🙁

একটি সাধারন কাহিনীকে কিভাবে অভিনয়, গান, কবিতা আর নাটকিয়তা দিয়ে অসাধারন করা যায়, এটি বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই বাইশে শ্রাবণ  বা ২২শে শ্রাবণ  বাংলা মুভিটি দেখতে হবে। একজন ক্রমিক খুনীকে খুঁজে বের করার পুলিশি কর্মকান্ডকে নিয়ে মুল কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে। যে খুনি একের পর এক রাতে খুন করে যাচ্ছে গরীব, ভিক্ষুক, পতিতা সহ সমাজের নিম্ন স্তরের মানুষদের। আর এই খুন গুলো করা হচ্ছে বিভিন্ন কবির মৃত্যুবার্ষিকিতে এবং খুন হওয়া লাশের পাশে একটি কবিতার কিছুটা লাইন রেখে যাচ্ছে।

পুলিশ কিংকর্তব্যবিমূঢ,প্রধান গোয়েন্দা অভিজিৎ পাকড়াশী (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) কেসের সমাধান করার জন্য উঠেপড়ে লাগে, যা তার বান্ধবী অমৃতা মুখার্জী (রাইমা সেন) এর সাথে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলে। পাকড়াশীর উপরস্থ কর্মকর্তা কেসের সমাধান করার জন্য একজন প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রবীর (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) কে নিয়ে আসে। প্রবীরকে তার সহিংস পদ্ধতি, বদমেজাজ ও গালিগালাজের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছিল। প্রবীর ও পাকড়াশী একত্রে কাজ করে, ওদিকে অমৃতা (টেলিভিশনের সাংবাদিক) এবং অফিসের কলিগ সূর্য সিনহা (আবীর চট্টোপাধ্যায়) একটি ধারাবাহিকের জন্য ক্রমিক খুনীদের ওপর গবেষণা করে। এসব চরিত্রের মাঝে পাগলাটে কবি নিবারণ চক্রবর্তী (গৌতম ঘোষ) যিনি নিজেকে হাংরি আন্দোলনের একজন মনে করেন এবং রাতে কলকাতায় ঘুরে ঘুরে কবিতা আবৃত্তি করেন।

বিভিন্ন ঘটনায় একসময় অভিজিৎ এবং প্রবীর চিনহিত করেন যে খুন গুলো কবি নিবারন করেছে এবং ২২ শে শ্রাবন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু বার্ষিকিতে আর একটি খুন হবে। কিন্তু সে খুনের আগেই নিবারন আত্মহত্যা করে। সাথে সাথে এই খুনের ফাইল বন্ধ করে দেয়া হয়।

২২ শ্রাবনের খুন কি তাহলে হবেনা ? হ্যা ঐ দিন আর একটি খুন হয়েছিলো। কিভাবে খুন হলো ? খুনি তো আত্মহত্যা করেছিলো । এর উত্তর পেতে আপনাকে অবশ্যই মুভিটি দেখতে হবে।

পরিচালক : সৃজিত মুখোপাধ্যায়
প্রযোজক : শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস
রচয়িতা : সৃজিত মুখোপাধ্যায়
সুরকার :  অনুপম রায়
অভিনেতা :
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় :প্রবীর রায় চৌধুরী চরিত্রে প্রসেনজিৎ তাঁর ইমেজের বাইরে গিয়ে অভিনয় করেছেন। আমার মনে হয়,এই ইমেজেই তাঁকে সবচেয়ে মানিয়েছে।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়:অভিজিৎ পাকড়াশী চরিত্রে এর অভিনয়, কষ্ট, হতাশার অভিব্যাক্তি বেশ ভালো ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।
রাইমা সেন : অমৃতা মুখার্জী চরিত্রে বেশ সতস্ফুর্ত ছিলেন, ইনি এক সময় বড় অভিনেত্রী হবেন এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
আবীর চট্টোপাধ্যায়: সূর্য সিনহা চরিত্রে ভালোই অভিনয় করেছেন।
গৌতম ঘোষ : নিবারণ চক্রবর্তী চরিত্রে গৌতম ঘোষ অসাধারন অভিনয় করেছেন। তাঁর পাগলাটে আচরন, উচ্চারিত কবিতা গুলো এক কথায় অসাধারন। এনার অভিনয় এই প্রথম দেখলাম।

মুভির গানের কথা আর কি বলা যায় ? যারা মুভি দেখেন না, তাঁরা গান শুনুন। গানের মাঝে মাঝে না হয় বিজ্ঞাপনের মত মুভি দেখলেন।
যেখানে শুরুর কথা বলার আগেই শেষ
সেখানে মুখ ডুবিয়ে খুঁজতে চাওয়া আমারই অভ্যেস..... একবার বল

যে কটা দিন তুমি ছিলে পাশে
কেটেছিল নৌকার পালে চোখ রেখে
আমার চোখে ঠোঁটে গালে তুমি লেগে আছ

 আমি কাঁটা-তারেই সুখী
এই কুয়াশাতে উঁকি দিয়ে .... রাজি মিথ্যে মিথ্যে
আসলে সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই .....
এই শ্রাবণ ধুয়ে ফেলুক এই রাস্তা-ধুলো
এই শ্রাবণ ভিজিয়ে দিক দীর্ঘ ছায়াগুলো

 গভীরে যাও, আরো গভীরে যাও
এই বুঝি তল পেলে, ফের হারালে, প্রয়োজনে ডুবে যাও
জানলা জুড়ে মানুষের কান,
গলির ভাঁজে ভ্রমরের প্রাণ

আমি জানি এটি কোন মুভি রিভিউ হয়নি, তাই শিরোনামে মুভি রিভিউ দেয়ার রিস্কটা নিলাম না।
আমার এই পোষ্টটি উৎসর্গ করলাম সোনেলার মুভি রিভিউর প্রথম পোষ্ট দেয়া  ব্লগার শাদমান সাকিব ভাইয়াকে। ব্লগ টীমের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, সম্ভব হলে সাকিব ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ পুর্বক সোনেলায় ফিরিয়ে আনার সুব্যবস্থা নিন।

0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ