পথের পাশে ঘুমন্ত শিশু,
শক্ত খোলসে ঝিনুকের বুকে, মুক্তার মতো। হিরা খণ্ডের মতো ঝিলিক না দিলেও উজ্জল চকচকে, এক মুক্তা মুখ।
এ শিশুর জন্ম এক ভাগ্য বিতারিত নারীর শোকের বাসরে, জনন প্রক্রিয়ার এক অনিবার্য পরিনতিতে, জৈবিক তাড়নায় জন্ম হয়েছে এ শিশুর, জনকের পুত্রার্থে নয়।
এ জন্মে হয়নি কোনো উৎসব, আনন্দ, উচ্ছাস, উল্লাস দীঘির পদ্মের মতো মতো হেসে ওঠেনি তার গর্ভধারিণী ঐ মূর্তিটি। ফুলের পাপড়ির মতো প্রস্ফুটিত হয়নি তাই এ শিশু। পথের পাশে ফুটে ওঠা বুনো ফুলের মতো, পায়ে দলেও আঙ্গুলের ফাঁকে উঁকি দিয়ে জানান দিচ্ছে তার অস্তিত্ব।
এ পথ শিশুর জন্য অপেক্ষা করেছিল এ পৃথিবীর নির্মল আলো বাতাস। কিন্তু এ জন্মই যে তার আজন্ম পাপ। তাই এ আলো হল তপ্ত বড়, বাতাস তাও বিষাক্ত। এ শহরের অসহনীয় কোলাহল, তার জন্য ঘুম পড়ানির গান। এ শিশুর জন্মের ক্ষণে জনক জননীর বুকে প্রেমের কোনো সুর বাজেনি। এ শিশু তাই শক্ত খোলস ভাঙবে না। মনে তার প্রেম জাগবে না, উঠে আসবে না কোনো নতুন সভ্যতা।
বিঃ দ্রঃ এই লেখাটা খাতায় শব্দের মালা গাঁথতে সাহায্য করেছে জিসান ভাইয়ার একটা ভ্রমন কাহিনী পড়ে। তাই এই লেখাটা জিসান ভাইর সৌজন্যে। জানিনা কতটুকু মালা গাঁথল।
২১টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অবৈধ পন্থায় যাই ঘটে বা হয় সবিই নিরান্দ।এখানে কোন আনন্দ আসতে পারে না।অল্প কথা সুন্দর একটি পথ শিশুদের জীবন বৃত্তান্ত পড়লাম। 🙂
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ ভাই। আপনাদের উৎসাহ। পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
মন ছোঁয়া কাব্য আর তাতে এতো গভীর চিন্তা ভাবনা আর বাস্তবতা, আমি শুধু বলি “অনবদ্য” আর সাথে মুগ্ধতা। আপু আমি আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম আজ থেকে। -{@
মৌনতা রিতু
আপনাদের এই ভালবাসাই আমার উদ্দপনা। চেষ্টা করব এটা ধরে রাখার।
ধন্যবাদ ভাই।
ইঞ্জা
-{@ (3
জিসান শা ইকরাম
পথ শিশুদের চমৎকার একটি নাম দিলেন’ ঝিনুক শিশু ‘।
স্বামী স্ত্রীর চিরন্তন ভালবাসায় এ শিশুর জন্ম হয়নি। এদের জন্মের কোন পরিকল্পনা থাকেনা,
অধিকাংশ সময়েই স্ত্রীর ইচ্ছে মূল্যহীন।
ভালবাসাহীন ভাবে বেড়ে ওঠা এসব শিশুর বিকাশ হয়না, অনেক সময় এরা সমাজ ও দেশের বোঝা হয়ে যায়।
ভাল লিখেছেন।
আমার লেখা ভ্রমন কাহিনী পড়ে লেখাই লিখে ফেললেন!
সম্মানিত বোধ করছি।
শুভকামনা -{@
মৌনতা রিতু
শক্ত এক খোলসে জন্ম এই ঝিনুক শিশুদের। কঠিন এক বাস্তবতা।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মিষ্টি জিন
লেখা পডে এককেবারে চুপ হয়ে গেলাম।
অসাধারন লেখা।
মৌনতা রিতু
অসংখ্য ধন্যবাদ। সব আপনাদের ভালবাসা।
ছাইরাছ হেলাল
কত অনাকাঙ্খিত ভাবেই নব জীবনের উন্মেষ,
কোন দায় না থাকলেও বহন করতে হবে বেড়াজালের জীবন।
আমিও বলি পড়েই এত্ত সুন্দর লিখলেন!! বেশি বেশি পড়ুন, আরও লিখুন।
মৌনতা রিতু
চশমা হারাইয়া গেছে। পড়তে পারতিছি না। চশমা লাগব।
শুন্য শুন্যালয়
এইটুকুন লেখাতে অনেক বড় মেসেজ আপু। যারা আদর-আহ্লাদে বিত্তে জন্ম হয়, বড় হয় তাদেরই এখন যেই অবস্থা দেখছি, অথচ এই শিশুগুলোর কাছ থেকে যেন বিরাট কিছু পাওয়ার আশা রেখে দিয়েছি।
কি সুন্দর একটা নাম, ঝিনুক শিশু। এই আপু, সত্যি এতো ভালো কেমন করে লিখছেন? জিসু ভাউ এর লেখা এতদিন ধরে পড়ে পড়েও আমি লিখতে পারলাম না। 🙁 উহু, অন্য মন্ত্র নিশ্চয়ই আছে।
মৌনতা রিতু
মন্ত্র খুঁজি চলো।
শব্দ খুলেছে ? ধুর! কি যে বলো না !
তবে, যাই লিখছি সবার উৎসাহ এবং ভালবাসা।
প্রহেলিকা
জিসান ভাইয়ের মতোই বলতে চাই খুব সুন্দর নামে নামায়িত করেছেন তাদের। টাচি লেখা। আর লেখার মাঝেই ছাপ ফেলে গিয়েছেন আপনার কোমল মনের। দারুণ !!!
মৌনতা রিতু
অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখা তখন লিখতেই ভাল লাগে, যখন কেউ এমন করে বলে।
নীলাঞ্জনা নীলা
বাহ! ঝিনুক শিশু!!
অনাকাঙ্খিতভাবে পৃথিবীতে এসে পথেই আস্তানা গড়ে। এদের কথা আমরা কি ভাবি? কিইবা করি এদের জন্য?
আপু তোমার অনেক লেখার মধ্যে আরেকটি দামী লেখা এই ঝিনুক-শিশু।
মৌনতা রিতু
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। তোমরা এমন করে বলো, বলেই লিখতে ইচ্ছে করে।
ভালো থেকো।
আবু খায়ের আনিছ
এক কথায় ধিক্কার ঐ সব মানুষের জন্য যারা এমন ঘৃণিত কাজ করে।
মৌনতা রিতু
তবুও হয়না পাওয় এই পথ শিশুদের ভাল একটা ভালোবাসার বন্ধন।
ধন্যবাদ।
মেহেরী তাজ
এতো কঠিন লেখা কেনো লিখলেন ভাবীজান?
নাম টা যথাযথ হয়েছে….
মৌনতা রিতু
কঠিন হইয়া গেছি চারপাশ দেইখা। ঝিনুকের মাঝে মুক্তার ঝিলক।