স্মৃতি বড়ই মধুর

শামীম চৌধুরী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, বুধবার, ০৩:৪৫:৪০অপরাহ্ন স্মৃতিকথা ৪১ মন্তব্য

বছরগুলি ছিলো ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০। তখন আমরা স্কুল ও কলেজে পড়তাম। ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকেই আমাদের মাঝে অনেকেই ধুমপানে অভ্যস্ত হয়। আবার অনেকে কলেজ জীবনে। নীচের ছবিগুলি আমাদের সময় সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য ব্রান্ড ও কম/উচ্চ মূল্যের সিগারেট ছিলো। ছবির বাহিরেও আরো বেশ কয়েকটি ব্রান্ড ছিলো। নেটে ছবি না পাওয়ার দরুন ছবি দিতে পারলাম না। আবার অনেকগুলির নামও এখন মনে নেই।

গোটা একটা সিগারেট কারো পক্ষে একা পান করা সম্ভব ছিলো না। এক শলাকা সিগারেট ৩/৪ জন বন্ধু মিলে ধুমপান করতাম। যেহেতু আমরা ছাত্র ছিলাম তাই স্টার ও রমনা ব্রান্ড ছিলো আমাদের ক্রয়ের মধ্যে। তখন স্টার সিগারেট পাওয়া যেত ১ টাকা ৫০ পয়সায় আর রমনা ছিলো ১ টাকা ১০ পয়সা। বাবার পকেটের টাকা হাতিয়ে নিতে ব্যার্থ হলে মাঝে মাঝে বিড়ি-ও পান করতাম।

আমাদের মাঝে যারা ধনীর দুলাল ছিলো তাদের পছন্দের ব্রান্ড ছিলো ক্যাপস্টান। আমাদের একটি অঘোষিত সংগঠন ছিলো। আমারা এসএসসি পাশ করার পর সকল বন্ধুরা এই সংগঠন করি। যার নাম ছিলো “বে-রুল” (BE-RULE) মানে আইন বহির্ভুত।
আমরা আইন বহির্ভুত কাজগুলো করতে পারদর্শী ছিলাম। তবে রাষেট্রর জন্য ক্ষতিকর কাজ করতাম না। যার জন্য অন্যান্য স্কুল বা কলেজের বন্ধুরা আমাদের সমীহ করে চলতো। তারা অগোচরে একে অপরকে বলতো দেখ দেখ বেরুল আইতাছে।
তবে আমাদের সময় ইভটিজিং ছিলো না।

আমাদের আড্ডা ছিলো ময়মনসিংহ টাউন হলে। ছুটির দিনগুলিতে আমরা টাউন হলের গাড়ি বারান্দায় মিলিত হতাম। দূর থেকে কোন বন্ধুর হাতে সিগারেট দেখলে চিৎকার করে জানান দিতাম ফার্ষ্ট বুক আমার। আরেক জন না দেখেই বলতো সেকেন্ড বুক আমার। অর্থাৎ পানকরা সিগারেট বহনকারী বন্ধুকে তার ধুমপানের পর সিগারেটের অর্ধেক অংশ ফার্স্ট বুককারীকে দিতে বাধ্য থাকিবে। পরের জন সেই সিগারেটের অর্ধেক পান করে সেকেন্ড বুককারীকে দিবে। এটাই ছিলো বে-রুলের কঠোর আইন। এই আইন ভঙ্গ করার শক্তি কারো ছিলো না।
আমাদের মাঝে যারা বেশী টেটনা ছিলো তারা আড্ডায় আসার আগেই কাজটি সেরে ফেলতো। আমরা তাদের মুখে গন্ধ পাওয়ার পর বুঝতাম। আড্ডায় কেউ সিগারেট জ্বালালে সেই টেটনারা তার ভাগ পেত না।

আহা...কি দিনগুলি ছিলো আমাদের। এমন দিনে কার না ফিরে যেতে মন চায়।
স্মৃতি বড়ই মধুর।

0 Shares

৪১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ