কাউকে সাথে নিয়ে ভালো থাকতে চাওয়াটা নিতান্তই বোকামি। তবুও মানুষ দিনশেষে কাউকে পাশে নিয়ে ভালো থাকতে চায়।
নিঃসঙ্গতা মানুষকে কষ্ট দেয় আর প্রিয় মানুষের সঙ্গ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারনে অকারনে যন্ত্রণা শুধু বাড়ায়।
একাকীত্ব একজন মানুষকে কুড়ে কুড়ে খায় আর পাশে থাকা কেউ একজন কামড়ে ধরে খায়। চতুষ্পদ প্রাণীর মতো টেনে নিয়ে বেড়ায় ।
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কোন এক প্রবন্ধে পড়েছিলাম মানুষ ততদিনই মানুষ, যতদিন একা থাকে। মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকে ।দুইজন হয়ে গেলে তো চতুষ্পদ প্রাণী ।তখন একা আর কোন কিছু করা যায় না, কেউ একজন গলায় দড়ি বেঁধে রাখার ক্ষমতা রাখে।
তারপর যখন তিনজন হয়ে যায় তখন হয়ে পড়ে পিঁপড়ার মত। সারাক্ষণ শুধু কাজ আর কাজ ।কোন নিস্তার নেই, অবসর নেই ।
আবারো ছোটবেলার একটা কবিতা মনে পরলো,
"পিপীলিকা পিপীলিকা
দলবল ছাড়ি একা কোথা যাও
যাও ভাই শুনি ,
শীতের সঞ্চয় চাই, খাদ্য খুঁজিতেছি তাই
ছয় পায়ে পিলপিল চলি।"
যাহোক আবার যখন আট পায়ে উপনীত হয় তখন মৌমাছির মত এ ফুল ও ফুল থেকে ঘুরে ঘুরে, উড়ে উড়ে মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত জীবন। এখন শুধু পা দিয়ে আর হয় না পাখা লাগিয়ে উঁড়তে হয় প্রিয় মানুষদের খুশি রাখার জন্য ।
তারপর যখন আরো বেশি লোকজন হয়ে যায় ততদিনে তার অবস্থা কেল্লার মত ।অনেকগুলো পা নিয়ে দৌড়ানোর পরও স্থানের তেমন কোন পরিবর্তন হচ্ছে না ।
জীবনের গতিপথ এখন অনেক স্লো হয়ে গেছে, অস্তমিত বেলা নেয় সূর্য ডুবি ডুবি করছে।
অসম্ভব ভালো লেগেছিল তার এই লেখাটি। আজ থেকে প্রায় 100 বছর আগে আমাদের জাতীয় কবি এত সুন্দর ভাবনা করেছিল। আর যখন আমরা পড়ি, সত্যিই ভাবনায় পরি!
কোন একজন মানুষের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা মানে নিজের অনেক কিছু বাদ দিয়ে, তার অনেক কিছু নিজের করে নেওয়া ।অন্য কারো ভালো খারাপ থাকার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে বুঝে নেওয়া। এই মানুষগুলো যখন সেক্রিফাইস বোঝেনা, তখন আর কোন কিছুই করার থাকেনা।
তখন একসাথে বাঁচার স্বপ্ন, আশা, ভালোবাসা সব কিছুই ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।
আসলে কোনোভাবেই ভালো থাকার সুযোগ নেই, সেটা হয় একলা নয়তোবা দোকলা।
১২টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
অনন্য। ভীষন ভালো লাগা বিষয়ান্ত l
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয়
সুরাইয়া পারভীন
কোন একজন মানুষের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা মানে নিজের অনেক কিছু বাদ দিয়ে, তার অনেক কিছু নিজের করে নেওয়া ।অন্য কারো ভালো খারাপ থাকার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে বুঝে নেওয়া। এই মানুষগুলো যখন সেক্রিফাইস বোঝেনা, তখন আর কোন কিছুই করার থাকেনা,,, একদম ও দারুণ লিখেছেন।
চমৎকার উপস্থাপন।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ লেখিকা
সুপায়ন বড়ুয়া
“নিঃসঙ্গতা মানুষকে কষ্ট দেয় আর প্রিয় মানুষের সঙ্গ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারনে অকারনে যন্ত্রণা শুধু বাড়ায়। “
জীবন থেকে নেয়া এই বাস্তবতাটাকে
কিভাবে অস্বীকার করি ?
অনেক ভালো লাগলো।
শুভ কামনা
নিরব সাগর
আপনাদের কাছে এই ক্ষুদ্র মানুষের লেখা যে ভালো লাগে, শুনলেই প্রেষণা যোগায় ।
ধন্যবাদ প্রিয়।
নুরহোসেন
জীবন জীবনের মত নয়;
জীবন বায়বীয় পদার্থ কখন কিভাবে অঘটন ঘটাবে ভাবা মুস্কিল।
নিরব সাগর
কি অঘটন ঘটবে প্রিয়, আমার কাছে তো জীবন জীবনেরই মত। জীবনে ভালোবাসা অর্জন করতে হয়, আর অর্জন শব্দটা বড় কঠিন।
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার উপস্থাপন একান্ত অনুভূতি, ভীষন ভালো লাগা দাদা।
নিরব সাগর
ধন্যবাদ প্রিয়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
“নিঃসঙ্গতা মানুষকে কষ্ট দেয় আর প্রিয় মানুষের সঙ্গ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারনে অকারনে যন্ত্রণা শুধু বাড়ায়। “ যণ্ত্রনার শেষ নেই । এটাই কঠিন বাস্তবতা। ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো
নিরব সাগর
জীবনটা একটু উপলব্ধি করার চেষ্টা।