মিস

অপার্থিব ১১ মার্চ ২০১৬, শুক্রবার, ০৩:৫৭:৩৯অপরাহ্ন গল্প ২৫ মন্তব্য

১)
বাস থেকে নেমে সামনের দিকে এগোতেই আবার কুকুরটিকে দেখতে পায় মিলন। খানিকক্ষণ আগে বাস থেকে নামার সময় এই কুকুরটির কারণে তার ড্রেনে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। সরলতা মাখানো করুণ এক দৃষ্টিতে কুকুরটি তাকিয়ে আছে তার দিকে, সকাল থেকে পেটে কিছু পড়েছে কিনা কে জানে, চোখে মুখে অভুক্ততা ষ্পষ্ট। কুকুরটি দেখেই ড্রেনে পড়ার ঘটনাটা আবার মনে পড়ে মিলনের। নিমেষেই প্রবল ক্রোধ ফুটে উঠে মিলনের চোখে মুখে। প্রবল আক্রোশে সে একটা লাথি বসিয়ে দেয় কুকুরটির গায়ে। ঘেউ করে একটা করুণ আর্তনাদ করে সরে যায় কুকুরটি। সামনের দিকে পা বাড়ায় মিলন আর হতাশ কন্ঠে বিড় বিড় করে বলে -মিস হইয়া গেল রে মিস হইয়া গেল…

২)
আজকে বাসে উঠতেই পেট্রোলের গন্ধটা বড় বেশি নাকে লেগেছিল মিলনের। এমনটা তো হওয়ার কথা না। এক সময় এরকম এক লোকাল বাসে হেল্পার হিসেবে কাজ করতো সে। বাসের সঙ্গে সে ঘুরে বেড়াত মতিঝিল, মিরপুর, ফার্মগেট। খাওয়া ঘুমানো সবই ছিল বাসের মধ্যে। বাসের পেট্রোলের গন্ধ আর গোলাপের গন্ধ তার মধ্যে আলাদা কোন অনুভূতি তৈরী করতো না। বাপ হারা সন্তান হওয়ায় লেখাপড়াটা তার ক্লাস ফাইভের পর আর করা হয় নি। বাসের হেল্পারি করে অন্তত থাকা খাওয়া জুটতো। সেটাই বা মন্দ কি। কিন্ত মিলনের সুখের দিন বেশি দিন কাটলো না। বড় মামা একদিন তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঢুকিয়ে দিয়েছিল গার্মেন্টসে। সেখানে তিন বছর কাজ করেছে সে। এমব্রয়ডারির কাজটা ভালই শিখেছিল সে কিন্ত কাজে মন বসতো না। ন্যাংটা কালের বন্ধু ফরিদ যখন তাকে এই কাজটির প্রস্তাব দিয়েছিল তখন সে আর না করতে পারেনি তাছাড়া টাকা পয়সাটাও মন্দ না। খানিকটা কৌতূহল নিয়ে কেবল জিজ্ঞেস করেছিল -কামটা কি সেইটাই তো খোলাসা কইরা কইলি না।
শুকনো একটা হাসি দিয়ে ফরিদ বলেছিল – কালাম ভাইয়ের কিছু মাল ডেলিভারি দিবি।
কালাম ভাইয়ের মাল কথাটা শুনতেই যা বুঝার বুঝে নিয়েছিল্ মিলন। কালাম ভাইয়ের দুই নম্বরের কারবার, মহল্লার সবাই সেটা জানে। ডাইল, ইয়াবা, হিরোইন, বাংলা, মাইয়া সবই তার কাছে দুই মিনিটের খেল। কাজটা করতে খানিকটা অস্বস্তি লাগলেও টাকার লোভ আর ফরিদের উৎসাহে আর না করতে পারেনি সে। ফরিদের সঙ্গে গিয়েছিল সে কালাম ভাইয়ের আস্তানায়। মিলনকে দেখে কালাম ভাই তার পান খাওয়া লাল দাতগুলো বের করে করে বলেছিল -কিরে মিলইন্যা ভয় পাবি না তো ?

জীবনযুদ্ধে পোড় খাওয়া মিলনের তো ভয় পাওয়ার কথা না, ভয় পায়ও নি সে। এরপর থেকে কালাম ভাইয়ের হয়ে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা, হেরোইন, ফেন্সিডিল সাপ্লাই দিয়ে বেড়ায় সে। পুলিশের সাথে আগে থেকেই সব কিছু ম্যানেজ করা থাকে ফলে সচরাচর কোন সমস্যা হয় না। তারপরও হিস্যা ঠিকমত না পেলে পুলিশেরা মাঝে মধ্যে একটু ঝামেলা করে। পুলিশ কিংবা র‍্যাব যেই হোক না কেন কখনো ধরা না পড়ার ব্যাপারে মিলনের রেকর্ড এখন পযন্ত হান্ড্রেড পারসেন্ট। তবুও সাবধানের তো আর মার নাই ভেবে গাবতলীর বিখ্যাত জাঙ্গিয়া বাবার কাছ থেকে একটা ষ্পেশাল তাবিজ বানিয়ে এনেছে সে। গাবতলীর বাস টার্মিনাল থেকে পশ্চিম দিকে নিচু মত জায়গায় একটা চিপা গলির ভিতরে বাবার আস্তানা। এক বন্ধুর সাথে সেখানে গিয়েছিল সে। জাঙ্গিয়া বাবা শুধু নিজে জাঙ্গিয়া পরে থাকেন তা না ভক্তদেরও নানান রং ও ডিজাইনের জাঙ্গিয়া উপহার দেন। মিলনকে দেখে একটা লাল রঙের জাঙ্গিয়া এগিয়ে দিয়ে হাসি মুখে বলেছিলেন -কিরে ব্যাটা মনে বড় ভয় তাই না, এখন থেকে যে কামে যাবি এইটা পড়ে যাবি বুঝলি।
মিলন হাত বাড়িয়ে জাঙ্গিয়াটি নেয়। ভাল করে তাকিয়ে দেখতেই জাঙ্গিয়ার ভিতরে একটা বড়সড় পকেট দেখতে পায়। কয়েক ফাইল ইয়াবা কিংবা কয়েক পুরিয়া হেরোইন লুকিয়ে রাখার জন্য পকেটটা মন্দ না। সে যে ইয়াবা হেরোইন সাপ্লাই এর ধান্দা করে বাবা সেটা জানলো কিভাবে ভেবে পায় না মিলন । বাবাকে ঘিরে তার মনে থাকা সন্দেহের সামান্য অংশ টুকুও উড়ে যায় নিমেষেই। বাবার পা ধরে চুমু খেতে খেতে সে বলে -বাবা আমারে মাফ কইরা দেন , আমি আপনের ক্ষেমতারে সন্দেহ করছি…
বাবা দার্শনিক গলায় বলেন -মাফ করার মালিক উপরওয়ালা, আমি সামান্য ফকির…
তবুও মাফ করা না পর্যন্ত বাবার পা ধরে বসে ছিল মিলন। সে যে অপরাধ করেছে তার আসলেই কোন ক্ষমা নেই। বাবা মাফ না করা পর্যন্ত সে এই পা ছাড়বে না। এক পর্যায়ে বাবার মন দয়াপরবশ হয়। তিনি মিলনকে ক্ষমা করেন, একটা তাবিজ এগিয়ে দিয়ে বলেন -এই তাবিজটাও রাখ। বিপদ দেখলে আলহামদু সুরা একবার আর শাফি আল্লাহ কাফি তিনবার পড়বি। আল্লাহ চাহে তো তোর কোন বিপদ হবে না ইনশাল্লাহ। আর আমি সবার কাছ থেকে হাদিয়া নেই এক হাজার কিন্ত তুই দিবি দুই হাজার। কিরে পারবি না?
ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়েছিল মিলন। এর পর থেকে যখন সে এই কাজে যায় বাবার দেওয়া সেই জাঙ্গিয়াটি পরে যায়। আজকেও পরেছে। আজকেও জাঙ্গিয়া ভিতরের পকেটে কয়েক ফাইল ইয়াবা লুকিয়ে রেখেছে। ইয়াবা সহ জাঙ্গিয়া পরতে খানিকটা অস্বস্তি লাগলেও পেশাগত কারণে এই কষ্টটুকু মেনে নিয়েছে মিলন। তাছাড়া ইয়াবা তো আর এটম বোমা না যে বোমার আঘাতে জাঙ্গিয়ার ভিতরের টাওয়ারটিতে বিস্ফোরন ঘটবে। বোমা তো দুরের কথা নুন্যতম বিপদজনক কোন কিছু সে তার জাঙ্গিয়ার ভিতরে বহন করবে না। সেটা জাঙ্গিয়া বাবাই দিক বা দেশের প্রেসিডেন্ট দিক দেখার বিষয় না। সবার উপরে টাওয়ার সত্য তাহার উপরে নাই। আপাতত এই ইয়াবাগুলোর গন্তব্য কাকলি। সেখানে জাকির নামের একজনের কাছে মালগুলো ডেলিভারি দিতে হবে। এই এলাকার ভার্সিটিগুলোতে স্মার্ট ভাইয়া আপুরা লেখা পড়া করে। কোন এক মনীষী বলেছেন স্মার্ট জাতি গঠন করতে আমাদের আগে স্মার্ট তরুণ প্রজন্ম গঠন করতে হবে। একটু আকটু ইয়াবা না খেলে আবার প্রজন্মের ভাইয়া আপুদের স্মার্টনেস রক্ষা হয় না। তাই তাদের জন্য ইয়াবা সাপ্লাই দিয়ে পক্ষান্তরে স্মার্ট জাতি গঠনে অবদান রাখে মিলন।

কাকলির মোড়ে জাকির ভাইয়ের কাছে মাল ডেলিভারি দিয়েই ফিরে আসবে সে। আজ রাতে বন্ধু সাইদের সঙ্গে আনন্দ সিনেমা হলে নাইট শো দেখার পরিকল্পনা আছে তার। কি যেন সিনেমা চলছে এখন? শাকিব খান অপু বিশ্বাস অভিনীত রসের বাইদানী? অপু বিশ্বাসকে খুব একটা ভাল লাগে না মিলনের, কেমন যেন মোটা মোটা লাগে। তবে এটা স্বীকার করতে তার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই যে শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের উপর আল্লার রহমত আছে। নইলে যে ফিলিমই করে ঐটাই হিট হয় কেমনে? মিলনের পছন্দ স্লিম ফিগারের নায়িকা মাহিয়া মাহী, এখন অবশ্য নুতুন একটা মেয়ে এসেছে ঐটারেই বেশি জোশ লাগে মিলনের। কি যেন নাম মাইয়াটার ? ওহ মনে পড়ছে। নুসরাত ফারিয়া। চিজ এক খান মাইরি, একবার যদি পাইতাম!! নুসরাত ফারিয়াকে ঘিরে তার আরো কিছু ভাবনার বাকি ছিল কিন্ত সেই ভাবনার সুতোটা কেটে যায় কন্ড্রাকটরের ডাক শুনে- এই ভাই চাপেন। পিছনে পুরা সিট খালি।
সুখ কল্পনাটুকু ভেঙ্গে যাওয়ায় মেজাজ বিগড়ে যায় মিলনের। ক্ষুদ্ধ কন্ঠে সে বলে- চটকানা খাবি ? গোটা বাস ভরাইছস তারপরও কস পুরা বাস খালি…
মিলনের মেজাজকে পাত্তা দেয় না কন্ড্রাকটর। নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে সে ডাকতে থাকে -এই টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা ..

৩)
আজ যুব পার্টির সম্মেলন। নেতারা আজ বাস ভাড়া করে নগরীতে শো ডাউন করছে, হাজার হাজার কর্মী নিয়ে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে। তোমার নেতা আমার নেতা স্লোগানে প্রকম্পিত আজ নগরের রাজপথ, একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের তীব্র পরিবহন সংকট। বাসের আশায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা কিংবা সিএন জি নিয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে আর যাদের সেই সামর্থ্য নেই তারা একটি বাসের আশায় রাস্তার মোড়ে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকছে। কোন একটি বাস এসে থামতেই সেই ক্ষুদ্ধ জীবন যুদ্ধে বিপর্যস্ত মানুষগুলো বাসটিতে উঠার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। আগে থেকেই যাত্রী ভর্তি করে আসা বাসগুলোতে ঠেলাঠেলি করে খুব অল্প কয়েকজন মানুষই উঠার চান্স পেতে পারে, পাচ্ছেও তাই। বাকিরা হতাশা নিয়ে নুতুন কোন বাসের প্রতীক্ষায় ক্ষণ গুনছে। এমনই একটি বাসে সেই গুটি কয়েক সৌভাগ্যবান যাত্রীদের মধ্যে ছিল একটা ১৭ বছরের মেয়ে। আট দশটা স্বাভাবিক দিনের মত আজও সে গিয়েছিল মগবাজারের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। সকাল এগারোটার দিকে সে খবর পায় তার বড় বোনের ডেলিভারি হচ্ছে মহাখালীর এক হাসপাতালে। বোনকে দেখতে হাফ বেলা ছুটি নিয়ে মহাখালীর সেই হাসপাতালে যাচ্ছে সে। রিকশা কিংবা সি এন জি ভাড়া করে যাওয়ার সামর্থ্য তার নেই। দুর্বল শরীর নিয়ে বৈশাখের তীব্র রোদে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সাহসও সে করে না। তাই প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যেও অনেক কষ্টে উত্তরাগামী এই বাসটিতে উঠেছে সে। প্রচন্ড গরমে ঘর্মাক্ত সে, পুরুষ বান্ধব এই নগরে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বিপর্যস্ত । বাসের কোন সিট খালি নেই, এমনকি দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। লোকাল বাসগুলোতে আজকাল ভদ্রলোকদের অভাব নেই। কোন ভদ্র সাজ পোশাকের মেয়ে বাসে উঠলে ভদ্রলোকেরা সাধারণত সিট ছেড়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করে। তবে তার মত সাধারন সাজ পোশাকের কোন গার্মেন্টস কর্মীকে দেখে নব্য ভদ্রলোকদের ভদ্রতাবোধ যে জাগবে না এই সত্যটা সে জানে। তাই বাসের এক কোণায় দাঁড়ানোর মত খানিকটা জায়গা করে কোন রকমে দাঁড়িয়ে থাকে সে।

মিলন অনেক ক্ষণ ধরেই তার পাশে দাঁড়ানো এই মেয়েটিকে দেখছে। কত আর বয়স হবে মেয়েটার ? ষোল কি সতের? মাইয়া মানুষ একটু তাড়াতা্ড়িই বাড়ে তাই একটু বড় বড় বলে মনে হইতাছে। মাইয়াটার গায়ের চামড়া ব্লু ফিলিমের আপুদের মত, ধব ধবা সাদা। শুধু দাঁত গুলো একটু উচু বলে মনে হচ্ছে। দাঁত গুলো উচু না হলে একেবারে ঘরের বউ করার মত মেয়ে হিসেবে বলা যায় তাকে। বাসে উঠার পর থেকেই মেয়েটার সঙ্গে কয়েকবার তার চোখাচুখি হয়েছে। বাসের ঝাকুনিতে মেয়েটি বেশ কয়েকবার তার কাছাকাছি এসেছে। কয়েকবার তার শরীরে মেয়েটির স্পর্শও লেগেছে। মেয়েটির শরীরের প্রতিটি স্পর্শও মিলনের হৃদয়ে অদ্ভুত এক ভাল লাগার অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। লোকাল বাসের ঝাকুনি আর কখনো তার মধ্যে এমন সুখকর অনুভূতির জন্ম দিয়েছে কিনা সে মনে করতে পারেনা। তার ইচ্ছে হয় আরো কিছুক্ষন এই বাসটিতে দাড়িয়ে থেকে এই সুন্দর সুখকর মুহূর্তটা উপভোগ করতে কিন্ত তা কি আর সম্ভব? সে জানে একসময় গন্তব্যে যেয়ে থেমে যাবে বাসটি, নেমে যাবে বাসের সকল যাত্রী , হয়তো তার আগেই নেমে যাবে মেয়েটি এমনকি নামতে হবে তাকেও। তারপর কি আর কখনো এই মেয়েটির সঙ্গে তার দেখা হবে? যদি আর কখনো দেখা নাই হয় তাহলে ক্ষণিকের এই মুহূর্তটা উপভোগ করাই কি শ্রেয়তর নয় ? মিলনের বন্ধুরা প্রায়ই মেয়েদের টিপাটেপির গল্প করে। বন্ধুদের এই টিপাটেপির গল্প শুনে নিষিদ্ধ এক আনন্দের স্বাদ পায় মিলন। তারও সাধ জাগতো মেয়েদের টিপাটেপি করার কিন্ত সাহসের অভাবে আজ পর্যন্ত তার এই শখ পূর্ণ করা হল না। বাসের এই মেয়েটিকে দেখে আজ আবার তার মনে এই অপূর্ণ শখ পূর্ণ করার ভাবনাটা মাথায় আসে। একটা উপযুক্ত মুহূর্তের সন্ধান করতে থাকে সে, সম্ভব হলে একটা বড় সড় ঝাঁকুনির। মিলনের হৃদপিণ্ডের ষ্পন্দন বাড়ছে, হৃদযন্ত্রের ষ্পন্দনের ক্রম বর্ধমান শব্দ সে নিজেই শুনতে পাচ্ছে। রোমাঞ্চিত মিলন একটা কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে...

মিলনের ইমোশন যখন প্রায় তুঙ্গে ঠিক সেসময় তার মোবাইলে বেজে উঠে -মানমা ইমোশন জাগে। এই গানটিকে আজকাল রিং টোন হিসেবে ব্যবহার করছে সে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে মিলন। কালাম ভাইয়ের ফোন কাজেই না ধরে উপায় নেই। অপর প্রান্ত থেকে কালাম ভাই বলে – কিরে মিলইন্যা মাল ডেলিভারি দিছস?
– না ভাই অহনো পৌছাই নাই, জামে আটকায় আছি
-মাল ডেলিভারি হইলে আমারে জানাস ।
-ঠিক আছে ভাই, স্লামালাইকুম।
ফোনটা পকেটে রেখে পাশে ফিরে তাকায় মিলন কিন্ত মেয়েটিকে আর দেখতে পায় না। মহাখালির আমতলি মোড়ে বাসটি থেমে আছে। মেয়েটিও কি নেমে গেছে ? হন্তদন্ত হয়ে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই মেয়েটিকে দেখতে পায় মিলন। ফুটপাত ধরে স্বাভাবিক ভঙ্গীতে হেঁটে যাচ্ছে সে, আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতই। ফুটপাতে চলমান সেই মেয়েটিকে দেখে অদ্ভুত এক শুন্যতার অনুভূতি তৈরী হয় মিলনের মধ্যে । প্রবল হতাশায় সে বিড় বিড় করে বলে উঠে- "খানকির পোলা কালাম, আর ফোন দেয়ার টাইম পাইলি না"। মিস জনিত এক রাশ প্রবল হতাশা নিয়ে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে সে…

0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ