সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠীঃ

শামীম চৌধুরী ২০ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার, ০৫:১৯:৩৪অপরাহ্ন পরিবেশ ২৪ মন্তব্য

সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠী বা Siberian rubythroat পাখিটি উত্তর এশিয়ার খুবই পরিচিত একটি ছোট পাখি। শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে আসে। এরা পরিযায়ী পাখি। আমাদের দেশে মূলত খাদ্য সন্ধানে আসে। এখানে তিন থেকে চার মাস অবস্থান করার পর প্রজননের জন্য আবার চলে যায় নিজ আবাসে। এরা মূলত ঠান্ডা থেকে দূরে থাকতে চায়। যার জন্য শীত মৌসুমে পরিযায়ী হয়ে বিভিন্ন দেশে চলে আসে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার ও আশেপাশের দেশগুলোতেও এ পাখি দেখা যায়। তবে আমাদের দেশের জন্য সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠী বিরল পরিযায়ী একটি পাখি। অনেকের কাছে পাখিটি ‘লাল গলা বা গুম্পিগোরা’ নামেও পরিচিত।

পাখিটির দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৫-১৭ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ২২-২৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির গলার মাঝখানে উজ্জ্বল লাল রঙের। যা পাখিটির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে। উপর-নিচে স্পষ্ট চওড়া সাদা টান। অপরদিকে স্ত্রী পাখির গলা অস্পষ্ট সাদাটে ও বেগুনী রেখা। উভয়ের মাথা, পিঠ ও লেজ জলপাই-বাদামি। লেজ ঊর্ধ্বমুখী। লেজতল সাদাটে। বুক ধূসর। পেট জলপাই-বাদামির উপর অস্পষ্ট সাদাটে। ঠোঁট কালো, গোড়ার দিকে ফ্যাকাসে। চোখ কালো। পুরুষ পাখির ভ্রু-রেখা স্পষ্ট সাদা, গলা চুনি লাল, থুতনির পাশে কালো টান থাকে। মেয়ে পাখির গলা সাদা কিংবা বেগুনি। মূলত পুরুষ পাখিটির গলা চুন্নি পাথরের মতো লাল টকটকে হওয়ায় বাংলায় চুনিকণ্ঠী নামকরণ হয়েছে।

এদের প্রধান খাবার পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। এরা ময়লার স্তুপ বা জমে থাকা লতাপাতা থেকে ঠোঁট দিয়ে খাবার খুঁজে খুঁজে খায়। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট। বাসা বাঁধে সাইবেরিয়ার তাইগ্যা অঞ্চলে। সরাসরি ভূমিতে ঘাস, তন্তু, চিকন ডালপালা ও চুল পেঁচিয়ে বাসা বানায়। এরা ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪ দিন। বাচ্চা ফুটে উড়ে যেতে আরো সময় লাগে দুই সপ্তাহ। প্রজননের পর থেকে মোটামুটি ৪৫ দিনের মাথায় এরা বংশবৃদ্ধি করে প্রকৃতিতে মিশে থাকে।

বাংলা নাম: সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠী
ইংরেজি নাম: Siberian rubythroat
বৈজ্ঞানিক নামঃ Luscinia Calliope

ছবিগুলো ঢাকার দক্ষিণ কেরনীগঞ্জের আঁড়ারকূল গ্রাম ও উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে তোলা।

0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ