মিছিল

নাজমুল হোসেন নয়ন ২১ এপ্রিল ২০২১, বুধবার, ০৫:১৭:৪৯অপরাহ্ন কবিতা ৭ মন্তব্য

 

আমরা কি,

তান্ত্রিক সাপুরের বাক্সকে

জিভচেটে বানিয়ে ফেলবো পৃথিবীর থেকে এক বিঘাত লম্বা কাকতাড়ুয়া?

 

আমাদের পূর্বপুরুষকে যে থালায় বিষ মাখিয়ে

ভাত দিয়েছিলো মহাকালের চরে জেগে ওঠা নিদারুণ মাইক ফুলের মত রমনি ।

 

সেই থালায় শশাফুলের তীব্র থেকে তীব্রতর হলুদে

আমি ভ্যানগোগের পাইচারি দেখতে পাচ্ছি বেমালুম।

 

আমরা আগিয়ে যাচ্ছি বামপাজরের দিগন্ত রেখা বরাবর মরিচ ফুলের পাপ হয়ে।

 

যে বেওয়ারিশ গুলি লেগেছিলো বুকের ঠিক মাঝখানটায়

সেই রক্ত, সেই ভেজা লবণাক্ত চাপ চাপ মাটি  ঢেকে দিচ্ছে ভাতের থালা, অথবা সর্বহারাদের  প্রতিবাদ।

 

বিপ্লব প্রসারিত হচ্ছে মাটির শরীরের আনাচে,কানাচে

আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেলে

অক্ষয়াকে ঠিক বিপরীতে বসিয়ে বলেছিলাম

গতকাল নন্দীগ্রামে ১৪ জন নয় ১৭ জন মরেছে।

 

আমাকে শক্ত করে ধরো

প্রগতিবাদী উৎস গুলোকে আত্মসাৎ করে এভাবেই নেমে এসেছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।

 

আমি ও বাকি তিনজন এই রথের সারথি হয়ে

মিছিলে যাবো।

 

কাল সকালে তোমার বামপাজর ছোঁয়া না ও পেতে পারো আমায়।

 

উত্তরে অক্ষয়া বলেছিলো শব্দটি যদি বিপ্লব শুনে থাকি  আগামী কালের সন্ধ্যার মশাল মিছিলে  আমিও পা মেলবো দেখে নিও।

 

লাভলেইন পেরুতেই সংশয়বাদীরা আমাদে

তুলে নিলো চিনামাটির আস্তর দেওয়া মাটির প্লেটে।

 

মহাকাল বুঝে ওঠার রাজদন্ডে মাটির শরীর গিলে  খাচ্ছে  ঝলসানো মুরগীর মেরুদণ্ডের উলম্ব রেখা।

 

দুই জন কবি মুখোমুখি বসে আমাকে ধারনা দিচ্ছিলেন পরমহংসের।

 

একজন তাদের কবিতার যাপনের আলপথে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন সুনামগঞ্জের এক কৌলীন কবির অহমের বান্দায়।

 

পাসে বসে থাকা কবি সহসা বলে উঠলেন ঠাওর কর ওর ভেতর এখন আমি।

আমি  নিত্য সাঁঝের আরতীর থালায়

রক্তজবা হয়ে ফুটে রইলাম ক্ষণকাল।

 

আমি কি ঠিক বুঝাতে পারছি বলে কবি মৃদু হাসলেন।

 

কবির আইলেভেলের কিঞ্চিৎ উপরে,

উলম্ব রেখায় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম

তাঁর চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া গরম কফি।

 

তার যাপনের মৌজায় পা রাখতেই

আমার  অবয়ব এফোঁড়ওফোঁড় করে

সেলাই হয়ে যাচ্ছিলো সানমারের লম্বা পিলারে।

 

পিলার বেয়ে গড়িয়ে পরছিলো

প্রস্তাবিত মাটি বর্ণের কফি।

অথবা শহরের নগ্ন শরীরে টেন্সিলে লেখা ইশতেহার।

 

হাজির-জবাবে বলছি হে অক্ষয়া

ক্ষরণে তো এখনো বুকে পিঠে ব্যাথা হয় না।

তাহলে হয়ে যাই চলো প্রদীপ বানোর কাঁদামাটি।

বিপ্লবোত্তর ফুল হয়ে ফুটি পল্লিবালার ভাতের পাতিলে।

 

চৈত্রের মাটিতে প্রথম বৃষ্টিজলের ছোঁয়ার মতো আমার কোষ বহুজাতিক কোম্পানির

বিজ্ঞাপনের

এনামেল রংয়ে তীব্র হলুদের বিপরীতে লেখছে লাল রংয়ের ইশতেহার।

 

পল্টন, শাপলা চত্বর শাহবাগে ব্যানাদের শ্লোগানে,পলাশ আরো আরো রক্তিম হয়ে ফুটছে।

সমাধীর জায়গা নির্ধানের দাবী নিয়ে ওরা ঘিরে ফেলেছে গন ভবন, ছু্য়েছে সংসদ ভবনের সুউচ্চ মিনার।

 

হাত উঁচিয়ে মুক্তির ধান শুখাচ্ছে লুইআইকানের নকশার তির্ষক লাইনে।

মিছিলে আজ কত জন পায়ে পা মেলালো??

ধরে নও আজ যতোগুলো পলাশ  ফুটেছে।

 

 

 

 

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ