এইসব কোলাহল থেমে গেলে রাত নামে রোজকার মতো। থোকা থোকা আমের মুকুল, গুচ্ছ গুচ্ছ জামরুলের ফুল, ভেজা বর্ষার টিনের চালে দাপাদাপি ! নিঝুম রাতের বালিশে পেতে দেই ভারবাহী মাথার সমস্ত দেহ। প্রহরী চোখের কোনে ঠাঁই নেয়া নামহীন লোনাশ্রু গড়িয়ে ভিজিয়ে রাখে জিয়ল মাছের মতো অপরিচিত ভাবনাদের।
বোবা কান্না হাতড়ে বেড়ায় অমিমাংশিত প্রশ্নের উত্তর!
অনন্তর পুড়েছে ফুসফুসের বারান্দা।
অদৃশ্য ছাই চোখের জ্বালা বাড়াচ্ছে নির্দ্ধিধায়।
একটা পোড়া জীবনজুড়ে অপেক্ষারা ঘড়িরকাঁটায় ছুটে যাচ্ছে অবিরতঃ কোনোএকদিন আশা বেঁচে উঠবে বুকপাঁজরে ঠাঁই নিতে। তাঁকে ফিরতেই হবে প্রতি প্রার্থণার বদলে।
একেকটা অক্ষর ছুটে চলে কেবল শব্দ হবে বলে!
পূর্ণাঙ্গ শব্দের দায়ভার শুধু তাঁকে ভেবেই রেখেছি সাজিয়ে।
কোনো এক বোধের কাছে রোজ খুঁজি স্বস্তি শান্তি আরধনার ছল। নামহীন বোধ জলসিঁড়ি করে রাখি নিজের করে। সবটুকু আড়াল ছেড়ে বোধ জেনে নেয়, ভেতর বাহিরের আদ্যোপান্ত । তবু হিসেবের খাতায় অংকের সমাধান বড় জটিল!
কখনো সখনো চোখে ধরে আগুন। আগুন নিয়েই মৌণতার চাঁদ দেখি কাঁঠাল পাতার ফাঁকে। নিশ্চুপ রাতের শরীরে মাথা উঁচু করে দেখি হেঁটে যাওয়া সরিসৃপের পায়ের ছাপ।
অযথাই কান পোড়াই দূরের বাঁশির সুরে। হাতে তুলে নেই ছেঁড়া সেতারের তানপুরা।
গলার কাছে শরাবের বোতল রেখে, না গিলেই মাতাল হই দুঃখ ভোলার অজুহাতে। মাঝে মাঝে নিজেই পরিচিত হতে চাই নিজের কাছে! এ আমি কেমন আমি? এ সময়ের কান্ডারি ?নাকি যুদ্ধ জেতার যোদ্ধা?
১৯টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
অনবদ্য লেখা , মনোমুগ্ধকর l
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ
সুপায়ন বড়ুয়া
“এ আমি কেমন আমি?
এ সময়ের কান্ডারি ?
নাকি যুদ্ধ জেতার যোদ্ধা?”
সময়ের সার্থক রূপায়ন আপু।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ দাদা।শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
অনন্ত কোলাহলের অন্তর্দন্দ্বে এ আমি কোন আমি এ প্রশ্ন এসেই যায়
দ্বিধাহীন ভাবে, থেকেও যায় অমীমাংসিত জলপিঁড়ির ধার ঘেসে।
বন্যা লিপি
খুবই পছন্দ হলো এমন মন্তব্য।
ধন্যবাদ।
নিতাই বাবু
ভুলে যাবেন না যেন, আপনিই হচ্ছেন যুদ্ধ জেতার যোদ্ধা। জীবন, দেহ, মনপ্রাণ, আবেগ, অনুভূতি, ক্রোধ সবই জীবন যুদ্ধে সবসময়ই নিয়োজিত। তাহলে তো যুদ্ধে জেতার ভাব থাকবেই থাকবে।
সুন্দর লেখার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দিদি।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ দাদা, আশির্বাদ রাখবেন।
ভালো থাকবেন নিরন্তর।
খাদিজাতুল কুবরা
একটা পোড়া জীবনজুড়ে অপেক্ষারা ঘড়িরকাঁটায় ছুটে যাচ্ছে অবিরতঃ কোনোএকদিন আশা বেঁচে উঠবে বুকপাঁজরে ঠাঁই নিতে। তাঁকে ফিরতেই হবে প্রতি প্রার্থণার বদলে।
একেকটা অক্ষর ছুটে চলে কেবল শব্দ হবে বলে!
পূর্ণাঙ্গ শব্দের দায়ভার শুধু তাঁকে ভেবেই রেখেছি সাজিয়ে।
এতো চমৎকার লেখনী আপু মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
সত্যি দিনশেষে আক্ষেপ এসে দাঁড়ায় শিয়রে।
বন্যা লিপি
ভালো থাকবেন সবসময়।শুভ কামনা।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ অনুভূতির প্রকাশ কবি আপু
বন্যা লিপি
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
একাকীত্ব আপনাকে পেয়ে বসেছে।
যদিও এখন একাকীত্বকে বিলাসিতা বলা হয়।
বেশি বেশি পুরানো দিনের গান শুনুন। মন ভালো হলে আপনাকে তখন ঠিকই যুদ্ধ জয়ীই মনে হবে।
শুভকামনা
বন্যা লিপি
এই লেখায় অন্য কাউরে দেহেন। আমারে দেইখেন না। আমার একাকীত্ব নাই ফু’ম্মা😏
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এ আমি কেমন আমি এই কোলাহলের অন্তর্দ্বন্দ্ব আজীবন চলছে। একাকী সময় গুলো এভাবেই কেটে যায় আত্নবিশ্লেষণে। কতকিছুর ঝাঁপি যে খুলে বসে মন তার কোন ইয়ত্তা নেই। “নিঝুম রাতের বালিশে পেতে দেই ভারবাহী মাথার সমস্ত দেহ। প্রহরী চোখের কোনে ঠাঁই নেয়া নামহীন লোনাশ্রু গড়িয়ে ভিজিয়ে রাখে জিয়ল মাছের মতো অপরিচিত ভাবনাদের।” এই কথাগুলো অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। ভালো থাকবেন, আনন্দে থাকবেন এই শুভ কামনা রইলো
বন্যা লিপি
শুভ কামনা ছোটদি।ভালো থাকবেন সবসময়।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
চমৎকার প্রকাশ — গলার কাছে শরাবের বোতল রেখে, না গিলেই মাতাল হই দুঃখ ভোলার অজুহাতে। মাঝে মাঝে নিজেই পরিচিত হতে চাই নিজের কাছে! এ আমি কেমন আমি? এ সময়ের কান্ডারি ?নাকি যুদ্ধ জেতার যোদ্ধা?
ধন্যবাদ।
বন্যা লিপি
ধন্যবাদ আপনাকে
সাজেদুল হক
অক্ষর ছুটে চলে শব্দের পিছনে….
দারুণ ভাবনার অসাধারণ অনুভব।