ফুরিয়ে যাওয়া স্মৃতিরা

নীলাঞ্জনা নীলা ১৯ মার্চ ২০১৫, বৃহস্পতিবার, ১২:০৬:৫১পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২০ মন্তব্য

"ঠোঁটের কথাগুলো আজকাল নিখোঁজ। হাওয়াদের সাড়া-শব্দও পাওয়া যায়না। গাড়ীর হর্ণে, রিক্সার টুংটাং-এ, ডিজেলের কালো ধোঁয়ায় ছাওয়া নীল আকাশ। এরই মধ্যে প্রাণ ভরে পেট্রোলের গন্ধ নিচ্ছি। এতো প্রিয় এই গন্ধটা আমার।
ওহ বলে নেই, আমার নাম সিঁথি। বন্ধুরা বলে আমি একটা প্রজাপতি, চুপচাপ বসে থাকতে জানিনা। নেচে বেড়াই। অস্থির এবং চঞ্চল। অনেক গুরুগম্ভীর পরিবেশকে মুহূর্তে হাল্কা করে দিতে জানি।
আসলেই কি তাই? বুকের কোনো প্রান্তে কি একটুকুও মেঘ নেই? বিদ্যুৎ চমকায় না? গোপনের দীর্ঘশ্বাস একান্ত আপন রাত্রি শোনে। জানে, চেনে। এসব কথার কোনোই মানে নেই।
এই ডায়েরী লেখা ছেড়ে দিয়েছি সেই কবে। কিন্তু আজ না লিখে পারলাম না। মনের কথা সকলকে বলা মানে সমস্যার শুরুকে অনেক বেশী দ্রূত টেনে নিয়ে যায় আরোও গভীরে। দু:খ বলা মানে কতোগুলো মানুষের হা-পিত্যেশ। সাথে থাকে মানসিক নির্যাতন। আহারে মেয়েটির এমন অবস্থা? অন্য কেউ বলবে, "হবেনা? যেমন কর্ম, তেমনই তো ফল পাবে।" তাই ডায়েরী। বড়ো নি:শব্দে সে হজম করে, আর মরে গেলে কারোও হাতে পড়লেও তখন কিছুই যাবে-আসবেনা। অন্যান্য দিনের মতোই সকালটা শুরু হয়েছিলো। এমন কিছু ঘটবে তা যে কেন আগে জানিয়ে দেয়না সময়। মানুষ অন্তত প্রস্তুতি তো নিতে পারে।"

এরপরের পাতাগুলো শূণ্য। আর জানা হয়নি কি ঘটনা ঘটেছিলো সেদিন, কি এমন যন্ত্রণা যার জন্যে ওর কথাগুলোও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলো? সিঁথির সাথে দেখা হয়, কথাও। কিন্তু জিজ্ঞাসা করিনি। একটা গভীর কুয়াশায় ঢেকে রেখেছে সে নিজেকে। ওটা ভেদ করে যাওয়া শুধু কঠিনই নয়, অসম্ভবপ্রায়। স্মৃতির খাতা ভরে গেলে আর কি কাজ করে? আমার স্ত্রী সিঁথি এখন অনেক শান্ত, যা সবাই চাইতো। ও সবাইকে সব দিয়েছে, ফিরিয়ে দিতে জানেনা আমার প্রজাপতি।

গ্রীনলাইফ হাসাপাতাল
ঢাকা ১২ মার্চ, ২০১৫ ইং।

0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ