যৌন নিপীড়ক  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার এ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম
যৌন নিপীড়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার এ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম

একঃ
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার এ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুলকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।এর আগে সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কার করে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।সাইফুল ইসলাম চিরকুমার। তার বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্রী হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগপত্রে যা লেখা আছে:
আমি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ষষ্ঠ সেমিস্টার থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী। গত ২৬ আগস্ট আমাদের ৩৫২ কোর্সের একটি মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৮ সেপ্টেম্বর আমাকে বিভাগ থেকে ফোন করে জানানো হয় চেয়ারম্যান স্যারকে ফোন দিতে। তাকে ফোন দিলে তিনি ব্যস্ত বলে কেটে দেন। পরে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, তোমার পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের নম্বর কেটে দেয়া হয়েছে। তবে আমি তোমাকে একটি সুযোগ দিতে চাই। তিনি আমাকে রবিবার রাতে ফোন করতে বলেন। আমি যেন কাউকে কিছু না বলি সে ব্যাপারে জানিয়ে দেন এবং বললে অসুবিধা হবে বলেও তিনি জানান। পরে বিষয়টি আমি বিভাগের শিক্ষক ওয়াহিদা মল্লিককে জানাই। পরে গত ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেল ৩টা ৫৩ মিনিটে ফোন করে ইন্টারন্যাশনাল হলের বাঁ দিকের রাস্তার একটি বিল্ডিংয়ের ৫ তলায় যেতে বলেন। সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে গেলে সাইফুল ইসলাম (চেয়ারম্যান) আমাকে ভেতরের ঘরে বসতে বলেন এবং আমার বিভিন্ন কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন। পরে আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি-না সেটি জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে আমি খাতার প্রশ্নের নম্বর কেটে দেয়ার কারণ এবং এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ অন্যদিকে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে একটি বাদামের টিন দেন এবং হঠাৎ মুখে তুলে খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন আমি সন্দেহ করে মোবাইলে রেকর্ড করতে থাকি। কিন্তু তিনি আমাকে টানতে চাইলে আমি ওনাকে বাধা দিতে গিয়ে মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তিনি আমাকে হাত ধরে টেনে সোফা থেকে বিছানায় নেয়ার চেষ্টা করেন। আমি বাধা দিতে থাকি এবং বলতে থাকি আমি বাসায় যাব। তিনি ২-৩ মিনিট আমাকে টেনেহেঁচড়ে সোফায় নেয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি আমার পরীক্ষার খাতাটা দেখিয়ে বলেন আমি এখানে কী নম্বর দেব। কত দেব তোমাকে। তখন আমি উনাকে আপনার যত ইচ্ছা ততই দেন বলে চিল্লাচিল্লি শুরু করি এবং কাঁদতে থাকি। পরে তিনি ঘরের দরজা খুলে দেন এবং আমি দৌড়ে পালিয়ে আসি। সংবাদের লিংক

মন খারাপের অনুভুতিঃ
* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একটি বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে এমন ঘটনা প্রত্যাশিত নয়।ছাত্রীরা নিরাপদ নয় কোথাও।

* আমাদের সামাজিক অবস্থা এত বড় জঘন্য একটি ঘটনার পরেও ছাত্রীর নাম প্রকাশ অনুমোদন করেনা। একজন নারী প্রকাশ্যে চিৎকার করা তো দুরের কথা অভিযোগ পত্রেও নাম প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ নন।অথচ এই ঘটনা যদি একজন ছাত্রের বেলায় ঘটতো, অবলীলায় সে মিছিল মিটিং করে এর বিচার চাইতে পারতো। কেবল মাত্র নারী এ কারনে কত অসহায় আমরা। নারীরা কি কখনো পরিপুর্ন মানুষ হিসেবে প্রকাশিত হবে আমাদের দেশে?

দুইঃ
রুমানা মঞ্জুরকে কে কি আমরা ভুলে গিয়েছি? তিনি এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। অন্ধত্ব তাকে থামিয়ে দিতে পারেনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে কানাডা গিয়েছিলেন। মাঝে ২০১১ সালে দেশে ফিরলে তাঁর স্বামী হাসান সাঈদ সুমন তাঁকে মারধর করেন এবং একপর্যায়ে নখ দিয়ে তাঁর দুটি চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা করেন। চোখ দুটি তুলতে না পারলেও আজীবনের জন্য দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়।
পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য কাজ করছেন তিনি। এই ভিডিওতে দেখুন রুমানা মঞ্জুরের ভাষন।কত সাবলীল ভাবে তিনি তার চিন্তা ভাবনা উপস্থাপন করছেন।

রুমানা মঞ্জুর এখন
রুমানা মঞ্জুর এখন

মন খারাপের অনুভুতিঃ
* কত সম্ভাবনাময় একজন মানুষ ছিলেন তিনি।মনের জোরে একজন মানুষ কি করতে পারেন রুমানা মঞ্জুর তার উদাহরন।
* একজন নারী বলেই উচ্চ শিক্ষায় বাঁধা পেয়েছিলেন তিনি। এই উচ্চ শিক্ষা নিতে যতি তার প্রাক্তন স্বামী কানাডা যেতেন,তাকে কি এই অন্ধত্ব বরন করতে হতো?
* নারীদের মুক্তি নেই আসলে।

0 Shares

৩২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ