অণুগল্প

নীরা সাদীয়া ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬, শনিবার, ১২:০৪:৫০পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি, সাহিত্য ২৩ মন্তব্য

১. সোহা ও মিতা ভাল বন্ধু। সেই সুবাদে মিতার হবু বর জিসান এর সাথে সোহার সামান্য আলাপ পরিচয়। বিয়ের দিন এগিয়ে আসছে। এসময় জিসান মজা নেবার আর কোন বিষয় খুঁজে পাচ্ছিলনা। তাই মিতাকে বলল, সোহা দেখতে খুব সুন্দরী। সোহা তাকে ম্যাসেজ পাঠায়,কথা বলে। অথচ সোহা এসব কিছুই জানেনা। বউকে হিংসে করিয়ে মজা নেবার জন্য আর নিজেকে হিরো বানানোর জন্য জিসানের বানানো এসব কথাই সোহা ও মিতার এতদিনের বন্ধুত্বে ফাটল ধরাল।

২. সারার কাজিন মিরাজ সারাকে বিয়ে করতে চায়। কারণ সারার বাবার অগাধ সম্পদ আছে। সেটা বুঝতে পেরে সারা বিয়েতে অমত করে।শেষে মিরাজ অন্য মেয়েকে বিয়ে করে। তারপর বৌকে বলে, "সারা আমার জন্য পাগল ছিল। কিন্তু আমি তাকে পাত্তা দেইনি।" এরপর থেকে তার বৌ আর সারাকে দেখতে পারেনা।

৩. মিনার স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী ও গরীব। তারা জমির মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকে। জমির মিয়া মিনার রূপের আগুনে আর মিনা জমির মিয়ার টাকার প্রাসাদে হাবুডুবু খেয়ে উচ্ছন্নে যায়। তারপর একদিন এলাকার লোক শালিস বসায়। ফলাফল জমির মিয়ার সম্পদ আর মীনার উজ্জ্বল মুখ দুটোই পুড়ে।

৪. যারা ও লিটনের ১ বছরের সম্পর্ক। লিটন শুরু থেকে যারাকে ফ্ল্যাটে দাওয়াত করে। শেষে লিটনের ফ্ল্যাটে না যাওয়ার জন্য যারা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর লিটন সকলকে বলে বেড়ায়, "মেয়ে খালি ফ্ল্যাটে আসতে চাইত। তাই দিলাম সম্পর্ক ভেঙে।"

৫. পৃথা মা হতে চলেছে, বেবীর বাবা চিন্টু। প্রস্তাবটা চিন্টুর দিক থেকেই এসেছিল এবং অনেকটা জোরপূর্বক চিন্টু..... । অথচ সকলের কাছে এখন সে বলে বেড়ায় পৃথাই তাকে জোর করে এসব করিয়েছে। পৃথার গায়ে কত জোর ভেবেই পাচ্ছি না।

৬. রমিজ কত মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে তা গৌরবের সাথে বলে বেড়ায়। অথচ নিজে বিয়ে করার জন্য কচি ভার্জিন সাদা চামড়া খুঁজছে। বাহ!

৭. মারিয়া তার আশেপাশের কোন জোড়াকে সুখী হতে দেখলেই তাদের মাঝে গন্ডগোল বাঁধাত। কত বান্ধবীর হবু বরকে পটিয়ে প্রেম করেছে, কতজনের সংসার ভেঙেছে,তার শেষ নেই। অথচ আজ সে নিজে ঠিকই ঢাকা ভার্সিটির লেকচারার এর সাথে প্রেম,তারপর বিয়ে করে বসে আছে। এদের কপাল সুপ্রসন্ন হয় কিনা......

৮. রাজা গোটা ছাত্রজীবনে যত মেয়ের পেছনে ঘুরেছে, প্রেম পত্র দিয়েছে, চুরি করে নম্বার জোগাড় করেছে, আজ সে তার বউকে সবকটা মেয়ের গল্প শোনায়, তবে উল্টো করে।বলে, "আরে অমুক সুন্দরী আমার পিছে ঘুরত। তমুক আমার নম্বার জোগাড় করে ফোন দিত। তমুক আমাকে না দেখলে গলাত ফাঁস নিত।কত মেয়ে আমারে পত্র লিখত। আমার সাথে প্রেম করতে চাইত।"

৯. কবির ঝুমাকে পছন্দ করে। তাই জোর করে নানা গিফট দেয়। ঝুমা প্রায়ই সেগুলো ফেরত পাঠিয়ে দেয়। কবির নানা কৌশলে আবার পাঠায়, ঝুমাকে বাধ্য করে সেসব নিতে। তারপরো ঝুমা পটে নাই। অতপর সে বলে বেড়ায়, ঝুমা তার কাছে নানা জিনিস চাইত, তাই সে না কিনে দিয়ে পারত না। বাহ!

১০. পাপড়ি ও রকিব সম্পর্ক তৈরি করে টাকা দেখেই। পাপড়ি ভাবে, তার সকল খরচ রকিব বহন করবে, রকিব ও ভাবে ঝুমাকে পটিয়ে ডেটিং ও মোবাইল খরচ দুটোই আদায় করা যাবে। তারপর যখন দেখে তারা সম মেরুর যাত্রী তখন একে অন্যকে বিকর্ষণ করতে শুরু করে।

এসব প্রতিটা ঘটনাই বাস্তব থেকে তুলে আনা হয়েছে। শুধু নাম পাল্টে পোস্ট করা হল,তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে। আসুন আমরা এসব চাপাবাজি স্বভাব ত্যাগ করি। শুভরাত।

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ