বলি। কোন প্রশ্ন ছাড়াই পরদিন আপু আমাকে দারুণ একটা লেখা দিয়ে দিলেন। এরপর আপুর সাথে আর কথা হয়নি। তবে উনি মাঝেমধ্যে ফেসবুকে আমার ছবি, লেখায় সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করতেন। এই তো মাসখানেক আগেই দৈনিক আজাদী পত্রিকায় আমার জব হয়েছে, সেটা ফেসবুক প্রোফাইলে যুক্ত করলাম। আপু শুভ কামনা জানিয়ে মন্তব্যে জিঙ্গেস করেছিলেন, ‘মিষ্টি কবে খাবো?’ কি দুর্ভাগ্য আমার! আপুর সেই মন্তব্যের জবাব দেওয়ার আগেই উনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন!

মনে হয় ভুল বললাম। আপু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন বা আমাদের মাঝে আর নেই এটা বলা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। আপু এখনো আমাদের মাঝে আছেন। নইলে আমি এখন, এই মধ্যরাতে, আপুকে নিয়ে লিখছি কেন? সত্যি বলছি- আপু আছেন, আপুর লেখা গল্পের চরিত্রে। যেসব চরিত্রে তিনি নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন। ধীরে ধীরে অনুসন্ধানী পাঠকরা চরিত্র গুলো খুঁজে বের করবে। আরজু আপুকে খুঁজে বের করবে।

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ