এম সি জি; মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। উত্তেজনাটা সেদিন একটু বেশিই ছিলো খেলাটি নিয়ে। এমসিজি কে বিশ্বের সেরা তিনটি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের একটি ধরা হয়। কাজেই এই গ্রাউন্ডে খেলা দেখতে যাওয়া ঘিরে ফিসফাস উত্তেজনা ছিলো নিজের মধ্যে। এরপর আমার টিম বাংলাদেশের খেলা, স্বপ্ন দেখানো, স্বপ্ন ছড়িয়ে দেয়া বালকগুলোকে দেখতে পাবো। আর বলতে একটু লজ্জার হলেও এটি ছিলো আমার জীবনের প্রথম স্টেডিয়াম থেকে দেখা খেলা। তাই সব মিলিয়ে উত্তেজনার পারদ অনেক উঁচুতে।
মাঠে গেটের কাছাকাছি হতেই এক অপূর্ব দৃশ্য। লাইনে লাইনে গাড়ি ঢুকছে গেটের ভেতর। সবগুলোতে বাংলাদেশের স্টিকার, জানালা দিয়ে দুপাশে উড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের পতাকা। শিরশিরে এক অনুভূতি হলো।
গেট দিয়ে যখন মাঠে প্রবেশ করলাম, ধরেই নিলাম এরই আরেক নাম হয়তো স্বর্গ হবে, কি সুন্দর একটি মাঠ। মাঠে দুদিকে তখন শ্রীলংকা আর বাংলাদেশ দলের প্লেয়াররা অনুশীলন করছিলেন। টুকটাক কিছু ছবি...

প্রত্যেক গেটেই রয়েছে ক্রিকেট কিংবদন্তীদের স্ট্যাচু

অনুশীলন শেষ করে সাজঘরে ফিরছেন মমিনুল, সৌম্য।

টসে হেরে ফিরছেন মাশরাফি 🙂

বাংলাদেশের পতাকা গ্যালারি জুড়ে।

আমার জানেজিগার সাকিব 🙂

১ লাখ ২৪ জন ধারন ক্ষমতার মাঠে সেদিন দর্শক ছিলো, ৩০ হাজার ৭২ জন। বেশির ভাগ অবশ্য শ্রীলংকান সাপোর্টার, তবে বাঘের বাচ্চাদের তর্জন গর্জন মাঠে ছিল শোনবার মতোই।
খেলা মাঝপথে যাবার আগেই মন খারাপ করে ক্যামেরা ব্যাগবন্দী করলাম। বিনোদন যোগাতে এগিয়ে এলেন এক আপামনি। তিনি কোন দলের সাপোর্টার তা বুঝতে একটু কস্টই হয়েছে। বাংলাদেশ যখন ৪/৬ পেটাচ্ছিলেন তখনও তিনি নাচেন, আউট হলে তখনও তিনি নাচেন। মাথায় ক্যাপে বিলাই মানে বাঘের একটা ডল থাকাতে বুঝলাম ইনি বাংলাদেশের সাপোর্টার। তার নাচুনির রহস্য যে ক্যামেরামুখি তা একটু পরে অবশ্য বুঝতে পারলাম। মনে মনে খেলায় হারায় রাগ অইটার উপরেই ঝাড়লাম।

দর্শকদের একাংশ

মন খারাপ ক্ষুদে বাংলাদেশ সাপোর্টারের

সত্যি বলতে খেলায় জিতবো এই আশাটা খুবই ক্ষীন ছিলো, ৪০০ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্লেয়ারদের কাছে হারাটাই কি স্বাভাবিক ছিলোনা? আমিতো বলবো বাংলাদেশ সেদিন অনেক ভালোই খেলেছে। কয়েকটি বাজে ফিল্ডিং এর খেসারত দিয়েছি, নইলে আরো ভালো খেলতো। খেলার আগে আগে টিমের মধ্যে অন্তর্গত ঝামেলা যেন দৈনন্দিন রুটিন হয়ে গেছে। প্লেয়ারদের পজিশন সেটআপ আজো যেন ঠিকমতো করে উঠতে পারছিনা। আজ মমিনুল ৯ নাম্বারে তো কাল ৪ নাম্বারে। বিশ্বকাপের মতো লীগে এসেও এক্সপেরিমেন্ট চলছে। এ দুর্বলতা গুলো যেন কাটিয়ে উঠতেই পারছিনা।

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের এক ঝলক

প্রিয় বাঘের বাচ্চারা তোমাদের সাথে আছি, থাকবো। বাংলাদেশের মতো একটি দেশের পতাকা তোমরা বিশ্বের বুকে উড়িয়ে যাচ্ছো, সে পতাকা একটু একটু করে আরো উঁচুতে নিয়ে যাচ্ছো, আমরা কৃতজ্ঞ তোমাদের কাছে। স্বপ্ন যদি ভেঙ্গে দাও, স্বপ্ন আবারও দেখাবে তোমরা, এই বিশ্বাস আছে, থাকবে।

শতবন্দী দশায় উড়ছে আমার দেশের পতাকা...

0 Shares

৪১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ