পানির অপর নাম জীবন তা মানুষের বেলায় হউক আর বৃক্ষ ফসলাদির বেলায় হোক জীবনের জন্য তার প্রয়োজনিতা অপরিসীম।এই পানি বা জলের বন্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে দীর্ঘকাল ধরে চলছে বন্টনের টানা হেচড়া।কলকাতা এক সময় বাংলা ভাষা প্রভাবের জন্য বাংলাদেশের একটি অঞ্চল মনে করা হতো।রাজনৈতিক কূটিলতায় ধর্মের ভিত্তিতে তা ভারতকে পাইয়ে দেয়া হয় ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগা ভাগির সময়।সেই অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী মমতা যার কথা শুনলে কখনোই ভারতীয় মনে হয় না সেই আমাদের প্রিয় জননীর উদরে এখন মৃত প্রায় তিস্তা নদীর পানি বন্টনের চাবি।সেই চাবি আমাদের ন্যার্য্য পাওনা অথচ জোড় যার মুল্লুক তারের মতো তা নিজেরা দখল করে রেখে আমাদের শুষ্ক মৌসুমে খরায় শুকিয়ে মারছেন আবার বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা খুলে দিয়ে ডুবিয়ে মারছেন।এটা হতে পারে না তাদের কৃষি উন্নয়ণে পানি পুরোটা নিবেন আর আমাদের কৃষকরা শুকিয়ে মরবে তা কি হয়!এখন তাই করছেন মমতা।সে চিন্তা করছেন অন্য ভাবে সে আমাদের জল দিবেন তাই ভাবছেন সময় এলেই তা বলবেন।সে কি ভাবে জল দিবেন?সে কি নতুন নদী সৃষ্টি করতে পারবেন?নাকি নদীর গতি পথ পরিবর্তন করবেন যা আদৌ সম্ভব নয়।
এখন দেখা যাক সংক্ষিপ্ত এ চুক্তির নমুনা:
14570493_620005224849000_4743381435918062337_nবাংলাদেশের লাল মণির হাট জেলার দোয়ানি উপজেলার উপর তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয় ১৯৯০ সালে যার দৈর্ঘ্য ৬১৫ মিটার।তার নিয়ন্ত্রক গেট রয়েছে ৪৪টি।এই ব্যারেজটির সাহায্যে বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার ৩৫টি উপজেলার ৭৫,০০০ হেক্টর (৭৫০০বর্গ কিলো মিটার) জমিতে সেচ,বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিস্কাশন করা হয়।তিস্তা নদীর এই অবকাঠামো গুলোর মধ্যে কাউনিয়া রেলসেতুও রয়েছে।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের জল পাই গুড়ি শহরের উজানে গজল ডোবা নামক স্থানে ভারত সরকার ১৯৮৬ সালে তিস্তা নদীর উপর দিয়ে একটি ব্যারেজ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেন।যার দৈর্ঘ্য ৯২১.৫৩ মিটার।নিয়ন্ত্রক গেট রয়েছে ৪৫টি।গজল ডোবা স্থানটি বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজের ১০০ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত।
ভারত সরকার এই ব্যারেজের সাহায্যে শুকনা মৌসুমে ১৫০০ কিউসেক পানি মহা নন্দা নদীতে সরিয়ে নিচ্ছেন।ভারত কর্তৃক উজানের গজল ডোবায় এরূপ পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলদেশের ভাটির দোয়ানিতে পানির সংকট দেখা দেয়।ভারতের সাথে সীমান্ত নদী বিষয়ে আলাপ-আলোচনা,তথ্য বিনিময়,পানি বন্টন চুক্তি ইত্যাদি সমাধানে ‘যৌথ নদী কমিশন’গঠন করেন।বাংলাদেশ ও ভারত এই উভয় দেশের সম্মতি ক্রমে উভয় দেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ১৯৭২ সালে এই কমিশন গঠন করা হয় যাহাতে তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে দুই দেশে মধ্যে তথ্য বিনিময় ও দীর্ঘ আলাপ আলোচনা হয়।
স্বাভাবিক ভাবে তিস্তার পানি প্রবাহ বর্ষা মৌসুমে ২,৮০,০০০ কিউসেক,আর শুকনা মৌসুমে ১৪, ০০০ কিউসেক বিদ্যমান থাকে।কিন্তু ভারতের গজল ডোবায় ব্যারেজ নির্মাণের পর পানি প্রবাহের এই হার অ-স্বাভাবিক হারে কমতে থাকে।শুকনা মৌসুমে এই পরিমাণ দাঁড়ায় ৪,০০০ কিউসেক।বিশেষ খরা মৌসুমে এর পরিমাণ ১,০০০ কিউসেকে নেমে আসে।
এখন প্রশ্ন হলো এই অস্বাভাবিক পানি হ্রাসের কারণ কি?
ভারত গজল ডোবার উজানে পানি সরিয়ে মহা নন্দা নদীতে নিয়ে যায়।সে পানি টাঙ্গন নদীতে সরবরাহ করা হয়।এই পানি দিয়ে বিহার ও উত্তর বঙ্গে সেচ সহায়তা দেওয়া হয়।এ ছাড়াও সিকিম তিস্তার উজানে কয়েকটি উপনদীতে ড্যাম নির্মাণ করেছেন তারা যার সাহায্যে শুকনা মৌসুমে পানি আটকিয়ে রাখা যায় এবং প্রবাহ বৃদ্ধি করা যায়।এসব কারণে বাংলাদেশর দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ হ্রাস পেতে থাকে।
এরূপ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পানি বন্টনে জটিলতা দেখা দেয়।বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় শুকনা মৌসুমে গজল ডোবা পয়েন্টে বাংলাদেশ পাবেন ৬০% এবং ভারত পাবে ৪০%। এক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়, মোট প্রবাহিত পানি ১০০% দু'দেশের মধ্যে বন্টন করা হলে নদীকে সচল রাখার জন্য কোনো পানি অবশিষ্ট থাকবে না।নদীকে সচল রাখার জন্য মোট প্রবাহের ২০% সংরক্ষিত রাখা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত।তাই মোট প্রবাহের ২০% সংরক্ষিত রেখে অবশিষ্ট ৮০% পানি দু'দেশের ভেতর ৫০%-৫০% হারে বন্টন করা যেতে পারে।অপর এক সূত্র বলছেন বন্টনের এই হার ৪৮%-৫২% হতে পারে।তবে এই চুক্তি অনুমেয়।
তারপর ২০১০ সালের মার্চ মাসে নয়া দিল্লীতে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়।সেই বৈঠকে বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রী গজল ডোবা পয়েন্টে ৫০-৫০ পানি বন্টনের দাবী তোলেন।সে সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার প্রকাশিত খবরে এই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসবেন।পশ্চিম বঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার সফর সঙ্গী হবেন।সে সময়ে দুই দেশের মধ্যে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি হবে।চুক্তির খসড়া পত্রে উভয় দেশের সই করা আছে,এখন শুধু চূড়ান্ত স্বাক্ষর বাকি।
এই স্বক্ষরটিই ঝুলে আছে অথবা ঝুলে থাকবে যত দিন মমতার মাঝে প্রকৃত মমতার উদয় না হবে পরে হক মেরে খাওয়া যে অন্যায় তা তাকে বুঝাতে জনমত গড়ে তুলা জরুরী।
ফারাক্কা বাধ
আরেকটি মরন বাধ যা কলকাতা বন্দরকে পলির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভারত সরকার প্রায় ১৮ মাইল উজানে মনোহর পুরের কাছে নির্মিত ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ও ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করেছে।ভারত কর্তৃক এ বাধের ফলে বাংলাদেশে পরিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংস এবং এ দেশের কৃষি, শিল্প, বনসম্পদ ও নৌ-যোগা যোগের মতো অর্থনৈতিক খাত গুলির উপরও হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।১৯৫১ সালের ২৯ অক্টোবর তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রথমবারের মতো পশ্চিম বঙ্গে ভাগিরথী নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গানদী থেকে বিপুল পরিমাণ পানি প্রত্যাহারের ভারতীয় পরিকল্পনা সর্ম্পকে জানতে চাইলে গঙ্গার বিষয়টি সবার নজরে আসে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে গঙ্গা প্রশ্নে জরুরি আন্তরিক আলোচনা শুরু করেন।১৯৭২ সালে গঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (JRC)। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বয় এক যৌথ ঘোষণায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে,ফারাক্কা প্রকল্প চালু করার আগে গঙ্গায় বছরে সর্ব নিম্ন প্রবাহের সময় কালে নদীর জল বণ্টন প্রশ্নে তারা পারস্পরিক গ্রহণ যোগ্য একটি মতৈক্যে উপনীত হবেন।বৈঠকে আরো বলা হয় যে শুষ্ক মৌসুমের পানি ভাগা ভাগির পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আগে ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হবে না।
বেঈমান ভারত:
১৯৭৫ সালে ভারত বাংলাদেশকে জানায় যে,ফারাক্কা বাঁধের ফিডার ক্যানাল পরীক্ষা করা তাদের খুব প্রয়োজন।সে সময় ভারত ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১০ দিন ফারাক্কা থেকে ৩১০-৪৫০ কিউবিক মিটার/সেকেন্ড গঙ্গার প্রবাহ প্রত্যাহার করার ব্যাপারে বাংলাদেশের অনুমতি প্রার্থনা করেন।বাংলাদেশ সরকার সরল বিশ্বাসে এতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।ভারত বাঁধ চালু করে দেয় এবং নির্ধারিত সময়ের পরেও এক তরফা ভাবে গঙ্গার গতি পরিবর্তন করতে থাকে যা ১৯৭৬ সালের পুরা শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।উদ্দ্যেশ্য,কলকাতা বন্দরের নাব্যতা উন্নয়নে পলি ধুয়ে নিতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদী থেকে পশ্চিম বঙ্গের ভাগিরথী-হুগলী নদীতে ১১৩০ কিউবিক মিটারের বেশি পানি পৌঁছে দেওয়া।

পরে ভারতকে এ কাজ থেকে বিরত করতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয়। ১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি সর্বসম্মত বিবৃতি গৃহীত হয় যাতে অন্যান্যের মধ্যে ভারতকে সমস্যার একটি ন্যায্য ও দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর জের ধরে কয়েক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৭ সালের ৫ নভেম্বর দুই দেশ ফারাক্কায় প্রাপ্ত শুষ্ক মৌসুমের জল বণ্টনের উপর ১৯৭৮ থেকে ৮২ পাচঁ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮৩ ও ৮৪ সালের জন্য গঙ্গার জল বণ্টন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।কোন সমঝোতা চুক্তি না থাকায় ১৯৮৫ সালে গঙ্গার জলের ভাগ বাটোয়ারা হয় নি।১৯৮৫ সালের নভেম্বর মাসে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮-এই তিন বছরের জন্য পানি বণ্টনের ওপর আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বণ্টন সংক্রান্ত এই অস্থায়ী ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল এলাকায় বিভিন্ন খাতে গঙ্গার পানির আরও অর্থ বহ ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন নি।
১৯৮৯ সালের পর শুষ্ক মৌসুম থেকে জল ভাগা ভাগি সংক্রান্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা চালু ছিল না।সেই সুযোগে ভারত শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি ব্যাপক ভাবে এক তরফা প্রত্যাহার শুরু করে।ফলে বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবাহ দারুণ ভাবে হ্রাস পায়।হিসাবে দেখা যায় যে, প্রাক-ফারাক্কা আমলে মার্চ মাসে হার্ডিঞ্জ সেতুর কাছে যেখানে গঙ্গার প্রবাহ ছিল প্রতি সেকেন্ডে ১৯৮০ কিউবিক মিটার, ১৯৯৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২৬১ কিউবিক মিটারে।১৯৯২ সালের মে মাসে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে বৈঠকে ভারতীয় প্রধান মন্ত্রী দ্ব্যর্থ হীন ভাবে আশ্বাস দেন যে,ফারাক্কায় গঙ্গার পানি সাম্যতার ভিত্তিতে বণ্টনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অযথা হয়রানি থেকে রেহাই দিতে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে দুটি মন্ত্রী পর্যায়ের ও দুটি সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।যদিও বণ্টন সংক্রান্ত কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়া যায় নি।বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে আবার বৈঠকে মিলিত হন কিন্তু বাংলাদেশকে অযথা হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার ভারতীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রতি শ্রুতি পূর্বাপর অপূর্ণই থেকে গেল।সব শেষে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে উপনীত হতে সক্ষম হয়।
বাধেঁ বাংলাদেশে ক্ষতিকর দিকগুলো:
 শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানির ব্যাপক প্রত্যাহার বাংলাদেশের গঙ্গা-নির্ভর এলাকার জনগণের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।এ বাধেঁর ফলে পর বছর শুষ্ক মৌসুমের মূল্যবান পানি সম্পদ প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশকে আজও কৃষি, মৎস্য, বনজ, শিল্প, নৌ-পরিবহণ,জল সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।এ ক্ষেত্রে জানা যায় প্রত্যক্ষ ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।পরোক্ষ ক্ষতি হিসাবে আনলে এই পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
গঙ্গার জল প্রবাহ হ্রাসের ফলে অত্যধিক পলি ময়তার সৃষ্টি হয়েছে যা নদীর বুক ভরাট করে নদীর খাড়ি গুলির পরিবহণ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে।এ ভাবে বর্ষায় ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে।বাংলাদেশে গঙ্গার প্রধান শাখা নদী গড়াইয়ের নিষ্কাশন মুখ জানুয়ারির প্রথম ভাগেই ভরাট হয়ে আসে যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই নদীটি পুরা শুষ্ক মৌসুম জুড়ে শীর্ণকায়া হয়ে থাকে।আর বর্ষায় বাধঁ খুলে আমাদের বন্যায় ডুবায়।
কৃষি খাত সব চেয়ে বেশী ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে।ফারাক্কা-উত্তর বছর গুলিতে গঙ্গার পানির সীমারেখা দ্রুত নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের পাম্পমেশিন চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে।ঐ প্রকল্পের প্রত্যক্ষ এখতিয়ারে ১,২১,৪১০ হেক্টর জমির সেচ নির্ভর করে।গঙ্গার প্রবাহ অত্যধিক নেমে যাওয়ায় প্রকল্পের পাম্পগুলি হয় কর্ম হীন অবস্থায় পড়ে আছে নয়ত সামর্থ্যের চেয়ে অনেক কম শক্তিতে চলছে।এছাড়া, মাটির আর্দ্রতা ও মাটির লবণাক্ততার উপর অত্যধিক চাপ এবং নতুন ভূ-গর্ভস্থ জলের অভাব সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কৃষি কাজকে দারুণ ভাবে ব্যাহত করছে।
ভূ-গর্ভস্থ পানি  ফারাক্কা বাঁধের ফলে গঙ্গা-নির্ভর এলাকায় দেখা যায় ভূ-গর্ভস্থ পানি অধিকাংশ স্থানে তিন মিটারের বেশি নেমে গেছে।মোট দ্রবী ভূত ঘন বস্তু, ক্লোরাইড,সালফেট ইত্যাদির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির গুণ গত মানও কমে গেছে।ফলে বিশাল এলাকার কৃষি কাজ, কল কারখানা,গার্হস্থ্য ও পৌর জল সরবরাহ এবং মাটি ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে।জনগণ ১২০০ mg/l TDS (total dissolved solids) পানীয় জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন- যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পানীয় জলের জন্য অনুমোদিত সীমা মাত্র ৫০০ mg/l। জন সাধারণের সার্বিক স্বাস্থ্যের মান এ কারণে হ্রাস পাচ্ছে।

১৯৭১ সালে ভারত আমাদের পরাধীন দেশকে স্বাধীন করতে বিশাল সহযোগিতা করেছিল তার জন্য আমরা অকৃতজ্ঞ নই আমরা কৃতজ্ঞ তাদের সেই সময়কার ত্যাগের জন্য।তাই বলে এই নয় যে তাদের ইচ্ছে মতো আমাদের ন্যার্য্য অধিকারগুলো হতে আমাদের বঞ্চিত করবেন,তা হলে পাকিদের সাথে বন্ধুপ্রতিম ভারতের পার্থক্য কি আর রইল।পাকিরা না হয় সে সময় আমাদের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে আর ভারত করছেন পথ সীমান্ত আর নদী দিয়ে।
একটি যুদ্ধ বিধ্বংস্ত দেশে সমরাস্ত্রের প্রচুর মওজুদ থাকে এটা স্বাভাবিক সে সময় পাকিরা অনেক সম্পদ গোলা বারুদ রেখেই পালিয়েছেন সেই রেখে যাওয়া সম্পদের মধ্যে অনেক সম্পদ ভারত চলে গেছে আমরা কিছুই বলিনি ভারতকে।যুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন মুভি কিংবা বিভিন্ন আঙ্গিকে ১৯৭১ এর রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধকে পাক-ভারতের যুদ্ধ বলে আমাদের মুক্তি যুদ্ধকে অপমান করছে আমরা কিছুুই বলিনি।সীমান্তে কাটাঁ তারে ঝুলছে বাংলাদেশ ফেলানী হত্যার সঠিক বিচার আমরা পাইনি তাও আমরা কিচ্ছু বলিনি।এবার বললে ভুল হবে দেশ স্বাধীন হবার আগ থেকে আজও পানি না দিয়ে আবার বাধঁ খুলে বন্যায় ভাসিয়ে চলছেন বছরের পর বছর... এবারো কি চুপ করে থাকবো বা থাকতে পারি?।

ধন্যবাদ সবাইকে
তথ্য ও ছবি কালেক্টটেড
বিভিন্ন অন লাইন মাধ্যম।

 

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ