তিন ভাই বোন, কণা, পিউ, সোহেব। মা অন্ত প্রাণ, ছেলে মেয়েরা মায়ের বন্ধু হয়, শুনেছি, দেখেছি, এ মাত্রায় এই ই প্রথম দেখলাম। বাবা ও মা ছেলে মেয়েদের সাথে 'আপনি' করে কথা বলে। বোনেরা অত্যন্ত মেধাবী এই আক্রার বাজারেও, তাদের মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কথাচ্ছলে, সদ্য জে এস সি দেয়া ছেলে লেখা পড়ায় কেমন, সে জানাল আল্লাহ ইচ্ছায় আমার মেয়েদের থকেও সে অনেক ভাল। মনে মনে স্রষ্টার কাছে সবার আরও সাফল্য চাইলাম। এ যে রত্নগর্ভা মা!!
দুপুরে কণার বিয়েনুষ্ঠান, আগে ভাগেই পৌঁছে গেলাম। ফুল আর ফুল, খুব ভাল লাগল এত্তো ফুলের কাছে বসে থাকতে। প্রথানুযায়ী আনুষ্ঠানিকতা সেরে অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন স্টেজে সমাসীন বর।
ছেলের বাড়ী থেকে আনা হয় দই মিষ্টি, ছোট ছোট হাড়িতে দই, গাড়ী থেকে দোতলা পর্যন্ত ছেলেরা দাঁড়াল, হাতে হাতে দইয়ের হাঁড়ি দোতলায় পৌঁছে গেল, দেখে খুব ভাল লাগল। প্রায় হাজার দেড়েক মানুষের খাবার আয়োজন, ভালই সব কিছু,বাস পাঠিয়ে গ্রাম থেকে আত্মীয়দের নিয়ে আসা হয়েছে। পার্লার থেকে বধূ আসেই না, আসেই না। উফ্, বিস্তর সাজুগুজু নিয়ে শেষে এল কণা, ভালই লাগল। কণার এলিয়েন কে দেখে।
বিকেলে কণা কে বিদায় জানালাম তার শ্বশুর বাড়ীর পথে, ঝাপসা চোখে।
একটু ঘুরতে বের হলাম, কী যেন একটি মিশন স্কুল আরও কী কী যেন দেখালাম,
ধুর, মনে থাকে না কিছুই!!
কাল সকালে কণাদের বাসায় নাস্তা করে ১২ টার ট্রেনে খুলনা ফিরে যাব এমন ঠিক হল। স্টেশনে পৌঁছে টিকেট কেটে অপেক্ষা, ট্রেন এল প্রায় ঘণ্টা খানেক দেরীতে, তা নয় হয় এল, বসার কোন জায়গা নেই, সুয়ারেজ থেকে তাজা পুরীষ গড়াচ্ছে। উফ এই আমাদের স্টেশন, খুলনায় পৌঁছে এই দেরির কারণে বাস মিস, পরের বাসের অপেক্ষা, নো ওয়েটিং রুম। অগত্যা এক অফিসের বারান্দা ই হোল শেষ ভরসা।
একটি গল্প বলে এ যাত্রা শেষ করব,
একটি পাবলিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, তার ক্লাসে মোট ছাত্র সংখ্যা ধরা যাক পঞ্চাশ, ছাত্রী সাত জন, তিন জন বাসায় থাকেন আর চার জন হোস্টেলের একই রুমে থাকেন। অবশ্য এর আগে এই ছাত্রীদের গণরুম পেরিয়ে আসতে হয়েছে। সবাই ই মেধাবী, সবার সাথেই সৌহার্দ, এর মধ্যে বেশি মেধাবী হিসাবে কেউ কেউ শিক্ষক সহ সহপাঠীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন, এরা ছাত্র। কিন্তু পরীক্ষা শেষে মেধা তালিকায় একেবারে উপরের দিকে চলে এল সেই ছাত্রীদের দল। প্রথম ও দ্বিতীয় সহ আরও আরও। যে ছাত্রটির প্রথম হওয়ার কথা ছিল সে হলো সপ্তম। প্রথম হওয়া মেয়েটির আনন্দে জল ঢেলে তার সহপাঠী ছাত্র বন্ধুরা আড়ি ঘোষণা করে কথা বলা বন্ধ করে দিল।
ব্যাপার না পিউ, প্রথম প্রথম ই,
পিউ’র জন্য একরাশ প্রার্থনা, অব্যাহত অগ্রযাত্রার।
২২টি মন্তব্য
অরুনি মায়া
শিশির কণার বিয়ে দেখা হয়নি, তবে আপনার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
সবাইকে জানানোর সামান্য চেষ্টা মাত্র।
পেরেছি কিনা তা জানি না।
অরুনি মায়া
জি সবাই খুব ভালভাবেই বুঝল দুই পেটুক কেমনে খাওয়া দাওয়া দিল | আর বয়সের ফায়দা লুটল :p
ছাইরাছ হেলাল
সবই আল্লাহ পাকের ইচ্ছা, তিনি খুব ই মহান, তা টের পাচ্ছি হাড়ে হাড়ে,
মোঃ মজিবর রহমান
খাইলেন আপনি
অংশিদার সোনেলা ব্লগেরা খুব ভাল লাগলো বস।
ছাইরাছ হেলাল
সবাইকে সাথে রাখার চেষ্টা করলাম।
জিসান শা ইকরাম
শিশিরের পরিবারের আন্তরিকতা ভুলে যাবার মত নয়
নিজেদের বাড়িতেই ছিলাম আছি এমনটা মনে হয়েছে সারাক্ষন
তিন ভাইবোন সবাই সমান মেধাবী,এমন পরিবার আমি আর দেখি আগে।
মিশন স্কুলে কি কাজ? কোনো বিশেষ মিশন ছিল নাকি ওখানেও? 🙂
জানতে মঞ্চায়………
যাক সুন্দর একটি সিরিজ শেষ করলেন
অন্য কেউ শুরু করতেও পারে এখন ছবি টবি দিয়ে 🙂
কনা,পিউ,সোহেবরা ভালো থাকুক
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
তাদের আন্তরিক আন্তরিকতা অসামান্য।
ভারচুয়াল সম্পর্কের বেড়াজাল পেরিয়ে ভিন্ন উচ্চতায় এ বন্ধন।
তাদের মেধা সাধারণ, তা বোঝাতে চেয়েছি।
মিশন-ফিশন কিচ্ছু না, ঘুরতে ঘুরতে একটি স্কুলের নাম চৌক্ষে পড়ল, এত্ত বড় একটি স্কুল!! পাশে আবার বাড়ি!!
চোখ এড়ানোর উপায় আছে। আপনি হলে তো স্কুলের ভিত্রে ঢুকে বসে থাকতেন।
আমি তো শুধু বাইরে থেকে হঠাৎ দেখলাম।
ছবি-ছুবি দিয়ে শুরু হলে ভালই হয়, শুরু হোক।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
শুভ হহউক নতুন জীবন -{@
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই নুতন জীবনের সুখ সমৃদ্ধি কামনা করি।
ব্লগার সজীব
সব ভালো যার শেষ ভালো।খুব সুন্দর কিছু দিন অতিবাহিত করলেন শিশির আপুর বিয়ে উপলক্ষে।অন লাইনের সম্পর্ক এমন হতে পারে ধারনাই ছিলনা আমার। সোনেলা আসলেই একটি পরিবার,যেমনটা আমরা বলে থাকি।শিশির আপুর বিয়েতে আপনারা যেভাবে একাত্ম হয়ে ছিলেন,তাতে পরিবার হিসেবে সোনেলা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলো।
ছাইরাছ হেলাল
সত্যি সত্যি সোনেলা একটি পরিবার, প্রমাণিত তা।
আমি আগেও বলেছি আজ পর্যন্ত কোন বিয়েতে পাঁচ দিন থেকেছি তা ঘটেনি।
ওরা আমাদের আত্মীয় হয়ে গেল।
ভোরের শিশির
;?
ছাইরাছ হেলাল
এ সব অচল সাইন এখানে।
লিখতে হবে, দেরিতে এলেও।
ভোরের শিশির
আমি তো আপনার পুরো ট্রিপটিই মনসচোখে ধরার চেষ্টায় গভীর ভাবে মগ্ন 😀
ছাইরাছ হেলাল
মগ্নতা টের পাচ্ছি ঠিকই।
আমাদের আবার মানসচৌক্ষ নাই।
ভোরের শিশির
হেহেহেহ… চব্য,চষ্য লেহ্য, পেয় ও চর্ম চক্ষু শ্রবণের মজা নেওয়ার পরে কি আর আমাদের মতো মানসচোখে দেখতে পারবেন!! :p
ছাইরাছ হেলাল
একটি মানসচোখ ধার নিতে হবে দেখছি।
শুন্য শুন্যালয়
ছেলেমেয়েদের সাথে আপনি করে কথা বলে বাবা-মা শুনেই তো মজা লাগছে। পরিবারটির জন্য আমার অনেক শুভকামনা থাকলো।
কণের এলিয়েন আমাদের দেখা হলোনা, তবে এলিয়েন দেখেছে এমন মানুষের সাথে কথা বলতে পারাও ভাগ্যের। ভাগ্যিস পার্লার ছিলো 🙂
আপনার নাম এমনি এমনি টম ক্রুজ যে হয়নি তা বুঝতে পারলাম, মিশন ইম্পসিবল মুভির হিরো বলে কথা। আরো যে কি কি দেখলেন তা দুই হরিহরকে আচ্ছা মত ধরলেও জানতে পারবো কিনা কে জানে।
ট্রেন স্টেশনের যা বর্ননা দিলেন, তাতে করে পূর্ব কথা ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে এটাই স্বাভাবিক। এই না হলে আমাদের ট্রেন স্টেশন।
মহা আনন্দে কএকটা দিন পার করলেন, সাথে আত্মীয়তা পেতে এলেন। আমাদেরও আত্মীয় সংখ্যা বেড়ে গেলো। আনন্দের ভাগিদার না হতে পারার দুঃখ অবশ্য রয়েই গেলো।
পিউ এর জন্য আমার অনেক শুভকামনা, এমনি করে জ্বলে পুড়ে ছারখার করে দিক পুরুষ প্রতিপক্ষের সকল নাম ধাম। -{@
আমার হাত দেখে একজন বলেছিল, আমার নাকি দুই বিবাহ। এমন পোস্ট পাবার জন্য আপনাকে আগাম দাওয়াত :p
ছাইরাছ হেলাল
এই আপনি বলা শুনতে ভালই লাগে। আপনার ও ভালো লাগবে শুনতে মনে করি।
পারলার নিপাত যাক এমন আন্দুলন হলে মন্দ হয় না।
দেখুন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা ঠিক না, তবে আপনার রিমান্ড হলে আপত্তি নেই।
স্টেশনের অব্যবস্থা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন কী করে চলছে আমাদের।
অবশ্যই নূতন করে আত্মীয়তার দ্বার উন্মুখত হলো । অবশ্যই আপনিও ভাগিদার হবেন।
পিউ এমন মেধাবী জেনে আনন্দের সীমা নেই আমাদের ও। প্রতিপক্ষ নিপাত যাক।
দু’টো বিয়ের আগাম দাওয়াত দিয়ে রাখুন, দাঁত থাকতে থাকতে যেন ফয়-ফূর্তি করতে পারি।
সাঞ্জনা চৌধুরী জুঁথী
আগের লেখা গুলো পড়া হয়নি,তাই এই লেখা পড়ে তেমন কিছু বুঝলাম না। তবুও শুভেচ্ছা -{@
সব গুলো লেখা সময় করে পড়ে… এত্ত এত্ত শুভেচ্ছা দিয়ে যাব। তখন জাষ্ট উঠিয়ে নিবেন 😀
ছাইরাছ হেলাল
পড়বেন সময়ের সুযোগ হলে,
শুভেচ্ছা দেয়া তো আপনার ব্যাপার, কম করে দিলেও হবে।
ধন্যবাদ।