প্রাইমারির গন্ডি অতিক্রম করার সাথে সাথে বাচ্চাগুলোর কোমল হৃদয়ে একটা ধাক্কা লাগে। বন্ধুদের সাথে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ার ধাক্কা। এই ধাক্কার সাথে আরও একটা ধাক্কা এসে যোগ হয়, যারা ভালো পাশ করতে পারেনা তাদের উপর। শুনতে হয় মায়ের বকুনি, বাবার চোখ রাঙানি। প্রতিবেশী আন্টিদের হাজার বাণী।

আবার অনেক সময় দেখা যায়, খারাপ রেজাল্ট করার কারণে খেলার সাথীদের সাথে পূর্বের ন্যায় সম্পর্ক আর থাকেনা। মায়েরা বাসা থেকে বারণ করে দেয়, খারাপ রেজাল্ট করা বাচ্চার সাথে মেলামেশা করা যাবে না। কথা বলা যাবে না। তাদের ঘরে যাওয়া যাবে না। এত না যখন মাথায় এসে আঘাত করতে থাকে, তখন যেকোন বাচ্চার মাথায় ওই ‘না’ শব্দটা সেট হয়ে যায়। ফলে ভালো রেজাল্ট করা বাচ্চাগুলোও খারাপ রেজাল্ট করা বাচ্চাদের সাথে দূরত্ব ‍তৈরি করে বসে।

পরিবার, প্রতিবেশীদের থেকে আঘাত পেয়ে পেয়ে বাচ্চাগুলো যখন মানসিকভাবে অর্ধেক মরে যায়, তখন তাদের সম্পূর্ণ মারার জন্য আসে পরের ধাপ। মাধ্যমিকে ভর্তি ও নতুন ডজনখানেক বই।

যারা ভালো রেজাল্ট করতে পারেনা তারা সরকারি স্কুলে চান্স তো পাই না, এমনকি ভালো মানের কোন বেসরকারি স্কুলেও ভর্তি হতে পারেনা। তাই মা-বাবা তাদের ভর্তি করিয়ে দেয় ‘অমুক-তমুক কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাই স্কুল’ নামের স্কুল গুলোতে। যেখানে থাকে শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত পাঠ্য বইয়ের চেয়ে তিন চারটা অতিরিক্ত বই। এর ফলে দেখা যাচ্ছে খারাপ রেজাল্ট করা বাচ্চাগুলোকেই ভালো রেজাল্ট করা বাচ্চাদের চেয়ে বেশি বই পড়তে হচ্ছে! কি অদ্ভুত!

 

ছবি- অনলাইন থেকে সংগৃহীত

 

0 Shares

২২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ