ফেরি পার হয়ে যথা সময়েই খুলনা পৌঁছুলাম, নিজে হালে রোটারিয়ান, হরিহরটি ঘাগু এ লাইনে। আগেই খবর দেয়া ছিল, উষ্ণ আতিথেয়তায় কাচ্চি খেয়ে ট্রেন স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে হাতে যশোরের ট্রেনের টিকেট ধরিয়ে অতিথির আপ্যায়ন শেষ করে সাথী রোটারিয়ান ফিরে গেল, সাবাস রোটারি।
হাল্কা ফটোসেশন, অনুকুল আলো না হওয়ায় বেশি জুত হল না নবিশ ফটোগ্রাফারের এক্ষণে।
তিনটার ট্রেন তিনটায় ছেড়ে দিল কাটায় কাটায়, তা নাহয় ছাড়ল, যশোর পৌঁছুল আবার ও কাটায় কাটায় সাড়ে চারটায়, আজব ঘটনা।
ফুরফুরে ভাব নিয়ে আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হোটেলে চেক ইন। অতঃপর প্রক্ষালন শেষে হাল্কা মেজাজে কেমনে কী আজ ও কাল ভেবে রেখে গুলে গপ্পে ওয়ালা চালু।
জিসানের কাছে জানলাম আমাদের কণাজি এর যশোর পৌঁছুতে রাত গভীর হওয়ার সম্ভবনা আছে, বুঝুন অবস্থা, কাল তার গায়ে হলুদ কখন পৌঁছুবে সে ঢাকা থেকে নিজেই বলতে পারছে না, আহারে পরীক্ষা!! তবে সে জানিয়েছে যদি সে রাত দশটার মধ্যে বাসায় পৌঁছুতে পারে তাহলে রাতের খাবার তাদের সাথে খেতে হবে। একটু পরেই সে জানালো সে বাসায় পৌঁছুক বা দেরি করুক রাতের খাবার তাদের বাসায়।
সামান্য দূরে হলেও খারাপ রাস্তার ঝাঁকি খেতে খেতে সামান্য হাতিয়ে পৌঁছে গেলাম ওদের বাসায়।
বেশ ভালো আলোকসজ্জা গলিয়ে গেটে পেরিয়ে ঢোকার মুখে কণার আত্মীয় স্বজন পেলাম, জিসানের নাম সবাই জানে, এই প্রথম সবার সাথে দেখা কিন্তু মনে হল তারা পরমাত্মীয় (হাল্কা টাসকিত)। উপরে গিয়ে বসলাম, পরিচয় পর্ব চলছে, চলছে। ভুতের চমক নিয়ে শিশির কণা হাজির। সে যে এসে পড়েছে এই মাত্রই তা শুনলাম তার মুখেই।
ফুলের শহর যশোর, গায়ে হলুদের স্টেজের ডিজাইন ফুল সমেত যেভাবে করার জন্য বলা হয়েছিল তা হচ্ছিল না, দ্রুত থিংক ট্যাংক আলোচনায় ফুল ও অন্যান্য ডিজাইন পাল্টানো হলেও কোন বিপত্তি ছাড়াই।
একান্নবর্তী পরিবারের ভীষণ মিলন মেলা, পাঁচ তলা বিল্ডিংয়ের কয়েকটি ফ্লাটের ভাড়াটিয়া ফ্লাট ছেড়ে চলে গেছেন, আশেপাশে বাসা ভাড়া নিয়েছেন, শর্ত এমন, বিয়ের সব কিছু শেষ হলে তাতে যত সময়ই লাগুক তারা আবার তাদের ফ্লাটে ফিরে আসবেন, মধু মধু ভাড়াটিয়া মালিক সম্পর্ক।
বুড়োত্বের সুবিধায় অবাধ যাতায়াত গভীর অন্দর মহল থেকে প্রকাণ্ড প্রশস্ত ছাদ। বিয়ের কাজের অনুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ, জাঁক করে বসে না থেকেই গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি, পরের দিন।
খ্যাতিমান বিউটিশিয়ানের সুনিপুণতায় এ কাকে দেখছি!! খোল নলচে পাল্টে দিয়েছে সমূলে!!
শুধু বলেছিলাম, ‘ফিরিয়ে দেও আমাদের অকৃত্রিম শিশির কণা কে’।
বেঁচে থাকুক সে তাঁর আহ্লাদী অবিকল আন্তরিকতায়।
২৯টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
শুধুই সংগে আছি পরে এসে পড়ে লিখব
ছাইরাছ হেলাল
এলেই হবে।
মোঃ মজিবর রহমান
আসলাম ত ! বস আছেন কেমন?
ছাইরাছ হেলাল
আপনাদের দোয়ায় আছি ভালই।
মোঃ মজিবর রহমান
খাবার কাচ্চি
রাস্তার ঝাক্কি
শরীর হল নক্কল ঝক্কর।
খুব চুমঝে মযা তাই বস!
খুব ঘুরলেন ফুলের শহরে।
ছাইরাছ হেলাল
স্বজনের ডাক তো ফেলে দেওয়ার মত না।
সাথে কাচ্চি যদি পাই ফাউ।
মোঃ মজিবর রহমান
কেন বস বলেন ফাউ?
কত কস্ট করে গেলেন?
পেটে খেলেন, আর শরীর খেল ঝাক্কি।
হজম হল গতিতে।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি ভালই বলেন কিন্তু
জিসান শা ইকরাম
নবিশ ফটোগ্রাফার যে মেমোরি কার্ড বাদেই ফটো তুলেছিল তা এখানে বলা হলো না কেন?তার বেখেয়ালি দোষ ঢেকে রাখার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
একা একাই লিখে যাচ্ছেন দেখছি………
আমার এবার লিখতেই হবে বুঝতে পারছি 🙂
পাগলীটা ভালো থাকুক সারাক্ষণ।
ছাইরাছ হেলাল
হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গা ঠিক না, সব সময়।
অবশ্যই লিখতে শুরু করুন।
ভালো থাকুক সে এটিই কামনা করি।
জিসান শা ইকরাম
হুম, হাটে হাড়ি ভাঙ্গা ঠিক না 🙂
ছাইরাছ হেলাল
ঠিক না।
অরুনি মায়া
এখনো একটা ছবিও দেখতে পেলাম না | দেখাবার কথা কিন্তু ছিল |
যার বিয়ে তার খবর নেই ,আনন্দে আপনাদের ঘুম নেই 🙂 | আমি নিশ্চিত বরের সাথে আপনাদের পার্থক্য নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়েছিল | না মানে যে সাজুগুজু দিয়েছিলেন :p | শুধু কি তাই, বুড়ত্বের সুবিধা টাও ভাল ভাবেই কাজে লাগিয়েছেন দেখছি | কেন যে বিয়েতে কনে কে বিউটি পার্লারে নিয়ে যাওয়া হয় 🙁 | ন্যাচারাল বিউটি হারিয়ে যায় ,,,
ছাইরাছ হেলাল
ছবি দিতে সাহস হচ্ছে না, কী না কী দেখে ফেলবেন!!
না না, কী যে বলেন!! আমি কোথায় যেন বলেছি ও, বরের বাবা ও মেয়ের বাবা আমাকে বড় ভাই ডাকে।
বয়স তো মাশাল্লা, বট বৃক্ষের কাছাকাছি। সাধ থাকিলে ও সাধ্যের খুব কমতি।
সাজ দেখলে মনে হয়, এলিয়েন যেন,
অরুনি মায়া
হুম তারমানে ছবির মাঝে দেখবার মত অনেক কিছুই আছে ;?
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই ছবি শুধু ছবি নয়, অনেক কিছু।
শুন্য শুন্যালয়
এই না বিয়ের পোস্ট, পুরাই দিলওয়ালে দুলহানিয়া কি মা কো লে জায়েঙ্গে। 😀
আগামী জীবনে ভিয়াইপি হইতে খুব মুন চায়, কি কপাল রে বাবা! বাংলাদেশের ট্রেন কাঁটায় কাঁটায় তিনটায় কি তাইলে ভয়েই ছেড়ে দিলো? আহারে কোথায় হারালো সেই রাত জেগে স্যুটকেসের উপর ট্রেন স্টেশনের ঝিমানোর দিন, অবশ্যই তা লোক বুঝে, সেও জানি।
ফটোগ্রাফার দামীদুমী হইলেই ছবি ট্রাংকে ঢুকায় এমনটাই জানি। ছবি নিয়া আর নো টক, আপনি বহুত পঁচা লোক।
(হরিহরের মেমোরী কার্ড সংক্রান্ত হাঁটে হাড়ি ভাঙ্গা আমি অবশ্য দেখতে পাইনি)। আপনাদের হোটেল রুমের আশেপাশেই নানান ফুলের দোকানে, অইখান হইতে ভ্যালেন্টাইন ডে তে আমি কোনুদিন কোন ফুল কিনিনাই, সত্যি বলছি।
শিশির পাগলির চমকে দেবার পাগলামী খুবই পছন্দ হইছে। রাতের খাবারের বর্ননা দিলেন না যে, মাছের পেটি কখানা খেয়েছিলেন?
বুড়ো হবার নানান সুবিধা আগেও কিছু কিছু পাইয়াছি, প্লেন থেকে শুরু করে বৈদেশে হৃদহরনকারী পর্যন্ত, আর এখন কিনা অন্দরমহল আর ছাদ? বরের খালা, ফুফুদের কথা কিছু বললেন না যে!
পাগলিটার জন্য অনেক প্রার্থনা করছি, ভালো থাকুক সে।
যাই বলুন, আমি এই পোস্টে বিলকুল না গিয়েই বিয়ে খেয়ে ফেললাম। আপনাকে দিয়ে বিয়ের কোন মুভির প্লট করে ফেলা যাবে খুব সহজেই। তর যে সইছে না, পরের পোস্টে আর কি কি আসবে ভাবছি।
ছাইরাছ হেলাল
অচিরেই একখানা ভ্যালেন্টাইন লেখা পেয়ে যাচ্ছি তা জেনে আনন্দিত হলাম।
ওদের দেশের বাড়ীর পেল্লাই সাইজের আনা মাছের ফ্রাই, ভাবতেই জিভের আকুলি-বিকুলি টের পাচ্ছি, যাদু জানান দেখছি।
আত্মীয়েরা কিছুটা তকলিফ হাসি মুখেই গ্রহণ করেছেন সে আপনিও বুঝতেই পারছেন।
লুক ভালু না তা মেনে নিতে আপত্তি নেই, আপনার সামনে ছবি-ছুবি বের করার সাহস ই তো পাচ্ছি না।
ট্রেন নিয়ে উল্লসিত হবেন না যেন এখনই, বাকী আছে খানিকটা।
ছবির কাজ হাতে নিচ্ছেন জেনে ভালই লাগছে, টলি বয়ের অভাব আপনি বুঝতেই পারবেন না, সেটার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
মেমরী কার্ড বিহীন ছবির লাইনে যাচ্ছি না।
আপনার স্বজনের বিয়ে-বুয়ে হলে দাওয়াত দিয়েন,
অবশ্যই পরের লেখা প্রক্রিয়াধীন আছে, সহসাই পেয়ে যাবেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
সবার সাথে মিলিয়ে প্রশ্ন রাখছি ছবি কোথায়?
লেখার গুণ সে তো জানি, ছবিওয়ালার তোলা ছবির কেমন গুণ সেটাও জানার ইচ্ছে পোষণ করছি।
ছাইরাছ হেলাল
শত শত গুনের মধ্যে ছবি তোলার হাতটি গুরুর কৃপায় মন্দ না,(নিজের ঢোল নিজে সিস্টেম)
কোনটা রেখে যে কোনটা দেখাই সেটার কিনারা করা খুব দুরূহ,
গুন চেপে রাখা যায় না, ঠিক ও না,
ফাটিয়ে ফেলব কোন এক নিঝুম নিরব সকালে।
নীলাঞ্জনা নীলা
ফাঁটিয়ে ফেললেই হবে। আজকাল নিজের ঢোল নিজেকেই পেটাতে হয়। সমস্যা না।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি যখন ভরসা দিচ্ছেন ফাটিয়ে না হয় ফেলব, কিন্তু ফাটাতে যেয়ে নিজেই
ফেটে গিয়ে কান্না জুড়ে না দেই আবার।
ব্লগার সজীব
ভাইয়া শিশির কনা আপু আসবেন না আর ব্লগে?ওনাকে খুব মিস করি।আপুর বিয়ে ভাবতেও ভালো লাগে।শিশির আপুকে নিয়ে সব লেখার লিংক একটি লেখায় দিয়ে দিবেন প্লিজ।্কত মজা করেছেন বিয়েতে গিয়ে 🙂
ছাইরাছ হেলাল
পড়াশোনার চাপে ব্লগে সে ভাবে আসতে পারবে বলে মনে হয় না।
আর একটি লেখা আছে, সেটা দিয়েই সব লিঙ্ক করে দিব।
অবশ্যই তারা অনেক আন্তরিক ছিল তাই আনন্দের উচ্ছাস ও তেমন ই ছিল।
ব্লগার সজীব
লিংক করে দিলেই ভালো হয়।কেমন ওলট পালট মনে হয় 🙂
ছাইরাছ হেলাল
অবশেষে লিংক এল।
ভোরের শিশির
আপনার এই পোস্ট পড়তে পড়তে স্মৃতিতে থাকা শিশির কণার হাসিমুখ মনে পড়ে গেলো আবারো… 😀
শুখে থাকুক, আনন্দে থাকুক এবং সুস্থ থাকুক সবাইকে নিয়ে আমাদের শিশির কণা 😀 -{@
ছাইরাছ হেলাল
আপনার তা মনে পড়ার ই কথা।
আমরাও চাই সবাইকে নিয়ে সে সুখেই থাকুক।
ভোরের শিশির
😀 থাকবে 😀