ধর্মান্ধ ও শান্তির ধর্ম

মনির হোসেন মমি ২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার, ১০:৩৪:১৬অপরাহ্ন সমসাময়িক ১৭ মন্তব্য

মসজিদে আযানের ধ্বনি।আজ শুক্রবার।ধর্মীও মুসলমানদের একটি পবিত্র জুম্মার দিন।মসজিদে বাড়ছে মুসল্লিদের আগমন।ঠিক সেই সময় হঠাৎ এলোপাতারি গুলি।উদ্দ্যেশ্য মসজিদে প্রবেশকৃত সকল মুসল্লিদের হত্যা করে স্বর্গ লাভ করা।এই যে ধর্মান্ধতার বিষ পুরো বিশ্বে মানবতা,অসাম্প্রদায়ীকতাকে দুরে ফেলে দিচ্ছে তাতে পক্ষান্তরে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে।ভাবতে ভুলে গেছেন সেও একজন মানুষ।আর সবার মতন তাকেও একদিন এ পৃথিবী ছাড়তে হবে।সুতরাং সামান্য এ জ্ঞান বা বুঝটুকু তার মাথায় নেই।না থাকারই কথা কারন তার ব্রেনে ঢুকে আছে বা ঢুকিয়ে দিয়েছে “মারলে” মরনের পর স্বর্গের আশা,বেচে থাকলে রাজা বাদশা।একদল ধর্ম ব্যাবসায়ী এ সব নিয়ে খেলছেন-অতি গোপনে তৈরী করছেন ধর্মান্ধতার দল-বল।এতো দিন এ সব হামলা ভাবা হত এক পেশে কেবলি মুসলমানরাই জঙ্গি এবার প্রমানীত হল আসলে জঙ্গি সব ধর্মেই আছে।ধর্মীও উদ্মাদ সব দেশে সব জাতিতেই আছে।তবে সবচেয়ে বেশী হত্যা,নির্যাতীত হচ্ছে মুসলিম জাতিগোষ্ঠি যেমনটি হচ্ছে মায়ানমার,চীন,আফগানিস্থান,ফিলিপাইন সহ প্রায় প্রতিটি দেশে।নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার পর বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হল।বুঝতে পারল সন্ত্রাসীদের কোন দেশ নেই,নেই ধর্ম।

এ রকম প্রকাশ্যে লাইভে এসে হামলার নজির আর কোন কালেই ছিলো না।বিশ্ব মোড়ল উগ্রপ্রন্থী ট্রাম্প যখন হতে ক্ষমতায় এলো তখন হতেই শুরু হল প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে ধর্মালয়ে হামলা।এর আগে যারাই বিশ্ব মোড়ল ছিলেন তারাও যে মুসলিম ধমনে নামেননি তা কিন্তু নয়।তারাও মুসলিম দমনে তৎপর থেকেছেন-কখনো মালালা সৃষ্টি করে কখনো ভাই ভাইয়ে দ্বন্দে প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে সাদ্দাম গাদ্দাফীদের উৎখাত করে।সর্বশেষ লাদেন সৃষ্টি করে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে বিশ্ব মুসলমানদের সন্ত্রাসী বানিয়ে।বিশ্বের মুসলমানদের সন্ত্রাসী খেতাব দিতে মুসলমানদের কিছুটা সহযোগিতাতো ছিলই যা বিলাসীতার রঙ্গীন জলে ভাসিয়ে দিতেন।মুসলিম সম্রাজ্যবাদেরা ভুলে গেলে চলবে না এহেন পরিস্থিতি তাদের বিলুপ্তির পথ সুগম করবে যদি না মুসলিম শাসক ও শাসিতের সম্পর্ক সু সম্পর্ক, ইসলামী বিশ্বের পারস্পরিক সম্পর্ক, ইসলামী চিন্তাবিদদের দায়দায়িত্ব, ওআইসির কার্যকারিতা,মুসলিম বিশ্বের অর্থনৈতিক বাস্তবতার উন্নতি, মুসলিম বিশ্বের সামরিক সামর্থ্য সম্পর্ন হয়।

এবার আসি নিউজিল্যান্ড ক্রাইস্টচার্জ মসজিদে হামলার কিছুটা অমানবিক ও সাহসীকতার উদাহর।পৃথিবীর শান্তি প্রিয় দেশগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ড একটি।এখানে হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠার কারন কী।কারন তেমন কিছুই না ধর্মান্ধতাই হল এর মুল কারন।এক রিপোর্টে আছে ১৯৭০ সালে নিউজিল্যান্ডের মুসলিম জনসংখ্যা ছিলো মাত্র ১৫০ জন। আর বর্তমানে তা খুব দ্রুত বেড়ে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় দেড় লাখের উপরে। এ ছাড়াও বিশ্বে যে হারে মুসলিম সংখ্যা বাড়ছে তা রীতিমত ধর্মান্ধদের ভাবিয়ে তুলছে।আগামী কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়াও হবে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠতা যে রাশিয়ার আনাচে কানাচে ছিলো ইহুদী জনগোষ্ঠি সেই রাশিয়ার অবস্থা যদি এমন হয় তবে ধর্মান্ধতারা চিন্তায় পড়বে এটাই স্বাভাবিক কারন ওরাতো মানুষকে মানুষ মনে করে না মনে প্রানে ভাবে কেমনে স্বর্গে যাওয়া যায়।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে,হামলাকারী ব্রেনটনের তার বিভিন্ন অনলাইনে আগেই ঘোষনা দিয়েছেন এবং এক দিন আগেই ব্রেনটন মুসলিমদের হত্যার প্রতিজ্ঞা করে।এমনকি হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রেনটনের অনুসারীরা তার (উদ্যোগের) ভূয়ষী প্রশংসা করেছে।সংবাদ মাধ্যমটি আরো বলছে,কুখ্যাত ডান পন্থী (উগ্রপন্থী) ব্লগিং ওয়েবসাইট ৮চ্যান-এ বৃহস্পতিবার টারান্ট (মনে করা হচ্ছে) অন্য পরিচয়ে লেখে,‘আমি ইনভেডারদের (আক্রমণকারী) বিরুদ্ধে হামলা চালাব এবং ফেসবুকের মাধ্যমে সেই হামলা সরাসরি প্রচার করব।’
সেইসঙ্গে একটি লিংকও শেয়ার করে ব্রেনটন যাতে তার অনুসারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে হামলার ভয়বহতা দেখতে পারেন এবং বলা হয়, ‘এই সময়ে তোমরা এই লিংকে ঢুকলে দেখবে আমি লাইভে (সরাসরি প্রচার) থাকব।’

স্বর্গের ভাইকিং ভার্সনের প্রতি ইঙ্গিত করে টারান্ট বলে, ‘হামলায় যদি আমি বেঁচে না থাকি, তাহলে বিদায়, স্রষ্টার অনুগ্রহে ভালহাল্লায় (স্বর্গ) তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে।’

ডেইলি মেইল বলছে,হামলা আগে ব্রেনটন তার অস্ত্র শস্ত্র ও গুলি ছবিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন।কিন্তু পুলিশের সন্ত্রাসী তালিকায় নাম না থাকায় তাকে আটক করা হয়নি।

ব্রিটিশ গণ মাধ্যমটি বলছেন,টারান্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার ইশতেহার পড়তেও অনুসারীদের আহ্বান জানায় যাতে তারা তাকে মনে রাখে।খবরে বলা হয়েছে,পোস্টটি যদিও বেনামে লেখা ছিল,কিন্তু টারান্টের অনুসারীদের মাধ্যমে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঠিক তাই হয়েছিল-হামলার সময় সে লাইভে ছিলো এবং এমন জগণ্য কুকাম মানুষ হত্যার লাইভে কিছু অমানুষও সাথে ভূয়সী প্রশংসা করে উৎসাহ দিতে লাগল।

এটা কোন সন্ত্রাসী হত্যা নয় এটা হিংসাত্বক ধর্মীও প্রতিশোধ অথচ তার অষ্ট্রেলিয়ান প্রেসিডেন্ট এটাকে ইহুদী জঙ্গি না বলে শুধু সন্ত্রাসী আখ্যা দিলেন।অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন,এটা অবশ্যই সন্ত্রাসী হামলা ,ডান পন্থী এই সন্ত্রাসীর হামলায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।এখানে অবশ্য অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অনেকটা নিজের দোষ পরের কাধে চড়ালেন তিনি ফেইসবুক টুইটার ইউটিউব সহ যে সব মিডিয়া লাইভ চালিয়েছেন তাদেরকে দোষ দিলেন অবশ্য আমিও বলবো তারাও অধিকাংশে এর দায়ভার এড়াতে পারেন না কারন তারা এতো কোটি কোটি ডলারে ব্যাবসা করেন এ রকম মানুষ হত্যার লাইভ কেন অনুমতি দিলেন যা ঘৃণীত।

এবার কিছুটা জানতে চেষ্টা করব ইসলাম বিদ্বেষী জঙ্গি টারান্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার ইশতাহারে কী বলেছেন।
"এই হামলা করা হয়েছে তাদের বুঝানোর জন্য যে,তারা কখনোই এখানে শান্তিতে থাকতে পারবে না,কেনোনা বাইরের কেউ এখানে এসে অনুপ্রবেশ করে তারা আমাদের জায়গা কখনোই দখল করতে পারবে না। এই হামলা দারা আমি বুঝিয়ে দিলাম যে, একজন যদি শ্বেতাঙ্গ জীবিত থাকা পর্যন্ত আমাদের ভূমিতে তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না।

হামলাকারী ট্যারেন্ট বলেছেন যে, এটা বিবেচনা করলে একটা সন্ত্রাসী হামলা, কিন্তু এটা আমি মনে করি যে,দখলদারদের বিরুদ্ধে এটা আমার যুদ্ধ। হামলাকারীর ব্রেনওয়াস করা হয়েছে যে, তাকে বোঝানো হয়েছে ওইসব মুসলিমরা দখলদারা একসময় এই ভূখন্ড দখল করে তাদেরকে তাড়িয়ে দিবে।

তার এ হামলার সবচেয়ে বেশী আগ্রহ জাগিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসী বিশেষ করে মুসলিম অভিবাসীদের প্রতি ইঙ্গিত তাকে এ হামলায় উৎসাহিত করে।হামলাকারী আরো মনে করে তিনি মুসলমান এবং ধর্মান্তরিত লোকদের ঘৃণা করেন।এ ছাড়াও"ক্যানডিস ওইনস " নামের এক খ্রিস্টানের কাছ থেকেও এ হামলার উৎসাহ বাণী পায়।এছাড়াও মূলত হামলা করার উৎসাহ পায় “ব্রেইভি” নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে।এই ব্রেইভিই নরওয়েতে প্রায় ৭৭ জনকে হত্যা করেছিলো।

মুল কথা হল হামলাকারী এ হামলায় দায়ী একা নয় দায়ী আরো অনেকে বিশেষ করে উগ্র খ্রীষ্টানপন্থীরা তার মগজ ধুলাই এমন ভাবে করেছেন যে যাতে তিনি সহ তার মতন আরো অনেক ধর্মান্ধ খ্রীষ্টান যেন শুধু মাত্র বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যার দ্রুত বেড়ে যাওয়া, খ্রীষ্টান রাষ্ট্রগুলোতে মুসলিম সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় খ্রীষ্টান ধর্ম বিলুপ্তির কথা ভেবে খ্রীষ্টান ধর্মকে টিকিয়ে রাখতে এ হামলা চালানো হয় যা ভবিষৎ আরো হবার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়ে গেল।

এ হামলাটি আমাদের দেশে সব চেয়ে বেশী ফোকাস হওয়ার কারন হল আমাদের প্রিয় ক্রীকেটারদের অক্ষত অবস্থান।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তিনি নিজ হাতে গরীব বাংলাদেশের অমুল্য সম্পদগুলোকে বাচালেন।বিভিন্ন অনলাইনের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেল যদি ৫ মিনিট সংবাদ সম্মেলনটি দেরী না হত আর সেই ৫ মিনিট আগেই যদি মসজিদে ঢুকে যেত তারা তবে সর্বনাশ হয়ে যেত।আল্লাহর রহমত ছিলো যে,তারা মসজিদে ঢুকতে গাড়ি থেকে নামার পর পর আল্লাহর প্রেরিত দূত এর ন্যায় হঠাৎ এক নারী এসে তামিমদের উদ্দেশ্যে করে বলতে থাকেন,মসজিদের ভেতরে গোলাগুলি হচ্ছে যাবেন না। তারপরও বাংলাদেশের তিনজন এর মৃত্যু হয়েছে।

মুসলিম ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এবং রাষ্ট্র নায়কদের উৎখাতে ও হামলার কারন বা সাহস পাওয়ার মাঝে বর্তমান মুসলিম জাহান অনেকটা দায়ী।ভাবতে পারেন এ আবার কেমন কথা!নিজের মৃত্যুর জন্য নিজেরাই দায়ী হয় কি করে!তবে আমার সীমিত জ্ঞানে একটু বলার চেষ্টা করছি।এ সব তথ্য উপাদি বিভিন্ন অনলাইন সাইট ও সচেতন হিসাবে জানতে পেরেছি।

লক্ষ্য করা যয় পৃথিবীতে ক্ষমতা বলেন আর অর্থ বিত্ত বলেন সবচেয়ে বেশী এগিয়ে আছে ইহুদী বা খ্রীষ্টান জনগোষ্টি অবশ্য এমন পজিসনে আসতে তাদেরকে করতে হয়েছে প্রচুর পরিশ্রম সততা আর জ্ঞানার্জনের বদলতে যা আমরা মুসলিমরা পুরোপুরি বিপরীত মুখী যা-ই(প্রাকৃতিক সম্পদ) আছে তাও লুচ্চামি আর আরাম আয়েশে বিলীন করে দিচ্ছি।পবিত্র কোরানের জ্ঞানকে অবহেলা করে নিজেদের করছি জ্ঞানশুণ্য যার কারনে বলিষ্ট নেতৃত্ব শুণ্যতায় গবীরি হালে মিচকিন হয়ে কোন মতন ফুলবলের মতন লাথি খেয়ে বেচে আছি।
অন্য দিকে ইউরোপ তথা অন্য ধর্মের লোকেরা সারা জীবন পৃথিবীতে খাওয়া এবং মেসি রোনান্ডো ম্যারাডোনা মতন ফুটবলাদের নিয়ে ফ্রি জি নেট ছাড়া তারা কিছুই বুঝে না।অন্য দিকে আফগানিস্থান- ইয়েমেনে মুসলিমরা গাছের পাতা খেয়ে জীবন যাপন করছে।বিভিন্ন মুসলিম রাষ্টগুলোতে অনবরত ইসলাম ধর্ম ব্যাবসায়ী মুসলিম জঙ্গি হামলায় মুসলমানরাই মৃত্যুর ফাদেঁ পতিত হচ্ছে।
অনেকে ভাবতে পারেন তাহলে অন্য ধর্মের লোকেরা কেন এতো ধর্মান্তরীত হচ্ছে?

চলবে।

তথ্য ও ছবি বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ