কাকচক্ষু জলে,
সে সকালে প্রবীণ রেললাইনের জমানো অপেক্ষা গুলোর শূন্যতা গিলে খেয়েছে নিউক্লিয়াস।
বরং বৃষ্টিভেজা পাতার বুকে ভূগোলের মানচিত্র এঁকে তুমি পিপাসিত পাহাড়ের ধারিত ঝর্ণা হয়ে ওঠো।
আমি না হয় সবুজাভ পাহাড়ের দ্বিপ হলাম।
তুমি আসবে বলে সেই কবে আগমনী গান গেয়ে উঠেছে শরৎ। নদীর তীর আর কুয়াশায় সুশোভিত কাশফুলের আনাগোনা। দ্বিপ্রহরে আমি দাঁড়িয়ে থাকি তোমার অপেক্ষায়।
তুমি আসবে বলে।
শরতের সকালে ইরি ধানের গন্ধ মেখে তোমায় অনুভব করেছিলাম কোন এক আগমনীতে।
বাড়ি জুড়ে ফুলের সমাহার।
বনফুল, রজনীগন্ধা আর ভোরের শিউলি ঝরা পাখির কুঞ্জনে তোমার আলতো অভিমান দেখবো বলে।
বৃষ্টি শূন্য মরভূমিরবুকে পানসি তরী।
আর বালিয়াড়ি জুড়ে শরতের মরসুম।
আমি তখন একবিংশ জওয়ান যুবক। কাঁধে রাইফেল আর পকেটে অজস্র গোলাবারুদ। সমুদ্রের অশান্ত ঢেউকে শান্ত করতে সদা প্রস্তুত।
আমি তাবৎ পৃথিবীর সূর্যগ্রহণ,অমাবস্যা কিংবা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ত্রাসে দ্বিতীয় যুদ্ধকে উপেক্ষা করে জয়ী হয়েছি!
দ্রাঘিমারেখা ভেদ করে কর্কটক্রান্তিরেখায় শরতের শেষ বিকেল। এ বিকেল নিয়ে আসুক রঙধনু গোধূলি। শরৎ শত বিহঙ্গের আলো জ্বালিয়ে আলোক সজ্জায় সজ্জিত করে রাখে আলোকিত পূর্ণিমারাত্রি।
আর এ আলোকিত রাত্রিতে তুমি হও আগমনী ষোড়শী।
দূর্বাদলে শিশিরবিন্দু আর আগমনী গানে বাবুইপাখির ডাক। বুকের ভেতর আগমনীর সুগন্ধি মেখে দুজন দেখতে যাবো নীলাচলে রাস উৎসবে,কোন এক গোধূলিমাখা শীতসন্ধ্যায়।
সে রাস উৎসবে কত গৌরবর্ণা পর্বতকন্যের রমণীরা পায়ে আলতো, চুলের খোঁপায় রাঙামাটির মহুয়ারফুলে সুশোভিত হয়ে গাইছে গান।
চীনেরপ্রাচীরে উপন্যাসের শেষ পাতায় তোমাকে নিয়ে শরতের শিউলি ঝরা সকাল হতে চাই।
আমি বসে থাকি বনলতা সেনের জারুলফুলের দিনযাপনের অপেক্ষায়।
যাপিত জীবনে আজকাল শরৎ আসলেই তোমার আগমনী গানে কাশফুল ফুটে ওঠে।
তুমি রবীন্দ্রনাথের প্রতিটা প্রভাতী কবিতায় ষোড়শীরূপে আগমনী হয়ে এসো।
পৃথিবীর এ মহাশূন্য জুড়ে আমি তোমার বিশ্বস্ত বিপ্লবী হয়ে থাকতে চাই।
আজও শিউলি ঝরা ভোরে আর আগমনী প্রভাতী গানে, মায়াবিন পশ্চিমা গোধূলি আকাশে ছাতকের উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে তোমায় অনুভব করি।

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ