-এই টাকা  জোগাড় হইছে?
-না,তয় অইব..মাসুদা আপা কিছুক্ষণ পর চইলা যাইব।তারপর সুযোগ বুইঝা টাকাগুলো নিয়ে আসব।
-আর কবে আনবি সময়তো যাইতেছেগা...তুই ঐখানে যা যত তাড়া তাড়ি পারস টাকা নিয়ে আয়।
-ঠিক আছে,আমারে থুইয়া তোরা যাইছ না কিন্তু!
-ঠিক আছে তাড়া তাড়ি কর....

সন তারিখ মনে নেই তবে বয়সটা মনে হয় পনের কি ষোল আমার চোখে সেই আদি কালের ঘটনা।নারায়ণগঞ্জ টানবাজার মাশার সিনেমা হলে চলছে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিউটি কুইন শাবানা অভিনীত আংশিক রঙ্গীন আসামী ছবিটি।ওরে ও পরদেশী গানটি সে সময় অনেক জনপ্রিয় ছিল।এমন আরো অনেক কালজয়ী গান আছে যা এখনও শুনতে মন চায় মনে প্রফুল্ল আনে।যেমন অনেকগুলোর মাঝে কিছু গানের লিংক গুলো নীচে দিলাম যা শুনলে একশ ভাগ গ্যারান্টি আপনার মন এক বিশেষ ছন্দে মন নেচে উঠবে যদি আপনার বয়স হয় চল্লিশোর্ধ...........।
ওচোখে চোখ পড়েছে যখনি,
ও পাখি তোর যন্ত্রনা
,
শুধু গান গেয়ে পরিচয়
,
আমার নায়ে পাড় হতে লাগে ষোল আনা
,
কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো
,
অশ্রু দিয়ে লেখা
,
তন্দ্রা হারা নয়নও আমার
,
চঞ্চললা হাওয়া রে,
একি সোনার আলোয়,
বিমূর্ত এই রাত্রী আমার মৌনতার..,
তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়,
জীবনে আধারে পেয়েছি তোমারে,
ঐ অনুপমা,
যদি বউ সাজো গো,
আমি কার জন্যে বসে রইব
দিন যায় কথা থাকে,
যারে যাবি যদি যা....,
মন যদি ভেঙ্গে যায় যাক না যাবার বেলায়,
ওগো মোর মধুমিতা,
এই মন তোমাকে দিলাম,
এই পৃথিবীর পরে কত ফুল ফুটে আর ঝড়ে
মনেরও রংয়ে রাঙ্গাবো
এ খাচা ভাঙ্গব আমি কেমন করে
ওমন করে যেও না গো তুমি,
আমার সারা দেহ খেয়োগো মাটি,
আমি নিজের মনে নিজেই যেন গোপনে,
রূপ দেখে বলব কি ভাষা খুজে
জীবনে আধারে পেয়েছি তোমারে
একটুস খানি দেখো একখান কথা বলো
সব সখিরে পার করিতে নেবো ষোল
ঐ হই হই রঙ্গিলা রঙ্গিলারে
এবার এলো যে সন্ধ্যা
আচেন আমার মোক্তার আচেন আমার ব্যারিষ্টার
এই রাত ডাকে ঐ চাদঁ ডাকে

গুন গুনা গুন গান গাহিয়া
হীরার চেয়ে দামী সোনার চেয়েও
চন্দ্র তারার নীচে খুজেছি তোমায়
আমিতো বন্ধু মাতাল নই মানুষ যদি
আজ কোন কাজ নেই আজ আমাদের ছুটি
হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস
দিন যায় কথা থাকে

 জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো
যখন থামবে কোলাহল
আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাখে ভাল
দাও দাও জাগিয়ে দাও

ওরে নীল দরিয়া
হেসে খেলে জীবনটা যায়
জানতাম যদি শুভংকরের ফাকি
এমন শত শত গানের সুর কথা আজও ভাবায় আজও মনে ছন্দ জাগে প্রানের খোরাক জোটে।ভাবি,আহা! সেই সোনালী অতীত কতই না মধুর ছিল,ছিল জীবনের ছোয়া।যাক সেই মুল কথায় আসি বন্ধুটি টাকা চুরি করতে  অপেক্ষার শেষ হয়, ঘরের কর্তৃ ঘর থেকে বেরুবার সাথে সাথে বেড়া ফাক করে ঘরের ভিতরে ঢুকে কৌটা থেকে টাকাটা হাতিয়ে নেয়।টাকাটা নিয়ে চলে আসে আমার কাছে।আমি এবং আরো তিন জন খেলার সাথী মিলে চলে গেলাম মাশা সিনেমা হল  নারায়ণগঞ্জে।সিনেমা হলে ঢুকার পূর্বে হোটেল থেকে কিছু খেয়ে নিলাম সম্ভবত হোটেলের এই খাবার ছবি চলার মাঝে হলের ভিতরেই পেটে পীড়া দেয়।কি আর করা ছবি দেখব নাকি পয়জন আটকাবো কারো পেটেই যে নেই শান্তি।কোন মতে পেটকে চেপে রেখে ছবি দেখা শেষ করে টয়লেটে গিয়ে দেখলাম সিরিয়াল।
চলে এলাম সিনেমা হল থেকে কালী বাজারের কাছাকাছি।পেটের পীড়াকে আর ধরে রাখতে পারছি না,তাই একটি পাচ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ের সিড়ির চিপায় আমার কাম সারলাম বাকীরাও কেউ সিড়ি বেয়ে দু তলায় কেউ বা তিন তলায় কাম সারল হঠাৎ কেউ আসছে ভেবে তাড়াহুড়া করে বিল্ডিং হতে প্রস্থান নিলাম কিন্তু এরই মধ্যে পেন্টের দশা শেষ,পানি ছিল না বলে তা পরিষ্কার করতে পারছিলাম না তাই সবাই শীতলক্ষ্যা নদীর ঘাটে গিয়ে মোটামোটি পরিষ্কার করে একটি টেক্সিতে উঠলাম।টেক্সিতে আরো যারা যাত্রী ছিলেন তারা নাক ছিটকাইতে লাগলেন।আমাদের বুঝতে অসুবিদে হলো না যে আমাদের সৃষ্ট ময়লা হতেই দুরগন্ধ বের হচ্ছে।টেক্সি হঠাৎ ব্রেক করলেন।ড্রাইভার নেমে আমাদের  দরজা খোলে নেমে যেতে বললেন।
-কি রে ভাই আমরাতো ভাড়া দেবো।
-তোদের ভাড়া দিতে হবে না,তোরা নেমে যা...এই নেয় দশ টাকা তোরা অন্য গাড়ীতে যা।
তখনও ড্রাইভারের নাকে হাত দিয়ে দুরগন্ধ হতে নিবারণে চেষ্টা করছে।অগত্যা কি আর করা দশটি টাকা পেয়ে উৎফুল্ল মনে আমরা নেমে গেলাম। মাঝ পথে সেখান থেকে বাস গাড়ীতে উঠব পরে ভাবলাম,নাহ বাসে অনেক মানুষ জন থাকে উঠলে নির্ঘাত কপালে পাবলিকের দোলাই আছে।তাই পায়ে হেটেই যেতে হবে।

বাড়ীতে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে...সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন।ছেলে মানুষ বয়স আর কত হবে সেই সকালে ঘর থেকে বের হওয়া আর সন্ধ্যায় বাড়ী ফেরা মা বাবারতো একটু চিন্তা হবেই,এরই মধ্যে পাশের বাড়ীতে যে ঘর থেকে বন্ধুটি টাকা চুরি করেছিল সেই ঘরের মা তার মেয়েকে আচ্ছা মতো পিটুনি দিচ্ছেন কারন হলো সে ঐ টাকাগুলো চুরি করেছিল এটা তার মায়ের অভিযোগ আমি শুনে স্তব্দ হয়ে রইলাম আর মনে মনে আল্লার নাম জবছি আল্লাহ যা করেন তা বান্দার মঙ্গলের জন্যই করেন।

0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ