ধূসর বালিকা হেঁটে চলে অজানার পথে
ধূলিময় তীর ঘেঁষে, আপনার সাথে।
এক নদী জল নিয়ে তিতাস দাঁড়ায়ে
বলল, হে বালিকা,যাবে হারায়ে!
তুমি আমি হারাব অজানা পাহাড়ে
পাশে রব গানে, স্নানে,নিদে,আহারে।
বালিকা ভেবে কয়, সাঁতার জানিনে,
তরী নেই, বৈঠা নেই, নিঃস্ব জীবনে।
এই বলে বালিকা ধরে ফের পথ,
নিঃস্ব বালিকার সঙ্গী মনোরথ।
একবার ভাবে মনে তিতাসের সনে,
মিশে গিয়ে পাব কি সুখ জীবনে?
নানারকম জল নিয়ে এসে দানিয়ুব
থামায় বালিকাকে ভালবাসে খুব।
বালিকা ভাবে তবে পরীক্ষা করি,
দানিয়ুব সৎ নাকি সব চাতুরী?
চুপ রহে বালিকা,খেয়াল গতিবিধী,
পরক্ষনে জানে সে বহুগামী নদী।
কিছুদূর পাড়ি দিয়ে একা চুপচাপ,
ফিরে আসে তিতাসে,দেবে নাকি ঝাঁপ?
তিতাস তখন মশগুল গোমতীর সাথে
রাত্রিতে গোমতী,মনু প্রভাতে।
গোমতী যখন রাগে শোকে করে অভিমান,
তিতাস তখন ভাঙাতে যায় মেঘনার মান।
এভাবে ঘুরে ফিরে মনু কিংবা বালাই,
সকল দিকেই অভিসারে মজে রয় কানাই।
এসব দেখে বালিকা বিভ্রান্ত হয়,
শূণ্য জীবন ভাল তবু, দুষ্ট গরু নয়।
অতপর চুপচাপ নীল নদ বসে,
আকাশের তারা গুনে এক নিশ্বাসে।
নীল নদ একা রয় বালিকা যেমন
দুজনের ভাব হয় প্রেমে মজে মন।
দুজনে মিলে আজ একটি নদী,
নীল নদ বালিকা বহে নিরবধি।
২১টি মন্তব্য
নীরা সাদীয়া
কবিতাটি লিখেছিলাম ০২.০৫.১৭ তারিখে।
টুকিটাকি
★তিতাস, বালাই,মনু, গোমতী ইত্যাদি মেঘনার শাখানদী।
★দানিয়ুব আন্তর্জাতিক নদী, মধ্য ইউরোপের ১০ টি দেশ অতিক্রম করেছে।
★নীল নদ হলো পৃথিবীর দীর্ঘতম একক নদ।
আরজু মুক্তা
নদী বহমান!একূল ভেঙ্গে ওকুল গড়ে।নদীর সাথে নারীর দারুণ একটা সম্পর্ক আছে।
নীরা সাদীয়া
নদীর সাথে মানব জীবনের একটা সম্পর্ক রয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে মুক্তা আপু।
রাফি আরাফাত
নদী-নারী, একই গাছের দুইটি ফল। ধন্যবাদ ভালো লাগছে ।
নীরা সাদীয়া
আমারতো মনে হয় নদীর সঙ্গে গোটা মানব জীবনই মিলে যায়।
শুভ কামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
বাহ 🙂
ভালো ই তো লিখতে তখনো।
নীরা সাদীয়া
ধন্যবাদ দাদা।
সকাল স্বপ্ন
জীবন এর শাখাপ্রশাখা!
অনেক গভীরতা আছে লিখায়
আমি সাতার জানি না তাই ডুব দিয়ে উঠে আসলাম
লিখা – ভাল লাগার,
নীরা সাদীয়া
আপনার কমেন্টে অণুপ্রানিত হলাম।
যিনি গভীরতা ধরতে পারেন,তিনি অবশ্যই অভিজ্ঞ সাঁতাড়ু।
শামীম চৌধুরী
এতদিন মেঘ বালিকার সাথে পরিচিত ছিলাম। আজ নীরা আপু ধূসর বালিকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ছন্দ ও চয়ন ঠিক লেখে কি ভাবে লিখেন আপু? টিপসটা দিলে আমিও চেষ্টা করতাম। খুব ভালো লাগলো।
নীরা সাদীয়া
এটা ২০১৭ সালের লেখা কবিতা। তখন কি করে জানি চলে আসতো, আমি নিজেও জানি না। তাই কোন টিপস এখন মনে পড়ছে না।
আমার এই অখাদ্য লেখাটি আপনার ভালো লাগছে জেনে আমিও আনন্দিত।
সাবিনা ইয়াসমিন
জীবন এক বহমান নদী। কখনো মায়াবী, কখনো স্রোতস্বিনী আবার কখনো বেদনার নীলনদ। নদীকে আমার জীবনেরই ছবি মনে হয়। থৈথৈ পানিতে যার শুরু, তারপর কেবল বয়ে চলা। এক সময় থমকে যাওয়া। নতুন করে কোনো নদী আবার বয়, কোনোটি হারিয়ে যায় কালের গহ্বরে।
তোমার উপলব্ধির প্রকাশ অসাধারণ সুন্দর নীরা। ভালো থাকো। ভালোবাসা ❤❤
নীরা সাদীয়া
নদী দিয়ে মানুষের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি, জানি না কতটুকু পেরেছি।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমিও আনন্দিত।
অনেক ধন্যবাদ আপি।
সাবিনা ইয়াসমিন
খুব চমৎকার ভাবেই পেরেছো নীরা। তোমার লেখা পড়লে মনে হয়না এতো ছোট একটি মেয়ের লেখা পড়ছি। ভিষণ সুন্দর আর গোছানো ভাবনার সংমিশ্রণে তৈরি করো। ভালো লাগা বেড়ে যায়। ❤❤
নীরা সাদীয়া
আপনাদের অনুপ্রেরণা আছে বলেই লিখতে পারি আপি। দোয়া করবেন আমার জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
লেখাটি পড়ে এটি একটু পুরনো তা তো মনে হচ্ছে না।
নাম ধরে ধরে নদীর সাথে আমাদের প্রবহমানতা যে ভাবে দেখালেন
তা দেখতে ভালই লাগল।
লিখুন এমন কিছু আরও, নদ আর নদীর কোন উপাখ্যান।
নীরা সাদীয়া
তাই নাকি? আসলে এখন আমি লিখতেই ভুলে গেছি। পুরোনো বলেই সম্ভব হয়েছিলো, কি করে যেন লিখে ফেলেছিলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
তৌহিদ
বাহ! চমৎকার সব উপমায় এমন সুন্দর লেখাটি লিখেছিলেন তখন। পোষ্ট না দিলে জানতামইনা আপনি আসলেই গুনি লেখক।
অনেক কিছুই শেখার বাকী আছে আমার এখনো!
শুভকামনা জানবেন আপু।
নীরা সাদীয়া
আরেহ, আপনাদের মত গুনী হতে পারলাম কই?
অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইলো।
মনির হোসেন মমি
কেমন ছন্দ মিলিয়ে শেষ করলেন নদী ও নারীর গল্পটা।এটি সম্ভবত সোনেলায় প্রথম ছন্দের অন্তর মিলের গল্গ।শুভ কামনা রইল।
নীরা সাদীয়া
তাই নাকি? এটাই প্রথম?
বাহ! জেনে প্রীত হলাম।
আমি ভাবছি পুরোনো লেখাগুলো যদি হারিয়ে যায়, তাই সব অলেখা/আধো আধো লেখাগুলোকে এনে সোনেলায় জমা করব।
শুভ কামনা রইলো।