আমরাও স্বাভাবিক মানুষ।

রিতু জাহান ৬ জুন ২০১৬, সোমবার, ১২:০৮:৩৫অপরাহ্ন বিবিধ ২২ মন্তব্য

মানুষ যে সৃষ্টির সেরা জীব, তার কারন, মানুষেরই রয়েছে হৃদয়বৃত্তি, বুদ্ধি, বিবেক। এগুলো থেকেই মানুষের নীতিজ্ঞান, পরিহিতব্রত, বোধ ইত্যাদির উৎপত্তি। যে ব্যক্তির মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো যতটুকু পরিপূর্ণ এবং প্রবল সে ব্যক্তি মানুষ হিসেবে ততটুকু পরিপূর্ণ এবং স্বার্থক।

ভালমন্দ , উত্তম এবং অধম মানুষের মধ্যে প্রাগৈতিহাসিক যুগেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। সৎ কর্মজীবি মানুষের বিবেক স্বাধীন এবং শক্তিশালী। তার উত্তম ও অধম হওয়ার পেছনে পারিপার্শিকতার যতোই প্রভাব থাক না কেন, তা অতিক্রম যোগ্য। সুষ্ঠুভাবে নিজের বিবেকের যথাশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ তার নিজের উপর থেকে অধমের কুপ্রভাব অনায়াসে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে নিজেকে উত্তমের উন্নীত করতে পারে। এ জন্য তাকে তার প্রবৃত্তি এবং পারিপার্শিকতার সাথে অনাবরত যুদ্ধ করতে হয়। এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে সেই সাহসি মানুষটি যদি বাংলাদেশ পুলিশ ডিপার্টমেন্টে চাকরি করে তবে তো এই যুদ্ধ তার সর্বক্ষনের সংগি।

*পুলিশ* সবার চোখে ঘৃণিত। কিন্তু এই পেশায় আসার জন্য এই নিন্দুকেরাও কিন্তু কম কাঠখর পুড়ায় না। পুলিশ সহজ ভাবে কোনো কথা বললে, কেউ শোনে না। সব দোষ পুলিশের।

জীবন থেকে নেওয়া পুলিশের গল্প কয়জনই জানে, কয়জনই বোঝে? একজন পুলিশ অফিসারের বউ হয়ে এই টুকু বলতে পারি, এই পুলিশ গুলো আসলেই খারাপ! এরা পরিবারের থেকে জনগনের জন্য সময় দেয় বেশী। এদের ডিউটির কোনো সময় সীমা নেই। আমার উনাকে বিয়ের পর থেকে দেখে এসেছি, কোনোরকম বাসায় থাকতে। আর যখন বাসায় থাকে, তখন দুই কানে দুই মোবাইল, অথবা ওয়ারলেস সেট হাতে। বাসায় কিহচ্ছে না হচ্ছে দেখার সময় নেই। কোনোরকম ঘুমালেও মোবাইলটক ও ওয়ারলেস সেট টা কানের কাছেই থাকে। উনি যখন ধানমন্ডি, রমনা, নিউমার্কেট থানাতে ছিলেন ভোর রাতের দিকে ঘুমাতে আসতেন। সকালে ঘুম থেকে উঠতেনই ফোনের শব্দে। নিউমার্কেট থানায় থাকতে জুলি রাত দুইটার দিকে থানা থেকে রিক্সা করে বাসায় ফিরছিল, সাহবাগের দিকে আসতেই সাদা মাইক্রো দেখতে পায় এবং দুই দিকে দুইজন করে লোক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পায়। তাদের কাছাকাছি আসতেই ুইজন ওর দিকে চলে আসে। একজনের হাতে বড় একটা ছুরি, শুধু মুখে বলে" স্যার আপনারও কিছু করার নেই, আমারও কিছু করার নেই" বলতে বলতেই কোপ মারে। জুলির হাতে ছিল পিস্তল, ও রিক্সা থেকে গড়িয়ে পড়ে। মুখে বলে "খবরদার আগাবি না, গুলি করব" । এর মধ্যেই ওর দুই কলিগ পিছনের রিক্সায় আসতেছিল। ওদের দেখে ওরা মাইক্রো করে পালিয়ে যায়। জুলির হাতে তখন একটা মার্ডার কেস্ এর মামলা ছিল। সেই মামলায় চার্জশিট দিয়েছিল এবং ওদের ফাঁসির অর্ডার হয়। অথচ কোর্টে তারা জামিন পায়। কিন্তু এতো প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী থাকার পরেও যখন কোর্ট থেকে এইসব আাসামী জামিন পায়, তখন সত্যি কি পুলিশের কিছু করার থাকে ?

২০০৭ থেকে ২০০৮ জুলি ধানমন্ডির সেকেন্ড অফিসার। ওকে বাসায় আমরা কখনোই পাইনি। ওর বাচ্চারক কখন হামাগুড়ি দিতে শিখলো, কখন াবা ডাকা শিখল, কখন হাটতে শিখল, কখন নতুন দাঁত উঠল, কখন ওর বাচ্চারা অসুস্থ হল, কখন ওর মা অসুস্থ হল হাসপাতালে কখন ভর্তি করলাম, কি চিকিৎসাহবে ও কিছুই বলতে পারে না। কখন ওর মায়ের হার্টের অপারেশন হল, কখন ওর বাবার এম আর আই করানো হল ও শুধু ফোনেই শুনে নিত, শুধু বলত"আচ্ছা ঠিক আছে, ব্যস্ত আছি পরে শুনব"। ও যখন বাসা থেকে যেত তখন মেমন সোনা ওর পা জড়িয়ে ধরে থাকত। রিয়ান সোনা একদিন ওর ফোনই বাথরুমে ফেলে দিল। আমাকে আলত আলত করে এসে বলছে,"আজ না বাবা বাইরে যেতে পারবে না, বাবার ফোন ফেলে দিয়েছি"। আমি ভাবলাম সর্বনাশ ওয়ারলেস ফেলে দেইনি তো ! যেয়ে দেখি ওর মোবাইল ফোন ফেলে দিছে। ওর বাবাকে সেদিন দেখেছি, ছেলেকে জড়িয়ে স্যরি বলতে, চোখ ছল ছল হতে। এই আমি, আমার কতো অভিযোদিনের পর দিন, রাতের পর রাত একা রেখেছ তার উপর !

-কখনো সময় দিয়েছো ?

-কোথাও বেড়াতে নিছ ?

কতো কতো যে অভিযোগ শুনতে হয় এই পুলিশ অফিসারদের ! যখন তাদের পরিবার তাদের দিকে এই এতো অভিযোগের পাহাড় তুলে দেয় তারা শুধু অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে। মনে মনে ভাবে," তুমি অন্তত বোঝ না"। তুমিই তো আমার নিরাপদ আশ্রয়, আমার সন্তানদের আশ্রয়"। অফিসের এতো চাপ"। আমি তো তোমার পাশেই আছি, তুমি তো আমার শক্তি"। অথচ আমরা বউরা বুঝেও বুঝি না, বুঝি সবই মানতে চাই না। এমনও হয় এক যায়গাতে হয়ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকেছে। খাওয়ারও সময় পায় না। সবারই রেষ্ট নেবার সময় আছে ওদের নেই। ওদের থাকার ভাল যায়গাও নেই। সব ডিপার্টমেন্টের নিরাপদ ও নিজস্ব থাকার কোয়ার্টার আছে এদের নেই। আমাদের পোষ্টিং হলে, আমরা একারাই থেকে যাই, সে চলে যায় নতুন কর্মস্থলে। কারণ তাদের যে বাসা খুঁজে পেতে হবে! না, আমি কোনো অভিযোগ করছি না। শুধু বাস্তবতা বলছি।

একটাপুলিশ অফিসার তার বাসার বাজারটাও করার সময় পায় না। তার সন্তান ও পুরো পরিবারের দ্বায়ির্ব থাকে পুলিশ গৃহিনীর উপরই। তাই তো এই জঙ্গি গোষ্ঠি এখন তাদের পরিবারের উপর টার্গেট নিয়েছে।

পুলিশ অফিসারদের বাচ্চাদের কাছে মাইই সব থেকে বড় আশ্রয়। অন্য চাকরি করে পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেওয়া যায়, কিন্তু পুলিশে চাকরি করে নয়। তাই উপলব্দি করতে পারছি, মিতু ভাবীর বাচ্চা ও পরিবারটির কি হবে।

লেখার ছিল আরো অনেক কিছু, কেন লিখতেই পারছি না। বার বার বাচ্চা দুইটার কান্না কানে আসছে।

বাংলাদেশের জনগন, ভুল করলে পুলিশের মাইর খাইলে পুরো পুলিশের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে। জানিনা কবে কখন আমরা এদের শ্রদ্ধাভাজন হব।

পরিশেষে বলতে চাই, সবাই সবার অবস্থান থেকে সৎ থাকুক। এই জঙ্গি গোষ্ঠী কিছুতেই বাবুল সাহেবের মনোবল কিছুতেই ভাঙতে পারবে না। হ্যাঁ এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে তার সময় লাগবে। ত

0 Shares

২২টি মন্তব্য

  • খসড়া

    এভাবে আর বলো না। তোমার পরিচিতি তোমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার সুযোগ করে দেবে। ব্লগে নিজের অবস্থা প্রকাশ না করাই ভাল। অনেকের বিরুপ মন্তব্য তোমার মন খারাপ করে দেবে। এই পোস্টে নয় অন্য পোস্টে হয়ত তোমাকে ব্যঙ্গো করবে বা ব্যক্তিগত আক্রমন করবে। ভাল থেক। আমার পোস্টে দেখ তোমাকে কি যেন কলেছি।

  • আবু খায়ের আনিছ

    আপনার এবং আপনার স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সবাই সমান নয়, আর ব্যাতিক্রম উদাহারণ হয় না। হ্যাঁ আপনার উপরোক্ত কথাগুলো সত্য, কিন্তু মুদ্রার এক পিঠ দেখে ত অন্য পিঠের কথা বলা যাচ্ছে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ আর সংখ্যালুঘু এই দুইটা শব্দ দিয়ে আমরা পুরু পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতির সব বলে দেই। ইসরাইল খারাপ বা ইসরাইল এর মানুষ খারাপ কথাটা কতটুকু সত্য? আমরা হুজুগে বাঙালী এই কথা্টা প্রায় শুনি, কিন্তু আসলেই কতটা সত্য? বাঙালী বলতে পুরু জাতিকে বুঝানে হচ্ছে, তাহলে কি সবাই হুজুগে? ইসলাম মানেই সন্ত্রাস প্রচার করা হচ্ছে, আসলেই কি তাই? বিষয়টা এখানেই।
    বাবুল আক্তার বা আপনার স্বামীর মত পুলিশ অফিসার এখনো অনেক আছে, আর আছে বলেই দেশে এখনো গৃহ যুদ্ধ শুরু হয়নি, বা এখনো ক্রামই করতে হলে আড়ালেই করতে হয়। যদি সবাই খারাপ হয়ে যেত তাহলে প্রকাশেই ক্রাইম ঘটা শুরু হত।

    আর আপনার একটা কথার সাথে আমি সহমত আর সাথে আর একটু যোগ করে বলতে চায়, আমাদের দেশে আইন এর অনেক ফাকঁ ফোকর আছে যেগুলোর ব্যবহার করে ক্রিমিনালরা পার পেয়ে যাচ্ছে, আর দোষ বর্তাচ্ছে পুলিশের উপর। সাধারণ মানুষ আইন এর ম্যারপ্যাচ কম বুঝে তাই তাদের ধারণা পুলিশই এমন করছে।
    সাধারণ ভাবে উচ্চ আদালত যখন ফাসিঁর আসামীকে জামিন দেয় তখন পুলিশের আর কি করার থাকে, উপরন্তু জামিন প্রাপ্তদের নজরে রাখতে হয় যাকে আমি বা আমরা বলতে পারি এক ধরণের নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
    যারা ভালো তারা ভালো আর যারা খারাপ তারা খারাপ।

    সকল ব্লগারের কাছে একটা কথা থাকবে, খসড়া আপু যে সংশয় প্রকাশ করেছে তার যেন বাস্তবায়ন না হয়। মৌনতা আপু তার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ, আবেগ ভালোবাসা, অনুভূতিগুলো আমাদের শেয়ার করেছেন, আমরা যেন উনাকে এই কথার জন্য ব্যাক্তিগত আক্রমণ না করি।

    শুভ কামনা আপু আপনার এবং আপনার স্বামীর জন্য।

    • মৌনতা রিতু

      আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সব থেকে বড় কথা পুলিশের বদনামটাই বেশী ভাসে। এই স্বাস্থ্য বিভাগটির দিকে, শিক্ষা ব্যবস্থার দিকেই একটু তাকিয়ে দেখুন। আসলে আমরা জনগনরাই খারাপ। আওয়াজ তুলি না। আওয়াজ তুললেই যে গায়েব হই।
      অনেক অনেক ধন্যবাদ, এমনভাবে পাশে থাকার জন্য।

      • আবু খায়ের আনিছ

        আমি যদি আমার ঘাড়ে উঠিতে না দেই তবে কেউ উঠতে পারবে না। আমাদের বিষয়টা হয়ে গেছে তার উল্টোটা। সেচ্ছায় ঘুষ দেওয়ার একটা প্রবণতা আমাদের মধ্যে চলে এসেছে। শর্টকাট বা সংক্ষিপ্ত সময়ে সব চাই আমাদের। সোজা কথা একটাই, আজ থেকে সবাই প্রতিজ্ঞা করুক, আমি ঘুষ দিব না, কাল থেকে ঘুষ খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

    • মৌনতা রিতু

      ঠিকই বলেছেন। থানার অবস্থা আসলেই খারাপ। কিন্তু এখন কোর্টের অবস্থাও যে কি করুণ! আপনারা বুঝবেননা।

  • ইনজা

    এই লেখাতে হয়ত আপনি অনেক বিরুপ মন্তব্য শুনতে পারেন কিন্তু যা লিখেছেন এতে পুলিশের প্রতি আমার মাথা শ্রদ্ধায় নত হোল।

    জয়তু পুলিশ বাহিনী, সকল পুলিশ ভাইদের স্যালুট।

  • স্বপ্ন

    ভাল এবং মন্দ সব পেশাতেই আছে। একজন অসৎ শিক্ষকের কথা তেমন প্রকাশ হয়না। একজন ছাত্রকে অমানুষ বানিয়ে দিলেও শিক্ষকদের দোষ কেহই দেখেনা। পুরাতন ধ্যান ধারনার জন্য পুলিশকে দোষী ভাবে সবাই। নতুন পুলিশ আসায় অবস্থার বেশ উন্নতি হচ্ছে। পুলিশের সীমাবদ্ধতাকে কেহ আমলে নেয় না।
    আপু আপনার বর জুলু ভাইয়াকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এসব কথার প্রচার হওয়া খুবই জরুরী।

    • মৌনতা রিতু

      ঠিকই বলেছেন। মাঝখান থেকে আমরা সাধারণ মানুষ জাতাকলে পড়ি। সরকারী বাস, ট্রেনে জার্নি করবেন, সেই শান্তিটুকুও নেই। এই সাধারণ মানুষই কিন্তু নিয়ম ভাঙছে। গুটিকয়েক প্রশাষনের লোক প্রতিবাদ করলে, উল্টা বদনাম দিচ্ছে। ঘুষ খাওয়ার বদনাম দিচ্ছে। সামান্য জমি রেজিষ্টির অফিসের এক পিয়নের দাপট দেখেছেন ? কোথায় যাবেন বলুন ? কোথাও পুরোপুরি শান্তি নেই।
      আপনার এই সোনেলার পরিবারের সবার ভালোবাসায় সত্যি আমি শিক্ত। কৃতজ্ঞতা জানাই অন্তর থেকে।

  • ইকবাল কবীর

    কিছু মনে করবেন না, আপনার স্বামীর মত অনেক অফিসারই আছে ভালো কিন্তু খারাপের সাগরে এই ভালো মুক্তা গুলি খুজে পাওয়া অনেক দুস্কর।সামান্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে গিয়ে আমি জীবনের প্রথম পুলিশ হয়্রানির স্বীকার হই।তারপর শেষ পর্য়ন্ত বাধ্য হয়ে স্হানিয় প্রভাবশালী নেতা ধরে কাজ সারতে হয়েছে।তারপর দেশের বাইরে যাবার আগে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নামে চাদা বাজি, নতুন করে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করার সময় আবার চাদাবাজি। আমি বলছি না সবাই খারাপ কিন্তু শতকরা বেশিরভাগ খারাপ, দুর্নীতিবাজ। আবারো বলছি আপনাকে পারসোনাল এ্যাটাক করিনি, আমার সাথে যা ঘটেছে তার অভিজ্ঞায় বললাম।

    • মৌনতা রিতু

      এমন হয় না যে তা তো বলি নি। প্রথমেই তো বললাম, ভালোমন্দের সংমিশ্রনেই এই সমাজ। তবুও দূর্ণিতি পুলিশ যেটুকু করে তা প্রকাশই হয় বেশী। সমাজের অন্যান্য পদের অবস্থা ও তো দেখছি আজকাল। কিছু ঠিকাদার আজকাল বিল্ডিং বানাচ্ছে বাঁশ দিয়ে। এদের কি ফাঁসি হওয়া উচিৎ নয়? তবুও সবাই সচেতন হোক, এই কামনা। সবাছ সবার যায়গা থেকে ভালো থাক।

  • অপার্থিব

    ভাল খারাপ সব পেশাতেই আছে কিন্ত সমস্যা হল পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া মারাত্নক দুর্নীতি গ্রস্থ। একটা কনস্টেবলের চাকরী পেতেও আজকাল ৫-৭ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। পাশাপাশি দলীয় করনের ভিত্তিতে নিয়োগ , গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পেতে ঘুষ এই ব্যাপারগুলো তো আছেই। যেহেতু অনেক টাকা খরচ করে চাকরী পেতে হয় সেহেতু পুলিশের অনেক সদস্যের মধ্যে অবৈধ উপায়ে সেই বিনিয়োগের খরচ উঠানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অর্থ উপার্জনের নেশা মানুষের মোরালিটি ধবংস করে, পুলিশো ব্যতিক্রম নয়। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে পুলিশ সব সময় শাসক শ্রেনীর প্রতিনিধিত্ব করে তাই শাসক শ্রেনীর প্রতি জনগণের ক্ষোভ অধিকাংশ সময় পুলিশের উপরে গিয়ে পড়তে দেখা যায়।

    • মৌনতা রিতু

      এই তো ঠিক ধরেছেন। আর দারোগাতে ঢুকতে এখন ১০/১৫ লাখ টাকা লাগতেছে। ১৯৯৪ সালে ঢুকেছিল বেশ কিছু অফিসার বিনা টাকায়। তবে বংশ ও শিক্ষাও একটা ব্যপার আছে। এখন পুলিশের কিন্তু বেতন অনেক। রেশন মিলায়ে ভালোই অবস্থা। এখন অনেকেই আছে বাইরে এক কাপ চাও খেতে চায় না।
      তবে অনেক খারাপও আছে। তাতো সত্যি। চামারি একটা স্বভাব তাদের। তবে মামলা তদন্ত করতে পুলিশের রাজনৈতিক সাপোর্ট ও অফিসিয়াল সাপোর্ট কম বলেই কোনো মামলাই সঠিক তদন্ত হয় না।

  • জিসান শা ইকরাম

    পুলিশের ইমেজ সঙ্কট আছে। মানুষ নিজের বাড়িতে ডাকাতি হবে, এতে রাজী আছে- কিন্তু পুলিশ আসবে বাড়িতে এতে চরম আতংকিত হয়। পুলিশকে যতটা ভয় পায় পাবলিকে অন্য কাউকে এতটা ভয় পায়না, এটিই বাস্তবতা। কারনটা একেবারে স্পষ্ট। প্রতিদিন একটি চরম অভ্যাসের দৃশ্য – ট্রাফিক পুলিশরা শহরের যানজট নিরসনে ব্যাস্ত না থেকে মহাসড়কের বাইপাশে দাঁড়িয়ে থাকে। পাণ্য পরিবহনের প্রতিটি ট্রাক দাঁড় করায়, টাকা নেয় প্রকাশ্যে, অপরিচিত মটর সাইকেল, মাইক্রো, ব্যাটারী চালিত রিক্সা, লাশ বাহী এম্বুলেন্স সব কিছু থেকে টাকা নেয়। এটি দিনের বেলায় প্রকাশ্যে। এই টাকা নেয়ার দৃশ্য থেকে সবাই ধারনা করে, থানায় কি পরিমান লেন দেন হতে পারে।

    কিছু সৎ পুলিশ অবশ্যই আছেন। হাতে গোনা যায় এদের সংখ্যা। এনারা ডিপার্টমেন্টেও কোণঠাঁসা হয়ে থাকেন। অসৎ না হলে পোষ্টিং দিয়ে দেয়া হয় পুলিশ ফাঁড়ি বা কোর্টে।
    আপনার জুলি অবশ্যই সৎ একজন মানুষ। আমি জানি আপনারা সমস্ত বিলাসিতা ত্যাগ করেছেন, জুলির সমান রাংকের অফিসারদের প্রায় সবার নিজস্ব গাড়ি বাড়ি আছে। তাদের কাছেই কিন্তু জুলি হাসির পাত্র। আমরা যারা সমাজ নিয়ে ভাবি, তাদের কাছে জুলি একটি আদর্শের নাম, একজন সৎ পুলিশ অফিসারের প্রতীক। এভাবেই থাকুন আপনারা, সৎ থাকা একটি শক্তি।

    একজন পুলিশ অফিসারের জীবন সঙ্গীই পারেন তাকে সৎ রাখতে।
    শুভ কামনা।

    • মৌনতা রিতু

      দিতে হবে পরিবারের সাপোর্ট অবশ্যই। কিন্তু অনেক সময় একই পরিবারে এমন অন্য এক শরিষার ভুত শয়তান, চামার থাকলেও শুনতে হয় অনেক কথা।
      খারাপদের কারনে ভালরা আজ কোনঠাসা। এরা কাজই করতে পারেনা। মামলা তদন্তে উপর থেকে সঠিক কোনো সাপোর্টই পায়না। নেই সরকারি গাড়ি। এক সময় তো মকমলা লেখার ডকেটও পুলিশের নিজের টাকায় কিনতে হত। একটা মামলায় প্রচুর খরচ। মামলা তদন্ত থেকে শুরু করে শেষ রিপোর্টটি দেওয়া পর্যন্ত। কিন্তু সরকারিভাবে অনেক খরচই পুলিশ পায়না। কিন্তু তারপরেও যে অফিসার অন্তত এই কথাটা চিন্তা করবে যে, খুনি মামলায় ভিকটিমের হয়ে অন্য কারোরই আপোষ করার ক্ষমতা নেই, তবেই সেই মামলা সঠিকভাবে তদন্ত হবে। সেই সাথে তদন্ত কারীর মনে থাকতে হবে বিশ্বাষ যে, মৃত্যুর পরে জবাবদিহি করতে হবে, অন্তত ভিকটিমের সামনেও। আর তখন যদি সে জিজ্ঞেস করে এবং বলে” স্যার আমার মামলাটা প্রথমেই আপনার কাছে গেছিল, আপনি তো এর সঠিক বিচার করলেন না, আমি যে আরো বাঁচতাম, এই পৃথিবী খারাপ হলেও বাঁচার স্বাধ ছিল, আমার সন্তান ও প্রিয়জনের জন্য”।
      আর যারা চামার তাদের জন্মেই দোষ আছে। নেই পারিবারিক শিক্ষা।

  • লীলাবতী

    আপু ভাইয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এসবের বহুল প্রচার কাম্য। পুলিশ জনগনের বন্ধু এই শ্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিলেই জনগন আর পুলিশ যে প্রতিপক্ষ এটি আর থাকবেনা।

    • মৌনতা রিতু

      হবে, কিন্তু দেখে যেতে পারব না। যতোদিন পুলিশ রাজনৈতিক আঁচল থেকে মুক্ত হবেনা ততোদিন সম্ভব নয়। ওদের মেরুদন্ড ওদেরকেই সোজক করতে সবে। তবে গুটিকয়েক লোক দিয়ে হবে না। দরকার একদম উপর থেকে। তবেই নিচের গুলো সোজা হবে।

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    আপু আলোর নীচে যেমন অন্ধকার, আবার তেমনই অন্ধকারের পাশেই আলো। আপু সততা অনেক পুলিশের মধ্যেই আছে।

    • মৌনতা রিতু

      এই সততা সবার মধ্যই দরকার। এখন পুলিশের অনেক বেতন। রেশন মিলায়ে প্রায় চল্লিশ/পঁয়তাল্লিশের মতো। এর বেশী ছাড়া কম না। তবে কেন নিজেকে বেশ্যা বানাতে হবে ? মেরুদন্ড কেন সোজা হবে না। এই জুলিকে একটা রিপোর্ট দেবার জন্য মার্ক করা হইছিল, সে ইচ্ছা করলে টাকা দিয়ে মিটিতে পারত, ওর এক কথক একটা টাকাও দিব না। সবাই বলে ঘাড় ত্যাড়া, এই তো এখন কোর্টে আছি। তবে তার আল্লাহর রহমতে অনেক সুনাম। এটিই আমার বড় সম্পদ।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ