প্রতিবেশি //

বন্যা লিপি ২৬ আগস্ট ২০২০, বুধবার, ০১:০৭:৪৫পূর্বাহ্ন অণুগল্প ৩০ মন্তব্য

উত্তরা থেকে ফিরেছে নওরিন অফিস শেষে। বাসায় চারবছরের কন্যা আর স্বামী। ৩০ মিনিট ধরে কলিংবেল বাজিয়েই যাচ্ছে। কোনো সাড়া নেই। মোবাইলে রিং হচ্ছে বিরতিহীন ধরছে না। লাগোয়া ফ্লাট বাসিন্দার আর সহ্য হলোনা। দরজা খুলে জানতে চাইলো ব্যাপারটা কি? লাগোয়া মানে লাগোয়া.....!দুই ফ্লাটের দূরত্ব আধাহাত। কেউ কারো পরিচিত নয়। অল্প বয়সী মেয়েটার চোখ লাল। মাস্ক পড়া মুখটা দেখা যাচ্ছে না।

জোড় ধাক্কা একের পর এক।  কোনো সাড়া নেই। বাইরে গেলো নাকি অসুস্থ্য  হলো কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। দাড়োয়ান, সেকেন্ডফ্লোর থেকে আত্মীয়া উঠে এসেছেন।নওরিন সমানে হিচকি দিয়ে কেঁদে যাচ্ছে। ডুপ্লিকেট চাবিও নেই। চাবি থাকলেও কি হবে?  যদি ভেতরে স্বামী বাচ্চা থাকেও? কিন্তু এত ধাক্কা ধাক্কির পরেও কোনো সাড়া নেই কেন? কুম্ভকর্ণের ঘুম হলেও এতক্ষনে ভেঙে যাবার কথা! আশংকা বাড়তেই থাকে। আশংকা ছড়িয়ে পড়ে উপস্থিত সবার মধ্যে।

প্রায় পৌণে একঘন্টা পর মোবাইলের সাড়া পাওয়া গেলো...... " আপনি কই? ৩০/৪০ মিনিট ধরে দরজা ধাক্কাচ্ছি!

- স্বামী সাহেবের উতকন্ঠিত কন্ঠ-" কি হইছে? আমি তো ঘরে!

নওরিন: আগে দরজা খোলেন।

দরজা খুললো, -- জানে পানি এলো নওরিনের।-স্বামী বেচারা হতভম্ব!  এত কাণ্ড?--" আমি তো বাথরুমে ছিলাম গোসল করছিলাম আর সামারা'কে গোসল করাচ্ছিলাম.....!! চারবছরের ফুটফুটে সামারা ভেজা চুলে মাকে এসে জড়িয়ে ধরলো কাঁদতে কাঁদতে।

হাত বাড়ালাম কোলে নেবার জন্য, ছুট দিলো আমার ঘরের ভেতরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে। সে লিপস্টিক ছোঁ মেরে নিয়ে ঠোঁটে লাগাতে শুরু করলো। কিছুতেই নওরিন পারছে না ঘরে নিতে।

 

প্রায় দেড় বছর হয়ে এলো এই বিল্ডিংএ আছি পাশের ঘরে কে কারা থাকে জানিইনা। অথচ প্রতিবেশির চেয়ে বড় আত্মিয় আর কে আছে এই নাগরিক শহরে? মেয়েটাকে বললাম,এরপর যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে বলতে দ্বিধা কোরনা...

 

 

0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ