যে প্রথায় হীনতা আছে, দীনতা আছে তাকে বদলালে সমাজ এগোবে। ভাঙ্গতে না পারলেও, পরিবর্তন তো আনাই যায়! শুদ্ধিকরণ তো করাই যায়!
একটা সময় ছিল যখন বিবাহিত মেয়ে মানেই হররোজ তাকে শাড়ি পরতেই হতো! যত কম বয়সেই বিয়ে হোক না কেনো, বউ বলে কথা! শাড়ি না পরলে কি চলে? শাড়ি সামলাতে পারুক আর না পারুক তবুও তাকে শাড়ি পরতেই হবে!
মূলতঃ বাঙালী মেয়েরা শাড়িতেই সুন্দর! বিয়ে পরবর্তী নতুন বউও শাড়িতেই আকর্ষনীয়া! সে… ঠিক আছে। কিন্তু বিয়ে পরবর্তী হররোজ শাড়িই পরতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা কতোটা সহনীয়? এটা কি চাপিয়ে দেয়া নয়?
অথচ বিবাহিত পুরুষদের বেলায় কিন্তু তেমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই, মেয়েদের বেলায় সেটি বাধ্যবাধকতায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। অবশ্য সময়ের সাথেসাথে এখন সে জায়গাটিতেও পরিবর্তন এসেছে। একই বাড়িতে মেয়ে আর ছেলেবউ বলে এখন আর আলাদা করে কাউকে চিহ্নিত করার উপায নেই, বিবাহিত অবিবাহিত বলেও আলাদা করা যায়না। এমনকি অজপাড়াগাঁয়েও এখন শাড়ি পরার বাধ্যবাধকতা নেই বললেই চলে।
তারও আগে মেয়েরা শিশুকাল অতিক্রম করেই শাড়িতে শরীর পেচাতো। এমনকি ২৫/৩০ বছর আগেও আমি আমার শিশুবয়সে দেখেছি খালারা স্কুল ছেড়ে কলেজে পা রাখা মাত্রই শাড়ি গায়ে জড়িয়েছেন।
নিয়মের মধ্যে আরেকটি ছিলো, বিয়ের সময় বউয়ের নাকে পরিয়ে দেয়া নাকফুল (কারো কারো ক্ষেত্রে হাতের চুড়ি), সারাজীবন পরে থাকতে হবে। যদি খুলে ফেলা হয় তাহলে স্বামীর অমঙ্গল হবে। আদৌ কি তাই?
এখনো অনেক শিক্ষিত মেয়েকে দেখা যায় এই নিয়মগুলোকে আকড়ে থাকতে। কিন্তু যারা বুঝে, যারা এর অসারতা উপলব্দি করে তারা মানে না। যেমন আমার ক্ষেত্রে এমন ঘটেছিলো।
আমার বিয়ের পরদিনই শ্বাশুড়ীমা দেখলেন আমার হাতে চুড়ি নেই, তড়িঘড়ি করে তিনি চুড়িগুলো নিয়ে এসে আমার হাতে পরিয়ে দিয়ে বললেন নতুন বউ; দেখতে খারাপ লাগে। তার পরের দিনও একই ঘটনা। বুঝে গেলেন এই মেয়ের অভ্যাস খারাপ, সে অলংকার গায়ে রাখেনা। তৃতীয়দিন তিনি বলেই বসলেন এতে তোমার স্বামীর অমঙ্গল হবে, শুধুতো আমার ছেলেই নয়; তোমারও স্বামী। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, হাসি পেয়েছিলো আমার! কিন্তু কি করবো? আমি তখন নতুন বউ। বলেছিলাম ঠিক আছে আর খুলবো না। সেদিন কিন্তু উনি আমার উপর তা চাপিয়ে দেননি, বুঝিয়ে বলেছিলেন। বুঝতে পেরেছিলাম এটা উনার সংস্কার, আমার কাছে যা কুসংস্কার। কারন আমার মাকে আমি প্রায় সময়ই চুড়ি ছাড়া থাকতে দেখেছি। প্রিয়জনের অমঙ্গল আশংকায় সংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে শ্বাশুড়ীমা তা মানতেন এবং চাইতেন আমিও মেনে চলি। বরাবরই অলংকার আমার এলার্জি। প্রয়োজনমতো পরে আবার খুলে ফেলাই অভ্যাস। কিন্তু শ্বাশুড়ীমা‘র জীবদ্দশায় কোনদিনই তিনি আমায় চুড়ি ছাড়া দেখেননি। উনি যখনই আমার বাসায় আসতেন, আমার অফিস কলিগরা আমার হাতে চুড়ি পরা দেখে বুঝে যেতো যে তিনি এসেছেন। শুধুমাত্র উনার প্রতি সন্মান আর সন্তানের প্রতি উনার দুর্বলতা মনে রেখেই আমি তা মেনটেন করতাম। তবে শেষের দিকে আমি তাঁকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম যে এটি একটি কুসংস্কার।
আবার আরেকদিকে দেখা যায়, যখন কোন নারীর স্বামী মারা গেলো তখন তাঁকে আরেকরুপে আর্বিভুত হতে হয়েছে। তাঁর বৈধব্যকে ফুটিয়ে তুলতে তাঁকে সাদা শাড়িতে শরীর মুড়াতে হতো। শোকে মূহ্যমান নারীর শরীর থেকে সাথেসাথে সকল প্রকার অলংকার খুলে ফেলা হতো। এখনো এসকল প্রথাগত নিয়ম সমাজে বহু জায়গায় সুযোগ পেলেই চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলে।
আজ থেকে প্রায় ৫/৬ মাস আগে আমার এক সময়ের প্রতিবেশি এক ভদ্রলোক মারা গেলে আমি তাঁর বাসায় যাই সমবেদনা জানাতে। সেখানে বসে আছি এমন সময় এক ভদ্রমহিলা এসে সদ্য স্বামীহারা মহিলাটির মনের অবস্থা কি তা জানার আগেই তিনি প্রশ্ন রেখে বসলেন ‘ওমা, একি! এখনো নাকফুল খোলা হয়নি? একটু পরেই তো লাশ নিয়ে যাবে।’ বলেই তিনি এগিয়ে এলেন তাঁর নাকফুল খুলতে। স্বামীহারা মহিলাটি তখনো শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলো। অন্য মহিলারাও তেমন কিছু বলছিলেন না। অবস্থা বেগতিক দেখে আমিই প্রশ্ন রাখলাম ‘এখনই খুলতে হবে কেনো?’ তিনি আমাকে হাদীসের দোহাই দিলে আমার পাল্টা জবাব হাদীসের কোথাও এমন কিছু আছে বলেতো আমার জানা নেই! আমার কথা শুনে রুমটিতে আগত বাকী মহিলারাও যেনো একটু সরব হয়ে উঠলেন। অবস্থা সুবিধার না দেখে সে মহিলা আর কথা বাড়ালেন না।
আমার মতো অনেকেই জানেন এরকম অনেক নিয়ম সমাজে চালু আছে, যা সমাজের কোন কল্যানে আসে না কিন্তু যে নারীটির উপর তা চাপিয়ে দেয়া হয়, একমাত্র সে নারীটিই এর যন্ত্রনা অনুধাবন করেন। খুব সুকৌশলে তাঁকে জানিয়ে দেয়া হয় তোমার হাসতে মানা, সাজতে মানা, উচ্চস্বরে কথা বলতে মানা। অথচ কেউ মুখ ফুটে বলার চেষ্টা করেন না যে এটি অনিয়ম। জানতে চান না কোন কারনে এটি মানতে হবে?
কোথাও কোথাও যে এক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসেনি, তা নয়। একটু সাহসী, শিক্ষিত যে নারী, সে কিন্তু এখন বিধবা হলেও গয়না ও রঙিন পোশাক পরছে। এই বদলে যাওয়া কিন্তু প্রয়োজনের কারনেই হয়েছে।
আরও আগে মুসলিম বিধবারা জীবদ্দশায় চুলে তেল-চিরুনি দিতে পারতেন না। হিন্দু বিধবাদের মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়া হতো। কখনই আমিষ খেতে দেয়া হতো না।
তারও আগে হিন্দু সমাজে সহমরণ প্রথা প্রচলিত ছিলো। স্বামী মারা গেলে স্বামীর সাথে জীবিত স্ত্রীকেও চিতায় উঠতে হতো। মরে যাওয়া স্বামী আর জীবিত স্ত্রীকে নিয়মের দোহাই দিয়ে একসাথে দাহ করা হতো। রাজা রাম মোহন রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতে এই অমানবিক প্রথার বিলুপ্তি ঘটে।
কিন্তু বিপত্নীক পুরুষের বেলায় কখনোই এমন কোন নিয়মের প্রয়োজন পড়েনি। আগেও পড়তো না, এখনো পড়েনা। চলনে-বলনে আহার গ্রহণে কোন ব্যতিক্রম দরকার হয়না। তাদের শরীরে কোন চিহ্ন বহন করতে হয়না। তাদের দেখে কখনো বুঝার উপায় নেই অবিবাহিত, বিবাহিত না বিপত্নীক। সকল কাল তাদের একই রকম। কিন্তু নারীদের অবিবাহিত, বিবাহিত ও বিধবা এই তিন রুপ তার শরীরে বহন করতে হতো। এখন এই বিশ্বায়নের এই যুগে নারীদের পোষাকে, চলনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আবার এখন সকল বয়সের সকল রূপের নারীই ইচ্ছেমতো পোষাক পরে।
অন্যদিকে অফিস আদালতে একসময় পুরুষের বেলায় লেখা হতো মিস্টার অমুক কিন্তু নারীর বেলায় অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে মিস আর বিবাহিতদের ক্ষেত্রে মিসেস ছিলো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এসেছে। এখন বলা হয় মিজ, যার অবিবাহিত/বিবাহিত বলে আলাদা কোন রুপ নেই।
সমাজে নারীদের উদ্দেশ্যে চাপিয়ে দেয়া প্রথাগুলো ভাঙতে অথবা তাতে পরিবর্তন আনতে গেলে নারীকেই নারীর জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। হ্যাঁ, চাপানোর কাজটিও কিন্তু নারীদের দ্বারাই ঘটে, তার কারন বছরের পর বছর মস্তিষ্কে যে সংস্কার ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, তা যে সংস্কারের নামে কতোটা কুসংস্কার তা বুঝানোর জন্য নারীদেরই এগিয়ে আসা প্রয়োজন। প্রচলিত একটা কথা প্রায়ই লোকমুখে শুনা যায় ’মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু!’ হয়তো বংশ পরম্পরায় কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ নারীরা তাঁদের বাবা, ভাই, সন্তানের মঙ্গল কামনায় উত্তরসুরীদের উপর সংস্কারের নামে কুসংস্কার চাপিয়ে দিতে গিয়েই সম্পর্কের টানাপোড়নে জড়িয়ে যান, যার ফলশশ্রুতিতে কথাটা চলে এসেছে। কিন্তু প্রাচীনকাল থেকে যে নিয়মগুলো জগদ্দল পাথরের মতো নারীর জীবনে প্রথা হিসাবে চেপে বসেছে সে নিয়মগুলো সৃষ্টিতে নারীর ভূমিকা কতোটুকু ছিলো, তাই আজ প্রশ্নসাপেক্ষ!!!
৪০টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এখানে অনেকগুলো সমাজিক অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন খুব ভালো লাগল এখন মেয়েরা অনেক সচেতন।
মারজানা রুবা
হ্যাঁ, অসঙ্গতিই বটে। যে নিয়মগুলো সমাজের উপকারে না এসে বরং কারোকারো জন্য পীড়াদায়ক পরিস্থিতি তৈরী করে সেগুলোতে পরিবর্তন আসা প্রয়োজন।
ব্লগার সজীব
আপনার লেখায় ভাবার মত অনেক কিছু আছে। প্রথাগুলো অবশ্যই ভাঙ্গা যায়, ইচ্ছে করলেই।চাপিয়ে দেয়া প্রথা ভাঙতেই হবে।
মারজানা রুবা
সাধুবাদ জানাই।ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
সমাজ ব্যবস্থা যেখানে পুরুষ তান্ত্রিক সেখানে সমস্যা থেকেই যায়, তবে ক্রমসচেতনতা সবাইকে সাহায্য করে।
মারজানা রুবা
পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা বলেই নিয়মের নামে পীড়াদায়ক প্রথা ভাঙতে নারীদের সহযোগিতায পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
ধন্যবাদ।
শিশির কনা
যে প্রথায় অর্ধেক জনগোষ্ঠিকে দাবিয়ে রাখে তা ভাঙ্গতেই হবে।যুক্তিপুর্ন লেখায় ভালোলাগা জানালাম আপু।
মারজানা রুবা
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
ধন্যবাদ।
বনলতা সেন
আমরা সচেতন হচ্ছি, এটিও এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, অবশ্যই। নিজে সচেতন হউন, অন্যকেও সচেতন হতে সাহায্য করুন। তবে মনে রাখতে হবে, জবরদস্তি বা আক্রমনাত্মক নয় বরং সহনশীলতা বজায় রেখে অনিয়মগুলোকে সরিয়ে দিতে হবে।
সঞ্জয় কুমার
পুরুষতান্ত্রীক সমাজে নারীর প্রতি বৈশম্য থাকবেই । । যত দিন পুরুষ আর নারী নিজেদের মানুষ না ভাবতে পারবে ততদিন এই সব কু প্রথা চলবেই ।
প্রতিটি নারী কে তাঁর প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে অবগত এবং সচেতন থাকতে হবে ।
সবচেয়ে অবাক লাগে বর্তমানে দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাপূর্ণ স্থানে নারীরা আছেন , তবুও দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা কমছে না ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে অবগত ও সচেতন থাকতে হবে। তবে অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে আমি জবরদস্তি নয় বরং যৌক্তিক ভূমিকা গ্রহনের পক্ষে।
দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাপূর্ণ স্থানে নারী থাকলেই বা কি? সমাজের সর্বস্তরে মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এগুলো কোনভাবেই কমবে না। এই পরিবর্তনে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ভূমিকা যত বাড়বে, সমাজ তত সুন্দর হবে। মুলকথা সচেতন লোকের সংখ্যা এখন লঘুতে আছে। সচেতন লোক যখন সংখ্যাগুরুতে গিয়ে ঠেকবে তখন ক্ষমতাপূর্ণ স্থানে পুরুষ থাকলেও কোনরুপ সহিংসতা নারীকে ছোঁবে না। কে করবে সহিংসতা? সংখ্যালঘু তো তখন কোনরুপ অনিয়ম করতেই সাহস পাবে না।
শুন্য শুন্যালয়
প্রথা আর সংস্কারের রূপ দেখলাম অনেক আপনার মত আমিও অন্যের বাড়িতে গিয়ে। শিক্ষাও এই প্রথা ভাঙ্গতে পারেনা দেখে একটু অবাকই লাগে। পরিবর্তন আসবেই, যদিও গতিটা বড়ই ধীর। তবু আশা থাকছেই। খুব ভালো একটা পোস্ট।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। ভেঙেছে তো অনেক, তাইনা?
এজন্য আমাদের পূর্বসূরীদের অনেক গঞ্জনাও সইতে হয়েছে। আমাদেরও সহনশীলতা বজায় রেখেই এগুতে হবে।
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
মামুন
কিন্তু বিপত্নীক পুরুষের বেলায় কখনোই এমন কোন নিয়মের প্রয়োজন পড়েনি। আগেও পড়তো না, এখনো পড়েনা। চলনে-বলনে আহার গ্রহণে কোন ব্যতিক্রম দরকার হয়না। তাদের শরীরে কোন চিহ্ন বহন করতে হয়না। তাদের দেখে কখনো বুঝার উপায় নেই অবিবাহিত, বিবাহিত না বিপত্নীক। সকল কাল তাদের একই রকম। কিন্তু নারীদের অবিবাহিত, বিবাহিত ও বিধবা এই তিন রুপ তার শরীরে বহন করতে হতো।- খুব সুন্দর পোষ্টটিতে এই বৈষম্যের কথা বেশী হৃদয়ে দাগ কেটে গেলো। আসলে আমাদের সমাজে আমরা মুখে যতই সমান অধিকারের কথা বলি না কেন, হৃদয়ে নারীকে সবসময়েই অনেক নিচে স্থান দিয়ে রাখি। একজন পুরুষ হিসবে আমি লজ্জিত। ;(
মারজানা ফেরদৌস রুবা
লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই ভাই, নর এবং নারী দু’য়ে মিলেই বাড়ি (জগত-সংসার)। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা হলেও এখন সমাজ পরিবর্তনের সাথেসাথে পুরুষদের মননেও অনেক পরিবর্তন এসেছে, আগে পুরুষরা স্ত্রী কে ‘স্ত্রী’ (সেবাদাসী) হিসাবে দেখতো আর মেয়েরাও মুখবুঝে দাসত্ব বরণ করে নিতো। কিন্তু এখন স্ত্রী নয় সংগীনী হিসাবেই দেখে।
অবশ্যই সমাজে পরিবর্তন আসবে ,এবং তা আসবে নর এবং নারী দু’য়ের হাত ধরেই।
লীলাবতী
আমরা শুধু শিক্ষার সনদ সংগ্রহ করি।কিন্তু আসলে শিক্ষিত হতে পারিনি কেউ।অনেক শিক্ষিত পরিবারেই এই প্রথা যত্ন সহকারে লালন পালন করা হয়।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
লীলাবতী, বছরের পর বছর বংশ পরম্পরায় লালিত প্রথায শুদ্ধিকরন বা পরিবর্তন আনতে সময়তো লাগবেই। শিক্ষার আলো প্রসারিত হচ্ছে বলেই না পরিবর্তনগুলো আসছে।
এই ধরুন না, আমরা যে সমস্যাগুলো (অযৌক্তিক নিয়মের বেড়াজাল) মোকাবেলা করছি, নিশ্চয় আমাদের উত্তরসুরীদের বেলায় তা চাপিয়ে দেবো না।
যদি দেই তাহলে বলতে হবে দ্বৈতনীতি অবলম্বন।একমাত্র তখনই এই কথাটি এসে যাবে “মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু”। তাই শিক্ষার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধও জাগিয়ে তুলতে হবে। প্রথামাত্রই নয়, অযৌক্তিক প্রথাগুলোর বিপক্ষে যৌক্তিক ব্যাখ্যা ফুটিযে তুলতে হবে।
লীলাবতী
ঠিক বলেছেন আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
-{@
মিথুন
পরিবর্তন হচ্ছেই, প্রতিদিন হচ্ছে, প্রতি নারীর মধ্যেই হচ্ছে। যেকোনো কিছুর প্রতিফলন চোখে পড়তে একটু সময় লাগে। আপু যেমন বললো, আগে সতীদাহ হতো, বিবাহিত মেয়েরা শাড়ি পরতো, এমনই আরো অনেক। অনেক আশা জমিয়ে রেখেছি আপু। নারীদের একটা যোগ্য স্থান, সব বিপরীত প্রথা ভেঙে যাবেই একদিন, যাচ্ছেও। এমন পোস্টই পড়তে চাই—————
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, হচ্ছে এবং আরো হবে। সহনশীলতা বজায় রেখে পরিবর্তন আনতে হবে।
মরুভূমির জলদস্যু
## কিন্তু বিয়ে পরবর্তী হররোজ শাড়িই পরতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা কতোটা সহনীয়? এটা কি চাপিযে দেয়া নয়? ##
এখনতো এমনটা খুব একটা দেখা যায়না, গ্রামের দিকেও এটা তেমন মানা হয় না আর। ;?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সময়ের সাথেসাথে এখন সে জায়গাটিতেও পরিবর্তন এসেছে। একই বাড়িতে মেয়ে আর ছেলেবউ বলে এখন আর আলাদা করে কাউকে চিহ্নিত করার উপায নেই, বিবাহিত অবিবাহিত বলেও আলাদা করা যায়না। এমনকি অজপাড়াগাঁয়েও এখন শাড়ি পরার বাধ্যবাধকতা নেই বললেই চলে।
ধন্যবাদ।
মেহেরী তাজ
অত্যন্ত গুছিয়ে লিখেছেন আপু।কিছু প্রথা পরিবর্তন,ত্যাগ করতেই হবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ। পরিবর্তনের প্রয়োজনে সকলকেই পজিটিভ ভুমিকা রাখতে হবে।
লীলাবতী
পোষ্ট ষ্টিকি করার জন্য ব্লগ টিমকে ধন্যবাদ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমি সন্মানিতবোধ করছি ও ব্লগ টিমের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
শুন্য শুন্যালয়
প্রথা পরিবর্তনের পক্ষে সোনেলার উৎসাহ প্রশংসনীয়। ধন্যবাদ ব্লগটিম পোস্ট টি স্টিকি করবার জন্য।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রথা পরিবর্তনের পক্ষে সোনেলার উৎসাহ অবশ্যই প্রশংসনীয়। ব্লগ টিমকে ধন্যবাদ।
নুসরাত মৌরিন
দারুন লেখা। (y)
সমাজের এইসব অযাচিত প্রথা পরিবর্তন হবেই।
যেসব প্রথায় কোন কল্যান নেই তা সময়ের স্রোতে- আমাদের সচেতনতায় পরিবর্তিত হতে বাধ্য।
প্রয়োজন শুধু ধারাটাকে এগিয়ে নেয়ার।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ আপনাকেও।
পরিবর্তনের প্রয়োজনে সচেতনতা ও সহনশীলতার বিকল্প কিছু নেই।
বনলতা সেন
স্টিকি দেখে অনেক ভাল লাগল।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমি সন্মানিতবোধ করছি।
ধন্যবাদ ব্লগ টিমকে, আর যারা আমার এই লিখাটি মনযোগ সহকারে পড়েছেন তাঁদেরকে।
জিসান শা ইকরাম
একটি ভালো বিষয় নিয়ে লিখলেন।
সমস্যা,কুফল,উদহারন সহকারে।
প্রথা ভাঙতে না পারি, পরিবর্তন তো করতেই পারি- নুতন শুনলাম কথাটা।
এটি আসলে খুব কঠিন না।
শ্রদ্ধা আপনার প্রতি,এমন চিন্তা ভাবনার জন্য।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শ্রদ্ধা আপনার প্রতিও এবং ব্লগের সকল ভাইবোনদের প্রতি।
শুধুমাত্র প্রথা রক্ষার নামে যেসকল অযৌক্তিক নিয়ম চাপিয়ে দিয়ে নারী জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলা হয়, সেগুলো পরিবর্তনে নারীপুরূষ নির্বিশেষে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত।
প্রহেলিকা
ভাঙ্গতে না পারলেও, পরিবর্তন তো আনাই যায়!
চমত্কার বলেছেন, সমাজের এই নিয়মগুলো সমাজকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই এই পরিবর্তন জরুরী।
এমন পোষ্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
সাইদ মিলটন
ধর্মের এবং লোকাচারের নামে চাপিয়ে দেয়া প্রথা গুলো অধিকাংশই অমানবিক। তবে আশার কথা খুব ধীর হলেও পরিবর্তন আসছে।
অফটপিক – আমার যে শাড়ি পরা রমনীদেরই ভালোলাগে , এখন আমি কি করতাম 🙁 আমার বৌরে তো হান্ড্রেড পারসেন্ট শাড়ি পরতে হবে , এখন গালি দিলে গালি খামু কি আর করা 🙁
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাহাহা। ভালোলাগা আর চাপিয়ে দেয়া যে এক নয় ভাই। আপনি ভালোবেসে আপনার বৌয়ের কাছে কিছু চাইতেই পারেন, ভালোবাসার বিনিময়ে বৌ নিশ্চয় তার স্বামীর আবদার রক্ষা করবে। চোখ রাঙিয়ে তো আর চাপিয়ে দিবেন না। ধন্যবাদ।
ভাই, বিয়ে করছেন কবে?