দশ বছর আগে জীবনে প্রথম মৃত্যুর সাথে পরিচিত হয়েছিলাম আব্বার শীতল কপাল স্পর্শ করে। তখন আকুল হয়ে কাঁদলে মাথায় একটি স্নেহের হাত অভয় দিয়ে বলতো "আমিতো আছি "।

সেই হাতটিও হিমশীতল হয়ে গিয়েছিলো গত ১৩ই জানুয়ারি। না মাথায় আর কোন স্নেহের স্পর্শ পাইনি।

আমার মা এবং বাচ্চাদের নিয়ে পার্কে হাঁটতে গিয়েছিলাম বিকেলে, কিছুটা হেঁটেই তিনি ক্লান্ত বোধ করছেন জানালেন, কিছুটা ঘেমেছেন ও। বসিয়ে পানি খাওয়ালাম। তাড়াতাড়ি বাসায় নিয়ে এলাম, নিয়মিত ঔষধ যা খেতেন খাইয়ে দিলাম, মাথায় পানি দিলাম। ইতিপূর্বে অসুস্থ হলে এভাবেই ঠিক হতেন। প্রায়ই হাইপারটেনশনে ভুগতেন। সেদিন অস্থিরতা বাড়তে থাকলো সাথে বুকে ব্যাথা। কয়েক মিনিটের মধ্যে মুখটা নীল হতে থাকলো, বুঝলাম হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছে। হাতের কাছের হসপিটালে নিলাম বিশ মিনিটের মধ্যে। ইমার্জেন্সিতে ই সি জি রিপোর্ট দেখে ডাঃ বললেন মেজর কার্ডিয়াক আ্যটাক। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলো। রাত প্রায় আড়াইটায় সব শেষ হয়ে গেল। হারিয়ে ফেললাম জীবনের অমূল্য প্রেমাস্পদ। এখন শুধু পড়ে রয়েছে মা হীন নিষ্ঠুর পৃথিবী।

যখন বাবাকে হারিয়েছিলাম, তখন মনে হয়েছিলো এ হচ্ছে সেই মৃত্যু যা আমি এতোদিন শুনেছি যা তা-ই  __

" মানুষ মরণশীল "।বাবার মৃত্যু মানে আহত চিতার মতো ক্ষিপ্রতা হারিয়ে হাঁটু গেড়ে পড়ে যাওয়া। সেই মানুষটিকে হারিয়ে ফেলা __ যার কাছে জল চাইলে সুপেয় পানীয় বাড়িয়ে ধরত। হ্যাঁ সেদিন শোকার্ত হৃদয়ে এ-ও  অনুভব  করেছি বাবার শেখানো কৌশল কাজে লাগিয়ে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ডাবের খোসা ছাড়িয়ে সুপেয় জল বার করবার দায়িত্ব আজ থেকে আমার। কচ্ছপের মতো গতিতে হলেও গন্তব্য ছুঁতে হবে সূর্য ডোবার আগেই।রোদে পোড়া তাম্র বর্ণ সাফল্যের উজ্জ্বলতায় ঢাকা পড়বে সেই মহেন্দ্রক্ষণে, দুচোখ বুজে ঘুম আসবে শ্রান্ত নয়নে। আমার মধ্যেই বাবা বাস করতেন, প্রতিটি পদক্ষেপে আমি তাঁর অস্তিত্ব টের পেতাম। তাই শোক কাবু করতে পারেনি।

যখন মাকে হারালাম,তখন বুঝতে পারলাম এ জগতে মৃত্যুর চেয়ে বিষাদ আর কিছু নেই।আর কেউ কখনো আলপথ ধরে হেঁটে আমার পথ চেয়ে থাকবে না।বিপদের কথা শুনে নফল নামাজে দাঁড়াবেনা।মন খারাপের কথা না বললেও বুঝে ফেলবেনা । মা ডাকবার প্রশান্তি হারিয়ে গেছে চিরতরে। আমার আচরণে কষ্ট পেলেও যিনি নিজগুণে ক্ষমা করতেন আমার অজান্তেই; তিনি আর নেই। যার কাছে কখনো নিজেকে প্রমাণ করতে হয়নি । আমার সমস্ত দোষ গুন নিয়েই যিনি আমাকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন তিনি আর নেই। আছে শুধু এক নির্দয় পৃথিবী যেখানে তিল পরিমাণ ভুলের ক্ষমা নেই। আজ বুঝতে পারছি এর আগে আমার কিছুই হারায়নি। শুধু পথের বাঁকের ছায়াবিথী গুলো দৃষ্টির আড়াল হয়েছিল মাত্র।যা হারিয়েছি তার প্রতিলিপি হয়না।

মা চলে যাওয়ার পর থেকেই চারিধার শূন্য মনে হয়!যার জন্য কদম কদম হেঁটে গন্তব্য ছুঁতে চেয়েছি, সে আর নেই। আমার ও আর তাড়া নেই, হয়তো বা আমাদের মঞ্জিল একটাই।

ইমার্জেন্সি রুমে মা আমার হাত ধরে বলেছিলেন __

" আর কবিতা লিখিসনা। ছেলে মেয়েকে মানুষ করিস, যা তুই লিখতে চাস তা অন্তর্যামী জানেন। তিনি সবসময় ধৈর্য্যশীলের সাথে থাকেন।"

প্রশ্ন থাকতে পারে নিছক ঘরকন্না না করলে কী ছেলেমেয়ে মানুষ করা যায় না?

আদেশ যেহেতু আমার মায়ের শেষ ইচ্ছা! তাই সমস্ত যুক্তিতর্ককে একপাশে রেখে মায়ের শেষ ইচ্ছে পালনে আমি বদ্ধপরিকর।

জীবন সুখ দুঃখের সরল অংক এটি সর্বজন বিধিত। হুট করে লেখা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হতোনা বলেই আমার একান্ত বাধকতা সবার সাথে ভাগ করে নিলাম। মায়ের নিষেধাজ্ঞার অন্তরালে ছিল প্রতিকুল পরিস্থিতি থেকে আমাকে সরিয়ে রাখা। বেশির ভাগ মহিলাদেরই লেখালেখি করায় পরিবারের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন থাকে না। আমার ও নেই।

আমি ব্যক্তিজীবনে Introvert, নিরবচ্ছিন্ন সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করি। তাই আমার কথারা কলমের দখলে।

ছোটবেলা থেকেই লিখতাম। বেশির ভাগ লেখাই হারিয়ে গেছে। কিছু লেখা এখনও আছে ডায়েরি বন্ধি। সেগুলোই এখন পোস্ট করছি।

একদিন এমন আসবে ইনশাআল্লাহ "যেমন খুশি তেমন সাজ" এর মতো কবিতার চরণ সাজাবো মনের মতো ইচ্ছে যতো।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

  • তৌহিদ

    আপনার পিতামাতার খবর জেনে ব্যথিত হলাম আপু। মৃত্যু অমোঘ সত্য এর থেকে নিস্তার নেই। প্রিয়জন যারা চলে যায় তাদের স্মৃতির প্রতিলিপি হয়না। তারা ভালো থাকুন এটাই প্রার্থণা।

    আপনার লেখা আবার কলমের কালিতে ডায়রিতে ভরে উঠুক এটাই চাই। শুভকামনা রইলো।

  • ছাইরাছ হেলাল

    বুঝতে পারছি আপনার মনের ইচ্ছে, এ শোকের সান্তনা দেয়ার কোন জায়গা নেই।
    তবুও আপনার জানা কথা ই বলি, মৃত্যুর নিত্যতা আমাদের সবাইকে স্পর্শ করবে।
    আমাদের প্রফেট জীবনের শেষার্ধে পুত্র শোকে অধির হয়ে প্রবল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ছিলেন। সে কান্না দেখে সাহাবীরা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিলেন,
    তিনি তার উত্তর দিয়েছিলেন………………।
    আপনার মাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি আপনই অবশ্যই রক্ষা করবেন। এখানে একটি প্রশ্ন না করেই পারছি না, তিনি কবিতা কে কী দৃষ্টিতে দেখতেন?
    আমি এক জন কে জানি, সে কবিতা লেখে তার প্রার্থনার অংশ হিসেবে। সব কিছুর নিবেদন তার প্রভুর কাছে।
    শোক কে শক্তিতে রূপান্তরিত করার সক্ষমতা আল্লাহ আপনাকে দেবেন সে কামনা রাখি।

    • খাদিজাতুল কুবরা

      প্রথমেই বলি সবদোষ আমার, অন্যদের মতো ব্যালান্স করে আমি সব সামলাতে পারি না। কবিতার জন্য আমি না আমার জন্য কবিতা আমি জানিনা। আমি ডুবে যাই কবিতায়…
      ভাইয়া আমার পরিবার রক্ষণশীল আর আমি সৃষ্টিছাড়া। ছোটবেলায় বাবা কারো সাথে মিশতে দিতোনা, তাই লুকিয়ে বইয়ের মধ্যে জগৎটাকে জানতে চাইতাম। সেজন্য অবশ্য একাডেমিক পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। সংসার জীবনে এসে ও ভালোলাগা বইয়ের সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে চিরতরে। এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম পেয়ে আমি শাসন বারণ ভুলে লিখতে পড়তে শুরু করলাম। যা আমার পারবারিক জীবনের জন্য অশনিসংকেত। মা সেটা জানতেন।

      আমার মায়ের কাছে গুছিয়ে সংসার করা ইবাদতের মতো। তিনি মনে করতেন কবিতার কারণে আমার পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি হবে তাঁর নাতি নাতনীর অযত্ন হবে। সেই সম্ভাবনা ও উড়িয়ে দেওয়া যায়না। তিনি আমাকে উপদেশ দিতেন, যা কিছু হোক নিজের পরিবার পরিজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এতে নিজের অস্তিত্ব বিলীন হলেও ব্যত্যয় হওয়া চলবেনা।
      আমার মা পৃথিবীর সেরা মা ছিলেন।
      তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি।
      দোয়া করবেন ভাইয়া।
      সমবেদনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন।

      • ছাইরাছ হেলাল

        অন্য ভাবে বললে বলতে হয়, কবিতা লিখতে হবে না,
        ডায়েরিটা আমাদের সাথে শেয়ার করলেই হবে। গদ্যে গদ্যে।
        আমার টেবিলের এক অংশ জুড়ে অতি বিখ্যাতদের জীবনী, শামসুর রাহমানের এই লেখা
        আমার কাছে কবিতার আবহ সৃষ্টি করে!!
        দ্রুত-ই বিধাতা আমাদের সঠিক পথের আলো দেখাবেন।

      • খাদিজাতুল কুবরা

        খুব সুন্দর পরামর্শ দিয়েছেন ভাইয়া। আমার ও জীবনী নির্ভর কিছু লেখার ইচ্ছে আছে ইনশাআল্লাহ। আমাদের সোনেলা যাত্রা দিগন্ত ছোঁবে ইনশাআল্লাহ।
        ভালো থাকুন ভাইয়া। শুভেচ্ছা অবিরাম

  • পপি তালুকদার

    আল্লাহ আপনাকে আরও ধৈর্য ধারন করার ক্ষমতা দিন।আমি বাবা হারিয়েছি তাই বাবা-মা হারানোর কষ্ট, মানসিক যন্ত্রনা জানি! কেউ কে এ-ই কষ্ট বোলে বোঝানো যায়না। প্রতিনিয়ত কুঁকড়ে যাচ্ছি ভিতর থেকে।বোবা কান্নায় কেঁদেছি কত রাত সে আল্লাহ ই ভালো জানেন।এখন কারো কাছ থেকে কষ্ট পেলে প্রথমে বাবা কেই মনে পড়ে।
    ঠিক বলেছেন যে মেয়েদের লেখালেখি পরিবার মেনে নেয়না।আমি বাস্তব তার প্রমান পেয়েছি।

    পরিশেষে আপনি ভালো থাকুন।আপনার উপর নির্ভরশীল যারা আছে তাদের জন্য নিজেকে শক্ত করুন।নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনার সহায় হবেন।

  • ইঞ্জা

    রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগীরা…
    আল্লাহ বাবা মাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন, আমীন।

    আমিও বাবা মা হারা, প্রথমে বাবাকে হারায় “৯০ সনে, ২০১৭ তে মা চলে যান না ফেরার দেশে, সত্যি এমন দুঃখ কখনোই পাইনি, যেমন বাবা মাকে হারিয়ে পেয়েছি, আল্লাহ আমাদের পিতা মাতাকে ভালো রাখুক অন্য পাড়ে।
    আপু আমি আপনার সাথে সমব্যথী, উনাদের জন্য সবসময় নামাজ পড়ে দোয়া করবেন।

    মার আদেশ শিরোধার্য, শুধু বলবো মা নিশ্চয় বুঝাতে চেয়েছেন সংসার আগে, এরপর বাকি সব।
    ভালো থাকবেন আপু।
    দোয়া রইলো।

    • খাদিজাতুল কুবরা

      ভাইয়া আমি জানতাম না মৃত্যু কী? মরে গেলে মানুষ ঠান্ডা হয় এ-ও জানতাম না। লাশে ফোবিয়া আছে আমার। মৃতের বাড়ি যেতে পারিনা। আব্বার ঠান্ডা কপাল ছুঁয়ে যে শকড আমি পেয়েছি তা আর কিছুতে পাইনি। আমার রাগী আব্বা কেমন করে শীতল হতে পারে আজও মেলাতে পারিনি।
      আর মা ছিলেন শীতল পাটি যাতে শুধু আরাম আর আরাম।
      সবশেষ হয়ে গেছে।
      দোয়া করবেন ভাইয়া।
      সমবেদনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন।

  • সুপর্ণা ফাল্গুনী

    আপনার একান্ত অনুভূতিতে মনটা ব্যথাতুর হয়ে উঠলো। এযে কি নিষ্ঠুর মুহূর্ত যার যায় একমাত্র সেই বুঝে। আপনার ব্যথায় সমব্যথী । কতটা নিঃসঙ্গতায় কাটছে আপনার জীবন, সময় সেটা আমাকে ছুঁয়ে দিলো, বুঝিয়ে দিলো। যতই সান্ত্বনা দিয়ে যাই তবুও এব্যথা আপনাকেই শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে , ঈশ্বর আপনাকে সেই শক্তি দান করুন। এক্ষেত্রে আপনার নিরব সঙ্গী হতে পারে লেখালেখি যা দিয়ে আপনার চাপা কষ্ট, একাকীত্ব দূর হতে সাহায্য করবে। অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। শুভ রাত্রি

    • খাদিজাতুল কুবরা

      দিদি ভাই মাকে কথা দিয়েছি কবিতা লিখবোনা। কিন্তু দিনশেষে দুটো লাইন না লিখে বাঁচা কী কঠিন সে আমি প্রকাশ করতে পারবোনা। তাই কবিতা লিখিনা।
      কয়েক লাইন একান্ত অনুভূতি লিখি। এতে কী আমার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়?
      বুঝতে পারছি না।
      দোয়া করবেন দিদি ভাই।
      মার স্মৃতি বিজড়িত আমার অস্তিত্ব!
      সমব্যাথী হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা অপরিসীম।

  • সাবিনা ইয়াসমিন

    বাবা- রোদ-খরায়, ঝড়-ঝাপটায় অবিরাম ছায়া দিয়ে, দু’হাতে আগলে রাখার একজন। আর মা? মা হলেন সেই মাটি যা না থাকলে মহাশূন্যের উদ্ভ্রান্ত ধুলোর মতো ছুটে চলতাম, কিন্তু নিজ পায়ে ভর দিয়ে কোথাও স্থির হতে পারতাম না। তারা যতদিন জীবিত আছেন ততোদিন কেউই নিঃসঙ্গ নয়, কিন্তু যখন তারা হাত ছেড়ে দেয় তখন শুধু নিঃসঙ্গই নয় মানুষ পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে যায়। আপনার মা বাবার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জান্নাতবাসী করুন। আপনার জন্যও দোয়া রইলো, পরম করুণাময় আপনাকে শোক সইবার তৌফিক দিন।

    মেয়েদের স্বতঃস্ফূর্ত লেখালেখি!!
    শুধু কি মেয়েদের লেখালেখিতেই নিষেধাজ্ঞা থাকে? উহু, মাঝে মাঝে মনে হয় মেয়েদের জন্ম নেয়াটাই নিষিদ্ধ কাজ। অথবা নিজের কোন কিছু নিয়ে মেয়েদের খুশি থাকার অধিকার নেই, কখনো ছিলোই না।

    আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। পরে আবার কমেন্ট দিবো,

  • খাদিজাতুল কুবরা

    সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শোক কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। খাচ্ছি ঘুমুচ্ছি দৈনন্দিন রুটিন ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু ভেতর থেকে আমি যে কতোটা শূন্যে ভাসছি বলে বোঝাতে পারবোনা। মা যে আমার এতোখানি জুড়ে ছিলো এর আগে বুঝতেই পারিনি। মাঝে মাঝে রাগ হতো, বুড়ো হতে চলেছি এখনও খালি শাসন করে __
    এখন মা নেই তবুও তো আমি যা খুশি করতে পারছিনা। আমি দেখতে পাই মা চোখ বড় করে তাকাচ্ছেন!
    মায়ের চোখের ভাষা আমাকে শাসায়। বিরুদ্ধাচারীর বিরুদ্ধে আমি রা শব্দ করিনা।
    আমার অস্তিত্ব মা।
    তাই তার কাছে যেতে না পারলে আর শান্তি পাবনা
    দোয়া করবেন।
    রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সগীরা।
    আমার ব্যাথার ভার কমিয়ে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা

    • সাবিনা ইয়াসমিন

      কমেন্টে আরও অনেক কিছু বলতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু পারছিলাম না। মা বাবা হারিয়ে যাবে, এই ভাবনাটা আমাকে ব্যাকুল করে ফেলছিলো। আমি ভাগ্যবতী আমার মাথার উপরে আমি আমার মা বাবার ছায়া পাচ্ছি, কিন্তু এই লেখাগুলো লিখতে লিখতে আমার চোখ ভিজে যাচ্ছিলো। আমার মা বাবা আছেন, শুধুমাত্র তাদের হারিয়ে ফেলবো ভেবেই আমার এমন লাগছে, আর যারা হারিয়েছেন তাদের না জানি কেমন লাগে!! মাতাপিতাহীন সন্তানদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আসলে এখনো আবিষ্কার হয়নি। কারণ কোন সান্ত্বনাই তাদের ব্যাথাতুর মনকে শান্ত করতে পারে না। ❝ রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সগীরা❞
      আপনার মায়ের আদেশ অমান্য করে লিখুন এটা বলার দুঃসাহস করছি না। আপনি আপনার মাকে ভালো জানতেন। তিনি কোন কথা কোন পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন বা তার কারণ কি ছিলো তা আপনিই ভালো জানেন। আপনার মন যা বলে তাই করুন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো, ভালো থাকুন 🌹🌹

  • রোকসানা খন্দকার রুকু

    মা জান্নাতবাসী হোক, আল্লাহ তাকে সর্বউচ্চ স্তর দান করুক এমনটাই কামনা করি।
    বারো তারিখ সন্ধ্যায় তোমার সাথে কথা হল এরপর তুমি উধাও যখন শুনলাম মা নেই আমি দৌড়ে গিয়ে আমার মায়ের কাছে বসলাম। গায়ে হাত বুলিয়ে চোখ ভিজে গেল। কদিন আগে করোনা ডিপার্টমেন্টে যখন তাকে নিয়ে গেলাম মৃত্যু একটু হলেও ঘীরে ধরেছিল।
    সেজন্যই তোমার কষ্টটা বুঝি! তোমাকে অনুরোধ করবার সাধ্য নেই কারণ মায়ের আদেশ বলে কথা! তিনি তোমার সংসার নিয়ে চিন্তিত কিংবা পারিপার্শিকতায় শংকিত হয়ে বলেছেন। কিন্তু জানো কি প্রতিভা বিকশিত করতে দেয়াও ফরজ!
    তুমি খুবই ভালো লিখ তাই আবার অনুরোধ করব ডাইরিতে অন্তত লিখ। আর বলেছিলে তোমার স্টুড্ন্ট লাইফের অনেক কবিতা লেখা আছে সেগুলো অন্তত পড়ার সুযোগ দাও আমাদের।
    আর শেষ কথা-
    লিখছ না এজন্য তুমিও যে শেষ হয়ে যাচ্ছ এটার জন্য কে দায়ী?
    আমরা মেয়েরা সবাই বন্দী। সমাজ নিজেদের ভালো থাকার জন্য আমাদের শেকল পডিয়েছে। তাই নিজেরটাও দেখ বন্ধু। কবিতারা অনবরত তোমাকে লিখার জন্য কিলবিল করে কামড়াবে আর তুমি তার সাথে যুদ্ধ করে থামিয়ে দেবে এটা অনধিকার।
    তোমাকে লিখতে অনুরোধ করব আমি বারবার। আমরা সবাই মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিব। ভালো থেক!

  • জিসান শা ইকরাম

    আল্লাহ্‌ মা বাবাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুক,
    আমীন…………
    মা কে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। মা কবিতা লিখতে বারন করেছেন, এমন লেখা লিখতে কি বারন করেছেন?
    আমাদের দেশের নারীদের পদে পদে বাঁধা,
    লেখা লেখি আসলে অনেক পরিবারই পছন্দ করেন না।
    মন যা চায় তাই করো তুমি, লিখতে পারো মেয়ে/ নারীদের প্রতি বৈষম্যের কথা।

    শুভ কামনা সব সময়ের জন্য।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ