সকাল সাড়ে এগারটা নাগাদ গলি পথ পেরিয়ে হাইওয়েতে, উদ্দেশ্য বিভাগীয় শহর বরিশাল, হরিহরের একান্ত সাথী লবেজান একটি টমটম। আল্লাহ সহায়।
বুধবার রাতে বাংলালায়ন কাস্টমার কেয়ারের সদা হাস্যময়ী তরতাজা তরুণ জুনিয়র কর্তাকে ফোন করে একটি মোডেম কেনার অভীপ্সার কথা জানাই। শনিবার সকাল এগারটায় আমাকে সব কিছু জানাবে এমন কথা বলে কথা শেষ করি।
শনিবার আমিই ফোন দিলাম, জানালো প্রিপেইড মোডেম নেই, পোস্টপেইড মোডেম আছে,(বুঝুন বিভাগীয় শহরে কোন প্রিপেইড মোডেম নেই) অগত্যা পোস্টপেইড মোডেম ই নেব এমন ইচ্ছাই জানালাম। আমাকে আশ্বস্ত করল এই বলে যে আমরা পৌঁছানোর একঘণ্টার মধ্যেই সব কিছু ঠিক করে মোডেম একটিভ করে দেবে।
বেলা বারোটার দিকে বরিশাল পুলিশ লাইনের বিপরীত দিকে বিগত যৌবনার শানশওকতে শানানো বিশালকায় বাংলা লায়নের কাস্টমার কেয়ারে উপস্থিত হলে করিতকর্মা সদালাপী সেই যুবক অতি যত্নে অতি প্রয়োজনীয় ক্ষীপ্রতায় প্রয়োজনীয় ফর্ম পূরণ করে মডেম ও কাগজপত্র সহ আগরপুর রোডে একটি বিক্রয় কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করল, ফোনে কথা ও বলল সেখানে (এটা কিন্তু বেশ দূরে), আর বলে দিল ওখানের কাজ শেষ হলে যেন তার কাছে চলে আসি, তাহলে অতিদ্রুত মোডেম চালু করে দিতে পারবে। গেলাম সেখানে, অপেক্ষা করছি এখানে যে ছেলেটি কাজ করবে তার জন্য। এলো অবশেষে, কিছু বাকী থাকা ফর্ম ফিলাপ করল। এরপর পিসি তে বসল, বিধির বাম, সব ঠিক আছে, তাদের বাংলা লায়নের মোডেম কাজ করে না। একন কী হপে!!! অগত্যা আমার মডেম দিলাম ও প্রয়োজনীয় কাজ সমাধা করে দিল।
কাঙ্ক্ষিত ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড এল এস এম এস এর মাধ্যমে। এবারে এখানকার অতি বিনয়ী ছেলেটি বলল অত দূরের সেই কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে না একটু বসুন এখনই একটিভ করে দিচ্ছি মোডেম, চা সিঙ্গারা খাওয়ালো। সাথে থাকা ল্যাপুতে মোডেম লাগিয়ে দিতেই লোডিং যে শুরু হলো তা আর থামতেই চায় না, থামতেই চায় না। অতএব আবার সেই কাস্টমার কেয়ার, সর্বোচ্চ চেষ্টার পর জানা গেল নূতন মোডেমটি নষ্ট, এবার আরও জানা গেল যে চৌদ্দ শত টাকা রিচার্জের জন্য পেমেন্ট করে এসেছি সেখানে মাত্র তিন শত টাকা এন্ট্রি দেখাচ্ছে। আবার ফোন শুরু হলো, সেই যে চা খাওয়ানো দোকানদার তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না, সময় গড়াচ্ছে, পেটে ইঁদুর টের পাচ্ছি। অবশেষে এখন আবার নূতন মোডেম নিতে সেই দোকান থেকে, আবার যেতে হবে, অগত্যা উপায় বিহীন হয়ে গাত্রোত্থান। টম টমে উঠতে যাব তখন মুশকিল আসান তরুণ কর্তা দৌড়ে এসে সুসংবাদ দিলেন আপনাদের যেতে হবে না, দোকানের লোক আসছে মোডেম নিয়ে। বসে আছি পথ চেয়ে অবস্থার অবসান হলো বেশ পরে। প্রভুত কোস্তাকুস্তি শেষে একটিভ মোডেমখানা বুঝে নিলাম বাকী টাকা রিচার্জ সহ। তখন বেলা মাত্র চার ঘটিকা, কপাইল্লার কপাল সাথেই থাকে। সে কপাল সাথে নিয়ে সবার সাথে চমৎকার উদরপূর্তি ‘কুটুম বাড়ী’ রেস্তোরাঁয়। এখানে না এলে রেস্তোরাঁটি যে সত্যি ই কুটুম তা জানা হতো না। সামনের কোন দিনে অমায়িক তরুণ কর্তাটির খাবার দাওয়াত কবুল করে বেলা চারটায় শকটে আরোহণ পূর্বক দেশের পথে যাত্রা.........
আরে না, এখানেই শেষ নয়, এরপর এক্সপিডিশন রাউটার কনফিগারেশন, রায়ান্স কম্পিউটার এ, নো হ্যাপা..................
কঠিন পাসওয়ার্ড এবার।
২৫টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
বাংলা লায়নের কাস্টমার কেয়ারে বাংলা লায়নের মডেম কাজ করেনা? 😀
আপনার তো দেখছি সত্যিই কপাইল্লার কপাল, এত্তো সহজে সবকিছু হয়ে গেলো!! সাথে আবার চা সিংগাড়া বয়ে নিয়ে এলেন!! সিম্পল পেরেশানি হরিহরের কিবোর্ডে এসে যাদুবলে দন্ত্য ৩২ খানা বিকশিত করে দিল।
কুটুমবাড়ির নিমন্তন একদিন আমিও ফ্রি সহযোগে খাইবো আশ্বস্ত হইয়াছি।
কঠিন পাসওয়ার্ড নিজের মনে থাকবে তো? 😀
নীতেশ বড়ুয়া
শুন্যাপু তুমি তো আমার মনের কথা প্রথম লাইনেই বইলা দিলা :D)
শুন্য শুন্যালয়
আরো দেখ, চৌদ্দশ পেমেন্ট করে, এন্ট্রি দেখায় তিনশো। এরপর ক্যাম্নে ক্যাম্নে দৌড়ানি দিলো তা আর আমরা না কই। 😀
নীতেশ বড়ুয়া
এমন সিধেসাধা মানুষে পাইলে অমনই করে। ^:^
ছাইরাছ হেলাল
বুইড়া দেখলে দৌড়ানি দেয় সত্য, আবার দাওয়াত ও দেয়।
তা তো দেখলেন না।
ছাইরাছ হেলাল
.মনগুলো দেখছি সব এক দড়িতে বাঁধা।
ছাইরাছ হেলাল
ভাউ, একটি মোডেমেই দিন পার, কপাইল্লার কেমন কপাল, বুঝতেই পারছেন। দন্তের দায় সবই দন্ত চিকিৎসকের!!
আপনার জন্য শত শত দিন কুটুমবাড়ি ফ্রি।
মনের যা অবস্থা তাতে ভরসা পাচ্ছি না পাস ওয়ার্ডের।
শুন্য শুন্যালয়
মনের আবার কি হইলো!! এমনিতেই নাম হইতেছে, পাস ওয়ার্ড, অর্থাৎ যে শব্দ হারাইয়া গিয়াছে। তাই ভুলে যাওয়া আপনার ন্যায্য অধিকার।
দাঁতের জন্য সব দায় টুথপেস্টের আর ফ্লোরাইড মিশ্রিত এমন লেখা।
ছাইরাছ হেলাল
খালি পেস্টে দাঁত ফকফকা হয় না, রাখাও যায় না, দাক্তার এট্টু লাগেই।
সবার ই পাস ওয়ার্ডের দিন আসবে , আগে আর পরে।
লীলাবতী
এ দেখি এখটি যুদ্ধ ক্ষেত্রের বর্ননা দিলেন।কুটুম বাড়ি খাবার হোটেলের নাম পছন্দ হয়েছে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আসলেই এটি একটি যুদ্ধ ছিল।
শুধু নাম না, খাবার ও কুটুমদের মতই, আপনাকেও দাওয়াত দিচ্ছি।
নাসির সারওয়ার
হে হে হে। গাঁও গেরামের থাকলে যা হয়।
দুনিয়ায় প্যাচগি লাগছে ফাইবার অপটিক নাযেনো ক্যামন প্যাঁচানো তারে, আর উনি আছেন মোডেম নিয়া।
ছাইরাছ হেলাল
গেরামে থাকি বলে সাধ-আহ্লাদ বলে কি কিছু থাকতে নেই!!
কুটুম বাড়ীর দাওয়াত দিয়ে রাখলাম।
নাসির সারওয়ার
এই সব সাধ-আহ্লাদ থাকার দরকার কি! আর যদি থেকেই থাকে, তবে রাজধানী থেকে সুগন্ধা নদীর নীচে দিয়ে প্যাঁচানো তার নিয়ে যান।
চিনি পাতা দই আছেতো? কতদিন খাইনা। নিমন্ত্রণ পেয়ে জিবে পানি এসে গেলো!
ছাইরাছ হেলাল
তার-তুর বাদ, লাই ফাই আসছে, অপেক্ষা মাত্র।
খালি চিনি পাতা না অনেক পাতার দই ই প্রস্তুত আছে, টুপ করে গিলে ফেলার অপেক্ষা মাত্র।
অরুনি মায়া
একটা মডেম কিনতে এত নাজেহাল হতে হল ! ঠিকই আছে | মাঝে মাঝে একটু দৌড়ানি দরকার |
ঘোড়া গাড়ির টমটমে আমার চড়ার খুব শখ | তবে একা একা নয় বিশেষ কারো সাথে |
কুটুম বাড়ি সবাই দাওয়াত পায় শুধু আমি পাইনা
;( (-3
ছাইরাছ হেলাল
কোথায় আপনি দৌড়ানি দেখে একটু উহু আহা করবেন তা না, ধম্মো দেখতেছেন!!
মনের ইচ্ছে অপূর্ণ রাখা ঠিক না,
শুধু কুটুম বাড়ীর দাওয়াত তো দেয়া যায় না, ধরে নিন আর ও অনেক দাওয়াত ও আপনাকে দিয়ে দিলাম।
অরুনি মায়া
শুধু মুখের কথা মানিনা, কাজে করে দেখাতে হবে। আগে টমটম তারপর দাওয়াত :p
ছাইরাছ হেলাল
দুয়ারে দাঁড়িয়ে রথ, আজ্ঞা করুন এবার।
জিসান শা ইকরাম
অব্যবস্থা হোক আর যাই হোক, একটা পর্যায়ে স্টাফরা কিন্তু অত্যন্ত আন্তরিক ব্যবহার করেছে
উপরি লাভ কুটুম বাড়ি 🙂
মডেম তো জেট বিমানের মত গতিতে চলছে,
সব ভালো যার শেষ ভালো 🙂
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই তাদের আন্তরিকতায় কোন ঘাটতি ছিল না।
দাওয়াত তো গ্রহন করতেই হয়েছে।
গতিময়তা ই জীবন, গতি বজায় রাখতেই হবে।
আবু খায়ের আনিছ
এমন একটা বিজ্ঞাপন বানাইলে কেমন হবে ভাইয়া? বাংলা + লায়ন, লায়ন গতিতে বিক্রি হয়ে যাবে। 😀 😀
ছাইরাছ হেলাল
কী যে হ্যাপা তা বোঝানো প্রায় অসম্ভব।
শেষ ভরসা ওদের আন্তরিকতা।
আবু খায়ের আনিছ
নেগেটিভ ইম্প্যাক্টটা পুষিয়ে দিয়েছে শেষের আন্তরিকতা, নেগেটিভটাকে পজেটিভে রুপান্তর করেছে।
ছাইরাছ হেলাল
ঠিক ধরেছেন, অমায়িক সে কর্তাটি।