'১লা বৈশাখ' সার্বজনীন বাঙালী উৎসব!

১। বাঙলা নববর্ষ '১৪২২ এর প্রথম দিন ছিলো আজ। সারা বাঙলায় আজ খুশির জোয়ার। ঘরে-বাইরে, পথে-প্রান্তরে, সব জায়গায়। দিনকে দিন এই উৎসবে জনসমাগম বেড়েই চলেছে।

বাঙালীরা আজ ষোলআনা বাঙালী সাজে পথে নেমে এসেছে।

'১লা বৈশাখ' এলে আমাদের সবার মাঝেই কেমন যেনো একটু বাঙালী ভাব জেগে উঠে। পোষাকে, খাবারে বাঙালীত্ব ধারন করা চাই! উৎসব হিসাবে দিনটিকে স্পেশাল করার জন্যে বাঙালীত্ব ধারন করা, ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা অবশ্যই নান্দনিক। সারাবিশ্ব এখন অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে আমাদের এই নান্দনিক আয়োজনে বর্ষবরন উৎসব! কিন্তু

আজকের দিনটির মতো যদি আমরা সারাটি বছর মননে বাঙালীত্ব ধারন করি, ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা করি তাহলে আমার দেশের আগামীদিনের চেহারাটা একটু ভাবুন তো!

 

২। আমরা কিছু একটা সমস্যা হলেই কথায় কথায় ভারতের গোষ্ঠী উদ্ধার করি। সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকে গালি গালাজ করে নিজেদের সুন্দর চেহারাকে কুৎসিত রুপে প্রকাশ করি। কিন্তু খুব কি কাজের কাজ কিছু হয় তাতে? গালি দিয়ে যাদের গোষ্ঠী উদ্ধার করি, তাদের কি কোন কিছু যায় আসে? এমন লম্পজম্প না করে যদি গঠনমূলক প্রতিবাদ করি তাহলে কি হয় না? কিন্তু

ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে আমরা কি করলাম? গালি-গালাজ! ফল কি কিছু হলো? হয়নি তো? বরং চুক্তির মেয়াদ ১৫ মাস বাকি থাকতেই সরকার থেকে 'সাহারা'র সাথে চুক্তি বাতিল করাটা ছিলো গঠনমূলক প্রতিবাদ।

সরকারের কাজ সরকার করেছে। আমরা আমাদের কাজটুকু করি! দেশ তো আমাদের সকলের, সরকার কেবল পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে।

ভারত তার পণ্য দিয়ে একতরফাভাবে আমাদের বাজার দখল করে নিয়েছে। আমরা যদি আমাদের প্রোডাক্টগুলো নিয়মিত ব্যবহার করি তাহলে কি ভারতের প্রতি আমাদের প্রতিবাদটা জোড়ালো হয় না?

 

৩। গালি দিয়ে নিজেদের সুন্দর চেহারাকে কুৎসিত রুপে প্রকাশ করবো কেনো? তারচেয়ে বরং তাদের পণ্য ব্যবহার যদি বন্ধ করে দেই তাহলে তো সাপও মরে, লাঠিও বাচেঁ।

আমরা হয়তো অনেক কিছু করতে পারি না কিন্তু দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে আমাদের সামান্য ইচ্ছাটাই যথেষ্ট। এতে যেমন নিজেদের পণ্যের ব্যবহার বাড়বে তেমনি অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থানও হবে। আমরা বাজারে সুন্দর চিনি খুঁজি, অথচ আমাদের চিনিকলগুলোতে কোটি কোটি টাকার চিনি পচে। কর্মচারীরা বেতন পায় না। আমাদের পণ্য আমরা ব্যবহার না করলে দোকানীরাও বাজারে আনবে না। সুন্দর চিনি খুঁজলে ওই রিফাইন করা ভারতীয় চিনিটাই রাখবে।

একটা দেশ তখনই এগিয়ে যায়, যখন সে তার নিজের পায়ে দাঁড়ায়। আমরা যদি নিজেদের পণ্য নিজেরা ব্যবহার না করি, তবে দেশ দাঁড়াবে কি করে? আমাদের দিয়েই তো দেশ।

 

কাজেই আসুন, আমরা কেবল একদিনের জন্য পোষাকী বাঙালীত্ব ধারন না করে সারাটি বছর মননে বাঙালীত্ব ধারনকরি, ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা করি। একদিন ঠিক দেখবেন, এই বাঙালীর মাথা উচুঁ করে দাঁড়ানোর রহস্যও সারাবিশ্ব অবাক হয়ে খুঁজে বেড়াবে।

স্বদেশী পণ্য কিনে হও ধন্য। বিদেশী পণ্য কিনে হবে শূন্য।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ