প্রেম কি

অরুণিমা মন্ডল দাস ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫, বুধবার, ০৯:২৩:৪৫অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২২ মন্তব্য

১)স্কুল জীবন প্রেমঃ
10012627_266245680248432_6678431947172252219_n

অনেকেই দেখি খুব বেশি আবেগি হয়ে পড়ে যার ফলে পড়াশোনাটাই নষ্ট হয়ে যায়। মনে মনে ছেলেরা মাদার টেরেসার জায়গায় মাধুরী দিব্যা ভারতী আর মেয়েরা রবীন্দ্রনাথের জায়গায় সলমন আমির নাগার্জুন হৃত্বিক রোশনের পূজো করে থাকেন। স্কুলে গেলেই মনে হত ওটা একটা রোমান্টিক প্রেম নিবেদনের ক্ষেত্র। কিছু কিছু বান্ধবী কে দেখতাম ক্লাশ টিচারদের করায়ত্তে রাখার নিপুণ চেষ্টা চালাতেন। বাপের টাকা দেখলে কিছু ছেলের মন গলতে সময় লাগে না। আর গরিবের সুন্দরী মেয়েদের অনেক সহানুভূতিশীল ক্লাশটিচার বিবাহ করেন । তা সংখ্যাতে খুব কম ও মহার্ঘ।

যাইহোক আমরা কিছু বান্ধবীরা মাষ্টার আর ছাত্রীর প্রেম নিবেদনের আকার ইঙ্গিত দেখে ধন্য হয়ে যেতাম। মাষ্টারের অফিশে ছাত্রীটির কদর প্রাইম মিনিষ্টার ইন্দিরা গান্ধির মতই ছিল। এখনও মনে আছে আমরা ওই দুইজন বিহ্বল প্রেমিক প্রেমিকা দেখার জন্য দরজায় ছিদ্র করে রেখেছিলাম। ওকে আলাদা করে বাংলা রোমাণ্টিক কবিতা বোঝানোর সময় আমরা ও ছুটতাম দেখতে স্যার কিরকম বোঝায়। পরীক্ষার সময় মেয়েটার প্রতি যত্ন আরো বেড়ে যেত। ঘড়ি থেকে মস্ত বড় বড় নোট প্রদান হত। অন্য মেধাবী বান্ধবীরা প্রেম করত না তা নয় তঁারা মজা করতেই ভালোবাসতো। লাস্ট বেঞ্চির ছেলেরা সারাক্লাশ তাক করে বসে থাকত কখন ফার্স্ট বেঞ্চি সেকেন্ড বেঞ্চির সুন্দরী মেয়েদের পেট আর পিঠ সুন্দরভাবে দেখতে পাবে। ফুল ছুঁড়ে মারা পেন দিয়ে খোঁচা মারা সেগুলো তো আছেই। দুষ্মন্তের প্রেম নিবেদন আমাদের বাংলার শিক্ষক এমনভাবে বলতেন আস্তে আস্তে মনে হত তিনি নিজেই কোন শকুন্তলাকে প্রেম নিবেদন করছেন । সবাই হো হো হেসে উঠত। সেই সময় বুলাদির বিজ্ঞাপণও জোর জোরসে প্রচার হত। স্যারগণ ওইসব নিয়ে বোঝাতে এলে মেয়েরা হো হো করে হাসত আর ম্যাডাম বোঝাতে এলে ছেলেরা হো হো হাসত । উনারা লজ্জা পেয়ে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে যেতেন। এইড্ স্ র জন্য পকেটে কনডোম নিয়ে ঘোরার থেকে নিজেরা সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি?
আমাদের স্কুলের সামনে একটা পুকুর ছিল। কিছু প্রেমিক প্রেমিকা পুকুরের জলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বিরহের কবিতা বানাত। জল শুকিয়ে পুকুরটি মরুভূমি হয়ে গেলে প্রেমিকের মনটাও কাতর হয়ে যেত অজানা যন্ত্রণায়।
অনেকে হলিউডি ফিল্মের গল্প শোনাত। আমি বরাবর একা থাকতেই ভালোবাসতাম। নিজের একটা সামান্য কল্পনার জগতে থাকতে পছন্দ করতাম। কারণ নিঃস্ব সর্বহারাদের উচ্চ প্রতিবাদের ভাষা নিভৃতে শৃগালের ডাকের মতই হেয় বলে পরিণত হয়।
স্মার্ট শিক্ষকের প্রতি লাইন মারার প্রখর প্রচেষ্টা দেখা যেত। কোন শিক্ষকের তাকানো কিরকম চোখের ইশারা কিরকম কেমন মোটা গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা এগুলো কিছু বান্ধবীদের ঠোঁটস্থ ছিল।

আসলে কারো কারো জীবন এমন হয় সব থাকতে কেউ নেই একদম শ্মশানের মত ফাঁকা মনে হয়। পড়াশোনাটা তখন বোঝা বলে মনে হয়। তবুও মানুষ হতে হবে। অশিক্ষিত গরিব মেয়ে আর রাস্তার নেড়ি কুকুরের বাচ্চার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যে যখন পারে ক্যালানি দেয় । লোহার রড দিয়ে খোঁচা দিয়ে রক্ত বের করে মজা পায়।

২)কলেজ জীবন প্রেমঃ
hgujhj
কলেজ জীবন প্রেম বলতে আমার কিছুই ছিল না। দুর্ভাগ্যবশতঃ কলেজে ওঠার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। তাই বন্ধুরা কেউ প্রেম নিবেদন করতে সাহস পেত না বরং আমি ই তঁাদের জন্য মেয়ে দেখে দিতাম। যেকোন কলেজের কলেজ ক্যান্টিনটা হল ছেলেদের বিশেষ করে বড় সিনিয়ার ছেলেদের মেয়ে দেখার ও গার্লফ্রেন্ড চুজ করার উৎকৃষ্ট জায়গা। নবীনবরনটাও কলেজের ছেলে মেয়েদের মিলনমেলার উত্তম স্থান।
কিছু বেমানান জিনিষঃ
১)একটা মোটা মেয়ে একটা ছুঁচোমুখধারী রোগা ছেলের গলা জড়িয়ে সংগে প্রেম করছে। ভাবতাম ওরা কি সত্ত্যি প্রেম করছে না জাস্ট চেক করে দেখছে পার্টস ঠিক আছে কিনা । পরেরবার প্রেমটা যেন ভালো হয় তাই।
২)কিছু ছেলে আছে যাকেই ভালো লাগে তাকেই গোলাপ দেয় আর ফোন নং নিয়ে আই লাভ ইউ বলে।
৩)কিছু শিল্পা শেঠি ভাবধারী মেয়েদের সাজগোজের তাপটে চেয়ার টেবিল পাঠ্যপুস্তক তটস্থ হয়ে পড়ে।

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ