শিরোনাম:ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের কারণ কি এর সমাধান কোথায়

 

ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘাতে যুদ্ধে সাধারণ মানুষেরা পড়ছে বিপাকে। হাজার হাজার মানুষ নিহত হচ্ছে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে বহু মানুষ।এখন প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের কারণ কি? এর সমাধান কোথায়?

 

ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের কারণগুলি জটিল এবং বহুমাত্রিক।এর মধ্যে কিছু কিছু কারন চোখে পড়ার মতো উল্লেখ ভূমি ও সম্পদের দ্বন্দ্ব,জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় উত্তেজনা,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের অভাব ইত্যাদি।ফিলিস্তিন ও ইসরাইল দুটিই একই ভূখণ্ডে অবস্থিত। ইসরাইল ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়। ইসরায়েল নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ফিলিস্তিনিরা বসবাস ও কাজ করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে সীমিত সুযোগের মুখোমুখি হয় এ থেকে তাদের ভিতরে দ্বন্দ সৃষ্টি হয়। এরপর শুরু হয় জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় উত্তেজনা।ফিলিস্তিনিরা এবং ইসরায়েলিরা দুটি ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এবং ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। এই পার্থক্যগুলি প্রায়শই উত্তেজনা এবং সহিংসতার দিকে পরিচালিত করে এবং এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সংঘাত সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। যা এই আন্তর্জাতিক মহল দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকে উস্কে দেয় এবং সংঘাতের স্থায়ী সমাধান খুঁজে পেতে আরও কঠিন করে তোলে। যার ফলে তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক মতবিরোধ তৈরি হয়।

 

চলুন ফিরে দেখা যাক ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধের কিছু নির্দিষ্ট ঘটনা। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধ, এই যুদ্ধের ফলে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমির বেশিরভাগ অংশ হারায় এবং ইসরাইল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধ, এই যুদ্ধের ফলে ইসরাইল পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম, গাজা উপত্যকা এবং গোলান হাইটস দখল করে।১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধ,এই যুদ্ধটি আরব দেশগুলির দ্বারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি পুনরাক্রমণের প্রচেষ্টা ছিল।১৯৯৩ সালের ওসলো চুক্তি,এই চুক্তিটি ফিলিস্তিন ও ইসরাইল মধ্যে একটি শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করে।২০০০ সালের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার,এই ইন্তিফাদারটি ইসরায়েলি দখল এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের অভাবকে কেন্দ্র করে শুরু হয়।২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধ,এই যুদ্ধটি ইসরায়েল এবং হামাস গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে হয়।ফিলিস্তিন ও ইসরাইল যুদ্ধ একটি জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত। এই সংঘাতের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচুর রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।যা এই দুই দেশের মধ্যে তৈরি হতে পারে নি।

 

আর বর্তমান সময়ে ২০২৩ এ যুদ্ধে ইসরাইলের স্বাধীন রাষ্ট্র এবং তার ভূখণ্ডের উপর সার্বভৌমত্ব রয়েছে।যা ইসরাইল দাবি করে যে পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য এছাড়া ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, তবে এটি দাবি করে যে এই রাষ্ট্রটিকে ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মতামত, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করছে। ফিলিস্তিনিরা দাবি করে যে পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা তাদের পূর্বপুরুষদের জমি এবং তাদের উপর ইসরায়েলি দখল অবৈধ। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির জন্য প্রস্তুত, তবে এটি দাবি করে যে এই চুক্তিটিকে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের উপর ভিত্তি করে হতে হবে। তবে এখানে হামাসের অবস্থান থেকে তাদের দাবি ভিন্ন।হামাস হলো একটি ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী যা গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করে। হামাস ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির বিরোধিতা করে এবং একটি ইসলামিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে।এই তিনটি অবস্থান থেকে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর স্থবির হয়ে পড়েছে। ২০১৩ সালে, উভয় পক্ষই শান্তি আলোচনার জন্য আগ্রহী বলে দাবি করে, তবে তারা এখনও কোনও ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি।

 

কিছু বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন যে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধের সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন যে উভয় পক্ষেরই শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য একটি নতুন পদ্ধতির প্রয়োজন। এই নতুন পদ্ধতিটিতে উভয় পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

 

 

সৌরভ হালদার ব্যবস্থাপনা বিভাগ সরকারি ব্রজলাল কলেজে খুলনা

[******]@gmail.com

0 Shares

২টি মন্তব্য

  • হালিমা আক্তার

    ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের যুদ্ধ দুপক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা আলোচনার প্রয়োজন। এর জন্য আরব রাষ্ট্র গুলো এগিয়ে আসতে পারে। তবে ফিলিস্তিনির বিজয় একদিন হবে ইন শাহ আল্লাহ।

  • স্বপ্ন নীলা

    আমি সাধারণত বিশ্লেষণাত্মক পোস্ট পড়তেই বেশি পছন্দ করি। আপনার পোস্ট দেখেই পড়তে বসলাম। অনেক পড়ালেখা করেছেন এবং তারপর লিখেছেন।
    আমি যেটা মনে করি এটা কোন যুদ্ধ নয়। এটা ধীরে ধীরে একটা দেশের জনগণকে মেরে ফেলার একটা পায়তারা যেটা সেই অনেক বছর আগে হতেই চলছে। যুদ্ধ হয় সমানে সমানে। ইসরাইল যা করছে তা হলো এক ধরণের গণহত্যা।
    ফিলিস্তিনিতা ইসরাইলি জাতিকে তাদের দেশে বসবাস করতে দিয়ে যে মানবতার পরিচয় দিয়েছিল–এখন তারা তার মাসুল দিচ্ছে। আমি জানি না বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা আবার এই ধরণের কাজ না করে বসে।
    ফিলিস্তিনি জনগণ স্বাধীনতা চাচ্ছে এবং এর জন্য লড়াই করছে। এটা ১০০ ভাগই যৌক্তিক। আমরা আসলে খুবই সহজে স্বাধীনতা পেয়ে গিয়েছিলাম, আর তাই আমাদের দেশের জনগণ স্বাধীনতার স্বাদটা বুঝতে পারে না। আপনি দেখেন ফিলিস্তিনের এতিম শিশুদের চোখে মুখে কী দিপ্তিময় হাসি দিয়ে পতাকা উড়াচ্ছে।
    পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক মারপ্যাচ চলছে, আর তাও সম্পদ আহরণকে ঘিরে। আর তার বলির পাঠা হচ্ছে সিরিয়া, লিবিয়াসহ অন্যান্য দেশ। কিছু পুতুল সরকার তারা বসিয়ে দিয়েছে। সেই পুতুল সরকার টাকা উড়াচ্ছে আর ফুরতি করছে। অথচ দেখেন এই সব দেশের অর্থনৈতিক ভিত শক্ত থাকলে আমাদের দেশসহ পাশের গুলোও সেখানে শ্রমিক রপ্তানি করে সেখানে হতে বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা আয় করতে পারতো।
    যাইহোক জাস্ট একটু গল্পের ছলে আলোচনা করলাম এই আর কি ?
    শুভকামনা রইলো দাদা

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ