সারা জীবনের অভিজ্ঞতা তিক্ততা সব কিছুই যৌবন সায়াহ্নে এসে ধরা পড়ে যখন জীবন আর চলতে চায়না।জীবন যখন যেমন তেমন ভাবেই নিজেকে চালিয়ে নেয়া হল বুদ্ধিমানের কাজ।আমি নিজেকে সেই ভাবেই চালিয়ে নিতে চেষ্টা করতাম।কখনো যে এর বর্ত্যায় যে ঘটেনি তা কিন্তু নয়,তখন নিজেকে বিলিয়ে দিতাম রঙ্গীন ভুবনে।কিছুটা সময় হলেও ভুলে থাকার চেষ্টা করতাম যত রাগ যত অভিমান যত দুঃখ কষ্ট।আজকাল আর কোন কিছুর উপর বিশ্বাস নেই শুধু পৃথিবী বিয়োগের দিন ক্ষণ ছাড়া।

সেদিন হঠাৎ এক হুজুর বন্ধুর সাথে দেখা।সেই যে কলেজ লাইফ শেষে জীবনের তাড়নায় বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম এ যাবৎ আর দেখা হয়নি তার সনে।এ রকম আরো বন্ধু যারা ছিলো তারাও যেন কালের স্রোতে ভেসে আছেন ব্যাস্ত এ পৃথিবীর বুকে;কেউ ইহ জগতে কেউ বা পরকালে।আজ প্রায় পনের বিশ বছর পর দেখা এই হুজুর বন্ধু করিমের সনে।হুজুর বন্ধুটির সনে আরো দুজন হুজুর টাইপের অচেনা বন্ধু ছিলেন।আমরা প্রায় পাচ ছয় জন বন্ধু একত্রিত হলাম চায়ের এক টেবিলে।
হুজুর বন্ধুটির সাথে মোসাফা করমর্দন করে আত্মাকে শান্ত করলাম অতপর হুজুর বন্ধুটির জিজ্ঞাসা।
-কিরে দোস্ত কেমন আছস?
আমিতো অবাক এ আবার কোন দোস্ত।এত বড় বড় দাড়ি আর টুপি পাঞ্জাবিওলা বন্ধু বা দোস্ততো আমার কোন কালেই ছিলো না।
-কে ভাই আপনি?
-আরে আমারে চিনছ নাই আমি করিম…মাসুদ করিম।
-তাই নাকি!
-হ,স্কুল থেকে কলেজ লাইফ তারপর পুরো পনের বিশ বছর আমরা বিচ্ছিন্ন।এতো দিন পর না চেনারই কথা।
আমি যেন তখনো চিনতে পারছি না।তাকে আমি তার মাথা হতে টুপি নামিয়ে,গালে গজানো বড় বড় দাড়িগুলোকে দুহাতের তালু দিয়ে আড়াল করতে বললাম।সে মুচকি হেসে বলল-তুই একটুও বদলাসনি সেই আগের মতনই আছস।সে যখন আমার কথা মত টুপি আর দাড়িগুলোকে আড়াল করল তখন চিনতে পারলাম।
-আরে মাসুদ যে…।সেও যেন কঠিন এক পরীক্ষায় পাশ করল।
-যাক বাচা গেল।শেষ পর্যন্ত চিনতে পেরেছিস।কেমন আছস?
-আর বলিস না!এইতো চলছে জীবন,জীবন যখন যেমন।তুই কেমন আচিস?
-আলহামদুলিল্লাহ ভাল।যা আছি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।চল একটু  চিত্র শিল্পী আরিফের বাসায় যাই ওখানে শিল্পী মনিরও আছে।
-তাই নাকি!তা চল।

বহু দিন পর দেখা হবে!ভাবতেই মনে এক বিশেষ শিহরণ জাগে।সেই কবে ওদের সাথে সখ্যতা ছিলো যেন কাঠালের আঠা।আমি আর মাসুম ঢাকা চারু কলায় আর ওরা- আরিফ-মনির ঢাকায় চারুকলায় চান্স না পেয়ে চলে গেল চিটাগাং চারুকলায়।অতপর আমার বিদেশ চলে যাওয়া সম্পর্কের যোগাযোগে দীর্ঘ কালের বিচ্ছেদের সূত্রতা সৃষ্টি ।অথচ এক সময় কত মজাই না করতাম।নারায়ণগঞ্জ কি ঢাকা দেশের বহু জেলাতেই ছুটে যেতাম কোন বর কন্যার বিবাহের হলুদ সন্ধ্যায়,আলপনা থেকে শুরু করে বাসর ঘর পর্যন্ত কত কাজই না করেছি এক সাথে।সেই কাজগুলোতে মনের তৃপ্তি ছিলো,ছিলো টিনএজের আনন্দ-উল্লাস।আজ হয়তো দীর্য প্রায় বিশ বছর পর ওদের সাথে দেখা হবে।মনে এক ধরনের কৌতুহল কাজ করছিল।ওদের দেখলে চিনতে পারবতো!নাকি মাসুদের মত করেই ওদের চিনতে হবে।

টেম্মুতে করে আরিফদের বাসার সামনে নামলাম।বহু বছর পর এ এলাকায় এলাম।এক সময় রাজনৈতীক আর বন্ধুত্বের কারনে এখানেই আমার ঘর দুয়ার ছিলো।আরিফকে ডাক দিলাম ওদের গেইট থেকে।আরিফ এলো।সেই আরিফ আর এই আরিফের মাঝে কোন পার্থক্য নেই শুধু মাঝখান দিয়ে কতগুলো অদেখা বছর গড়িয়ে গেল।প্রথমে আমিই বললাম।
-কিরে দোস্ত কেমন আছস?
-ভাল।তুই কেমন আছস?
-ভাল ছিলাম না,তবে এখন ভাল আছি।
-মানে?
-এইতো,এতোটা কাল তোদের ছাড়া কি ভাল থাকতে পারি?
-এটাই জীবন বন্ধু!জীবনের প্রয়োজনে কত কিছুই না আমাদের সয়ে যেতে হয়।তা আয়,ভিতরে আয়।মনিরও আছে।
-নাহ্..ওরে ডাক দে…বহু দিন পর দেখা।আগের সেই নদীর পাড়টায় বসব।
-ঠিক বলছো।মনির ঐ মনির….।

মনির এলো,সেই আগের মতই আছে সে।সেই সিমসাম দেহে কাধ বরাবর ঝাকড়া চুল,চোখে পাওয়ারের চশমাঁ।মুখ ভরা মিষ্টি হাসি যেন একজন স্বার্থক ফাইন আর্টে এর চিত্র শিল্পীর অবিকল রূপ।
-দোস্ত কেমন ছিলে?
-ছিলাম,ভাল মন্দে মন্দের ভাল।
দুজনেই একটু মিষ্টি হাসি অতপর চিরচেনা সেই শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় গিয়ে বসলাম।নদীর পাড়ে স'মিলের অনেক বড় বড় গাছ ছিলো সেখানে বসলাম।নদীর বৈকালিক হিমেল হাওয়া মন যেন উতলা।সেই আড্ডাতে আরো বেশ কিছু ওদের পরিচিত-আমার অপরিচিত নতুন ফ্রেন্ড ছিল।মাসুদের মুখ ভর্তি বড় বড় দাড়ি আর মাথায় গোল টুপি দেখে মনির একটু রসিকতা করল।
-কিরে মোল্লা নামাজতো মনে হয় পাঁচ ওয়াক্তই পরিস তা বেহেস্তের টিকেট কি কর্নফার্ম করছ?
-আল্লহর পথে যখন আছি তখন সব কিছুই আল্লাহ মালুম।
-দেখা পাইছস নি?
-না,
-না দেইখাই প্রেম!
-স্রষ্টাকে দেখা যায় না,তিনি নিরাকার তার কোন শরিক নাই তাই বিশ্বাস করেই মানতে হয়।
-মার পেটের ভাইয়ের লগে ভাইয়ের প্রতি মূহুর্তই দেখা অথচ কারো প্রতি কারো বিশ্বাস নাই আর তুই না দেইখাই বিশ্বাস করছ।মইরা গেলে এ সব বিশ্বাস টিশ্বাসের কি মুল্য।তাই আমার ফর্মুলা হল আমি মানুষ,আমিই শ্রেষ্ট,আমিই ভগবান,আমিই আল্লাহ আমিই যীষু-খ্রীষ্ট।ক্ষণিকের জীবনে নগদ যা পাই তাই বিশ্বাস করি তাই খাই।
-এই যে বললি ক্ষণিকের জীবন তা চিরস্থায়ী জীবন হতে পারিস না কেন?পারলে দেখা মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে।বুঝলি,উপরওয়ালার  ইচ্ছেই ঘটে,চলে,মরে,বাচে।
-তুই আবারো ভুল বললি,সব যদি তার ইশারাই ঘটে তবে তুই মানুষ পাপী হস কেমনে?

তাদের কথার মাঝে অন্য এক বন্ধুর হানা পড়ল।
-আমি একটু বলি,, মাসুদ ভাই আমার কিছু প্রশ্ন আছে,প্রশ্নগুলো হল কথা-যখন তুললেন তখন বলি-মানুষ জন্মেই কিন্তু কোন ধর্ম নিয়ে আসে না আর যেহেতু জন্ম মৃত্যু উপরওলার হাতে তাহলে ভুমিষ্ঠ শিশুটি যখন অন্য ধর্মের উদরে ভুমিষ্ঠ হয় তখন সদ্য জন্ম গ্রহন করা মানুষটির কি দোষ?সেতো তার পিতা মাতাকেই অনুসরণ করবে,তাই না?তাহলে সে কেন আপনার আমার ধর্ম মতে স্বর্গে যেতে পারবে না?যদি সে দুনিয়ায় পূণ্য ব্যাক্তিটি হন?জগতের বহু জ্ঞানী মনিষী গত হয়েছেন বা হবেন- যারা জন কল্যায়ণে বহু নজির এ পৃথিবীতে স্থাপন করে গেছেন,যার আবিষ্কার জ্ঞান দিয়ে পুরো পৃথিবীর সকল ধর্মের লোকেরা উপকৃত হচ্ছেন।তাহলে পরকালে তাদের অবস্থান কোথায় হবে?তারাতো কোন ধর্ম পরিবর্তন করেন নাই।অধিকাংশি আপনাদের ভাষায় নাস্তিক অথচ পরপোকারী,দুনিয়া ভরা ভক্ত তাদর।স্রষ্টাই বলেছেন,মানুষ যাকে ভাল বাসবে আমিও তাকে পাশে রাখব ভালবাসব।তাহলে আপনার দৃষ্টিতে ধর্মীও দৃষ্টিতে তাদের সম্পর্কে একটু ব্যাখ্যা দিবেন।

বিবি আদম-হাওয়া সম্পর্কে কম বেশ সব ধর্মেও এক মত পৃথিবীর প্রথম মানুষ হিসাবে।এখানে বলে রাখা ভাল অন্যান্য ধর্মে শুধু নামের পরিবর্তন কেবল হিষ্টোরী প্রায় একই রকম। হাওয়া গন্ধম খাওয়াতে গন্ধম গাছের অভিশাপে তার রজস্রাব ও সন্তান প্রসবের কষ্ট হয় কিন্তু অন্য প্রাণীরা গন্ধম খায় নাই তাহলে একই কষ্ট তাদের কেন হয়? আদম যদি গন্ধম না খাইত তাহলে স্বর্গেই থেকে যেত।তাহলে স্রষ্টা কেন স্বর্গ-নরক সৃষ্টি করলেন?আদমের আগেই  হযরত মুহম্মদকে সৃষ্টি করেছেন মানুষকে হেদায়েতের জন্য।আদম গন্ধম না খেলে মুহাম্মদের সৃষ্টির প্রয়োজন কেন?তাহলে আদম কি স্রষ্টার ইচ্ছাতেই গন্ধম খেয়েছে?আদমকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা ঘটানো,তাহলে তাকে স্বর্গে রাখা হল কেন?

সমাজ বিজ্ঞানের মতে আদিম মানুষ কথা এবং ভাষা জানত না।কিন্তু ধর্ম মতে আদম কথা বলতে পারতেন।তাহলে সমাজ বিজ্ঞানের এমন ধর্ম বিরোধী প্রচারণা মেনে নিচ্ছেন কেন? প্রতিবাদ করলেন না তার যুক্তি কি?

দিনকে মানুষ সাত ভাগে ভাগ করেছে।যদি ছয় বা আট ভাগে ভাগ করত তাহলে পরের শুক্র বার সাত দিন পর আসত না।তাহলে মানুষের ভাগ করা দিনের এত গুরুত্ব সকল ধর্ম স্রষ্টাদের কাছে কেন?

অনিচ্ছা থাকা সত্বেও কথাগুলো বলতে হল কেবলি ধর্মান্ধদের জন্য যারা ধর্মকে বিক্রি করে মানুষকে বয়ান দেয় সৎ ও সুন্দরের পথে আসতে অথচ তার নিজের মাঝেই অসততা।তাই ধর্ম নয় মানুষই শ্রেষ্ট।

মাসুদের অবস্থা বেশ নাজুক।তবুও মাসুদ যতটুকু সম্ভব এর ব্যাখ্যা দিলেন।সৃষ্টির রহস্য ভেদ করা বড় কষ্টকর তবুও যেহেতু মানুষ জন্ম বা সৃষ্টি হয়, স্বাভাবিক ভাবে এখানে প্রশ্ন আসে কে বা কার ইশাঁরায় তার সৃষ্টি।কেউ না কেউতো আছেন যিনি এ জগৎ সংসার কন্ট্রোল,সৃষ্টি-ধ্বংস করছেন।সব ধর্মের ধর্ম গুরুর স্ব-চিহ্ন বা মূর্তি এ জগতেই দেখতে পাই।কেউ(মানুষ) কাল্পনিক ধর্মগুরুকে সৃষ্টি করে প্রার্থনা করছেন কেউ বা আল্লাহর প্রেরিত নবীকে(হযরত ঈসা আঃ) অনুসর করে প্রার্থনা করছেন।ইসলামের দৃষ্টিতে এ সব শিরক অথচ তাদের ধর্ম মতে এগুলো পবিত্র।আমার কথা হল যাকে আমি(মানুষ) সৃষ্টি করলাম সে আমার(মানুষ) চেয়ে ক্ষমতাবান বা আমার স্রষ্টা হয় কি করে!।আমার স্রষ্টা তিনিই যিনি আমার চেয়ে শক্তি শালী,অসীম জ্ঞানের অধিকারী,অসীম দয়াবান,ন্যায়পরায়ণ,পুরো বিশ্ব ভ্রাহ্মন্ডকে কন্ট্রোল করেন যিনিঁ।পৃথিবীর মানুষ পুরো পৃথিবী,মহাশূন্য জয় করে ফেললোও জয় করতে পারেননি মৃত মানুষকে জীবিত করার ঔষধ বা থিউরি,পারেনি মানুষের উপাদান(বীর্য) ছাড়া  পরিপূর্ণ একজন মানুষ সৃষ্টি করতে,পারেননি ঝড় তুফান ভূমিকম্প জলোৎচ্ছাসতের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগগুলোকে কন্টোল করতে,পারেননি এখনো ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর সূর্য্যের রহস্য।সুতরাং স্রষ্টা নেই এমন ধারণা করার কোন অবকাশ নেই,আমাদের স্রষ্টা পৃথিবীতে পাঠানোর এক মাত্র কারন তার গুণ কীর্তন করা।

মাসুদের এমন বক্তব্যে উপস্থিত আরেক বন্ধু খন্ডনে যুক্তি দেখাল।তার মতে পৃথিবীতে মানুষ হল সব ধর্মের উর্ধে।এখানে ধর্মগুলো একেক সময় একেক প্রেরিত বান্দা এসে নিজ ইচ্ছে মত স্রষ্টার বন্দনা গেয়ে মুলত নিজ স্বার্থই হাসিল করেন।
-যদি তাই হয় মাসুদ তাহলে শোন,"পৃথিবীর আরো আট দশটা প্রাণী তো আরাধনা,উপাসনা করেনা,করলেও আমাদের মানুষের মত ধর্মে ধর্মে বিভক্তিতে তবে তারা কেন আছে?এই জীব জগতে একটা কিটের মতই আমরাও তেমনি প্রাণী হিসেবেই আছি।আমাদের প্লাস পয়েন্ট হল কীট পতঙ্গ ও অন্যান্য প্রানীর চেয়ে আমরা মস্তিস্কে উন্নত।আর সে কারণেই আমরা কখনো ঈশ্বর,স্বর্গ-নরক সহ অনেক কিছু কল্পনা করি এবং ইচ্ছে মত ধর্ম ও ধর্মীয় রীতি নীতি তৈরী করি।কিন্তু মূল কথা হল জীবন ধারণের জন্য অন্য সব প্রাণীর মতোই আমরা,এর ব্যতিক্রম নই।
ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারীর মতে,
" যিনি সৎ,নিষ্ঠাবান,ভদ্র,বিনয়ী এবং অসাম্প্রদায়িক মনের অধিকারী,তিনিই তো পরম ধার্মিক।তিনিই তো প্রকৃত মানুষ।মনুষ্যত্ব অর্জনই হলো ধর্মের প্রধান উদ্দেশ্য।মানুষের ধর্মই মানব ধর্ম অর্থাৎ, মনুষত্ব্যই মানব ধর্ম,অন্য গুলি অপকর্ম।
ভারতীয় যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞান মনষ্ক লেখক প্রবীর ঘোষ তাঁর ‘অলৌকিক নয়,লৌকিক"গ্রন্থে ববলেছেন-
"আগুনের ধর্ম যেমন দহন, ছুরির ধর্ম যেমন তীক্ষ্ণতা,তেমনি মানুষের ধর্ম হওয়া উচিত মনুষত্ব্যের বিকাশ সাধন।আর সে হিসেবে নামাজ না পড়েও বা শনি শীতলার পূজা না করেও আমরা যুক্তি বাদী মানুষরাই প্রকৃত ধার্মীক,কারণ আমরা মনুষত্বের চরম বিকাশ চাই।"

চলবে...

বহু যুগ আগের লেখা "অনুভুতিগুলোর বিশ্রাম"-০১

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ