বৈদেশিক

ছাইরাছ হেলাল ১ নভেম্বর ২০১৪, শনিবার, ০৭:৪৯:৩৫পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৫৬ মন্তব্য

প্রথমে টুং টুং পড়ে ঘটাং ঘটাং করে শব্দ করতে করতেই রাস্তার পাশে দাড়িয়ে গেল অটোটি।অটো চালক অটোটি দাঁড় করিয়ে অত্যন্ত নিপুণতায় অতি দ্রুত ছোট্ট তক্তপোষটি অটোর তলায় স্থাপন করে নিরীক্ষা শেষে জানাল বিনীত ভাবে সে মুজিব নগর যেতে পারবে না।
কুষ্টিয়া থেকে দু'ঘণ্টা বাস ভ্রমণ শেষে মেহেরপুর পৌঁছে অটোতে মুজিব নগর যাওয়ার মাঝামাঝি এ ঘটনা। হাল্কা প্রমাদ গুনে
ভর দুপুরে প্রায় চক্‌চকা টাক মাথায় আর একটি অটোর অপেক্ষায়।রাস্তার পাশে বড় প্যানে দুধ জ্বাল হচ্ছে ,ঘন দুধের মিষ্টি গন্ধ নাকে লাগছে। চা খোর নই, কিন্তু চা খাওয়ার ইচ্ছেটা চাগার দিচ্ছে বিনা নোটিশে। দোনো-মোনো মন, চা খেতে যাব না অটোর অপেক্ষায় থাকব। ধীর পায়ে আড়াইটি (দুটি সরব একটি নীরব ) যুবক কাছে এগিয়ে এলো। কাছে এসে একজন বাংলায় ও অন্যজন ইংরেজিতে জানতে চাইল আমি কোন দেশ থেকে এসেছি । বিস্মিত চোখের ছানাবড়া ভাব লুকিয়ে উত্তর দিলাম ‘এ আমার দেশ ’। প্রকট অবিশ্বাসী হয়ে বলল ‘এত সুন্দর বলা বাংলা ভাষাটি কোথায় শিখলেন সেটি আগে বলুন?’। সবিনয় উত্তর দিয়েছি ‘ শিখেছি আমার মা ও ‘খালা’র’ কাছ থেকে। বিস্ফোরিত হাসি চোখে সবাই টং এর চা-দোকানে।
পাওয়া গেল আধাআধি যাত্রী সমেত আর একটি অটো, দাম-দস্তুরের রফা শেষে চা খাওয়ার সময় চাইলাম, ঠাণ্ডা চা খেতে হবে তাই। চালক যত খুশি তত অপেক্ষায় তার অনাপত্তি জানিয়ে অটোতে থাকা যাত্রীদের অন্য অটোতে তুলে দিল। অটো চালক চা এর আমন্ত্রণ সবিনয়ে না করে দিল।
এই চালক নিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা পরে বলা যাবে কখনও।
যা বলছিলাম.........
ভ্রমণ শেষে নিজ শহরে দ্বিতীয় বাসস্টান্ডে নামলাম রাত একটায়। বাসায় ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা যা আগে থেকে করা তা ক্লিক না করাতে ভারী গাঁট্টি-বস্তা নিয়ে পদ যুগল ভরসায় পদব্রজ , যদিও ব্রজটি হাঁটা দূরত্বের।জেলার প্রায় জ্যেষ্ঠ সুরক্ষা আধিকারিকের (প্রতিবেশী) গাড়িটি বার দু’য়েক পাশ কাটিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসে ইংরেজিতে প্রশ্ন , কোন্‌ দেশের মানুষ ও এই রাতের গভীরে কোত্থেকে এসেছি ও কোথায় যাব? গাড়ীর কাছে মুখ নিয়ে জানতে চাইলাম ‘ভাবী কেমন আছে এখন?’
হাঁটতে হয়নি গাড়িতেই বাসায় পৌঁছেছি।

0 Shares

৫৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ