ওজন হ্রাস করার কয়টি সহজ পদ্ধতি: যেহেতু ওজন বৃদ্ধি, মেদ বা ভুঁড়ি প্রভৃতি সমস্যা সৃষ্টি করে সেহেতু আগে থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। প্রথমেই ওজন বাড়ার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে তা প্রতিরোধ করুন। সাধারণত খদ্যাভ্যাস অপ্রতুল কায়িক পরিশ্রম কিংবা অসুখই এর প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হল সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম করা। যারা কায়িক শ্রম বেশি করেন তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ত্রিকোণ আসন, উস্থান আসন প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
চর্বি জাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, গরু বা খাসির মাংস, বাটার প্রভৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। শরীরের জন্য এগুলো প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে যার কম-বেশি হলে সমস্যার দেখা দেয়। এজন্য অনেক সময় দেখা যায় ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। এজন্য প্রয়োজন খাদ্য গ্রহণ পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন এবং বেশি বেশি পানি পান করবেন। একবারে বেশি খাবেন না, একটু পরপর অল্প অল্প করে খাবেন। ক্ষুধা লাগলে শসা বা ফল খেয়ে নেবেন। কারণ শসা ও টক ফল ওজন হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আজকাল অপারেশনের সাহায্যে ভুঁড়ি বা বেদ কমানো হচ্ছে। লাইপোসাকশন বা অ্যাবডোমিনো ফ্লিস্টর সাহায্যে মেদ কমানো হচ্ছে। কিন্তু এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেক।
ওজন হ্রাসকারী খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও লোহার অভাব ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে ডিম ও কলিজা লোহার চাহিদা পূরণ করবে। চেষ্টা করবেন লবণবর্জিত খাদ্য গ্রহণ করতে। এক্ষেত্রে খাবার মেপে মেপে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। মোটামুটি একটা হিসাব করলেই চলবে। শরবত, কোকা-কোলা, ফান্টা ইত্যাদি মৃদু পানীয়, সব রকম মিষ্টি, তেলে ভাজা খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনা ফল, ঘি, মাখন, সর ইত্যাদি পরিহার করা প্রয়োজন। শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উত্স। অধিক চর্বিযুক্ত কম ক্যালরির খাদ্যে স্থূল ব্যক্তির ওজন খুব দ্রুত কমে।
ওজন কমাতে পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সকাল : দুধ ছাড়া চা বা কফি, দুটো আটার রুটি, একবাটি সবজি সিদ্ধ, এক বাটি কাঁচা শসা। শসা ওজন কমাতে জাদুর মতো কাজ করে।
দুপুর : ৫০-৭০ গ্রাম চালের ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল এক বাটি। এক বাটি সবজি ও শাক, শসার সালাদ, এক বাটি ডাল এবং ২৫০ গ্রাম টক দই।
বিকাল : দুধ ছাড়া চা বা কফি, মুড়ি বা বিস্কুট দুটি।
রাত : আটার রুটি তিনটা, এক বাটি সবুজ তরকারি, এক বাটি ডাল, টকদই দিয়ে এক বাটি সালাদ এবং মাখন তোলা দুধ।
দৈনিক এক গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করলে দেহে প্রোটিনের অভাব থাকে না। ৬০ কিলোগ্রাম ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তির খাদ্য ৬০ গ্রাম প্রোটিন হলেই ভালো হয়। প্রতিমাসে একদিন ওজন মাপতে হবে, লক্ষ্য রাখতে হবে ওজন বাড়ার হার কম না বেশি। ওজন বৃদ্ধি অসুখের লক্ষণ। মেদ বা ভুঁড়ি এদের অতিরিক্ত ওজন কোনোটাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। বরং নানা অসুখের কারণ হয়ে দেখা দেয় একথা সব সময় মনে রাখবেন এবং স্বাস্থ্যসচেতন হবেন।
লেখাটি লিখেছেনঃ ফাতেমা ইয়াসমীন (লিসি) খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি।
এটি এখান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
২১টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
কত চেষ্টা করি, কমেনাতো 🙁
সোনিয়া হক
কমে যাবে ভাইয়া, চেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
মামুন
আমি একটু বেশী ঘুমালেই আমার ওজন বেড়ে যায়। এখন তো তিনবেলা রুটি খাচ্ছি, তারপরও…. ;(
সোনিয়া হক
ঘুম একটু কমিয়ে দিন।ঘুম কমিয়ে লিখুন আমাদের জন্য 🙂 এই ডায়েট চার্ট অনুসরন করুন ভাইয়া। আশাকরি কাজ হবে।
নওশিন মিশু
কোন ভাবে কি ক্ষিদা কমানো যায় আপু? যদি সেটা বলেন তো খুব উপকৃত হই….. ;?
সোনিয়া হক
ক্ষিদে কমানোর কি দরকার?বাঁচতে হবেনা? এই চার্ট অনুসরন করুন -{@
নওশিন মিশু
ধন্যাবাদ কিন্তু ক্ষিদাটাই আমার মূল সমস্যা… 🙁
সোনিয়া হক
খাবারকে ভাববেন শত্রু :p
ছাইরাছ হেলাল
খুব ভালো,মোটুদের কাজে দেবে। কিন্তু লিকলিকেদের জন্য কিছু পরামর্শ দিতে হবে।
সোনিয়া হক
লিকলিকেদের জন্য? :D) যেসব পোষ্ট দিয়েছি, তার উলটো করবে লিকলিকেরা :p
খেয়ালী মেয়ে
এতো কষ্ট করে খাইয়া দাইয়া একটু ওজন অর্জন করতেছি, আর আপনে কিনা আসছেন ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট নিয়া-এইডা কিছু হইল :p
সোনিয়া হক
আপু, ওজন নিয়ন্ত্রন করার কথা বলেছি। বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী ওজন রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রনে রাখলে শরীর ও মন ঝরঝরে থাকে 🙂 -{@
লীলাবতী
আমি অবশ্য চিকনা চাকনা আছি আপু। তবে পোষ্ট সেভ করে রাখলাম।
সোনিয়া হক
চিকনা চাকনা হলেও এসব মেনে চলুন। নিয়ন্ত্রন করুন।
মরুভূমির জলদস্যু
এইটা আমার দরকার, বিশাল একখানা ভুড়ি গজিয়েছে।
সোনিয়া হক
কমিয়ে ফেলুন ঝটপট।
শুন্য শুন্যালয়
ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট, হুম। খাদ্য, পুস্টি বিভাগের লোকজনদের মধ্যে প্রচুর মতবিভেদ রয়েছে, এজন্য ডাক্তাররাও বেশ ঝামেলার মধ্যে আছেন। বিভিন্ন জন বিভিন্ন খাবারের কথা বলছেন ওজন কমানোর জন্য। দুদিন আগেই এই টপিকসটা পড়লাম, সেখানে বলছে, high protein, low GI food ওজন কমাতে সাহায্য করে বেশি, এসবের মধ্যে পরে red meat, egg, lentils, fish, nuts, etc. তাই আমাদের আগের কিছু ধারনা পরিবর্তন হয়েই যাচ্ছে। তবে একটা ব্যাপার হচ্ছে নিয়মিত হাঁটা, পরিশ্রম, পরিমিত ঘুম এগুলো অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে। আপনাকে একটা লিঙ্ক শেয়ার করছি, এখানে মোটু, লিকলিকে সবার জন্যই খাদ্যাভাসের পূর্ণ বিবরন দেয়া আছে।
http://www.google.com.au/url?sa=t&rct=j&q=&esrc=s&source=web&cd=1&ved=0CB8QFjAA&url=http%3A%2F%2Fwww.eatforhealth.gov.au%2F&ei=DWx6VMfFEJLt8AX3kIKwCw&usg=AFQjCNFYi4dNGkqiYcu1dzJDFvLqxiOAiQ&bvm=bv.80642063,d.dGc&cad=rja
ব্লগার সজীব
তাহলে খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা নেই। আমি খাবার জন্য বাঁচি- এই নীতিতে বিশ্বাসী :p
সোনিয়া হক
দেশ আর বিদেশের কিছু পার্থক্য আছে আপু।আমরা দেশের সবাই প্রচন্ড অলস।রিক্সা ব্যতীত চলাচল করিনা।সামান্য দুরত্ব যেমন নীলক্ষেত থেকে কলাভবন পর্যন্ত হেটে যাই না। ছোট লাগেজেও কুলি দরকার হয় আমাদের।বাসার প্রায় যাবতীয় কাজ বুয়ার উপর ছেড়ে দেই।বিদেশে এর সম্পুর্ন উল্টো। শারীরিক পরিশ্রম আমরা করিই না বলতে গেলে। তাই বিদেশী ডায়েট চার্ট আমাদের দেশের জন্য ১০০ ভাগ নির্ভুল নাও হতে পারে।খাওয়া দাওয়ার বিষয়েও আমরা সচেতন না। যাই হোক মন্তব্য এবং লিংকের জন্য ধন্যবাদ।
অরণ্য
এতকিছু যদি নাই খেতে পারি তাহলে এত ভালো ভালো খাবারগুলোর হবে কি? আরে বাবা স্থূলতা হচ্ছে কি বেশি খেয়ে না কি যা খাচ্ছে তা বার্ন করছে না বলে? এই এত মেপে মেপে খেতে গিয়ে গেল সব পাগল হয়ে। বাবা খাসনে দুবেলা – তাও ভালো। তাই বলে এত মেপে খাবি বাবা! তারচেয়ে বাবা খা ভালো – এবার দৌড়া ঠিকমত, তোকে হাঁটতে হবে না। এসব ভয় দেখানো ডাক্তার – পুষ্টিবিদদের কাছে যাবার আগে নিজের সুস্থতা নিয়ে একটু দৌড়া বাবা, না পারিস তো হাঁট বাবা। ঠিক আছে বাবা তাও যদি না পারিস তবে খেলাধুলা কর বাবা – ঘাম ঝরা বাবা, ঘাম, ঘাম। আরেকটু সোজা বুদ্ধি দেই বাবা, নাচের ক্লাসে ভর্তি হবি?
সোনিয়া হক
শারীরিক পরিশ্রম সবচেয়ে ভালো,তবে এটি আমরা করিনা।