আজমির শরীফ (৩য় পর্ব)

ইঞ্জা ৪ অক্টোবর ২০১৯, শুক্রবার, ১২:০৮:১০অপরাহ্ন ভ্রমণ ২৯ মন্তব্য

 

শুক্রবার বলে প্রচুর লোক এসেছে আজ, সবাই ভিতরে প্রবেশ করছে জিয়ারত করার জন্য, আমি ঘরটার কোনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ জিয়ারত করলাম সুরায়ে কালাম পড়ে, জিয়ারত শেষ হলে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে এক মওলানা মুনাজাত করলেন, যদিও আমি আগেই মুনাজাত শেষ করেছি এরপরেও সবার সাথে শরীক হলাম, মুনাজাত শেষে আমার মাতোয়ালি খাজা বাবার দরবারে বাঁধা লাল হলুদ সুতার তাগিয়া আমার হাতে বেঁধে দিয়ে ঘরের অন্য দরজা দিয়ে বের করে নিয়ে গেলেন বাইরের অন্য অংশে, ইতিমধ্যে আজান শুরু হলে সবাই খাজা বাবার কবর মুবারক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো, মতোয়ালি আমাকে নিয়ে গেলেন খাজা বাবার সন্তানদের কবর জিয়ারত করতে যা ঘরটির লাগোয়া ছিলো, উনি আমাকে সিজদাহ্ করার জন্য বললে আমি অপারগতা প্রকাশ করে জিয়ারত শুরু করলাম।

জিয়ারত শেষে আমি বেরিয়ে এলাম সামনের দিকে, যেখানে অসংখ্য মানুষ জুমার নামাজ আদায় করার জন্য কাতার ধরে বসে আছে, আর আলাদা জায়গাতে মহিলাদের নামাজের স্থানেও দেখলাম অসংখ্য মহিলা নামাজের জন্য বসে আছে।
নামাজের শুরুর জন্য পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের থেকে কামান দাগার শব্দ হলো, ইমাম সাহেব যিনি এতক্ষণ বয়ান করছিলেন উনি খুতবা পাঠ শুরু করলেন, ইতিমধ্যে আমরা অনেকেই সুন্নত নামাজ পড়ে খুতবা শুনছি, খুতবার শুনার পাশাপাশি পাহাড়টিকে খুব ভালো করে দেখলাম, পাহাড়ের গায়ে অসংখ্য বাড়ি ঘর আছে, ওখানকার কোথাও থেকে কামানের শব্দ হয়।

খুতবা শেষ হলে আবার তোপ দাগা হলে সবাই আমরা সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে গেলাম নামাজের জন্য, নামাজ শেষে মুনাজাত হলো, এরপর ফরজ নামাজ পড়ে বের হয়ে আসলাম মতোয়ালি সহ, উনি জিজ্ঞেস করলেন খাওয়া দাওয়া কি করতে চাই, গরুর মাংস খেতে চাই কিনা?
আমি তো এক পায়ে খাড়া, উনি আমাকে গেটের পাশ দিয়ে এক গলির ভিতরে নিয়ে গেলেন, ওখানে এক রেস্টুরেন্টে গরুর মাংস দিয়ে বাসমতী চালের ভাত খেলাম পেট পুরে খেয়ে বেড়িয়ে এসে কিছু তবারুক কিনলাম, এইখানে সাদা রঙের ছোট ছোট মিষ্টি তবারুক পাওয়া যায় যা সবাই নিয়ত করে খান, সাথে নিলাম লাল হলুদ সুতার কিছু তাগিয়া আত্মীয় স্বজনের জন্য, এরপর মতোয়ালি সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম উনাকে কত দিতে হবে?
উনি বললেন, আপনার যা খুশি দিন, এইখানে আমরা কাউকে কোন জোড় করে কিছু নিইনা, না দিলেও আমরা অখুশি নই, আমরা মুসাফিরদের খেদমত করি।
আমি উনাকে এক কি দেড় হাজার রুপি দিলাম, উনি আমার সাথে কোলাকুলি করে বিদায় জানালেন, সাথে একটা কার্ড দিলেন যেন ভবিষ্যতে যোগাযোগ করতে পারি।

এরপরের গন্তব্য আমার জয়পুর, যাকে ভারতের পিংক সিটি বলে।

.......... চলবে।
ছবিঃ গুগল।

0 Shares

২৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ