১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর আমাদের জাতীর অহংকার বীর বিক্রম খেতাব পাওয়া বান্দরবানের আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা ইউকে চিং মারমা (৮০) মারা গেছেন।
শুক্রবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে । তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এর আগে কয়েক দফা চিকিৎসা নেয়ার পর বাসায়ই ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন এই বীর যোদ্ধা।
আগামী রোববার তাঁর শেষকৃত্ত্ব অনুষ্ঠিত হবে।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে যখন বাংলা ভাষাভাষীরা সোচ্চার ঠিক তখনই ইউকে চিং ১৯৫২ সালে যোগদেন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস এ। ১৯৭১ সালে  মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথে তিনি পরিবার-পরিজন ত্যাগ করে জীবনের মায়া না করে একটি স্বাধীন দেশ ও নতুন এক পতাকা দেখার প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ ইপিআরের নায়েক হিসেবে রংপুর জেলার হাতিবান্ধা  বিওপিতে কর্মরত ছিলেন। পরাধীনতার শেকল থেকে দেশেকে মুক্ত করতে ও নিজেদের অধিকারের কথা চিস্তা করে বিওপিতে কর্মরত এক বিহারি ও ২ পাঞ্জাবিকে হত্যা করেন এবং ৯ বাংগালী ইপিআর সৈনিককে নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। নিজের জীবন বাজি রেখে নয় মাস যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাঁকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করেন।

আদিবাসী এই মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া পাগল হিসাবে এলাকার ক্রীড়ামোদীদের কাছেও বেশ পরিচিত। দেশের আদিবাসী বীরদের মধ্যে তিনিই হলেন বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি তিন পার্বত্য জেলায় একমাত্র বীরবিক্রম উপাধি পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযোদ্ধা বীর বিক্রম ইউকে চিং মারমা এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

 

 

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ