গত পর্বে শেষ করেছিলাম-অন্যান্য ধর্মের লোকে কেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন।তার একটাই উত্তর আর তা হল পবিত্র কোরান শরীফ এর যাদু।চিকিৎসা শাস্ত্রের বিখ্যাত বই লেখক স্যার ডেভিডসন তার বইতে তিনি নিজেই লিখেছেন একটা বই নিজে লিখে তা না দেখে তিনি নিজেই হুবহ পড়তে পারেন না,অথচ পবিত্র কোরআনের মত জটিল একটা বই অহরহ ৭ বছরের বাচ্চার মস্তিষ্কেও কি ভাবে ডাউনলোড করা থাকে!অবাক হবারই কথা এমন নজির আর কোন ধর্মগ্রন্থের বেলায় ঘটতে দেখিনি।

আমেরিকা লন্ডন অষ্ট্রেলিয়ার খুব জনপ্রিয় টিভি “পিস টিভি”যা এখন আমাদের দেশ সহ বিশ্বের অনেকগুলো দেশেই নিষিদ্ধ।তার একমাত্র কারন হল-ইসলাম প্রচার যার কারনে অসংখ্য অন্য ধর্মের লোকেরা মুসলমান হওয়ায় হিড়িকঁ পড়ে যায়।এর মুলে ছিলেন-ড. জাকির নায়েক।মুসলিম জাহানে এই বিজ্ঞ লোকটিকে চিনেন না এমন লোক কম।তিনি নিজের ধর্ম পবিত্র কোরান ছাড়াও গীতা বাইবেল বেদ গ্রহন্থ ছাড়াও অন্যান্য ধর্মগ্রহন্থের পৃষ্টা সংখ্যা থেকে শুরু করে কোন পারায় কোন বাণী লিখা তা মুখস্থ বলে দিতে পারেন।সেই পিস টিভিতে এমন একটি প্রোগ্রাম করতেন যে অডিটরে বিভিন্ন ধর্মের লোকদের সমাবেশ ঘটত।সব ধর্ম সম্পর্কিত জটিল সব প্রশ্নের উত্তর দিতেন অত্যান্ত সাবলিল ভাবে বিভিন্ন ধর্মীও কিতাবের আলোকে।তার বক্তব্যে প্রমাণ করে দিতেন যে একমাত্র পবিত্র কোরান হল জীবন বিধানের সঠিক কিতাব।

এমনি একটি অনুষ্ঠানে ডাঃ জাকির নায়েক তার পিস টিভির মাধ্যমে ইউরোপে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে লাদেন সন্ত্রাসী নয়,ওসামা বিন লাদেনকে হাইলাইট করে মুসলিমদের সন্ত্রাসী বা জঙ্গি ট্যাগ দেয়া হয়েছে দেশ শাসন করা ও বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করা।

আমেরিকার শিকাগো শহরে ডা: জাকির স্যার এবং ডা: উইলিয়াম ক্যম্বেলের বক্তব্য অনেকেই হয়তো শুনেছেন,সেই অনুষ্ঠানে দেখানো হয়েছে মুসলিম কি এবং খ্রিস্টান কি! ঠিক সেই সময়ে এক আমেরিকান দর্শক জিজ্ঞাসা করেছিলেন মিঃ উইলিমকে- হে উইলিয়াম ক্যাম্বেল স্যার,আপনি খ্রিস্টান ধর্ম ভালোবাসেন,আপনি আমেরিকার ইশ্বর অথচ আপনি বাইবেল সম্পর্কে কিছুই জানেন না অন্য দিকে ডাঃ জাকির একজন মুসলিম হয়েও তিনি পবিত্র কোরআন তো তার মুখস্তই বরং বেদ গীতা বাইবেল ও মুখস্ত।বাইবেল থেকে ডাঃ জাকির হাজারটা ভুল ধরলেন অথচ কোরআন থেকে আপনি একটি ভুলও ধরাতে পারলেন না।

সর্বো প্রথম বর্তমান সময়ে আলোচীত নিউজিল্যান্ড মসজিদে জঙ্গি টারান্টের জন্মভুমি অষ্ট্রেলিয়ার তখনকার স্বরাষ্টমন্ত্রীর সামনে ডা: জাকির নায়েক বলেছিলেন ওসামা বিন লাদেন সন্ত্রাসী ছিলেন না,বরং বুশ নিজেই টুইন টাওয়ারে হামলা করেছেন।এই ডা: জাকির নায়েক সেসময় পুরো ইউরোপের চেহারা বদলে দিয়েছিলেন তার মেধা যুক্তি ও প্রমানের ভিত্তিতে।তখনই “পিস টিভি”নিষিদ্ধ করেন অষ্ট্রেলিয়ায়।

Adherents.com এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে মোট ধর্মের সংখ্যা প্রায় ৪৩০০ টি।এর মধ্যে খ্রীস্টান ধর্মের সংখ্যা এগিয়ে।২০১৩ সনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীর প্রায় সাত'শ কোটি মানুষের মধ্যে খ্রীস্টান ধর্ম অনুসারী ৩৩% সেই হিসাব মোতাবেক সারা বিশ্বে খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের সংখ্যা প্রায় ২০০ কোটি।অন্য দিকে মুসলমান তথা ইসলাম ধর্মের অনুসারী হচ্ছেন ২১ শতাংশ যা পৃথিবীতে দ্রুত সম্প্রসারমান ধর্মের মধ্যে ইসলাম ধর্ম এক নম্বরে।ধারনা করা হচ্ছে,অদূর ভবিষ্যতে ইসলাম ধর্ম পৃথিবীতে প্রথম স্থানে উঠে আসবে।
তৃতীয় অবস্থানে আছে হিন্দু ধর্ম। শতাংশের হিসাবে হিন্দু ধর্ম অনুসারীরা পৃথিবীতে ১৪%।এর অনুসারীর সংখ্যা হল প্রায় ৯০ কোটি।এছাড়া ও পৃথিবীতে চীনা ঐতিহ্যগত ধর্মের অনুসারী ৩৯ কোটি ৪০ লাখ,বৌদ্ধ ধর্মালম্বী ৩৭ কোটি ৬০ লাখ এবং আদিম আদিবাসী ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি।এ ছাড়া নাস্তিক,অধর্মীয় বা ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষের সংখ্যা পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ১১০ কোটি। শতাংশ হিসাবে প্রায় ১৬ শতাংশ মানুষ।
এত সব ধর্মের মাঝে ইসলাম ধর্ম যে একটি শান্তি,অসাম্প্রদায়ীকতায় বিশ্বাসী এবং বর্ণবাদহীন ধর্ম তা নবীজি(সঃ)এর বিদায় হজ্ব এর ভাষন পর্যালোচনা করলেই বুঝা যায়-জেনে নেই বিদায় হজ্বে এর ভাষনের একটি অংশ।
বিদায় হজের ভাষণ শুধু মুসলমান নয় খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধ যে কোন ধর্মের মানুষ যদি এই ভাষণ শুনে থাকেন তার হৃদয়
গলতে বাধ্য,বিদায় হজের ভাষণের দ্বিতীয় পয়েন্টে উল্লেখ আছে যে "হে মানব জাতি! মনে রেখ তোমাদের আল্লাহ এক, তার কোনো শরিক নেই,তোমাদের আদি পিতা এক,কোনো অনারবের উপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব
নেই।তেমনি কোনো সাদার উপর কোনো কালোর শ্রেষ্ঠত্ব নেই।
এই একটি মাত্র কথা দিয়েই বর্ণবাদ কে রিজেক্ট করে দিয়েছেন ইসলাম ধর্মের প্রিয় নবী (সাঃ) কেবলমাত্র আল্লাহ ভীতিই শ্রেষ্ঠত্বের মাপ কাঠি।
এই বিদায় হজ্বের ভাষনকে যদি মুসলিম জাহান ইউরোপ সহ বিশ্বের সর্বোত্র ঠিক মন পৌছে দিতে পারত আর বুঝাতে সক্ষম হত উগ্র চরমপন্থীদের তবে পৃথিবীর মানুষ ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বুঝতে পারত-এটাই একমাত্র শান্তির ধর্ম-যেখানে আমরা মুসলিম,আমাদের কাছে মানব জাতির কোন সাদা বা কালোর প্রকার ভেদ নেই।আমাদের কাছে কে শ্বেতাঙ্গ কে কৃষ্ণাঙ্গ তার কোন
ভাগ নেই,আমাদের কাছে কে প্রধানমন্ত্রী কে জনগণ তার ও কোন ভেদাভেদ নেই।আমরা মানুষ এক স্রষ্টার সৃষ্টির সেরা জীব।

0 Shares

১২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ