তীব্র গরমে আমরা সবাই অস্থির।এই গরমে খাদ্য গ্রহনে সতর্ক হোন।সারা বছরের খাদ্য তালিকা এক রকম থাকে না। তা ছাড়া বয়স, স্বাস্থ্য, পারিবারিক অবস্থা, চাহিদা, সময়, পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদি অনুযায়ী খাবারের তালিকা একজনের চেয়ে অন্যজনের ভিন্ন। কিন্তু আসল কথা হলো, সুষম খাদ্য খাওয়া আমাদের জন্য জরুরি। তাই গরমকালেও তার ব্যতিক্রম হয় না। বিশেষ করে গ্রীষ্মের এ দাবদাহে এ বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে।
গরমে পানীয় :
একজন স্বাভাবকি পূর্ণ বয়সের মানুষকে গরমকালে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানীয় পানের প্রয়োজন। এর মধ্যে বেশির ভাগই থাকবে নিরাপদ পানি। তারপর শরবত (চিনি বা গুড় ও লেবুর তৈরি, ইসবগুলের বা বেলের শরবত), ফলের রস, জুস, লাচ্ছি, হালকা গরম চা বা কফি, হালকা গরম পাতলা স্যুপ, কোমল পানীয়, ডাবের পানি, কোল্ড চা বা কফি এবং ক্ষেত্রবিশেষে স্যালাইন।
গরমে সকালের খাবার :
সকালে নাশতা হিসেবে দই-চিঁড়া, আম-চিঁড়া, ছোলা ভেজানো, ছোলার ছাতু, রুটি, পাউরুটি, ভাত, ডাল বা তরকারি। এর সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন ফল খেতে পারেন।
গরমে দুপুরের খাবার :
যারা দুপুরে ভারি খাবার গ্রহণ করেন তাদের জন্য ভাত, প্রচুর শাকসবজি, ছোট-বড় মাছের হালকা রান্না, ডালসহ গোশত, ডিম অভ্যাস মতো খেতে পারেন। যাই খান না কেন সালাদ কিন্তু থাকবেই।
যারা দুপুরে হালকা খাবার গ্রহণ করেন তাদের জন্য বড় সুবিধা হলো প্রচুর পরিমাণ ফল যেমন- তরমুজ, আম, কাঁঠাল, শসা, কলা, লিচু, জামরুল খাবেন। সঙ্গে নুডুলস, রুটি সবজি, ডাল বা ডিম দিয়ে খেতে পারেন।
গরমে সন্ধ্যার খাবার :
সন্ধ্যায় শরবত বা চা-কফির পাশাপাশি- তরমুজ, জামরুল, শসা খেতে পারেন। গরমে রাতের খাবার : গরমে রাতের খাবার হবে খুবই সহজ। ভাত বা রুটি, সঙ্গে মাছ, সবজি, ডাল বা দুধ-আম খেতে পারেন অল্প পরিমাণে।
গরমে শোয়ার আগে :
আপনি এ সময় খেতে পারেন এক গ্লাস পানি বা হালকা শরবত বা অভ্যাস থাকলে এক গ্লাস দুধ। তার মানে এই নয়, গরমকালে পোলাও, বিরিয়ানি খাওয়া যাবে না। খাওয়া যাবে, তবে তা পরিমাণমতো। ওভারলোডিং করা যাবে না এবং এগুলো একনাগাড়ে কয়েক বেলা খাওয়া ঠিক হবে না। রান্নায় তেল পরিমাণমতো থাকবে, মসলা কম খেলে ভালো। প্রতি বেলায় সালাদ খাওয়া যাবে। প্রচুর তরল পানীয় পান করতে হবে, তবে খুব বেশি ঠাণ্ডা হওয়া চলবে না। এ সময় আইসক্রিমও খাওয়া যাবে, তবে তা প্রচণ্ড গরমে ঘর্ম অবস্থায় না খেয়ে একটু ঠাণ্ডা হয়ে অথবা সন্ধ্যার দিকে খেতে পারেন।
এই গরমে কিছু টিপস :
* আপনি অন্তত দিনে দুইবার ভালোভাবে গোসল করতে পারেন। * গোসলের পর পাউডার, ডিওডেরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। * গরমে বন্ধ জুতা বা মোজা থেকে পায়ে গন্ধ হলে নিমপাতা ও হলুদ একসঙ্গে বেটে পায়ে লাগান, শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। * রোদে যাওয়ার সময় সানস্ক্রিন, সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। * বাইরে বের হওয়ার সময় ঢিলেঢালা আরামদায়ক কাপড়, হালকা রঙের পোশাক পরুন ও অতিরিক্ত সাজগোজ পরিহার করুন। * একই কাপড় না ধুয়ে বেশিদিন ব্যবহার করবেন না। িপ্রচুর পরিমাণে তরল খাবার ও পানীয়, রসালো খাবার (তরমুজ) ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন।
লেখাটি লিখেছেনঃ ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন, ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল। লিংক
২৬টি মন্তব্য
খেয়ালী মেয়ে
এতোদিন কই ছিলেন?–না খেয়ে না খেয়ে তো আমরা সবাই শুকিয়ে গেলাম :p
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট, একেবারে সময়োপযোগী…অনেকেরই কাজে আসবে 🙂
সোনিয়া হক
আপনাদের কষ্ট হচ্ছে এটি ভেবেই তো চলে আসলাম আপু।নিয়মিত থাকার চেষ্টা করবো।
খেয়ালী মেয়ে
হুমমম আপনার পোস্টে গরমে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে 🙂
সোনিয়া হক
তাহলে তো শরবতের পোষ্ট দিতে হয় 🙂
মেহেরী তাজ
না পোষ্ট দিতে হবে না।
আপনি বরং পরী আপুর জন্য একটা গ্লাস আর শরবত এর ছবি পাঠায়ে দেন।
সোনিয়া হক
তাহলে পরী আপুকে আপনার কথা অনুযায়ী পাঠিয়ে দেই 🙂
অলিভার
সময়োপযোগী গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট
শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ 🙂
সোনিয়া হক
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
আশা জাগানিয়া
এই গরমে এমন লেখাই তো চেয়েছিলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
সোনিয়া হক
গরমে আরো লেখা আসছে 🙂 ধন্যবাদ আপনাকেও।
অরণ্য
অনেকদিন পর আপনার শেয়ারিং পড়ছি। লেখাটি ডাক্তার সাহেব লিখেছেন যেন আতুপুতু মানুষগুলোকেই কেবল সামনে রেখে। আমার জন্য কিছুই লেখেননি। তবুও একটা লাইন গায়ে মাখলাম “একই কাপড় না ধুয়ে বেশিদিন ব্যবহার করবেন না”।
সোনিয়া হক
কোন মতেই একই কাপড় না ধুয়ে বেশিদিন ব্যবহার করবেন না।নতুবা ভাবী বা লাভার দূর দূর করে তাড়িয়ে দিবে 🙂
অরণ্য
“… আসলে দিলে পন
দেবে রে তনু মন
তোকেই সুন্দরী বলবে সব শালায়…
এই মেয়ে!”
সোনিয়া হক
কিছুই বুঝলাম্ না অরণ্য ভাইয়া 🙁
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা আরম্ভ করলাম এই খাবার খাওয়া
দেখা যাক কেমন লাগে।
সোনিয়া হক
ফলাফল ভালো হবেই নিশ্চিত 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
বাপরে নিয়ম মেনে এই খাওয়াদাওয়া বেপক টেনশন এর ব্যাপার। তবু আমাদের জন্য আপনি কষ্ট করে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট দিলেন তাই মেনে দেখব কেমন লাগে।
তবে আপু একটা প্রশ্ন সকালেরটা রাতে আর রাতের রুটিন দূপুরে খাইলে কোন সমস্যা আছে?? হা হা উন্মাদতো তাই একটু মজাক করলাম।
লিখায় অনেক অনেক ভালোলাগা এবং আপনার জন্য শুভকামনা নিরন্তর।
সোনিয়া হক
একটু নিয়ম মেনে চলুন ভাইয়া।সকালের খাবার সকালেই খাবেন।রাতের টা রাতে 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আবারো উদাও! এতো সুন্দর উপকারী পোষ্ট দিয়ে আমাদের ধন্য করলেন।
সোনিয়া হক
ধন্য করতে পেরে ধন্য হলাম 🙂
কৃন্তনিকা
আপনি তো অমাবস্যার চাঁদ দেখছি…
আপনি ছাড়া স্বাস্থ্য নিয়ে কেউ লেখে না। আপনাকে মিস করি অনেক। লিখুন নিয়মিত।
খুব উপকারি পোস্ট। 🙂
সোনিয়া হক
এখন হতে পুন্নিমার চাঁদই হবো আপু 🙂 আর তো কেউ লেখেন না এই বিভাগে। আপনাদেরও মিস করি খুব। ধন্যবাদ আপু।
শুন্য শুন্যালয়
ইইইইইই, শীতে আমার কাঁপুনি এসে গেছে আপু। নিজেদের জন্য লিখলেন, এবার আমার কথা ভেবে কিছু লিখুন, শীতে কি কি খাইমু?
সোনেলা ফ্রিতে একজন ডাঃ পাইছে, আর কি চিন্তা? 🙂
সোনিয়া হক
আপনি তো আবার শীতের দেশে থাকেন। আপনিই বরং লিখুন,শীতে কি কি খাচ্ছেন 🙂
মেহেরী তাজ
ইয়া হু গরম এবার পাইছি তোরে,
খাইছি তোরে,
সোনেলার ডাক্তার
সোনিয়া আপু…..
অনেক উপকারী একটা পোষ্ট এর জন্য ধন্যবাদ।
সোনিয়া হক
ইয়া হু গরম এবার পাইছি তোরে,
খাইছি তোরে, :D) হাসতে হাসতে পরে গেলাম আপনার মন্তব্যে 🙂