ভাবছি, যাব-না আর
জলাভূমির ব-দ্বীপে, ঘন্টা-মিনারে চোখ-ফেলে-রেখে
চোখে আঁকবোনা অগণন ফুলের দেশ, প্রথম কুড়িফোটা সৌরভে
প্রজাপতি-রং মেখে, প্রজাপতির বেশে, কিন্তু!
আকাল-মরণ শেষে বৈশাখের সকাল-রৌদ্র যে হাঁট বসিয়েছে,
জাঁকিয়ে সে হাসছে এবারে! ঠোঁট উঁচিয়ে!!
সকাল-নির্জনতায় প্রায় প্রতিদিন-ই
দেখা হতো শঙ্কাহীন-স্রোতস্বিনী-হেজাবীসকালের সাথে,
ভাবনাহীন-বৃত্তে, ডুবো-নদীর পারে, স্বপ্নে-পাওয়া জল-স্পর্শে;
সকালের হাঁটা-পথে, সময়ের সু-বিপুল তারতম্য ভেদে
অনিয়মের-নিয়মে, অগাধ বিস্ময়ের সবুজ জলের উপচে পড়া ভিড়ে,
জল ডাহুকের ডাক শুনে, জল-বৃষ্টির আদলে, ছলকে পড়া মায়া-শিশিরে;
ভেবেছিও, কখনও-সখনও,
উদ্দাম উদোম নদীতে জাল ফেলে, চমকে-থমকে দেবো,
ঝাঁকের কাঁপন এড়িয়ে হরবর করে আচানক বলে ফেলবো,
এই, শোন শোন, তাকাও,
কৈ যাও? এলেই বা কোত্থেকে?
সহসাই পূর্ণিমা তিথির গোলাপ-ভাবনায় লেগে গেল গ্রহণ,
অপচিত হু-হু বিষণ্ণ নিভৃত-দহন অনুক্ষণ, ক্ষীণভ-আলোর-কিরণ;
হয়-না যাওয়া বহুকাল সকালের ও-দিকটায়, বহুদিন;
হয়ত যাওয়া হবে, বা-না, না-মেনে বিশুদ্ধ গাণিতিক শাস্ত্র,
প্রবল দুর্বিপাকে কুশলাদি জানা গেল-না,
নম্র-লাজের সচ্ছল-সুঠাম-সুডৌল অহল্যা-হাসিটুকুও না,
বসে নীরব-জোড়াসনে, ঝিঁঝিঁ-ঝোপের আড়াল ফেলে,
নির্বাক-নিঃশব্দ-হৃদে, কামকাজ ছেড়ে-ছুঁড়ে দিব্য চোখে
স্বপ্ন-দেখি, দূরে সমুজ্জ্বল সোনালী এক বাতিঘরের;
ইথার-অবশে।
২৮টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
কোনো এক একঘেঁয়েমী অন্ধকারের ভেতর
মসলিন ওড়না-মেঘের ফাঁকে উঁকি দেয় চৈত্রের শেষ পূর্ণিমা
দূরের ওই বাতিঘরের আলোকে ম্লান করে দিয়ে শোঁ শোঁ শব্দে হাওয়ার খুর ছুটতে থাকে,
ছুটে যেতে থাকে ভোরের দিকে।
সূর্য পর্যেষনে রাত্রি সেচে চলে জীমূত সময়
মধুমাসের সমাপ্তিতে উঁকি দেয় কালবোশেখীর বৈশাখী সকাল
অবশেষে স্বপ্নদের স্বপ্ন জাগ্রত হয় আগামীর স্বপ্ন দেখায়।
আপনার কবিতার জন্য এই কয়টি লাইন। পুরো দু’ঘন্টা লাগলো আপনার কবিতা পড়ে মন্তব্য করতে। এভাবে যদি আরোও লিখে চলেন, আমিও যা মনে আসে, ওভাবে লিখে দেবো কিন্তু।
কুবিরাজ ভাই কবিতার প্রতি রইলো মুগ্ধতা। 😀
ছাইরাছ হেলাল
আপনার উত্তরের প্রতিও অনেক মুগ্ধতা, মনে হচ্ছে এই লেখাকেও ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও।
হ্যাঁ, ভাল করে পড়েছেন, সময় দিয়েছেন তা কিন্তু বুঝতে পেরেছি। এতটা মন দিয়ে এত টা সময় দিয়ে এর আগে এমন করে পড়েছেন কী না জানি না, (কী করে তা বুঝি তা বলছি না, যে যাই মন্তব্য করুক। বড় বা ছোট কে কতটুকু পরেছে কী কী বুঝেছে কী বলতে চাচ্ছে তা বুঝতে পারা যায় বলেই জানি, আমি পারি না, অবশ্য।)
এটি লিখতে ল্যাখকের কয়েক হালি ঘন্টা গোগ্রাসে খেয়ে ফেলেছে, আপনি অবশ্যই লিখবেন তবে এমন করে রোজ রোজ নিজে লিখতে পারব তা মনে হচ্ছে না।
আপনার সুন্দর লাইন ক’টির উত্তর দিতে পারব বলে মনে হছে না, হয়ত লিখে ফেলব বা না, জানিনা,
পর্যেষনে/জীমূত –বুঝিনি
নীলাঞ্জনা নীলা
সেদিন আপনার এই কবিতাটি কেন যে এতোবার পড়লাম, আমি নিজেও জানিনা।
হয়তো চেষ্টা দেখি পারি কিনা কিছু বুঝতে। তারপরেও সন্দেহ ছিলো, কিন্তু মনে হলো যে কয়টি লাইন এসেছে তা না মিললেও দিয়েই দেই। কিছু না কিছু তো মিলে যেতে পারে।
আচ্ছা এমন কবিতা লেখেন কেন বলুন তো কুবিরাজ ভাই চুল পড়লে পরচুলা পাওয়া যাবে। কিন্তু মাথার ভেতরের স্ক্রু ঢিলা হয়ে গেলে কি করবো? ^:^
পর্যেষনে – অন্বেষণ
জীমূত – মেঘ 😀
ছাইরাছ হেলাল
কেন লিখি এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন, তব আপনি পোয়াতি মেঘের কাছে প্রশ্ন করে জেনে
নিতে পারেন, বৃষ্টি কেন হয়!!
স্ক্রু ছাড়া মাথাই উত্তম মাথা,
নীলাঞ্জনা নীলা
জেনেছি, বৃষ্টি হয় আপনাকে কবিতা লেখায় সাহায্য করতে। 😀
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্, সবই দেখছি ফকফকা।
মোঃ মজিবর রহমান
বসে নীরব-জোড়াসনে, ঝিঁঝিঁ-ঝোপের আড়াল ফেলে,
নির্বাক-নিঃশব্দ-হৃদে, কামকাজ ছেড়ে-ছুঁড়ে দিব্য চোখে
স্বপ্ন-দেখি, দূরে সমুজ্জ্বল সোনালী এক বাতিঘরের;
ইথার-অবশে।
ভাল লাগা রইল।
ছাইরাছ হেলাল
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
নীহারিকা
কত কিছু ভেবেছেন, স্বপ্ন দেখেছেন।
সকল স্বপ্ন সফল হোক।
ছাইরাছ হেলাল
স্বপ্নেরা অধরাই থাকে, তাই হয়ত স্বপ্নেই স্বপ্ন খুঁজি।
জিসান শা ইকরাম
অনেক দিন পরে আপনার কবিতা পড়লাম। কবিতা তো আজকাল লেখেনই না।
আপনার লেখা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতাই যে নেই আমার।
ছাইরাছ হেলাল
ল্যাহা-ল্যাহি করা খুব কঠিন কাজ, ভাল কবিদের সাথে থেকে কবিবাতাস লেগেছে,
যা খুবই সাময়িক।
প্রহেলিকা
হিজাবিসকালের কথা না হয় এড়িয়েই যাই।
কবিতা পড়েছি, কবিতার কবি যে প্রচণ্ড প্রকৃতিপ্রেমী তা কবিতার মাঝেই ফুটিয়ে তুলেছেন।
জলাভূমি, জল, ফুল, প্রজাপতি, নদী, বৃষ্টির জল, ডাহুক, সকাল, শিশির, পূর্ণিমা, রাত, ঝিঁঝিঁ-ঝোপ ইত্যাদি ইত্যাদি। লেখার মাঝেই চষে বেড়িয়েছেন আদিগন্ত। এমন লেখা পড়তে পেরে আনন্দিত আমরাও।
সকালের হাঁটাপথে হাঁটা চালু থাকুক। উপকৃতই আমারও হই এতে করে।
ছাইরাছ হেলাল
এই ‘প্রকৃতি প্রেম’ তো লেখার সময় মনে ছিল না, এটি-তো এ-ভাবে ভাবিও-নি।
তবে জল-কাদার মানুষ তাই চেতন-অবচেতনে হানা দেয়, বিখ্যাত প্রাণেরনদীটির খুব কাছেই বসবাস,
আপনি আনন্দিত! হয়েছেন যেনে আমিও আনন্দিত!!
একটু পরেই হাঁটতে যাবতো!!
প্রহেলিকা
দিনভর হাঁটাহাঁটি ভালো না। সন্ধ্যায় কুঠিরে ফিরতে হয়।
ছাইরাছ হেলাল
ফিরি-তো, ফেরাদের কাছে নিয়মিতই।
প্রহেলিকা
আজকে কিছু পেলাম না।
ছাইরাছ হেলাল
আজ থেকে আপনিও রোজ লেখা দিতে থাকবেন।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
অনেক সুন্দর হয়েছে।
ছাইরাছ হেলাল
আচ্ছা।
ইঞ্জা
মাথা ঘুরে গেল, কি সুন্দর কাব্য লিখেন, এই কাব্য মাথায় যার আসে তিনি যে আমায় ভক্ত করে নেন বারবার।
ছাইরাছ হেলাল
এ ভাবে প্রশংসা করা ঠিক না, মনের আনন্দে লিখি মাত্র,
লেখা দিচ্ছেন না কেন!!
ইঞ্জা
আপনি প্রসংসার পাত্র বলেই প্রশংসিত হচ্ছেন ভাইজান, গতকাল দিয়েছি লেখা, দেখেছেন নিশ্চয়।
ছাইরাছ হেলাল
অনেক ধন্যবাদ,
দেখেছি আপনার লেখা।
গাজী বুরহান
কবি ভাই, এক্ষাণ কবিতে দেন না। ম্যাগাজিনের জন্য কুচ্চু লিখতে পারি নাই। আমি শুণ্য ম্যাগাজিন নাতি-নাতনীদের দেখামু ক্যাম্নে?
ছাইরাছ হেলাল
এখনো অনেক সময় বাকি, লিখে ফেলুন যে কোন কিছু।
আমিতো কোবতে ল্যাক্তে পারিই না।
মৌনতা রিতু
এক জাল ফেলে যদি উদোম ঐ নদী থেকে সব স্বচ্ছতা উঠে আসত, তাতে রঙিন সব জল ছবি আঁকতাম,
সহসা যে গ্রহণ লাগতো, তাতেও ঐ ঝিঁঝিঁ পোকার আলো ছড়িয়ে তোমায় দেখতাম।
না হয় হেঁটেই চলি ঐ পথে কিছুক্ষণ আরো কিছুক্ষণ।
কবিতায় ভাল লাগা রেখে গেলাম।
ছাইরাছ হেলাল
পুরোন লেখায় এত্ত সুন্দর মন্তব্য দেখা ভালই লাগল।