ফেমিনিজম বা নারী আন্দোলনঃ  ব্রিটেন এবং পশ্চিম ইউরোপে প্রথম আরম্ভ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে অনেক দেশে ,পেছনের কারন 

 

কি ভাবে ফেমিনিজমের উৎপত্তি হল

মেয়েদের অধিকারকে আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে এনে একটা সভ্য সমাজের অতি প্রয়োজনীয় অংশে পরিণত কারার চেষ্টা করাকেই ফেমিনিজম আন্দোলন বলা হয় ।

উনিশ শতক এবং বিশ শতক ধরে ওয়েস্টার্ন ইউরোপে এর  উৎপত্তি হয়। তার সাথে সাথে আমেরিকায়ও  ছড়িয়ে পড়ে।

আধুনিক চিন্তা এবং  রেনেসাঁর উদ্ভব

এই সময়ে বেস কিছু দার্শনিক ,  রাজনৈতিক মতের  এবং সমাজ সংসারকের উৎভব হয়। যাদের চিন্তা ধারা হল একটা দেশে সবার সুবিধা দেখতে  হবে । যা গণতন্ত্রের একটা অংশ। এরই ধারাবাহি কতায় নারীদের সুবিধা আদায়ের বিষয় টি আসে। প্রথমে ছিল ভোটের অধিকার এবং তার পরেই ক্রমান্বয়ে নারী অধিকার, নারী পুরুষ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগুলো আদায়ের জন্য নারী একতা বদ্ধ হতে থাকে এবং আন্দোলন চালাতে থাকে।

পৃথিবীর সব নারী এক হও

এই নারীদের উদ্দেশ্য হল পৃথিবীর সব নারীকে একত্রে করে সবায় কে নিয়ে একসঙ্গে আন্দোলন করা এবং নারীকে দুর্দশা থেকে উদ্ধার করা। পুরুষ শাসিত সমাজ থেকে বেরিয়ে এসে সাম্যতা আনা এবং সমাজের মঙ্গল করা।

লিবারেশনের মাধ্যমে নারীর জন্য জেন্ডার ইকুইলিটি যে একটি হিউম্যান রাইট তা বোঝাতে সক্ষম হয়। জেন্ডার ইকুইলিটি আন্দোলনের পরেই তারা ফিমেল ইডুকেসান বা নারী শিক্ষ্যা আন্দোলন আরম্ভ করে ,যার মাধ্যমে নারী বলতে চেয়েছে শিক্ষার অধিকার যেমন মানুষের অধিকার তেমন নারীরও অধিকার ।

"Work within the structure of mainstream society to integrate women into that structure". অর্থাৎ নারীর সুযোগ সুবিধা আদায়ের ব্যাপারটি রাষ্ট্র পরিচালনার  মূল কাঠামোর মধ্যে এনে একটা স্ত্রাকচার গঠন করা এবং তা সমাজের অংশ হিসেবে পরিণত করা।

আইন দিয়ে পলিটিক্যাল ইন্সটিউসানে নারী অধিকার বিষয়টিকে প্রবেশ করানই লিবারেল ফেনিনিজমের উদ্দেশ্য ।

" ইন্টারন্যাসান্যাল এলিয়েন্স অফ ওমেন " একটি নন গভর্নমেন্ট অরগানাইজেসান যার মাধ্যমে নারী অধিকার এবং জেন্ডার ইকুইলিটি ব্যাপারটি ব্যাপক প্রচার হয়।

Age of Reason  প্রত্যেক কাজের পেছনে যুক্তি থাকা 

১৭ সেনচুরি এবং ১৮ সেনচুরিতে "Age of Reason"  মুভমেন্ট আরম্ভ হয়। যার দর্শন হল   "প্রত্যেকটা  কাজের পেছনে একটা যুক্তি দেখাতে হবে"। অযৌক্তিক কাজ এবং চিন্তা সমাজের সমস্যা সৃষ্টি করে। এই মতবাদের উৎপত্তি  ওয়েস্ট  ইউরোপে এবং তার মধ্যে রুশোর প্রভাব বেশি ছিল।এরা হলেন হবস, লক রুশো, মেকিয়াভেলি এবং কার্ল মার্ক্স এবং আরও অনেকে।

নারী আন্দোলনের ঘটনা প্রবাহকে প্রথম ঢেউ ,দ্বিতীয় ঢেউ, তৃতীয় ঢেউ এই ভাবে বিভক্তি করা হয় ।

'দি নিউইওর্ক টাইমস ম্যাগ্যাজিনে' একটি লিখিত নিবন্ধে নারী আন্দলনের ধারাকে প্রথমবারের মতো প্রথম ঢেউ ,দ্বিতীয় ঢেউ এভাবে উল্লেখ করা হয়।

প্রথম ঢেউএ  নারীর ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বলা হয় যা ব্রিটেন,কানাডা ,নেদারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক বিস্তার লাভ করে।

দ্বিতীয় ঢেউএ অসমতা গুলো যা কিনা আইনের বাইরে তাকে আইনের আওতায় আনা এবং তার জন্য আন্দোলন চালানোকে বুঝায়।

দাস প্রথার বিলোপ  আন্দোলন আরম্ভ করেন সজার্ন্স টুথ এলিজাবেথ, ব্লাকঅয়েল , জেন আদ্যামস, এবং ডরোথি ডে । এই আন্দোলনের সাথেই নারী আন্দোলন আরম্ভ হয়। প্রথম দিকে মধ্যবিত্ত নারী দ্বারা সমতা ভিত্তিক গণতন্ত্রের সংস্কার সংশোধন এর  মধ্যে ছিল।

ওলাস্টন ক্রাফট  ( Wollstonecraft)

যিনি একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখিকা যার বিখ্যাত বই A vindication of the Rights of women(1792) প্রকাশিত হয় । যেখানে তিনি নারীর অধিকার নিয়ে লেখেন। যার আইডিয়ে ব্রিটিশ নারী আন্দোলন কে একটা আকার দান করে। তাই  তাঁকে "Mother of fimail suffragettes" অর্থাৎ 'নারী আন্দোলনের মা'  বলে আখ্যায়িত করা হয় ।

সুইজার ল্যান্ড

সুইজারল্যান্ড নারী আন্দোলনে নারী শিক্ষ্যা কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় এবং বলা হয় একজন নারীর অনেক কিছু জীবনে  করার আছে, দেখার আছে শুধু মাত্র বাচ্চা উৎপাদনের ভূমিকা ছাড়া । ২০১৩ সালে ৫৪% নারী বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় এবং ৪৬% পুরুষ যায় এই সময়ে। যেখানে ১৯৬০ সালে ২৫% নারী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল । নারীকে এগিয়ে নিতে এই নারী আন্দোলনের ফল এটি।

ফ্রান্সঃ

ফ্রান্সে 'Age of enlightenment' এবং ফ্রেঞ্চ রেভুলেসানের সময় থেকে নারী আন্দোলন আরম্ভ হয়। নারী আন্দোলনকে সামনে রেখে তখন পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার এবং ডিভোর্স আইন পাস হয়। অনেক ওমেন গ্রুপ গঠন হয় যেখানে সব নারী একত্রে হয়ে তাদের নানা রকম ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতো। যেমন অর্থনইতিক সুযোগ সুবিধা আদায়, ইডুকেসান ইত্যাদি। এসব  নিয়ে তাঁরা লেখা লেখি এবং তা পেপারে ছাপানো নিয়ে আলাপ করেতেন ।

১৮৯৭ সালে "Lafronde" নারী দ্বারা পরিচালিত প্রথম পেপার প্রকাশিত হয়। যে পেপারে নারী অধিকার, নারীর পড়াশুনা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার এবং মেয়েদের অর্থনৈতিক মুক্তি এসব নানান ব্যাপারে লেখা থাকতো। যা কিনা নারীকে শক্তি সঞ্চয় করতে অনেক সাহস যুগিয়েছিল ।

জার্মানঃ

১৮৪৮ সালে নারী আন্দোলন গঠন হয়। যার নেত্রী ছিলেন Louise Otto Peters Auguste Schmidt। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নারীরা  তাদের স্টেটাস বৃদ্ধির জন্য গ্রুপ অরগানাইজ করে। যার মাধ্যমে  মেয়েরা তাদের অধিকার, নারী ক্ষমতায়ন, নারী পুরুষে সমতা, উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে ভাই বোনের সমান অধিকার ,অর্থনৈতিক মুক্তি, ডিভোর্স , এবরসান, বার্থ কন্ট্রোল, সসিয়াল জাস্টিস এবং কথা বলার অধিকার নিয়ে আলাপ আলোচনা করতেন।

নেদারল্যান্ডঃ

সমাজ উন্নতির জন্য নারী পুরুষ সবার উন্নতির ব্যাপারটি রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে আনার কথা আলোচনা হলেও পরের দিকে প্রধানত নারীকে প্র্যাধ্যান্ন দেয়া হয়। কারণ নারী হিসেবে তাদের বেস কিছু ইস্যু আছে যা পুরুষের বেলায় নাই।

চীন

চীনকে মডার্ন কান্ট্রিতে পরিণত করতে চীনের নারী পুরুষ উভয় বুদ্ধিজীবী ইন্টেলেকচুয়াল রাজনীতিবিদ জড়িত এবং সজাগ ছিল । নারী পুরুষের সমতা বৃদ্ধি, মেয়েদের শিক্ষ্যার অধিকার এবং নারী ক্ষমতায়ন   করার জন্য  প্রথম থেকেই সমাজ সচেতন ছিল ।

নারী নেত্রী তিয়ান জু হুই ( Tian zu Hui) মেয়েদের পায়ের পাতা বেঁধে ছোটো করে রাখার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। ১৯১২-১৯৪৯ সালের মধ্যে নারী জীবনে  অনেক পরিবর্তন আসে। অনেক ওম্যান অরগানাইজেসান গঠন হয়। তারাকে এক ছাতার নিচে আনা হয়।  তাদের উদ্দেশ্য ছিল রাজতন্ত্রের উচ্ছেদ এবং নারী জাগরণ।

তাদের ইস্যু গুলি ছিল, জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া বন্ধ, পুত্র কন্যা দের  মাঝে সমান করে সম্পত্তি বণ্টন, নিজের উপার্জিত টাকার উপর পুর্ন কন্ট্রোল এবং ডিভোর্স  দেয়ার পুর্ন অধিকার ।

১৯৩৬ সালের সংবিধানে সংযুক্ত হয় নারী আন্দোলনের ইস্যু গুলো। ১৯৪৭ সালে এটা পুরপুরি সংবিধানের আওতায় আসে। নারীদের সুযোগ সুবিধা এবং মত   প্রকাশের আইনি ভাবে অনুমোদন হয়।

সুইডেনঃ

নারী আন্দোলন প্রথম দিকে সাহিত্য,মিডিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল ১৮ শতাব্দীতে বেশ  কিছু লেখক লেখিকা তাদের লেখনীর মাধ্যমে নারী পুরুষে সমতা, এবং নারী অধিকার গুলি নিয়ে লেখা শুরু করেন। তারা হলেন Margareta momma, Catharina ahlgren, Anna maria Ruckerschold.

প্রথম মুভমেন্ট আরম্ভ হয় ১৮৪৮ সালে Sophic Sager এর  নেতৃত্বে । তাদের আন্দোলনের বিষয় ছিল সরকারের সব সেক্টরে নারীদের সমান নিয়োগ এবং ধর্মে নারী প্রিস্ট থাকতে  হবে।১৯৮০-১৯৮৪ সালে এরই  পরিপ্রক্ষিতে  ১৯৮৪-১৯৮৪ এ প্রচুর নারী  নিয়োগ দেয়া হয়  সেনা বাহিনীতে।

(USA) ইউনাইটেড স্টেট অব আমেরিকাঃ

১৮৪৮ সালে দাসত্ব প্রথা নির্মূল করার জন্য চারদিকে আন্দোলন আরম্ভ হয়। যাকে বলা হয় "Seneca Falls Convention" । আবার ঠিক তখন থেকেই নারী দের শক্তিশালী ভয়েস রূপান্তরিত হতে থাকে আন্দোলনে। নারী আন্দোলনের প্রথম ঢেউ মধ্যবিত্ত নারীদের মধ্য থেকে আসে । এবং দ্বিতীয় ঢেউ একটা শক্তিশালী ভয়েসে রূপান্তরিত হয় ।

গণতন্ত্রে বলা হয়ে থাকে "সবার জন্য সমান অধিকার"। তারই অংশ হিসেবে নারীরা বলতে থাকে "আমরা সেই সমান অধিকার নিতে চাই"।  এবং যা পরবর্তিতে নারী অধিকার আন্দোলনের দাবী হয়।

'আমেরিকান রেভুলেসানে' তেমন উৎসাহ দেয়া হয়নি নারী শীক্ষা এবং রাজনীতিতে নারীর  অংশ নেয়ার  বিষয় বা  নারী রাজনীতিতে  সক্রিয় হোক এই ব্যাপারটি নিয়ে।

জুটিথ সার্জেন্ট মারির লিখিত বই  "On the equality of the sex"  এবং ক্যাথরিন ম্যাকুলে  (Cathrin Macaulo) লিখিত নারী বিষয়ক বই , জন মিলের ম্যাগাজিন 'Black wood magazine' এর লিখিত নারীর অধিকার বিষয়ক লেখা গুলো নারীকে সাহস এবং শক্তি যোগায়।

'আমেরিকান ওমেন সাফার্জ এয়াসসিয়ান' নামে একটি দল গঠন করা হয়।

যার উদ্দেশ্য হল পলিটিক্যাল  সিস্টেম এর মধ্যে দিয়ে  নারীর অধিকার প্রতিস্টা করা। নানা রকম লবিং ,স্পিচ, হাঙ্গার স্ট্রাইক , মিটিং এবং মিডিয়া ব্যাবহার করে NWSA এর কাজ আরম্ভ হয়। তারেই ফলস্বরূপ ১৯২৩ সালে আইন পাস হয় নারী পুরুষের মতো ডিভোর্স দিতে পারবে।

প্রথম ঢেউ এর ফল স্বরূপ নারীদের উচ্চ শিক্ষার দ্বার খুলে যায়।

১৯১৫ সালে আমেরিকান মেডিক্যাল এসসিয়েসান নারী কর্মী নিয়োগ দায়। ১৯১০ সালে অনেক নারী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে থাকে।

১৮৬০ সালে 'ম্যারিড ওমেন প্রপার্টি আইন'  এবং 'বাচ্চার সেয়ারড ওনার শিপ' আইন পাস হয় এবং 'বাবার সম্পত্তিতে সম অধিকার' স্থাপন হয়।

ব্রিটেনঃ

১৮৩৯ সালে , ক্যারলাইন নরটন নামক একজন নারী তার তিন সন্তানের কাস্টডি পাওয়ার জন্য আইনি লড়ায় চালায় সারা জীবন ধরে  এবং তিনি জয়লাভ করেন । তার আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে স্বামী তার সন্তানের কাস্টডি পেত। স্বামীর সাথে বিবাহিত  জীবনের তিক্ত  সম্পর্কের যের ধরে বিচ্ছেদের ফলে তিনি সন্তানের কাস্টডি হারিয়েছিলেন। এই আইনের পর থেকে নারী তার সন্তানের জন্য কাসদি পায়।

তারপরে প্রথম নারী আন্দোলন শুরু হয় ১৮৫০ সালে। তার সাথে জড়িত নারী নেত্রীরা হলেন বারবারা বডিচোন এবং  বেসই রায়নার পার্কার ।

Langham pyales group  ১৮৫৮ সালে  হেলেন ব্লাকবার্ন নামক একজন ব্রিটিশ নারী ওম্যান রিভিউ নামক একটি ম্যাগাজিন বের করেন এবং তিনি ছিলেন তার এডিটর। এই ম্যাগাজিনে নারী অধিকার নিয়ে অনেক লেখা বের হত।

তাদের মুভমেন্টের বিষয় ছিল নারী অধিকার,নারি শিক্ষা ,নারীকে চাকুরীতে যোগদানের বাধা দূর করা। ''ম্যারিড ওমেন প্রপার্টি অধিকার নিয়েও' তারা ক্যাম্পেন চালান ।

তারপরে আরও জার্নাল বের হতে থাকে। যেমন ১) ইংলিশ ওমেন জার্নাল ২) ইংলিশ ওমেন রিভিউ ১৮৬৬

১৮৫৯ সালে জেসি, বাউচরেল, বারবারা বডিচেন এবং অ্যাডিলাইড একসঙ্গে একটি সংঘ গঠন করেন। যার নাম "সোসাইটি অফ ইমপ্লয়মেন্ট  ওমেন " । এই সংঘের উদ্দেশ্য ছিল নারী দের ট্রেনিং এবং শিক্ষা বিস্তার করা। এটাই ছিল সর্বপ্রথম নারী সংঘ যা পরে  ব্যাপক বিস্তার লাভ করে।  তারপরে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় পুরুষের রেখে যাওয়া কাজ গুলোতে নারী দলে দলে যোগ দায় এবং তা সুচারু ভাবে সম্পন্ন করে।

১৯১৯ সালে 'নারী' শুধু এই  কারনে  চাকুরী না দেয়া এই আইনটি  বাতিল হয়। এর ফলে অনেক নারী সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন।

১৯১৮ সালে নারী পার্লামেন্টে মেম্বার হতে পারবে সে আইন পাস হয়। অনেক ফেমিনিস্ট রাইটার এবং নারী অধিকার কর্মি লেখার মাধ্যমে,লবি,মিটিং , ওয়ার্কশপের ম্যাধমে প্রচার করতে থাকে নারী অধিকার এবং জেন্ডার ইকুইলিটি নিয়ে।

শুধু নারী পুরুষ সমান নয় ,নারীকে রেকগনাইজ করা যে সে নারী হোয়েও সে ঘরে এবং বাইরে কিছু করতে পারে সমাজের জন্য।

ভারজেনিয়া উলফ একটি আর্টিকেল লেখেন যাতে তিনি বলেন একজন নারীর একটি ঘর এবং অর্থ দরকার যাতে সে লেখা চালিয়ে যেতে পারে।

মারগারেট বেনস্টোনঃ

ক্যাপিটালিস্ট সিস্টেমে দুই ধরনের শ্রম থাকে একটি হল উৎপাদন শীল ,যার উৎপাদিত পণ্যের একটা আর্থিক মূল্য আছে। যা তাকে  মজুরীর মাধ্যমে দেয়া হয়। আর একধরনের শ্রম হল পুনরুৎপাদন শীল বা  রিপ্রডাকটিভ । যা মানুষ নিজের জন্যই করে। যেখানে কোন মজুরী থাকেনা। যা নারী ঘরে করে থাকে যাকে বলা হয় গৃহস্থালি সব কাজ।

পুঁজিবাদী ব্যাবস্থায় শ্রম শক্তিকে খুব সস্তায় টিকিয়ে রাখার জন্য নারীর শ্রমকে কোন রকমের মজুরী ছাড়াই ব্যাবহার করা হয়। এবং নারীকে শোষণ করা হয়। যার মাধ্যমে উৎপাদনকারী অধিক মুনাফা অর্জন করে।

মার্ক্সিয় নারীবাদীরা বলেন উৎপাদনশীল কাজ থেকে নারীকে বঞ্চিত করে ব্যাক্তি মালিকানাধীন এবং রাষ্ট্রয়ত্ত উভয় ক্ষেত্রে পুরুষ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।

মারগারেটের এই থিওরী নারীকে আরও উৎজিবীত করে ।

নারীর সক্ষমতা দেখানোই নারীর আসল উদ্দেশ্যঃ

বার্টন নামে একজন ব্রিটিশ নারী লেখিকা তার লেখাতে বলেন যে "আগে বলা হত সামাজিক  উন্নতির জন্য নারী ইনভলবমেন্ট দরকার কিন্তু শুধু তাই নয় তার মতে পুরুষ চায় নারী থাকবে গৃহে তা সম্ভব নয় ,নারী চায় সত্যিকারের শক্তি দিয়ে সে ঘরের বাইরে এসে তার সক্ষমতা দেখাতে । নারীর সক্ষমতা দেখানোই আসল উদ্দেশ্য । "

এইভাবে পশ্চিম ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে নারী জাগরণের আন্দোলন প্রথম আরম্ভ হয় । আস্তে আস্তে তারা শুধু নিজেরা  নয় সারা পৃথিবীর মেয়েরাকে নিয়ে জাগতে চায়। কারণ মেয়েদের জাগরণ মানে দেশের উন্নয়ন।

একটা দেশের সভ্যতা বুঝতে আগে দেখতে হবে সেখানে মেয়েরা কেমন আছে । যদি মেয়েরা ভালো অবস্থানে থাকে,  রাষ্ট্রীয় আইন দিয়ে তারাকে সুরক্ষা দেয়া হয়,তারাকে সন্মান দেয়া হয় , নারী পুরুষে সমতা থাকে ,  তারা একটা নিরাপদ বলয়ে থাকে তার মানে দেশটি একটি সভ্য দেশ।

লেখক ও গবেষকঃ হুসনুন নাহার নার্গিস ,লন্ডন

সংগ্রহঃ উইকিপিডিয়া ,

Foundations Of Western Culture,Robin

Most influential women in British History ,Royal Robin

The Pankhursts Politics protest and passion

Women History Archives

লেখক ও গবেষকঃ হুসনুন নাহার নার্গিস ,লন্ডন ,UK

0 Shares

একটি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ